জানুয়ারী ২৪, ২০১৯
কারিগরি শিক্ষায় এগিয়ে বাংলা

দেশের যে কয়টি রাজ্যের সুসংহত দক্ষতা প্রশিক্ষণ নীতি আছে, বাংলা তার মধ্যে একটি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চালু হয়েছে ওয়েষ্ট বেঙ্গল স্কিল ডেভেলপমেন্ট মিশন। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ সোসাইটি ফর স্কিল ডেভেলপমেন্ট দক্ষতা প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত সব কর্মসূচির তদারকি করে।
উৎকর্ষ বাংলা
২০১৬ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারী ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্প শুরু হয়। এই প্রকল্পের আওতায় বছরে ৬ লক্ষ যুবাকে দক্ষতা বিকাশের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
পলিটেকনিক
২৮টি নতুন (পাঁচটি জঙ্গলমহলে) পলিটেকনিক নির্মাণ ও চালু করা হয়েছে।
১টি সরকারি অনুদান প্রাপ্ত পলিটেকনিক চালু হয়েছে ।
নির্মীয়মাণ পলিটেকনিকের সংখ্যা ১১।
২০১১ সাল থেকে সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিকের সংখ্যা বেড়েছে যথাক্রমে ৭৪ এবং ১৭৭ শতাংশ।
২০১১ সাল থেকে সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজে আসনসংখ্যা বেড়েছে যথাক্রমে ৫৫ এবং ১৯০ শতাংশ।
২৫টি মেয়েদের হোস্টেল তৈরী হয়েছে।
কমিউনিকেশন দক্ষতা বাড়াতে পলিটেকনিকগুলিতে ভাষা গবেষণাগার তৈরী হয়েছে।
নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার
৬৬টি সরকারি পলিটেকনিক কলেজে ২টি করে স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরী করা হচ্ছে।
৫০টি বিষয়ের জন্য ই-কনটেন্ট তৈরী করা হয়েছে। বাকি ১২০টি বিষয়ের জন্যও ই-কনটেন্ট তৈরী করা হচ্ছে।
সরকারি পলিটেকনিক কলেজগুলির পড়ুয়াদের জন্য নিরাপত্তা বীমা তৈরী করা হয়েছে।
আইআইটি বোম্বের সহযোগিতায় রোবোটিক্স বিভাগে ই-যন্ত্র প্রজেক্ট তৈরী করা হয়েছে।
১০টি সরকারি পলিটেকনিক কলেজ, রামকৃষ্ণ মিশন, বেলুর মঠে এমবেডেড সিস্টেমস ও রোবটিক্স বিষয়ে প্রজেক্ট ভিত্তিক শিক্ষার জন্য ই-যন্ত্র গবেষণাগার তৈরী করা হচ্ছে। এর ফলে বাড়বে কর্মযোগ্যতা।
জাতীয় স্তরে রোবটিক্সের ক্ষেত্রে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের দক্ষতা সবসময় প্রশংসনীয় এবং রাজ্যের পলিটেকনিকগুলি কুড়িয়েছে প্রশংসা।
গত দু বছরে এপিসি পলিটেকনিকে টাটা ষ্টীল বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচী চালিয়েছে। রোবটিক্সের ওপর এটি একটি নোডাল প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করছে।
আইটিআই
১১ই জুন ২০১১র আগে পর্যন্ত আইটিআইএর অবস্থাঃ ৩৪১টি ব্লকের মধ্যে ৩৯টি ব্লকে আইটিআই ছিল।
মোট চালু আইটিআইএর সংখ্যা ছিল ৮১ (সরকারি-৫৩, বেসরকারি-২৮)
আসন সংখ্যা ছিল ১৭৬৩৬ (সরকারি-১৪৫৮৮, বেসরকারি-৩০৪৮)
এই মুহূর্তে আইটিআইএর অবস্থাঃ ৩৪১টি ব্লকের মধ্যে ১৫০টি ব্লকে আইটিআই ছিল। মোট চালু আইটিআইএর সংখ্যা ২৬২ (সরকারি-৫৩, পিটিপি-৭৫, বেসরকারি-১৩৪), আসন সংখ্যা ৭১৩৭৯ (সরকারি-১৯২৮৫, পিটিপি-২৭৬৪৯, বেসরকারি-২৪৪৪৫)
৫৩টি সরকারি আইটিআইতে পূর্ত দপ্তরের মাধ্যমে পরিকাঠামো উন্নয়ন করা হয়েছে।
টালিগঞ্জের আইটিআই কলেজে অটোমোবাইলের ওপর উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার মারুতির সুজুকির সঙ্গে মৌ স্বাক্ষর করেছে। এছাড়াও টালিগঞ্জের আইটিআই কলেজে ২০১৬ সালের আগস্ট মাস থেকে মারুতি সুজুকির সহায়তায় সিটিএসের সাহায্যে দুটি কোর্স চালু করা হয়েছে। কোর্স দুটি হল, মেকানিক অটো বডি রিপেয়ার এবং মেকানিক অটো বডি পেন্টিং।
প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের সাম্প্রতিকতম ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পূর্ব চুক্তি অনুযায়ী সহযোগিতা করছে স্যামসং। চারটি টেক ল্যাব তৈরীতে (ডব্লুআইটিআই কলকাতা, আইটিআই কল্যাণী, আইটিআই হাওড়া হোমস এবং ডব্লুআইটিআই বর্ধমান)। এখনও পর্যন্ত তিন বছরে ৪২৫জন পড়ুয়া প্রশিক্ষণ পেয়েছে। এই ৪২৫ জনের মধ্যে ২৬৫জন স্যামসং-এ কর্মরত।
৪৯টি সরকারি আইটিআইতে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে ওয়াইফাই এবং ল্যানের মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার।
২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের অখিল ভারতীয় দক্ষতা প্রতিযোগিতায় রাজ্য পেয়েছে সেরার তকমা। এছাড়া, রাজ্য প্রথম বার ২০১৩ সালে এবং ২০১৪ সালেও সেরার তকমা পায়।
ভর্তির টাকা ও রেজিস্ট্রেশনের টাকায় কন্যাশ্রীতে অন্তর্ভুক্ত মেয়েদের ৫০শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে।
সরকারি অনুমোদনে ৪২টি সরকারি আইটিআইতে ২টি করে শ্রেণী কক্ষকে স্মার্ট ক্লাসরুমে রূপান্তরিত করা হচ্ছে।
আয়রন ও ষ্টীল ক্ষেত্রের জন্য পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর আইটিআইকে মডেল আইটিআইতে উন্নীত করার জন্য বাছা হয়েছে।
আইটিআই থেকে পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের ও নতুন শিক্ষানবীশদের এপ্রেন্টিস প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এনএপিএস প্রকল্পের অধীনে ভাতা প্রাপক পড়ুয়াদের তাদের প্রশিক্ষণের খরচের ২৫ শতাংশ ফেরত দেওয়া হয়। এই মুহূর্তে এই প্রকল্পের অধীনে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৯,৫৬৯ (আইটিআই পাশ করা – ১০,৬৩৮)।