সাম্প্রতিক খবর

জানুয়ারী ২৭, ২০২০

ছাত্র-যুবরাই দেশের ভবিষ্যৎ, তারাই নেতৃত্ব দেবে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

ছাত্র-যুবরাই দেশের ভবিষ্যৎ, তারাই নেতৃত্ব দেবে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র যুব কর্মশালার আয়োজন করা হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও রাণি রাসমনী অ্যাভিনিউতে প্রায় টানা ১০দিন সিএএ, এনআরসি, এনপিআর-এর বিরুদ্ধে যে সকল ছাত্র-ছাত্রীরা আন্দোলন চালিয়েছেন, রাস্তায়, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে আন্দোলন করেছে, তাদের তিনি শুভেচ্ছা জানান।

তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ

বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আমরা জায়গা তুলে রেখেছি। এটাই আজকের মিটিং-এর মেসেজ। আগামীদিনে আপনাদের তৈরি হতে হবে। আগামীদিন আপনাদেরই মানুষ, সমাজ ও দেশের কাজ করতে হবে। আগামীদিননে ছাত্র-যুবরাই দেশের ভবিষ্যৎ। তারাই নেতৃত্ব দেবে।

শিক্ষা মানে সমাজ সংস্কার, মানবিকতা, ভালোবাসা ঐক্য সংহতি, সম্প্রীতি, নবজাগরণ। আমাদের মাটির শিক্ষা ভাগাভাগি শেখায় না। সব ধর্ম-বর্ণ-জাতিকে নিয়ে এখানে চলতে হয়। আমরা সবাইকে নিয়ে চলি।

আমরা আগে অনেক লড়াই করেছি। হাতেখড়ি হয়েছিল ছাত্রপরিষদ করতে গিয়ে। দুপর ১২টায় গিয়ে রাত ১২টার সময় ফিরতাম। এইভাবে ছাত্র রাজনীতিটা করেছি। কোনোদিন কোনও ভয় পাইনি। নিজের টিউশনের পয়সা দিয়ে ছাত্র রাজনীতি করতাম।

একটা সময়ে তৃণমূল কে কনটেস্টই করতে দিতোনা। ছাত্র রাজনীতির সময় বোমা নিয়ে তাড়া করেছিল সিপিএম। পালানোর সময় দোকানে ঢুকিয়ে নিয়ে বাঁচিয়েছিল স্থানীয়রা।

নোটবন্দী নিয়ে আমি সব রাজনৈতিক দলকে আবেদন করেছিলাম কিন্তু শুধুমাত্র একটা রাজনৈতিক দল গিয়েছিল। এনআরসি-র বিরুদ্ধে আমাদের টিমকে অন্য রাজ্যে ঢুকতে দেওয়া হয় না। মারধোর করা হয়।

এনআরসি নিয়ে প্রথম থেকেই বিরোধিতা করেছি। এনআরসি-তে বাবা মায়ের সব তথ্য দিতে হবে কেন? এসব তথ্য কোথায় পাবে মানুষ। এনপিআর-নিয়ে মিটিং এ আমরা একা গেলাম না আর সব রাজনৈতিক দল গিয়েছিল। এনপিআর নিয়ে ভুল বোঝাচ্ছে বিজেপি।

একটা রঙের উপর ভিত্তি করে দেশ চলে না। বিজেপি ঠিক করবে কে পোহা খাবে? এয়ার ইন্ডিয়া থেকে সব বিক্রি। অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি সব বেচে দেওয়া হয়েছে। বানসাল বেচে দিয়েছে। বহু মানুষ বেকার হয়ে গেছে। প্রশ্ন করলেই হয় জেলে নয়ত গুলি । কেন চায়ের দোকানে সিএএ প্রচার করতে হবে? বিজেপি বুঝুক আমরা ক্রীতদাস নই, ভারতের নাগরিক। ছাত্রদের রক্ত দাসত্বের জন্য নয়। স্বাধীন নাগরিকের জন্য এই লড়াই চলছে এই লড়াই চলবে।

ক্যা প্রত্যাহার করুক বিজেপি। সিএএ -এর বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে। অভিনন্দন যাত্রা নয়, বিজেপির বসর্জন যাত্রা। কিসের অভিনন্দন? চোর কে বলছে চুরি করতে আর গৃহস্থ কে বলছে সাবধান হও। এর বিরুদ্ধে খুব দৃড়ভাবে আন্দোলন করতে হবে। পড়াশোনাও করতে হবে।

আমরা সিভিক ভলেনটিয়ার নিয়োগ করেছি। আমাদের সব প্রকল্প সকল ধর্ম বর্ণ জাতির প্রকল্প। আমাদের সরকার সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হসপিটালে ফ্রি ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। আমরা প্রত্যেকের জীবন সুরক্ষিত করেছি। আমরা চাই মানুষ আমাদের কাজের সম্পর্কে জানুক। আমরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে লিভার, হার্টের ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের প্রকল্প আছে।আমি চাই আপনারা সমাজ সেবামূলক কাজ করুন। সমাজের শিকড় থেকে সাম্প্রদায়িক বিভেদ উপড়ে ফেলুন। দেশের প্রতি ভালোবাসা দেখান। দেশকে ভালোবাসো দেশের জন্য লড়াই কর। আমি চাই তোমাদের মধ্যে থেকে ভবিষ্যতের নেতা উঠে আসুক। যেভাবে আমাকে একসময় ছাত্র আন্দোলন থেকে ডেকে নেওয়া হয়েছিল আমিও সেভাবে তোমাদের মধ্য থেকে ডেকে নেব।

আমরা সে জন্য বিভিন্ন কর্মশালা করাব। আমরা তোমাদের ট্রেনিং দেব। আমরাই তোমাদের ভবিষ্যতের নেতা তৈরি করব। তোমরা নন্দিগ্রাম আন্দোলন দেখনি। এই আন্দোলনটা তোমরা পথ দেখাবে । এই আন্দোলনটা তোমাদেরকেই সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।