সাম্প্রতিক খবর

জানুয়ারী ১৭, ২০১৯

তাজপুর ও কুলপি বন্দর একাই গড়বে রাজ্য সরকার

তাজপুর ও কুলপি বন্দর একাই গড়বে রাজ্য সরকার

আয়ুষ্মান ভারতের সঙ্গ ত্যাগের পর আরও একটি প্রকল্প নিজের দায়িত্বে করার সিদ্ধান্ত নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, কেন্দ্রের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুরে বন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য। এই প্রকল্পে কেন্দ্র সরকার মোট ৭৪ শতাংশ খরচ বহন করবে বলে আগেই আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু তা নিয়ে কেন্দ্র টালবাহানা করায় রাজ্য সরকার এ বার নিজেদের উদ্যোগেই ওই বন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই ভাবে, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কুলপিতে পোর্ট ট্রাস্টকে বাদ দিয়েই রাজ্য সরকার নিজস্ব উদ্যোগে খুব শিগগিরই নদী বন্দর নির্মাণের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। নবান্নে এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র জানান, রাজ্য সরকার যাতে তাজপুর বন্দর তৈরীর অধিকার পায়, তার জন্য ইতিমধ্যেই নোটিফিকেশন জারি হয়েছে। তাজপুর বন্দর গড়ার জন্য রাজ্য সরকারের হাতে প্রায় দেড় হাজার একর জমি আছে। তাই আর নতুন করে জমি নেওয়ার খুব একটা প্রয়োজন হবে না। কুলপি নদী বন্দর প্রকল্পের অংশীদার হচ্ছে দুবাইয়ের একটি নামকরা সংস্থা। রাজ্যের একটি সংস্থাও তাদের পার্টনার হচ্ছে।

তাজপুর বন্দর নির্মাণে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গত্যাগ বিষয়ে শিল্পমন্ত্রীর বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের কাছে যে প্রস্তাব দিয়েছিল, সেটা যদি ফলপ্রসূ করতে না-পারে, সেক্ষেত্রে আমাদের অধিকার আছে নিজেরাই কাজটা করার। তাই তাজপুর বন্দর আমরা নিজেরাই করব। কুলপি বন্দরটাও আমরাই করব। এর কাজ অনেকটা অগ্রসর হয়েছে। সমস্ত ছাড়পত্র এসে গিয়েছে। একসঙ্গে দু’টো কাজই দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে।’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কুলপি ও তাজপুর বন্দর তৈরী হলে প্রচুর লোকের কর্মসংস্থান হবে। এলাকার মানোন্নয়ন ঘটবে।’

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বন্দর একটি লাভজনক ব্যবসা। তাই বন্দর তৈরীর জন্য আগ্রহী সংস্থা খুঁজে পেতে কোনও অসুবিধা হবে না। তাজপুর এবং কুলপি দু’জায়গাতেই সম্ভবত পিপিপি মডেলে রাজ্য সরকার বন্দর বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রাথমিক সমীক্ষা রিপোর্ট অনুসারে, তাজপুর বন্দর নির্মাণে খরচ হবে আনুমানিক ৫ হাজার কোটি টাকা। পুরো টাকাটাই বিনিয়োগ করবে বেসরকারি সংস্থা। রাজ্য সরকারেরও তাতে অংশিদারিত্ব থাকবে। রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তোলার মতো পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজে সাহায্য করবে রাজ্য সরকার।

এর আগে সাগর দ্বীপের কাছে রাজ্য-কেন্দ্র যৌথ উদ্যোগে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের প্রস্তাব উঠেছিল। মুড়িগঙ্গা নদীর উপর ব্রিজ তৈরীর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু এখানে জমি পাওয়ার সমস্যা ছাড়াও মুড়িগঙ্গার উপর ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। এর মধ্যেই রাজ্য সরকার তাজপুরে বন্দর তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়ায় সাগর বন্দরের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে চলে যায়।

সৌজন্যেঃ এই সময়