সাম্প্রতিক খবর

নভেম্বর ২৫, ২০১৮

ক্ষুদ্র শিল্পে বছরে ৪৪ হাজার কোটি টাকার লগ্নি এনে শীর্ষে বাংলা

ক্ষুদ্র শিল্পে বছরে ৪৪ হাজার কোটি টাকার লগ্নি এনে শীর্ষে বাংলা

ত্রুটিপূর্ণ জিএসটি ব্যবস্থার জন্য এখনও হাওলার মাধ্যমে কালো টাকার লেনদেনের সুযোগ রয়ে যাচ্ছে। দিল্লিতে দাঁড়িয়ে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে এইভাবেই তোপ দাগলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রকের আয়োজনে প্রগতি ময়দানে চলছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। সেখানেই পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অর্থ এবং শিল্পমন্ত্রী। এই মেলায় পশ্চিমবঙ্গের ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্পদ্যোগীদের (এমএসএমই) স্টল থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি সামগ্রী বিক্রি হয়েছে। আগামী ২৭তারিখ পর্যন্ত মেলা চলবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন,তাড়াহুড়ো করে জিএসটি চালু করায় এখনও পর্যন্ত রাজ্যগুলির ৭৮ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। জিএসটি’র রিটার্ন ফাইল করার ব্যবস্থা (জিএসটি-নেটওয়ার্ক) কেবল জটিলই নয়, ত্রুটিপূর্ণ। কিছু ক্ষেত্রে অকেজো। তার উপর এখন নতুন করে জিএসটি আর-থ্রি বি ফর্ম ভরার যে ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্র, সেখানে ইনভয়েজের প্রয়োজনই নেই, আপলোড করতে হয় না। তাঁর দাবি, এই ব্যবস্থায় যে অর্থ উপার্জন হচ্ছে, তা আদতে হিসেব বহির্ভূত এবং হাওলার মাধ্যমে কালো টাকা খাটানোর ব্যবস্থাকেই খুলে দেওয়া হচ্ছে। নোটবন্দি, ত্রুটিপূর্ণ জিএসটি এবং সরকারের আর্থিক পরিকল্পনার ব্যর্থতায় জিডিপি (অভ্যন্তরীণ উৎপাদন) বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলেও হিসেব দেন তিনি।

গত চার বছরে মোদি সরকার দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার সর্বনাশ করে দিয়েছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ৫৯ মিনিটে ঋণ দেওয়ার নতুন প্রকল্প সামনে এনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ভাঁওতা দেওয়া হচ্ছে। ঋণ দেওয়ার কথা বলা হলেও আদতে ঋণ দেওয়ার নীতিগত সম্মতির কথা বলা হচ্ছে। ঋণ কবে পাবে, কিংবা ব্যাঙ্ক আদৌ ঋণ দেবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। মোদি সরকার যেখানে ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্পোদ্যোগী঩দের ভাঁওতা দিচ্ছে, সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ সরকার উদ্যোগীদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে পাশে দাঁড়িয়েছে। গত বছর ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্য সরকারের টার্গেট ছিল ৩৮ হাজার কোটি টাকার ঋণ দেওয়ার। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা এবং উদ্যোগে আদতে তা ৪৪ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে। মঞ্জুষা এবং তন্তুজ লাভের মুখে দেখেছে।

অমিতবাবু বলেন, সিপিএমকে হটিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে আমরা ক্ষমতায় আসার পর থেকে এখনও পর্যন্ত সাড়ে ৯ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে। যার মধ্যে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই বাস্তবে কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের আভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধির হার যেখানে ২০১৭-‌১৮‌তে ৯.‌১ শতাংশ, দেশের ক্ষেত্রে তা ৭ শতাংশ। বিপুল বিনিয়োগ আসছে রাজ্যে।

আরবিআইয়ের সঙ্গে সরকারের বিরোধকে (‌যা ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্যের বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল)‌ একটা রোগের উপসর্গ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আরবিআই ভেতর থেকে ভেঙে পড়ছে। কেন্দ্রের সরকার জানে না কীভাবে আরবিআই বা সিবিআই–এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে চালাতে হয়। আগের সরকারগুলোর সময় এই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এমন সঙ্ঘাতের ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সৌজন্যে: বর্তমান