সাম্প্রতিক খবর

ডিসেম্বর ৯, ২০১৯

কেউ ফেট্টি পরে ভাগাভাগি করতে এলে, তাদের বুঝিয়ে দিন বাংলার একতার সভ্যতাঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

কেউ ফেট্টি পরে ভাগাভাগি করতে এলে, তাদের বুঝিয়ে দিন বাংলার একতার সভ্যতাঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ খড়গপুরে এক জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি সেখানকার উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীকে বিপুল জনসমর্থনে জয়যুক্ত করানোর জন্য সকল খড়গপুরবাসীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি। খড়গপুর তথা মেদিনীপুর জেলা ও রাজ্যের জন্য বর্তমান সরকার গত আট বছরে যে উন্নয়ন করেছে, তার অল্প খতিয়ান তুলে ধরেন তিনি। দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও কেন্দ্রীয় সরকারের সব সংস্থাকে বেসরকারিকরণ নিয়ে সোচ্চার হন তিনি।

তিনি বলেন, আগামীদিন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি আসছে। রেলকে বেচে দিচ্ছে। বেঙ্গল ক্যামিক্যাল, এয়ার ইন্ডিয়া বেসরকারীকরণ করা হচ্ছে। ব্যাঙ্ক মার্জার করা হয়েছে ১ লাখ টাকা রাখলেও সেই টাকা পাবেন তার কোনও গ্যারিন্টি নেই।

অন্যদিকে বাংলার সাম্প্রতিক কিছু কৃতিত্ব তিনি তুলে ধরেন। দারিদ্র দূরীকরণে ভারতের মধ্যে বাংলা এক নম্বরে। এটা আমরা গর্ব  করে বলি। সারা দেশে যখন ৪০% বেকারত্ব বেড়েছে তখন বাংলায় ৪০% বেকারত্ব কমিয়ে দিয়েছি। ব্যবসার সহজিকরনে বাংলা সেরা, কৃষকদের আয় তিন গুণ বেড়েছে বাংলায় এটা আমদের গর্বের।

কৃষকদের সহায়তার বিষয়ে তিনি বলেন, স্পেশ্যাল ক্যাম্প করে কৃষক বন্ধুদের বিনামূল্যে  জমির মিউটেশন করিয়ে দেওয়া হবে, কৃষি জমিতে খাজনা দিতে হয়না। কৃষক বন্ধু স্কিমে ৬০ বছরে মধ্যে কেউ মারা গেলে তাকে ২লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। শস্যবীমায় ৭০০ কোটি টাকা বছরে প্রিমিয়াম দেয় রাজ্য সরকার। বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের সরকার সাহায্য করেছে।

সম্প্রতি জমির স্থায়িকরনের সিদ্ধান্তের ফলে খড়গপুরের ১ লক্ষের বেশী মানুষকে যাদের কোনও জমির অধিকার ছিল না, তাদের জমির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।

অন্যান্য ক্ষেত্রের শ্রমিকদের বিষয়ে রাজ্য সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে, সেকথাও তিনি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা যোজনা আছে। ৬০ বছর বয়স হলে আপনি ২ লক্ষ টাকা পেতে পারেন।

খড়গপুরবাসীদের খুশীর খবর জানিয়ে তিনি বলেন, খড়গপুরে আগামী ২০২০এর মার্চের মধ্যে আইসিসিইউ হসপিটাল চালু হয়ে যাবে। ইউথ অ্যান্ড স্পোর্টস-এর তরফ থেকে আরো ৫ কোটি টাকা দেওয়া হবে স্টেডিয়ামের গ্যালারি তৈরী করার জন্য। খড়গপুরে যাওয়া জন্য পিডব্লুডিকে বলেছি নতুন রাস্তা তৈরী করার জন্য। 

খড়গপুরকে ৫ কোটি টাকা করে দেওয়া হবে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টের জন্য, যেখানে মিটিং করা যাবে।  এখানে সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। এটা কসমোপলিটন জায়গা। মর্যাদার সঙ্গে বাঁচব, মানুষকে নিয়ে বাঁচব। মানুষের থেকে বড় কেউ নয়।

মেদিনীপুরের বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ঘাটাল কপালেশ্বরীর জন্য ৭০০ কোটি টাকা দিয়েছি যার ফলে বন্যা অনেকটা কমে গেছে।  ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান আজও করলো না কেন্দ্রীয় সরকার।

তিনি বিজেপির ভাগাভাগির রাজনীতির বিরুদ্ধে সকলকে একসঙ্গে একজোটে রুখে দাঁড়াতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আপনারা বাংলার শিক্ষা জাগরণে অনেক এগিয়ে তাই ভয় পাবেন না। কেউ ফেট্টি পরে ভাগাভাগি করতে এলে, তাদের বুঝিয়ে দিন বাংলার একতার সভ্যতা, সংস্কৃতিতে ফেট্টিবাজদের  জায়গা নয়, এটা রবীন্দ্র নাথ, নজরুল, বিনয় বাদল দীনেশ, রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দের জায়গা। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাল্য বিবাহ রোধ করেছিলেন, বিধবা বিবাহ চালু করে ছিলেন,রাজা রামমোহন সতীদাহ প্রথা রদ করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, হিন্দু মুসলানদের হাতে রাখি পরিয়ে ছিলেন।  স্বামী বিবেকানন্দ সর্ব ধর্ম সমন্বয় এর বাণী দিয়ে গেছেন। এঁদেরকে মানুষ সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করে।

 সম্প্রতি ঘটে যাওয়া উন্নাওয়ের বিষয়ে নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে তিনি বলেন, মা বোনেদের চোখের তারার মতো রক্ষা করতে হবে এটার দায়িত্ব আমাদের সমাজের সবাইকে নিতে হবে।