ডিসেম্বর ২০, ২০১৯
গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কাছে কখনও কখনও মাথানত করতে হয়: দিদি

আজ তৃণমূল ভবনে দলের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে আগামী দিনের আন্দোলনের রূপরেখা তৈরী করে দেন তিনি। আবারও তিনি সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানান শান্তিপূর্ণভাবে ক্যাব-এনআরসি-র বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলতে।
তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্যের কিছু অংশঃ
বিজেপি আমার একটা ভিডিও দেখিয়ে মিথ্যে কথা বলছে। আমার আন্দোলনটা ছিল ‘নো আইডেন্টি কার্ড, নো ভোট’। কারণ ৯০% বুথে কোনও ভোটই হত না, শুধু রিগিং হত। এর প্রতিবাদ করায় ১৯৯৩ সালে ২১শে জুলাই গুলি চালানো হয়েছিল। ১৩ জন যুবক তাতে মারা গিয়েছিল। ১০০ জনের বেশি আহত হয়েছিল। এই আন্দোলন ২০-২২ বছর চলেছিল।
আমাদের কাছে খবর আছে বিজেপি মানুষকে ভুল বোঝানোর জন্য ফেক ভিডিও তৈরি করছে। কোন প্ররোচনায় পা দেবেন না, জনজীবন চালু রেখে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবে তৃণমূল
মুর্শিদাবাদে ৫জন অন্য সম্প্রদায়ের বাচ্চা বাচ্চা ছেলেদের মাথায় টুপি পরিয়ে, পোশাক পরিয়ে তাদের দিয়ে ট্রেনে ইঁট ছোঁড়ানো হচ্ছে। সেই ভিডিওটা তোলা হয়েছে প্রচার করার জন্য। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের ধরেছে। তারপর পুলিশ এসে থানায় নিয়ে যায়।
তাই সবাইকে বলব গণতান্ত্রিক আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে আমরা যেন করি। আমরা কোনও বনধের সমর্থন করি না। এই স্ট্যান্ডটা আমরা ২০০৯ সাল থেকে নিয়েছি। আমরা রাস্তা অবরোধ সমর্থন করি না। আমরা রেল অবরোধ সমর্থন করি না। জনজীবন চালু রেখে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শান্তির মধ্যে দিয়ে আন্দোলন করার পক্ষে।
সকলের কাছে আবেদন কোনও উত্তেজনায় বা প্ররোচনায় কেউ পা দেবেন না। গণতন্ত্রের অপর নাম শান্তি। গণতন্ত্রের জোড় বন্দুকের নলের চেয়েও বেশি।
কালকে পুলিশের গুলিতে ব্যাঙ্গালোরে কিছু মানুষ মারা গিয়েছে। এবং রামচন্দ্র গুহকে যে কায়দায় টানা হেচড়া করা হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। সারা ভারত বর্ষের বুদ্ধিজীবি, শিক্ষিত মানুষরা এর নিন্দা করেছেন।
আমি ভারত সরকারকে বলব, জেদাজেদি না করে, গায়ের জোর না করে, বন্দুকের জোর না দেখিয়ে, পেশি শক্তি না দেখিয়ে, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কাছে কখনও কখনও মাথানত করতে হয়। বলুন, ক্যাব বা এনআরসি রিজেক্ট করছি।
আমি ভারতের একজন নাগরিক হিসেবে আবেদন করব আমরা সবাই নাগরিক, আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে। সব মানুষের নাগরিক অধিকার যাতে বলবৎ থাকে, কারও নাগরিক অধিকার যাতে কেড়ে নেওয়া না নেওয়া হয়, আবার অনুরোধ করব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, দেখছেন তো দেশের আগুন জ্বলছে। আসুন সবাই মিলে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করি। আইন তো মানুষের জন্য। যে আইন মানুষের বিরুদ্ধে যায় সেই আইন নিয়ে জেদাজেদির কারণ কি?
প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলব, আপনি এতে হস্তক্ষেপ করে এখুনি থামান যাতে সমস্ত অশান্তি দূর হয়ে যায়। মানুষের অস্তিত্বের ঠিকানা যাতে হারিয়ে না যায় এটা দেখতে হবে।