সাম্প্রতিক খবর

জানুয়ারী ৭, ২০১৯

চাষে জলের সঙ্কট নিরসনে কৃষকদের ‘রেনগান’ দেবে রাজ্য সরকার

চাষে জলের সঙ্কট নিরসনে কৃষকদের ‘রেনগান’ দেবে রাজ্য সরকার

সেচের জলে ঘাটতি যাতে না হয় তা মোকাবিলা করার জন্য এবার রাজ্যের কৃষকদের হাতে বিনামূল্যে ‘রেনগান স্প্রিঙ্কলার’ তুলে দিতে চলেছে সরকার। কৃষি দপ্তরের আধিকারিকদের দাবি, স্প্রিঙ্কলারে কম জলে অনেক বেশি জমিতে চাষ সম্ভব। খরচও কমবে। অনাবৃষ্টির কারণে চাষের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যাবে। ভূগর্ভের জলের উপর চাপ কমবে। প্রাকৃতিক ভারসাম্যও রক্ষা পাবে।

এই স্প্রিঙ্কলার দেখতে অনেকটা মেশিন গানের মতো। পাইপ দিয়ে তীব্র বেগে জল বেরোতে থাকে এবং বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ে। তাই অনেকে রেনগান বলেন। গল্ফ কোর্সে এবং উত্তরবঙ্গের চা-বাগানে জলের জোগান দিতে দীর্ঘ দিন ধরে রেনগান ব্যবহার হচ্ছে। এই মেশিন ইলেকট্রিক মোটরে চলে। ডিপটিউবওয়েলের জল সরাসরি মাঠে না পাঠিয়ে কোনও জায়গায় মজুত করা হয়। তার পর স্প্রিঙ্কলারের মাধ্যমে মাঠে জল ছড়ানো হবে।

কৃষি দপ্তরের এক আধিকারিকের ব্যাখ্যা, বর্তমানে যে ভাবে চাষের জমিতে সাবমার্সিবল পাম্প চালিয়ে সেচের জল দেওয়া হয়, সেটা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক। চাষে যতটা জল দরকার, তার থেকে অনেক বেশি জল জমিতে দেওয়া হয়। গাছ প্রয়োজন মতো জল টেনে নেওয়ার পর বাড়তি জল জমে থাকে বা স্রেফ বাষ্পীভূত হয়ে নষ্ট হয়। খেতেও পোকামাকড়ের প্রাদুর্ভাব হয়। সাবমার্সিবল পাম্প চালাতে অহেতুক টাকা খরচ হয়। রেনগান স্প্রিঙ্কলার ব্যবহার করলে গাছ প্রয়োজন মতো জল টেনে নিতে পারবে। গাছের গোড়ায় জল জমবে না।

কৃষিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে বেশির ভাগ জায়গায় সেচের জলের জন্য সাবমার্সিবল পাম্প ব্যবহার করা হয়। তা দিয়ে বড়জোড় ৪০-৫০ বিঘা জমিতে চাষ করা যায়। কিন্তু স্প্রিঙ্কলারে ১০০ বিঘা জমিতে চাষ হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্য কৃষি-সেচ যোজনায় ব্লকে ব্লকে চাষিদের এই মেশিন বিতরণ করা হবে। এই মেশিন খোলাবাজার থেকে কিনলে ৩১ হাজার টাকার মতো দাম পড়ে। কিন্তু চাষিদের বিনামূল্যেই এই মেশিন দেবে সরকার। শুধুমাত্র জিএসটি বাবদ ৪০৫০ টাকা দিতে হবে চাষিদের। মেশিন কী ভাবে ব্যবহার করতে হবে, তা নিয়ে লিফলেটও ছাপিয়েছে কৃষিদপ্তর। ব্লকে ব্লকে তা ছড়ানো হবে। প্রোজেকশনের মাধ্যমেও চাষিদের সামনে ব্যবহার-বিধি তুলে ধরা হবে।

সৌজন্যে: এই সময়