সাম্প্রতিক খবর

ডিসেম্বর ২১, ২০১৮

আন্তর্জাতিক মানের নতুন সমুদ্র সৈকত গড়ে উঠছে সুন্দরবনে

আন্তর্জাতিক মানের নতুন সমুদ্র সৈকত গড়ে উঠছে সুন্দরবনে

সামনে সমুদ্রের দিগন্ত বিস্তৃত নীল জলরাশি। সেই সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়ছে ছ’কিলোমিটার বিস্তীর্ণ অর্ধচন্দ্রাকৃতি সোনালি বালুতটে। পূর্ব-পশ্চিম ও উত্তরে বিস্তীর্ণ চোখ জুড়ানো ম্যানগ্রোভের জঙ্গল, ঝাউবন আর নারকেল গাছ দিয়ে ঘেরা ক্যানভাস। স্রোতের মাথায় উড়ে বেড়াচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে গাংচিল, বক, পানকৌড়ি ও বিশেষ ধরনের সামুদ্রিক মাছরাঙা।

সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুরের ‘অনাঘ্রাতা’ এই সৈকতকে সাজিয়ে-গুছিয়ে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করতে চাইছে রাজ্য সরকার। জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রশাসনের একটি দল সম্প্রতি কোথায়, কী হবে তা সরজমিনে ঘুরে দেখেন। তাঁদের সঙ্গে বিধায়ক ও পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরাও ছিলেন।

পর্যটনের নতুন ঠিকানা হিসেবে গোবর্ধনপুর সৈকতকে সাজাতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে ডিপিআর তৈরী করে ফেলেছে। এ মাসের শেষদিকে এই সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন বিধায়ক।

গোবর্ধনপুরের ঝাউবনের গা ঘেঁষে পর্যটকদের থাকার অত্যাধুনিক কটেজ, ফুডকোর্ট, রৌদ্রস্নানের আলাদা ঘেরা জায়গা থেকে শুরু করে নির্জনতা উপভোগের যাবতীয় পরিকল্পনা রয়েছে। জেলাশাসক বলেন, এখানকার পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রেখে পরিবেশবান্ধব এলিভেটেড প্ল্যাটফর্ম, টাওয়ার, কাঠের লম্বা ব্যালকনি করা হবে। যাতে বালিতে পা না দিয়ে সেখানে বসে সরাসরি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।

প্রস্তাবিত এলাকায় ছোট ছোট নালা ও যেখানে যেখানে জঙ্গল ও ফাঁকা জায়গা রয়েছে, তার ভিতর দিয়ে হাঁটার জন্য রেলিং দেওয়া একাধিক কাঠের করিডর করা হবে। শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সৈকতক্রীড়া থেকে অত্যাধুনিক ক্যাফেটেরিয়া করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য আরও বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। সেই কাজ শুরু হতে আরও কয়েকমাস লেগে যাবে।

কলকাতা থেকে ভূতল পরিবহণের রামগঙ্গার বাস ছাড়ে। তাতে করে রামগঙ্গা এসে পাথরপ্রতিমার বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তাদের তত্ত্বাবধানে আগ্রহী পর্যটকদের রামগঙ্গা থেকে জলযানে জি প্লট দ্বীপের চাঁদমারি ঘাট ও তারপর প্রাইভেট গাড়ি অথবা ভুটভুটিতে গোবর্ধনপুর সৈকতে পৌঁছনো যাবে। রামগঙ্গাতে সমিতির অতিথি নিবাস রয়েছে। এছাড়াও সৈকত সংলগ্ন এলাকাতে থাকার ইচ্ছা হলে সেই ব্যবস্থাও করে দেবে পঞ্চায়েত সমিতি।

পর্যটকরা চাইলে গোবর্ধনপুর সৈকতকে ট্রানজিট পয়েন্ট করে সুন্দরবনের আরও গভীর কলস দ্বীপ, বনি ক্যাম্প, চুলকাটি, জম্বুদ্বীপ, ভগবৎপুর কুমির প্রকল্প, বকখালি, হেনরি আইল্যান্ড ও সাগর দ্বীপ ঘুরতে পারবেন।

সৌজন্যেঃ বর্তমান