সাম্প্রতিক খবর

জানুয়ারী ১১, ২০১৯

অমিত শাহকে বাংলা থেকে লড়ার চ্যালেঞ্জ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

অমিত শাহকে বাংলা থেকে লড়ার চ্যালেঞ্জ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

আজ উত্তর কলকাতার শ্যামবাজারে এক জনসভায় বক্তব্য রাখেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সভামঞ্চ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। তিনি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন বাংলার যে কোনও একটা আসনে লড়তে। ওনার হারার দায়িত্ব অভিষেক নিজে নিলেন।

১৯৯৭ সালে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরী হওয়ার প্রাক্কালে ২৯শে ডিসেম্বর শ্যামবাজারে একটি সভা করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে অনেক জনসভা এখানে করা হয়েছিল। এই জায়গা প্রতিবাদের জায়গা। এখানে জনসভা করার পর তৃণমূল কংগ্রেসকে কেউ কখনও রুখতে পারেনি। এমনটাই বলেন তৃণমূলের যুবনেতা।

অভিষেকের বক্তব্যের কিছু অংশ:

আজও আমরা এমন এক সন্ধিক্ষণে প্রবেশ করেছি যেখানে ভারতবর্ষে স্বৈরতান্ত্রিক কিছু শক্তি এবং কিছু একনায়কতন্ত্রের কিছু নায়ক ভারতবর্ষকে বিক্রী করে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করছে। একমাত্র রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেস বশ্যতা স্বীকার না করে প্রতিবাদ করেছে। বিজেপির একাধিক জনবিরোধী প্রকল্পের বিরুদ্ধে আমরা ধারাবাহিক ভাবে লড়াই করেছি, সে এই রাজ্যে হোক বা ভিন রাজ্যে, সে সংসদের ভিতরে হোক বা সংসদের বাইরে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া দিকনির্দেশিকা আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি।

আমাদের নেত্রী ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে ২০১৮ সালের ২১শে জুলাই ব্রিগেড চলোর ডাক দিয়েছিলেন। আগামী ১৯শে জানুয়ারি সেই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য ব্রিগেড চলোর সঙ্গে এই আসন্ন ব্রিগেড চলোর একটা আলাদা তাৎপর্য আছে। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শেষ ব্রিগেড চলো সমাবেশ করেছিলাম ২০১৪ সালের ৩০শে জানুয়ারি দুর্নীতিগ্রস্থ কংগ্রেস, অপদার্থ সিপিএম এবং সাম্প্রদায়িক বিজেপির বিরুদ্ধে। ফলস্বরূপ বাংলার মানুষ দুহাত তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করে ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৩৪টি আসনে জয়লাভ করিয়েছিল।

আমরা এমন একটি সময়ে এই ব্রিগেড চলোর সমাবেশ ডেকেছি সেখানে শুধু তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বস্তরের নেতা নন, ভারতবর্ষের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলের নেতা, মুখ্যমন্ত্রীরা এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্তিশালী করার জন্য অঙ্গীকার বদ্ধ হবেন। এর একটা কারণ আছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগে বাংলার যেমন ১০ কোটি মানুষের নয়নের মণি ছিলেন, তৃনমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী ছিলেন, আমাদের সবার শ্রদ্ধেয়া নেত্রী, আজকে ২০১৯-র দোরগোড়ায় আমরা দাঁড়িয়ে একটা জিনিস আমরা উপলব্ধি করেছি যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ শুধুমাত্র বাংলার নয় সমগ্র ভারতবর্ষের ১৩০ কোটি মানুষের আগামীদিনের মুক্তিসূর্য এবং দেশনেত্রীতে পরিণত হয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা শুনতে আজকে আমরা যেমন পৌছাবো, দেশের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, মুখ্যমন্ত্রী এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্তশালী করার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হবে।

এই ব্রিগেডের সমাবেশে যেমন আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসবেন, আবার সমাজবাদী পার্টির উত্তরপ্রদেশের অখিলেশ যাদবেরা আসবেন। এই ব্রিগেডের সমাবেশে যশবন্ত সিনহা আসবেন, শত্রুগণ সিনহা আসবেন, মহারাষ্ট্রের এন সি পি র শরদ পাওয়ার আসবেন, সুদূর জন্মু কাশ্মীরের ওমর আবদুল্লা, ফারুক আবদুল্লা আসবেন, তেমনি এই সমাবেশে তেজস্বী যাদব আসবেন, রাম জেঠ মালানি আসবেন, শরদ যাদব আসবেন, এবং তামিলনাড়ুর ডিএমকের এমকে স্ট্যালিনও আসবেন। অর্থাৎ জম্মু কাশ্মীর থেকে তামিল নাড়ু, কণ্যাকুমারি থেকে কাশ্মীর, একটাই আওয়াজ উঠেছে যে মমতাজি তুম আগে বাড়ো, হাম তুমহারে সাথ হ্যায়। এটাই আগামীদিনে আমাদের পাথেয় করে চলতে হবে।

আমরা আর যাই হোক বিজেপি-র কাছে মাথা নত করব না। আমরা এমন একটা সময়ে এখানে, ব্রিগেড চলো-র ডাক দিয়েছে আমাদের নেত্রী এবং আমরা সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্ঘঠিত করে, ঐক্যবদ্ধ করে আমরা আন্দোলনের রাস্তায় পথে নেমেছি,কুচবিহার থেকে শুরু করা কাকদ্বীপ, সর্বত্র আমি সভা করেছি, সর্বত্র মানুষের ঢল চোখে পড়ার মত।

আমি কথা দিতে পারি আমাদের নেত্রী, সেই ২১-এ জুলায়-র সভামঞ্চ থেকে ৪২-এ ৪২-এর ডাক দিয়েছিলেন, আগামীদিন ভারতীয় জনতা পার্টি একটাও সিট বাংলায় পাবে না, এটা আপনারা সুনিশ্চিত করুন। তৃনমূল কংগ্রেস ৪২টা পেয়ে বাজিমাৎ করবে আর বিরোধীরা কুপোকাৎ হবে।

আশি বছর আগে একজন বাংলায় সন্তান বলেছিলেন “দিল্লি চলো”। আশি বছর পরে আবার এক বাঙালি “দিল্লি চলো” ডাক দিয়েছেন। আশি বছর আগের বাঙালির বাসভবন ছিল দক্ষিণ কলকাতা, আশি বছর পরের বাঙালির বাসভবনও দক্ষিণ কলকাতা। আশি বছর আগের বাঙালি কোনওদিন আত্মসমর্পণ করেননি। আশি বছর পরের বাঙালিও কোনওদিন আত্মসমর্পণ করেননি। আশি বছর আগের বাঙালি কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন, আশি বছর পরের বাঙালিও কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরী করেছেন। আসুন আমরা সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ হই আমাদের দেশনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দিল্লিতে একটা ধর্মনিরপেক্ষ সরকার তৈরী করে বাংলাকে এগিয়ে দিই। বাংলাকে আগামীদিন চালকের পথে বসিয়ে সসম্মানিত করে আগামীদিন একটা প্রগতিশীল সরকার বাংলার মাটিতে দেশের মাটিতে প্রতিষ্ঠা করব।

আমরা মৃত্যু বরণ করতে রাজি আছি কিন্তু মাথানত করে আত্মসমর্পণ করব না। এটা আমাদের নেত্রী আমাদের শিখিয়েছে। বাংলার কোন প্রান্তে বিজেপির সাম্প্রদায়িক অসুরগুলো আগুন লাগাতে পারে নি, অশান্ত করতে পারে নি, শান্ত বাংলাকে অশান্ত করতে গিয়ে বারে বারে মুখ থুবড়ে পড়েছে।

আমাদের নেত্রী আমাদের শিখিয়েছে যে নিশ্চিত ভাবে আমরা ধর্ম করব, কিন্তু ধর্ম আর উন্নয়ন, ধর্ম আর রাজনীতি এক নয়। আমরা সিপিএম-এর মত নাস্তিক নই, আর বিজেপির মত ধর্ম বিক্রী করে আমাদের রাজনীতি করতে হয় না। আমি একজন বাঙালী, আমি একজন হিন্দু, আম একজন ভারতীয়, আমি নিওশ্চিত ভাবে আমার ধর্ম করব, সকালে উঠে সুর্য নমস্কার করব,আমি দেব-দেবীর পুজো করব, মা কালীর আরাধণা করব, আমি গায়ত্রী মন্ত্র জপ করব। আমি হিন্দু হলে বাড়িতে পুজো করব। আমি ইসলামে বিশ্বাসী হলে মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে পাঁচবার নামাজ পড়ব। আমি যদি খ্রীষ্টান হই, তাহলে প্রভুর কাছে প্রার্থনা করব। আমি যদি বৌদ্ধ হই, তাহলে বৌদ্ধ ধর্মের প্রধান গৌতম বুদ্ধের কাছে আরাধনা করব। আমি যদি শিখ হই, তাহলে গুরুদ্বারে যাব। আমি যখন মানুষের ভোটে নির্বাচিত তখন আমার একটাই ধর্ম – মানব ধর্ম। কে উন্নয়ন পাচ্ছে, কে গীতাঞ্জলি পাচ্ছে, কে কন্যাশ্রী পাচ্ছে, কে যুবশ্রী পাচ্ছে, কোথায় রাস্তা হয়েছে, কোথায় লাইট লেগেছে, কোথায় কলেজ হয়েছে, কে বিধবা ভাতা পাচ্ছে আমাকে সেটাই লক্ষ্য রাখতে হবে।

ধর্মের ভিত্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস রাজনীতি করেনা। যারা ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করতে চায় তাদেরকে বলে রাখি এটা উত্তরপ্রদেশ নয়, এটা মধ্য প্রদেশ নয়, এটা গুজরাট বা রাজস্থান নয়, এটা বাংলা। যে ফ্লাইটে আসবে, ভোকাট্টা করে, গোহারা করে, পরের ফ্লাইটে দিল্লী পাঠিয়ে দেব। কোনও অস্তিত্ব এই বাংলার মাটিতে থাকবেনা।

শুধু হুঙ্কার আর বড় বড় কথা। কোনওদিন মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। হঠাৎ করে গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা। দিল্লী থেকে নাকি রথ বার করবে। রথ নয়, দেখতে বাসের মত, আর বলছে রথ। গাধাকে দেখিয়ে বলছে ঘোড়া, একটা সাত তারা বিলাসবহুল বাস নিয়ে এসে বলছে এটাই হচ্ছে রথ। আমি হিন্দু। আমার বাবা হিন্দু, আমার মা হিন্দু। আমি তো শ্রাবণ মাসের রথ জানি। ২০৬ টা কাঠের টুকরো দিয়ে রথ তৈরী হয়। সেই রথে দড়ি থাকে, কাঠ থাকে, দেব থাকে, দেবী থাকে, আমরা সেই রথের দড়ি টানি। আমি তো বলরামের রথ জানি। আমি তো শুভদ্রার রথ জানি। আমি তো মহাপ্রভূ চৈতন্যের রথ জানি। শ্রী কৃষ্ণের রথ জানি, আমি তো গোপালের রথ জানি। এ রথ কোন রথ? যে রথে রান্না করা যায়, যে রথে ফূর্তি করা যায়, যে রথে গল্প করা যায়, যে রথে স্নান করা যায়, যে রথে ছাইপাশ খাওয়া যায়, যাবে, যে রথে মল ত্যাগ করা যায়। যে রথে মুত্র ত্যাগ করা যায়, এ রথ কোন রথ? দিলীপ বাবুর কাছে আমাদের এই প্রশ্ন থাকল। আজকে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ের সভা থেকে এই প্রশ্ন রাখলাম।

তারা বলেছিল আচ্ছে দিন আসবে। লবডঙ্কা। তারা বাংলাকে দশ পয়সা দিয়ে সাহায্য করেনি। আমাদের রাজ্য সরকার টাকা দেবে আর প্রধানমন্ত্রী বলছে কেন্দ্রের নামে প্রকল্প করতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বাংলা ছাড়া ভারতবর্ষের আরও ২৮ টি রাজ্য আছে সেগুলো অর্থের বিনিময়ে গেরুয়া হতে পারে। বাংলা কোনওদিন অর্থের বিনিময়ে গেরুয়া হবেনা। তোমাদের টাকাও লাগবে না, তোমাদের নামও আমরা দেব না। গতকাল আমাদের নেত্রী কৃষ্ণনগর থেকে বলেছেন যে আয়ুষ্মান ভারতের ৪০ শতাংশ টাকা রাজ্য সরকার দেবে আর প্রধানমন্ত্রী বাড়িতে বাড়িতে চিঠি পাঠিয়ে বলছে সেটা নাকি কেন্দ্র সরকারের প্রকল্প। এটা কখনও হতে পারেনা।

কেন্দ্রের সরকার ২০ শতাংশ টাকা দেবে ফসল বীমা যোজনায় আর ৮০ শতাংশ টাকা দেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আর বলছে ওদের নামে প্রকল্প করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা ৫০ শতাংশেরও বেশী টাকা দেবে রাজ্য সরকার আর বাকি টাকা দেবে কেন্দ্র তাই প্রধানমন্ত্রীর নামে প্রকল্প করতে হবে। আমরা বলেছি হবে না। বাংলা আবাস যোজনা হবে। বাংলা গ্রামীন সড়ক যোজনা হবে। যা হবে বাংলার নামে হবে। দিল্লীর নামে কোনও প্রকল্প আমরা করতে রাজি নই। এটা অভূতপূর্ব। ভারতবর্ষের মাটিতে কোনওদিন কেউ করে দেখাতে পারেনি।

যত রাজনৈতিক দল আছে তাদের ইডি আর সিবিআই দেখিয়ে চুপ করিয়ে দিয়েছে। আর বাকি গুলোকে কোনও না কোনও ভাবে চাপে রেখেছে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস সেরকম দল নয়। তৃণমূল কংগ্রেসকে তুমি যত ধমকাবে, যত চমকাবে, যত চোখ রাঙাবে, যত আঘাত করবে, যত প্রহার করবে সেই দল তত শক্তিশালী আর বলিষ্ঠ হবে।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বলেছিলেন, “তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব।” ভারতীয় জনতা পার্টির অসুররা কী বলছে? রাহুল সিনহা কী বলছে?অমিত শাহ কী বলছে? ,”তুমি আমাকে গদি দাও আমি তোমাকে রক্তস্নাত নদী দেব”। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বলছেন? “হে বাংলা বীরযোদ্ধা মা মাটি মানুষ, তুমি আমাকে ৪২শে ৪২ দাও, আগামীদিন দিল্লির বুকে নতুন প্রগতিশীল শান্তিপ্রিয় ধর্মনিরপেক্ষ ভারতবর্ষ ভারতবর্ষের মানুষকে আমি দেব”। এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের কথা অনুসরণ করেই আগামীদিন চলব। এবং আমাদের শপথ নিতে হবে শুধু উত্তর কলকাতা-দক্ষিণ কলকাতা মিলে আগামীদিন ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড আমরা একই ভরিয়ে দেব। এটাই আজকে আমাদের শপথ হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ব্রিগেড চলো সমাবেশের ডাক দিয়েছেন, এমনিতেই দেখেছেন সরকারের শেষের শুরু হয়ে গেছে। যেখানে নির্বাচন লড়ছে সেখানেই হারছে। আর কথায় আছে না- ঠেলায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না। আজকে প্রমাণিত ভারতীয় জনতা পার্টি যত হেরেছে, যত মুখ থুবড়ে পড়েছে পেট্রোলের দাম তত কমেছে। ভারতীয় জনতা পার্টি যত হেরেছে, ডিজেলের দাম তত কমেছে। ভারতীয় জনতা পার্টি যত হেরেছে, রান্নার গ্যাসের দাম কমেছে। ভারতীয় জনতা পার্টি যত হেরেছে, জিএসটি মধ্যবিত্তের নাগালে এসেছে। আগামীদিন ভারতীয় জনতা পার্টিকে নিঃস্ব করুন, শূন্য করুন দেখবেন জিএসটিও আপনার নাগালে থাকবে, পেট্রলও আপনার নাগালে থাকবে।

আজ অহংকার এদের এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছিল মানুষকে মানুষ বলে কোনওদিন মনে করত না। আমি তো বলেছিলাম ডুমুরজলার মাঠে ২০১৯ বিজেপি ফিনিশ, তার আগেই ভারতীয় জনতা পার্টি নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের দোল ভোকাট্টা হয়ে গেছে।

আজকে অমিত শাহ সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছে “আমরা বাংলায় আসছি, আমাদের প্রস্তুতি হয়ে গেছে “। এখানে সংবাদমাধমের বন্ধুরা আছে , আমি বলতে চাই গতকাল সিবিআই ডিরেক্টরদের সরিয়ে সাংবাদিক বৈঠক আজকে করতে হল কেন? বাপেরবেটা হলে যতক্ষল করলে না কেন? আলোক ভর্মা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন তোমাদের এই হুঙ্কার কোথায় ছিল? আলোক ভর্মাকে আজকে সরিয়ে বলছ বাংলায় আসার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে?

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহান নেত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে বলব আপনার মাঠে নামার দরকার নেই অমিত শাহের যদি ক্ষমতা থাকে সাংবাদিক বৈঠক করে বলুক বাংলার ৪২ এর মধ্যে কোন আসনে দাঁড়াবে তাজটাকে হারানোর দায়িত্বটা আমি এক কাঁধে নিয়ে নিচ্ছি, ক্ষমতা থাকলে বল। সাংবাদিক বৈঠক করে দুটো আগাছাকে নিয়ে তৃণমূলের আবর্জনা বিজেপির রত্ন। আমরা যে আবর্জনাগুলো ছুঁড়ে ছুঁড়ে ভ্যাটে ফেলি, ওরা কুড়িয়ে কুড়িয়ে সেই রত্ন গুলো মাথায় লাগে। এই হচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

আপনার বাড়ির বাইরে যদি ভ্যাট থাকে, ডাস্টবিন থাকে বড় করে স্টিকার লাগান- বিজেপি : ভারতীয় জঞ্জাল পার্টি। এই জঞ্জাল আগাছাগুলো কে ঝেটিয়ে বিদেয় করে ভারতবর্ষ থেকে সর্বশান্ত করে এক ধর্মনিরপেক্ষ সরকার আমাদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গামিদিন প্রতিষ্ঠা করার শপথ আজকে এই শ্যামবাজারের পবিত্র মাটি থেকে নিতে হবে।

তারা বলছে কী আমরা এই করব আমরা সেই করব? কিচ্ছু করেনি। আমার পরিসংখ্যান যদি মিথ্যে হয়,আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা করুক বাপের বেটা ও বুকের পাটা থাকলে আমার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে আমাকে জেলে ঢুকিয়ে দেখাও কে সত্যি কথা বলছে, কে মিথ্যে কথা বলছে।

আমাদের নেত্রী ৩১শে ডিসেম্বর ২০১৮ সালে ঘোষণা করলেন ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্প অর্থাৎ আমি যদি একজন কৃষক হই আমার পরিবারের কেউ কৃষির সাথে জড়িত থাকে তাহলে আমাদের সরকার একটা নতুন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যা যে আপনার যদি আঠারো বছর থেকে ষাট বছরের মধ্যে আপনার স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে, তাহলে আপনার পরিবারের সদস্যদের মা-মাটি-মানুষের সরকার দু’লক্ষ টাকা চেক তুলে দেবে।

আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজের প্রচার করেছে, ৫,২৭৮ কোটি টাকা খরচা করেছে। লোকসভাতে রাজ্যবর্ধন রাঠোর লিখিত রিপ্লাইতে জানিয়েছেন যে আমাদের সরকার গত সাড়ে চার বছরে ৫,২৭৮ কোটি টাকা শুধুমাত্র নিজের প্রচার করতে খরচা করেছেন। গুজরাটে মূর্তি করেছে তিন হাজার কোটি টাকা খরচ করে। নিজে বিদেশ ভ্রমণ করেছেন ২ হাজার কোটি টাকা খরচ করে। অর্থাৎ ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে নেট রেজাল্ট কি? শূণ্য। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে অ্যাসুওরেন্স স্কিম, কৃষক বন্ধু প্রকল্প চালু করেছেন। এটাই হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর নরেন্দ্র মোদি সরকারের মধ্যে পার্থক্য।

আজকে সিপিএম নিঃস্ব, কংগ্রেস নিঃস্ব। এরা ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে আত্বসমর্পন করেছে। ত্রিপুরায় সিপিএম বিক্রি হয়ে গেছে ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে, কিন্তু আমরা মাথানত করিনি। কংগ্রেস কোনওদিন প্রতিবাদে নামছে না। সিপিএম নামছে না, অন্য রাজনৈতিক দল নামেনি। একাধিক জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে , ডিজেলের দাম বৃদ্ধি হোক, পেট্রোলের দাম বৃদ্ধি হোক, এফ আর ডি আই হোক, জি এস টি হোক, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কর্মীরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করে মানুষের অধিকার আদায় করে নিয়ে এসেছে দিল্লীর বুক থেকে, এটাই আমাদের গর্ব।

আমরা বলেছি আমাদের ৩৪-টা আসন র‍য়েছে, আপনারা মাথায় রাখবেন ৩৪ টা আসনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতিয়েছিলেন বলে নরেন্দ্র মোদির সরকার হাজার চেষ্টা করে এফআরডিআই বিল ভারতবর্ষের বুকে কার্যকরী করতে পারেনি। আমরা যদি ৪২-এ ৪২ হতাম জিএসটিও করতে দিতাম না। নোটবন্দিও করতে দিতাম না। আজকে নোটবন্দি করেছে , নোট বদল করেছে ২০১৬ সালে, ২০১৭ সালে জিএসটি অর্থাৎ ট্যাক্স বদল, ১৮ সালে মানুষকে নজরবন্দি করার জন্য আইন বদল, আর ঊনিশে মানুষ প্রধানমন্ত্রী বদল করবে, এদেরকে যোগ্য জবাব কড়ায় গন্ডায় দেবে এই বিশ্বাস আমি করি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে পথ আমাদের দেখিয়েছেন সেই পথ আমরা অনুসরণ করে আগামীদিন পথ চলার পাথেয় করে নেত্রীর আদর্শ এবং সংগ্রামীকে মেনে আমরা সেই পথেই চলব।

আমরা বৈচিত্রের মধ্যে একতার কথায় আমরা বিশ্বাস করি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে করেছেন, আজকে ভারতবর্ষের বুকে সেই কাজ কেউ করে দেখাতে পারেন নি। ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী কি বলত? আমি চা বিক্রি করে ক্ষমতায় এসেছি। আমরা নরেন্দ্র মোদিকে রেল স্টেশনে কেটলি হাতে কোনওদিন চা বিক্রি করতে দেখিনি। কিন্তু আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ৭ বছর হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, আজও তিনি ১০০ টাকার হাওয়াই, আর ৩০০ টাকার শাড়ি পরে টালির ছাদের ঘরে বাস করে ১০ কোটি ,মানুষের জীবনের উন্নয়নের ধারা পরিচালনা করতে দেখিছি। আমি সিদ্ধান্ত শংকর রায়ের মত আমি জ্যোতি বাবুর মত পার্টটাইম মুখ্যমন্ত্রীর কথা কোনওদিন বলছিনা। প্রফুল্ল ঘোষ, প্রফুল্ল সেন, অজয় মুখোপাধ্যায়ের মত ফুল টাইম মুখ্যমন্ত্রীদের কোনোদিন আচমকা হাসপাতাল পরিদর্শন করতে কোনওদিন দেখিনি। কোনওদিন গ্রামে গ্রামে অঞ্চলে অঞ্চলে ব্লকে ব্লকে পাড়ায় পাড়ায় এসডিও, ওসি, ডি এম, এস পি সংশ্লিষ্ট দফতরের উন্নয়ন পরিদর্শন করতে দেখিনি।

আজকে এই সভা থেকে আমরা শপথ নেব, ২০১৯ বিজেপি ফিনিস। বিজেপি হঠাও দেশ বাঁচাও।

যত কুৎসা করবি, তত গোল্লায় ঢুকবি।

দেখবি আর জ্বলবি, লুচির মত ফুলবি।

অনেক হয়েছে মোদি, ছাড়ো এবার গদি।

তৃণমূল কংগ্রেস আসছে তেড়ে, পালাবে বিজেপি দিল্লি ছেড়ে।

ডাক দিয়েছে মমতা, ব্রিগেড চলো জনতা।

১৯ তারিখ আওয়াজ তোলো, দলে দলে ব্রিগেড চলো।

পায়ে পায়ে উড়িয়ে ধুলো, ১৯ তারিখ ব্রিগেড চলো।

ছাত্র-যুব আওয়াজ তোলো, ১৯শে জানুয়ারি ব্রিগেড চলো।

শ্রমিক-কৃষক আওয়াজ তোলো, ১৯শে জানুয়ারি ব্রিগেড চলো।

নরেন্দ্র মোদিকে উপড়ে ফেলো, ১৯ তারিখ ব্রিগেড চলো।

সাম্প্রদায়িক বিজেপিকে উপড়ে ফেলো, দলে দলে ব্রিগেড চলো।

আপনারা সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। জয় হিন্দ, বন্দেমাতরম।