জানুয়ারী ১৯, ২০১৯
ব্রিগেডের সমাবেশে ঐক্যবদ্ধ ভারত

ঐতিহাসিক ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে আজ ঐক্যবদ্ধ ভারতের খন্ডচিত্র দেখল দেশ। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, অরুণাচল থেকে গুজরাট – উপস্থিত ছিলেন তাবড় তাবড় রাজনৈতিক দলের নেতারা।
একযোগে সকলেই আজ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে উৎখাত করার ডাক দিয়েছেন।
দেখে নিন এক নজরে:
হার্দিক প্যাটেল – সুভাষ চন্দ্র বসু বলেছিলেন, তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমরা তোমাদের স্বাধীনতা দেব। আমাদের সকলকে লড়তে হবে চোরেদের বিরুদ্ধে। তবেই আমরা দেশকে বাঁচাতে পারব। দেশের গুন্ডাদের তাড়াতে এই জনতা একসঙ্গে লড়বেন।
জিগ্নেশ মেভানি – আমাদের দেশ এই মুহূর্তে চরম দুর্দশার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সংবিধান ও গণতন্ত্র আক্রান্ত। ২০১৯ সালের ভোটে বিজেপি ও আরএসএস কে শেষ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই উদ্যোগ শুরু করেছে, তাই তাঁকে ধন্যবাদ।
হেমন্ত সোরেন – আজ এখানে প্রচুর আঞ্চলিক দল উপস্থিত আছে। এতে বোঝা যায় আমরা দেশের জনগনের পাশে আছি। আগামীদিনে আমরা সব আঞ্চলিক দল এই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে হারাতে পারব।
গেগং আপাং – গত চার বছরে দেশের গণতন্ত্র সব থেকে বিপদের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে অত্যাচার করা হচ্ছে। দিল্লীর নেতারা দেশকে ভাগ করছেন। সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট বিল একটি উদাহরণ।
পু লালডুয়ামা – সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট বিলের জন্য উত্তর-পূর্ব ভারত জ্বলছে। এই বিলের মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব ভারতকে দেশ থেকে আলাদা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে সাবধান করতে চাই, এই বিল লাগু করা হলে ভারতবর্ষ আর শান্তিতে বসবাসের জায়গা থাকবে না।
যশবন্ত সিনহা – এই সমাবেশ কোনও ব্যক্তিকে হারানোর জন্য না, এটা একটা ভাবনা, একটা বিচার ধারার ভাবনা। সেই জন্যে আমরা একত্রিত হয়েছি। আজ দেশে এমন কোনও সংস্থা নেই যাতে কেন্দ্রীয় সরকার হস্তক্ষেপ করেনি, সবকটাকে বরবাদ করেছে। আর সেই জন্যই প্রজাতন্ত্র রক্ষা করার জন্যে আমরা একত্রিত হয়েছি।
অরুণ শৌরি – এই সরকারকে বরখাস্ত করতে হবে এর মধ্যে তো সন্দেহ নেই কারণ এর আগে কোনও সরকার এত মিথ্যে কথা প্রচার করেনি। এর আগে কোনও সরকার, সিবিআই, আরবিআই, নির্বাচন কমিশন, বিচার ব্যবস্থা, সংসদ, সব রকম সংস্থাকে তছনছ করে দেয়নি।
শরদ যাদব – দেশ সংকটে আছে। কৃষকরা শেষ হয়ে গেছে। আজ দেশবাসী হতাশ। যুবকরা কাজ পাচ্ছে না। জিএসটির কারণে ব্যাবসায়ীরা শেষ হয়ে গেছে। নোটবন্দীর কারণে দেশের অর্থনীতি অনেক পিছিয়ে গেছে। দেশে অঘোষিত জরুরী অবস্থা চলছে, দেশকে আবারও স্বাধীন করতে হবে।
জয়ন্ত চৌধুরী – আচ্ছে দিন আনতে হলে, মোদিকে ভাগাতে হবে। আমি মমতা দিদিকে বলতে চাই দেশের ভরসা আপনার উপর সব সময় থাকবে। সারা দেশের মানুষ হাতে হাত মিলিয়ে বিজেপিকে ভারত থেকে ছুঁড়ে ফেলো দেবে।
সতীশ মিশ্র – আজ দেশের প্রতি প্রান্ত থেকে একটাই আওয়াজ উঠছে, এনডিএ-র সরকারকে আর সহ্য করা যাচ্ছে না। এই কেন্দ্রীয় সরকারকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপসারিত করতে হবে। সংবিধানকে বাঁচাতে হলে এই বিজেপি সরকারকে সরাতে হবে।
এইচ ডি কুমারস্বামী – আজকে আমরা দেখছি সরকার চালাচ্ছে অগণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক নেতাদের দ্বারা। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে কেন্দ্রীয় সরকার মানুষের কষ্টের ব্যাপারে অন্ধ ও বধির হয়ে গেছে।
ফারুক আবদুল্লা – দেশের সব ধর্মের, ভাষার মানুষের আত্ববলিদানে দেশ স্বাধীন হয়েছে, আর ৭০ বছর পর ভারতে আবার চ্যালেঞ্জ আসছে, আজকে লোকদের ধর্মের নামে ভাগ করা হচ্ছে, মুসলমানদের আলাদা, হিন্দুদের আলাদা, শিখদের আলাদা, বাঙালিদের আলাদা সবাইকে আলাদা করা হচ্ছে। আসামে আগুন জ্বলছে, মণিপুর নাগাল্যান্ড সব জায়গায় লড়াই লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই দেশকে বাঁচানোর জন্য প্রত্যেককে বলিদান দিতে হবে।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল – গত পাঁচ বছরে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ দেশকে শেষ করে দিয়েছে। দেশবাসী এই দুজনের কাছে উত্যক্ত। দেশের যুবরা কর্মহীন। নোটবন্দীর জন্য দেশের ১.২৫ কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। কৃষকরা আত্মহত্যা করছে। এই জুটিকে সরকার থেকে উৎখাত করতে হবে। বিজেপির উদ্দেশ্য খুব ভয়ঙ্কর। ওরা দেশের গণতন্ত্র সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে চায়। ২০১৯ সালের ভোট মোদী ও শাহকে তাড়ানোর ভোট। আমি আজ নিশ্চিত মোদী ও অমিত শাহ বিদায় হবে এবং দেশের সুদিন ফিরবে।
চন্দ্রবাবু নাইডু – আমাদের একটাই অঙ্গীকার – দেশ বাঁচাও, গণতন্ত্র বাঁচাও। আমরা দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে চাই আর ওরা সেটাকে টুকরো টুকরো করতে চায়। পাঁচ বছর আগে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছিল আর তারপর থেকে ওরা শুধু স্লোগানই দিয়েছে। তার কারণ এই প্রধানমন্ত্রী প্রচার সর্বস্ব, কাজ জানেন না।আমরা কাজের প্রধানমন্ত্রী চাই যিনি দেশের গরীবদের জন্য কাজ করবেন, সর্বস্তরের মানুষের জন্য করবেন।
MK Stalin – কয়েকমাস আগেও পর্যন্ত মোদীজি বলতেন, আমার কোনো বিরোধী নেই, আর এখন বক্তৃতা দিতে গিয়ে গালাগালি দিচ্ছেন। আমরা একসাথে হয়ে গেছি দেখে উনি বুঝে গেছেন পরাজয় নিশ্চিত। ক্ষমতায় আসার আগে উনি বলতেন এটা দেবো, ওটা দেবো, কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর সাধারণ মানুষের একের পর এক সর্বনাশ করে যাচ্ছে।
অখিলেশ যাদব – প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? আমি বলব, জনতা যা সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই হবে। আগেও হয়েছে, আবার হবে। বিজেপি অনেক সংস্থার সাথে জোট করছে, সিবিআই এর সাথে, ইডি-র সাথে। কিন্তু আমরা জনগনের সাথে জোট করে নিয়েছি। আর লোকতন্ত্র যা সিদ্ধান্ত নেয় সেটাই হয়।
Dr AM Singhvi – অপশাসনের মেঘ কেটে গেছে, বিভিন্ন দলের রামধনু জোট হচ্ছে। যে নামেই ডাকুন না কেন, একত্রিত হওয়ার সময় এসে গেছে। জনতার পুকার আর চাই না মোদী সরকার। সবাই মিলে ভোট বিভাজন আটকাতে হবে।
মল্লিকার্জুন খার্গে – আসন্ন লোকসভা নির্বাচন কোনও সাধারন নির্বাচন না, এই নির্বাচন দেশের গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই এবং যে শক্তি দেশের সংবিধানকে নষ্ট করতে চাইছে, সেই অপশক্তিকে দূর করার লড়াই।
শরদ পাওয়ার – আমরা সবাই একসাথে কাজ করবো। বিজেপির লোকজন বলছে, এই জোট থাকবে না, প্রধানমন্ত্রী পদ নিয়েই এই জোট ভেঙে যাবে। আমি আপনাদের বলছি, আমরা এখানে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য আসিনি, এসেছি একজোট হয়ে আপনাদের রক্ষা করার জন্য, আমরা কৃষককে রক্ষা, বেকারদের ভবিষ্যৎ ঠিক করতে। সমস্ত মহিলা, দলিত এবং সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতে।
HD Deve Gowda – জোট সরকার গঠনের পর আমাদের প্রথম কাজ হবে, কিভাবে ভালো কাজ করা যায়। মানুষ চায় নতুন সরকার, যে মানুষের গণতান্ত্রিক ক্ষমতাকে রক্ষা করবে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলির নিরপেক্ষতা রক্ষা করবে। এই দেশের প্রধাণমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সরিয়ে শক্তিশালী জাতি গঠন করার জন্য জোট সরকার গঠন করা জরুরী।
শত্রুঘ্ন সিনহা – এত বড় সভা অন্য যায়গায় দেখা যায় না। এটা বাংলা করে দেখিয়েছে। সত্যি কথা বলা থেকে যদি মুখ লুকান তাহলে কিন্তু দেশের জনগণ বলবে “চৌকিদার চোর হায়”। মেইড ইন ইন্ডিয়ার নামে কিছুই করেনি আর যতদিন করবেন না ততদিন লোকে বলবে মেইড ইন চাইনা।
তেজস্বী যাদব – ওনাদের সাথে হাত মিলিয়ে নিলে আপনি রাজা হরিশচন্দ্র হয়ে যাবেন। কিন্তু যদি ওদের বিরুদ্ধে করেছেন তো, আপনাদের বিরুদ্ধে সিবিআই, ইডি লেলিয়ে দেবে। আমার বাবাকে জেলে ভরে শাস্তি দিচ্ছে। কিন্তু আমরা মাথা নত করবো না। আমরা দেশকে বাঁচাতে চাই।