সাম্প্রতিক খবর

ডিসেম্বর ১৪, ২০১৮

উত্তীৰ্ণতে চাঁদের হাট, সঙ্গীত সম্মান প্রদান করলেন মুখ্যমন্ত্রী

উত্তীৰ্ণতে চাঁদের হাট, সঙ্গীত সম্মান প্রদান করলেন মুখ্যমন্ত্রী

বাংলা সঙ্গীত মেলা। শুরু হল সঙ্গীতের মহা আসর। আলিপুরের ‘উত্তীর্ণ’ মঞ্চ থেকে উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ২১ তারিখ পর্যন্ত চলবে সঙ্গীত মেলা। এর পাশাপাশি বিশ্ববাংলা লোক সংস্কৃতি উৎসব অনুষ্ঠিত হবে ১৪ থেকে ১৮ তারিখ একতারা মুক্ত মঞ্চে। একই মঞ্চ থেকে এই উৎসবের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

এই সঙ্গীত মেলা শীতের শহরের অন্যতম আকর্ষণ। ছৌ থেকে বাউল – বাংলার গানকে বিশ্বের দরবারে পৌছে দেওয়ার উদ্যোগ। কলকাতার ১০টি মঞ্চের পাশাপাশি, রাজ্যের বিভিন্ন মঞ্চে চলবে অনুষ্ঠান। অংশ নেবেন ২০০০ গায়ক, ৪৫০ যন্ত্রবাদক এবং ১৮০ জন গ্রন্থিক। দেশের গন্ডি পেরিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইংল্যান্ড থেকেও অংশ নেবেন শিল্পীরা।

আজ উত্তীর্ণর মঞ্চ থেকে সঙ্গীত সম্মানও প্রদান করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

সঙ্গীত সম্মান প্রাপকদের তালিকা:

গীতা চৌধুরী (লোকসঙ্গীত)
মৌ মুখার্জি (জোজো) (আধুনিক)
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায় (ভক্তিগীতি)
মানব মুখার্জি (বংশীবাদক)
রাহুল চ্যাটার্জি (সেতারবাদক)
দুর্গা রায়(ভাওাইয়া)
অসীম রায় (লোকসঙ্গীত)
মহিম ফকীর (ফকিরি)
সরস্বতী দেবী (ঝুমুর)
বিভা হাসদা (সাঁওতালি)
শিবসুন্দর দাস (বাউল)

সঙ্গীত মহাসম্মান প্রাপকদের তালিকা:

অরিজিৎ সিং
শান্তনু মুখোপাধ্যায় (শান)
সৈকত মিত্র
শ্রাবণী সেন
দেবজ্যোতি মিশ্র
রূপঙ্কর বাগচী
মনোময় ভট্টাচার্য
প্রতীক চৌধুরী
রাঘব চট্টোপাধ্যায়

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের কিছু অংশ:

এখানে আগত সকলকে অভিনন্দন জানাই। এখানে মঞ্চে আসীন সকলকে বলা যায় সঙ্গীতের সাধক, সঙ্গীতের প্রেরণা। শ্রদ্ধেয়া সন্ধ্যাদি, পূর্ণ দাস বাউল, হৈমন্তী শুক্লা এবং অনেকে উপস্থিত আছেন।

অনেকেই আছেন বাংলায় জন্ম-কর্ম কিন্তু বাংলার বাইরেও তিনি নাম করেছেন। তাঁরা যখন গান করেন, নিজের শিকড়কে ভোলেন না। এঁদের গান আমায় অভিভুত করে।

বাংলার সভ্যতা ও সংস্কৃতির রেশ সারা দেশেই আছে, সারা পৃথিবীতেই আছে।

দ্বিজেন বন্দ্যোপাধ্যায় আজ অসুস্থতার জন্য আসতে পারেননি। ওনার প্রতি আমার শ্রদ্ধা রইল, ওনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। উনি মেসেজের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বিভিন্ন জেলা থেকে, ভাওাইয়া থেকে শুরু করে বাউল থেকে শুরু করে লোকসঙ্গীত থেকে শুরু করে সমস্ত বাংলা থেকে শিল্পীদের নিয়ে আসা হয়েছে।

সঙ্গীতের সুর কোনও নির্দিষ্ট জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকে না। সঙ্গীতের সুর মহাসমুদ্রের মত সমস্ত সুরকে ছাপিয়ে দেয়। সংস্কৃতির কোনও গণ্ডি হয় না। সুরেরও কোনও গণ্ডি নেই।

ধামসা-মাদল, ছৌ থেকে শুরু করে, আমাদের ভাওয়াইয়া যেমন সঙ্গীত আছে, বাউল গান থেকে শুরু করে, লেপচা সঙ্গীত থেকে শুরু করে সকল লোকসংস্কৃতির শিল্পীরা আজ এখানে আছে।

আমরা গর্বিত যে বাংলায় প্রায় দু-লক্ষ লোকপ্রসার শিল্পী আছে। আমাদের সরকার তাদের কার্ড দিয়েছে। তারা মাসে ১০০০ টাকা করে একটা সাম্মানিক পান এবং তাদের দিয়ে আমরা সরকারি বিজ্ঞাপন করাই।

সকলের সঙ্গে মিলিত হয়ে সঙ্গীত সাধনাকে তৃণমূল স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। কত গান, কত ভাষা, কত আশা, কত আলো, কত সকাল, কত ভোর, কত দিন, কত মধ্যাহ্ন, কত সন্ধ্যা, কত রাত্রি পেরিয়ে গেছে। কিন্তু মনে রাখবেন গান কিন্তু আজও অক্ষুন্ন আছে।

গানের কোনওদিন শেষ নেই। সঙ্গীতের কোনওদিন শেষ নেই। সুর সাধনার কোনওদিন শেষ নেই। প্রতিদিন প্রতি সেকেন্ডে সৃষ্টি হয় সঙ্গীত। এক একটা সুর এক একটা ভাষা। সঙ্গীতের কোনও শেষ নেই, সুর-সাধনার কোনও শেষ নেই।

আমার বাংলার তো বটেই বাংলা ছাড়াও সারা ভারতবর্ষ এবং সারা পৃথিবীর যত সঙ্গীতপ্রেমী মানুষ আছেন তাদের সকলকেই আমার সম্মাননা, আমাদের শ্রদ্ধা, আমাদের ভালোবাসা, আমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

সকলে ভালো থাকবেন। যাঁরা হারিয়ে গেছে, আবার নতুন সুর নিয়ে জন্মগ্রহণ করুক। আমি এইটুকু বলে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি।