সাম্প্রতিক খবর

নভেম্বর ৮, ২০১৮

নোটবন্দির পর এবার আরবিআইকে ৩.৬ লক্ষ কোটি টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে কেন্দ্র: অমিত মিত্র

নোটবন্দির পর এবার আরবিআইকে ৩.৬ লক্ষ কোটি টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে কেন্দ্র: অমিত মিত্র

আজ অন্ধকার দিবস (ডার্ক ডে)। দুবছর আগে আজকেই ঘোষিত হয়েছিল নোটবন্দির সিদ্ধান্ত। তারই দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ বিকেল ৫টায় বিবৃতি দিয়েছেন বাংলার অর্থ ও শিল্প মন্ত্রী ডঃ অমিত মিত্র।

অর্থ ও শিল্প মন্ত্রীর বিবৃতি:

আজ অন্ধকার দিবস (ডার্ক ডে)। দুবছর আগে ২০১৬ সালের ৮ই নভেম্বর এনডিএ সরকার নোটবাতিলের ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন দেশের লক্ষ লক্ষ কৃষক, অসংগঠিত ক্ষেত্রের কোটি কোটি উদ্যোগপতি, ক্ষতিগ্রস্ত হয় ছোট ব্যবসা।

সেই কালো দিনের দিকে ফিরে তাকিয়ে এখন দেশ জানতে চায়, ‘কার সুবিধার্থে এনডিএ সরকার এই হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল?’ সাধারণ মানুষের বক্তব্য, দুবছর আগে এই অশুভ প্রকল্পের মাধ্যমে একটি বড় দুর্নীতি চরিতার্থ করা হয়।

নোটবাতিলের সমর্থনে ভারতের অ্যাডভোকেট জেনারেল মহামান্য সুপ্রীম কোর্টে বলেন, বাতিল হওয়া ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের এক তৃতীয়াংশ ব্যাঙ্কে ফেরত আসবে না। তাই, এই পদক্ষেপের ফলে বিপুল পরিমাণ কালো টাকা নষ্ট হবে। হায়! ইতিমধ্যেই ৯৯.৩% বাতিল নোট ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে। অ্যাডভোকেট জেনারেলের বক্তব্য ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়ে গেছে। নোটবাতিলের ফলে কয়েক লক্ষ কোটি কালো টাকা সাদা টাকায় পরিণত হয়। এটা দেশের অন্যতম বড় দুর্নীতি।

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে সংসদে আমরা অনেক বড় বড় কথা শুনেছি যে ‘ডেটা অ্যানালিটিক্স’ ব্যবহার করে সেই সব মানুষকে ধরা হবে যারা নোটবাতিলের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করেছে। কিন্তু, আজ পর্যন্ত একজনও ধরা পড়েনি। কেন এরকম হল? এটা কি অযোগ্যতা না ইচ্ছাকৃত গাফিলতি? শুধুমাত্র কিছু মুষ্টিমেয় কালো টাকার মালিকদের খুশি করতেই কি সিদ্ধান্ত? এটা কি দেশের সবথেকে বড় দুর্নীতি নয়?

উপরন্তু, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী এনডিএ সরকারের আমলে প্রচুর ব্যাঙ্ক কারচুপি হয়েছে। নীরব মোদী ও অন্যান্যরা তো হিমবাহের অগ্রভাগ (টিপ্ অফ আইসবার্গ) মাত্র।

এখন কেন্দ্রীয় সরকার ৩.৬ লক্ষ কোটি টাকার জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওপর চাপ দিচ্ছে। মুষ্টিমেয় উদ্যোগপতির স্বার্থে যদি ৭ নম্বর ধারা ব্যবহার করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে বাধ্য করা হয়, তবে এই বিপুল পরিমাণ টাকা কি আরেকটি দুর্নীতির জন্ম দেবে না?

নোটবাতিলের ফলে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে; জিডিপিতে ধ্বস নেমেছে। দেশের রাজস্ব ঘাটতির সীমা লঙ্ঘন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। জিএসটি আদায় কমেছে, কর্মসংস্থান কমেছে, কৃষকদের আত্মহত্যা বেড়েছে। রপ্তানির বৃদ্ধি কমেছে, ছোট ব্যাবসায়ীরা দুর্দশাগ্রস্ত, অসংগঠিত ক্ষেত্রের -যা আমাদের দেশের অগণিত রোজগারের মূল উৎস – বিপুল ক্ষতি হয়েছে।

আমি নিশ্চিত যে শুভবুদ্ধির উদয় হবে। যে রাজনৈতিক দল আজ থেকে দুবছর আগে এই তুঘলকী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল – এবং তার পরেই হঠকারী জিএসটি চালু করেছিল – তার বিরুদ্ধে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হবেন।