সাম্প্রতিক খবর

জানুয়ারী ৩০, ২০১৯

বিজেপির 'অর্ধশিক্ষিত' নেতাদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ রামপুরহাটে একটি সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে বিজেপির ‘অর্ধশিক্ষিত’ নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বাংলার সংস্কৃতিকে অপমান ও রাজ্যের বিরুদ্ধে কুৎসা করার অভিযোগে বিজেপির বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন তিনি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দিল্লির কিছু নেতা আছে; ওরা অর্ধশিক্ষিত না গর্ধশিক্ষিত জানি না। যারা বাংলার সংস্কৃতি জানে না, সভ্যতা জানে না, ওরা বলছে কন্যাশ্রী আমরা কপি করেছি। আমি ওদের চ্যালেঞ্জ করছি। কন্যাশ্রী প্রকল্প শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে আর আপনাদের বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্প শুরু হয়েছে ২০১৫ সালে।”

তিনি আরও বলেন, “আপনারা আমাদের টুকলি করে ভালো করে কাজটাও করতে পারে না। ওদের বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্পে সারা দেশের জন্য বাজেট ১০০ কোটি টাকা, অর্থাৎ এক একটি রাজ্যের জন্য ৩-৪ কোটি টাকা। আর ইতিমধ্যেই বাংলায় কন্যাশ্রী প্রকল্পে ৭০০০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে।”

“বাংলার মাটিই পথ দেখায় আগামিদিনেও দেখাবে। বাংলা কারো কাছে মাথা নত করে না, বাংলা কারো কাছে নিজেকে বিকিয়ে দেয় না। আমাদের ভয় দেখিয়ে, চমকে, সিবিআই দেখিয়ে লাভ নেই, আমরা লড়ে নেব” মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর।

তিনি বলেন, ৩৪ বছরে ওরা শূন্য করে দিয়েছে বাংলাকে। কংগ্রেস কোনওদিন বাংলার দিকে তাকাননি আর বিজেপি বাংলাকে শুধু গালাগালি দিয়েছে আর দাঙ্গা করানোর চেষ্টা করেছে। কোনওদিন কোন কাজ করেনি শুধু বড় বড় কথা।

দুর্গা পুজো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের রাজ্যে দুর্গা পুজো, সরস্বতী পুজো, ইদ, ক্রিসমাস সব সমানভাবে পালন করা হয়। দিল্লির অর্ধশিক্ষিতরা বলছে বাংলায় নাকি দুর্গা পুজো-সরস্বতী পুজো হয় না। আপনারা হয় একথা প্রমাণ করবেন নাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। যারা দুর্গা পুজো করে তাদের বাড়িতে ওরা ইনকাম ট্যাক্সের নোটিস পাঠিয়েছে, ক্লাবগুলোকে সাহায্য করা হয়েছে বলে ওরা হাইকোর্টে গিয়ে কেস করেছিল। লজ্জা করে না? মুম্বাইতে গণপতির পুজো হয়; ওখানে নোটিস পাঠাতে পারবেন? আমি সমর্থন করি গণপতির পুজো। যত রাগ শুধু বাংলার ওপর?”

“গুণ্ডামি দেখাচ্ছে, মিথ্যে কথা বলছে, চরিত্র হনন করছে, বাংলার সংস্কৃতিকে অপমান করছে, বাঙালিদের মধ্যে যুদ্ধ লাগাচ্ছেন, গায়ের জোরে, ক্ষমতার জোরে বলছেন বাংলা থেকে তাড়িয়ে দেবেন। বাংলার লোকের গায়ে হাত দিয়ে দেখুন তারপর বুঝবেন। মাথায় রাখবেন অত সহজ নয়।” গর্জে উঠলেন নেত্রী।

চরিত্রহনন ও কুৎসা প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “আমরা জনগণের টাকা লুঠ করি না। আমি চিরকাল বাংলায় রাজনীতি করছি। বাংলার মানুষ আমাকে জানে, আমি জনগণের কাছে ক্যারেক্টর সার্টিফিকেট নেব, চোর ডাকাত গুন্ডাদের কাছে নয়। আমি আঁকলেও নাকি সেটা চুরি, আমি লিখলেও নাকি সেটা চুরি। তাদের আর কিছু বলার নেই। আমি ছোট থেকে মার খেতে খেতে রাজনীতি করেছি। আমার সারা শরীরে ছোটের দাগ আছে। আমি জীবনে মাথানত করিনি কারো কাছে। আমি যতদিন বাঁচব, মাথা তুলে বাঁচব।”

দিদির চ্যালেঞ্জঃ “আমি চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি, প্রমাণ করুন আমার ছবি বিক্রী করে আমি নিজের অ্যাকাউন্টে এক পয়সাও নিয়েছি। আমাদের দল ইতিমধ্যেই ডিফ্যামেশন নোটিশ পাঠিয়েছে।”

তিনি বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করেন, “রাজ্য সরকারের হাতেও সিআইডি ও অন্যান্য সংস্থা আছে। শিশু চুরির ঘটনায় এখনও তো বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। গ্যাস কেলেঙ্কারিতেও আপনাদের নেতারা জড়িত। মহিলা নির্যাতনের মামলায়ও আপনারা জড়িত।”

বিরোধী দলগুলি যে যে রাজ্যে আছে, সেখানেই সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো নষ্ট করার জন্য এটা করা হচ্ছে, অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

তাঁর বক্তব্য, বিজেপির আয়ু আর এক মাস। আপনাদের এক্সপায়ারি ডেট আসন্ন।