ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯
আমরা সব উৎসব নিজেদের উৎসব হিসেবে পালন করিঃ কলকাতা ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনে দিদি

আজ নবম কলকাতা ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসেই এই উৎসবের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই উৎসব চলবে আগামী ৩০শে ডিসেম্বর পর্যন্ত।
রাস্তাঘাট ক্রিসমাসের আলোয় সজ্জিত করা হয়েছে। উৎসবে আগত অতিথিদের জন্য থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাথে কলকাতার বিভিন্ন চার্চ থেকে ক্যারোল শিল্পী, ব্যান্ড, কয়ের শিল্পীরাও অংশগ্রহণ করবেন।
আলোকসজ্জা এবং শিল্পীদের সঙ্গীত ছাড়াও থাকবে রকমারি খাবারের স্টল। কেক, ভিন্ডালু, ইয়েলো কোকোনাট রাইস, গোয়ান সরপোতেল, ফ্র্যাগন্যান্ট, পিপিঙ্গের বিরিয়ানির স্বাদ নিতে পারবেন সাধারণ মানুষ।
ওনার বক্তব্যের কিছু অংশঃ
ক্রিসমাস সারা পৃথিবীতে পালন করা হয়। আমরা এটা পালন করতে ভালোবাসি। শুধুমাত্র খ্রীষ্টান ভাইবোন নয়, ভারতসহ সারা পৃথিবীর মানুষকে শুভেচ্ছা জানাই। বড়দিন পবিত্র দিন। মনটাতে খুব শান্তি থাকে। আমার অনেক সহকর্মীরাও চার্চে যান। বাংলার সৌন্দর্য এটাই যে সমস্ত ধর্ম ও উৎসব এখানে পালন করা হয়। আমরা এখানে জাতি, সম্প্রদায় বা ধর্ম নিয়ে ভাগাগাগি হয়না। আমরা বিশ্বাস করি এই দেশ সব ধর্ম, বর্ণ, জাতির।
আমি মনে করি এই পৃথিবীটা একটা ছোট্ট পরিবার। আমরা এই পৃথিবীতে কিছু দিনের জন্য এসেছি তাই কেন আমরা ডিভাইড অ্যান্ড রুল পিলিসি করব? কেন সেখানে হিংসা থাকবে? কেন ঘৃণার রাজনীতি থাকবে? আমি এটা সমর্থন করি না।
আমি আমার জীবন দিতে পারি কিন্তু এই ঘৃণ্য রাজনীতির কাছে মাথানত করব না।
প্রভু যীশুর জন্মদিন ছুটির দিন ছিল সেটা কেন্দ্রীয় সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের প্রশ্ন এটা কেন হবে? নিউ ইয়ারেও রাজ্যসরকারের ছুটি আছে কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এটাও বন্ধ করে দিয়েছে।
আমার খুব খারাপ লাগে যখন কেউ ভাবে আজ আমি আছি কাল আমার ঠিকানাটা থাকবে তো। অস্তিত্বের ঠিকানা কাউকে আমরা বিসর্জন হতে দেব না, অস্তিত্বের ঠিকানা সবার জন্মগত অধিকার।
এটা গণতান্ত্রিক বৃহত্তম দেশ, আমাদের একে অপরকে প্রয়োজন। এখানে আমরা সবাই একসাথে থাকব। আমরা চাই ঐক্যবদ্ধ ভারত। আমরা চাই ঐক্যবদ্ধ বাংলা।
আমি গর্বিত এটা আমার মাতৃভূমি। সবাই তাদের মাতৃভূমিতে থাকার অধিকার আছে। এই মাটিতে থাকার অধিকার সবার আছে। যদি কেউ মনে করেন অ্যাংলো ইন্ডিয়ানদের এখান থেকে তুলে দেব, অ্যাংলো ইন্ডিয়ান এমপি তুলে দেব, এটা করে খ্রীষ্টানদের বাদ দেওয়া যাবে তো?
কখনও মুসলিম বাদ দিচ্ছেন কখনও খ্রীষ্টান বাদ দিচ্ছেন কখনও আম্বেদকর বাদ দিচ্ছেন, সবটা বাদ দেওয়া যায় কি? তুলে দিন এমপি সিট, ডেরেক ও’ব্রায়েন নিজে আপনাদের থেকে কোনও সাহায্য নেবে না। ও আমাদের এমপি আমাদের নির্বাচিত এমপি। কি করে ওকে থামাবেন?
আমার সকল খ্রীষ্টান ভাইবোনেদের খ্রীষ্টমাসের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। মুসলিম ভাইবোন, হিন্দু ভাইবোন, পাঞ্জাবি ভাইবোনকে খ্রীষ্টমাসের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
বড়দিন শুধুমাত্র একজনের নয় এটা আমাদের সবার। এই বড়দিনে সবাই ভালোভাবে, শান্তিতে, সুন্দরভাবে থাকুন। প্রভু যীশু বাইবেলে যেসমস্ত কথা বলেছেন সেগুলোকে মনে রেখে আমরা আলোর পথে এগিয়ে যাব।