জানুয়ারী ২৫, ২০১৯
উন্নয়নের পথ ধরেই এবার নতুন শিল্পতালুক জঙ্গিপুরে – কর্মসংস্থান হবে ১৫ হাজার বেকারের

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শিল্পে বিনিয়োগ এবং শিল্পের উন্নতি নিয়ে সচেষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর ঐকান্তিক চেষ্টা যেমন রাজ্যের ধুঁকতে থাকা শিল্পক্ষেত্রগুলিতে নয়া প্রাণ সঞ্চার করেছে, তেমনি গড়ে উঠছে নানা শিল্পতালুকও। সেই পথ ধরেই এবার মুর্শিদাবাদ জেলায় আরও একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক বা শিল্পতালুক গড়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার এক বছরের মধ্যেই প্রকল্পটি গড়তে তৎপর হয়েছে ছোট, ক্ষুদ্র, মাঝারি উদ্যোগ ও বস্ত্রবয়ন দফতর।
প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রস্তাবিত শিল্পতালুকের জন্য ইতিমধ্যেই জঙ্গিপুর মহকুমার জাফরাবাদে জমি চিহ্নিত করার হয়ে গিয়েছে। প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা খরচ করে প্রকল্পটি গড়বে জেলা পরিষদ। সেখানে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও প্লাস্টিকজাত শিল্প গড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওই শিল্পতালুকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশাবাদী রাজ্য।
এর পাশাপাশি, রেজিনগর শিল্পতালুকেও উদ্যোগপতিদের নিয়ে যাওয়ার জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির সঙ্গে জেলা প্রশাসন মাঝেমধ্যেই বৈঠক করছে। জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, রাজ্য সরকারের নির্দেশে চলতি মাসেই জাফরাবাদে নতুন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক গড়ার কাজে হাত দেওয়া হবে। পাশাপাশি, রেজিনগর শিল্পতালুক জমজমাট করা হবে।
মুর্শিদাবাদের বহরমপুর এবং রেজিনগরে দু’টি শিল্পতালুক গড়া হলেও জঙ্গিপুর মহকুমার তেমন কোনও উপকার হয়নি। এখনও জেলার বড় এই মহকুমার বহু মানুষ কাজের খোঁজে ভিনরাজ্যে পাড়ি দেন। তাই সেখানেও একটি শিল্পতালুক গড়তে প্রশাসনকে জমি খোঁজার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইমতো জঙ্গিপুর মহকুমায় ৩৪নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে জেলা প্রশাসন বিশাল জমি চিহ্নিত করেছে। জানা গেছে, সামশেরগঞ্জ ব্লকের জাফরাবাদ মৌজায় ওই জমি অবিস্থিত। যার জেএল নম্বর-৮৯। দাগ নম্বর-১৫৮৭। এখানে প্রায় ১০ একর জমি আছে।
ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে জমিটি পরিদর্শন করেছে ছোট, ক্ষুদ্র, মাঝারি উদ্যোগ ও বস্ত্রবয়ন দফতর(এমএসএমই অ্যান্ড টি)। প্রস্তাবিত ওই প্রকল্পের জন্য জমি হস্তান্তর ও নির্মাণ কাজে হাত দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা খরচ করে সেখানে বিদ্যুৎ, রাস্তা, নিকাশি ও পানীয় জলের পরিকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক জানিয়েছেন, চলতি মাসেই প্রকল্প রূপায়নের কাজে হাত দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বিড়ি শিল্পের পাশাপাশি জঙ্গিপুর মহকুমায় ডাল ও খাদ্যশস্যের চাষাবাদ ভালো হয়। আম ও লিচুর ফলনও হয় ভালো। এই বিষয়গুলিকে মাথায় রেখে প্রস্তাবিত শিল্পতালুকে কী ধরনের শিল্প গড়া সম্ভব সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসন একটি রিপোর্ট দাখিল করেছে। জানা গেছে, ওই ১০ একর জমিতে ছোট, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ২০টি ইউনিট গড়া যাবে। তাতে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও প্লাস্টিকজাত শিল্প গড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে সরাসরি ২ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। এর বাইরে পরোক্ষভাবে আরও ১৩ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।
এদিকে, রেজিনগর শিল্পতালুকের পতিত জমিতে উদ্যোগপতিদের নিয়ে যেতে জেলা প্রশাসন দু’দিন আগে মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের সঙ্গে বৈঠক করেছে। মাঙ্গনপাড়া মৌজায় গড়ে ওঠা ওই শিল্পতালুকে প্রায় ১৮৭.৩০একর জমি আছে। ইতিমধ্যে সেখানে তিনতলা প্রশাসনিক ভবন, ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, কনফারেন্স হল, ক্যান্টিন গড়া হয়েছে। রাস্তা, বিদ্যুৎ ও নিকাশিরও সুব্যবস্থা করা হয়েছে। সংখ্যালঘু দফতরের হাট, বিদ্যুতের সাবস্টেশন প্রভৃতি তৈরির কাজও শেষ।