ডিসেম্বর ৩০, ২০১৮
অনলাইনে প্রকল্প অনুমোদন: জানুয়ারি মাসে অর্থ দপ্তর চালু করছে সফটওয়্যার

বর্তমানে অনলাইনে টেন্ডার থেকে পেমেন্ট সবই হয়। এবার অনলাইনে প্রকল্পের অনুমোদনও দেবে অর্থ দপ্তর। সেজন্য একটি সফটওয়্যার তৈরী করা হয়েছে। জানুয়ারি মাসে প্রতি দপ্তরেই চালু হয়ে যাবে সেই ‘অনলাইন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাপ্রুভাল মডিউল’। ফলে কোনও প্রকল্পের পরিকল্পনা জমা দেওয়ার পর অনুমোদনের জন্য অযথা অপেক্ষা করতে হবে না।
প্রতিটি প্রকল্পের জন্য আলাদা কোড নম্বর দেওয়া হবে, সেই কোড নম্বর দিয়ে প্রকল্পের ফাইল খোলা হবে। অনলাইনেই অর্থ দপ্তর প্রয়োজনে সেই পরিকল্পনার পরিবর্তন করতে পারবে। কোনও প্রকল্পের পরিবর্তন করার জন্য সেই দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনার পর অনলাইনেই তা করা হবে। প্রকল্প অনুমোদন করা হবে অনলাইনেই, টাকাও বরাদ্দ করা হবে অনলাইনে।
ফলে কোন প্রকল্প কবে অনুমোদন হল বা কেন অনুমোদন হল না, তা ছবির মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে। মুখ্যমন্ত্রী থেকে মুখ্যসচিব প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা তাঁদের কম্পিউটারে বসে দেখতে পারবেন প্রকল্প অনুমোদনের গতিপ্রকৃতি। ই-টেন্ডারের মতোই প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়া একেবারে স্বচ্ছ থাকবে।
গত ২০১২ সাল থেকে অর্থ দপ্তরে ধীরে ধীরে ই-গভর্ন্যান্স চালু হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে সরকারি কর্মচারীদের বেতনের টাকা ব্যাঙ্কে সরাসরি চলে যাচ্ছে। পেনশনভোগীরাও সরাসরি তাঁদের পেনশনের টাকা পাচ্ছেন। পুরো দমে চালু হয়ে গিয়েছে ইন্টিগ্রেটেড ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইএফএমএস)। তারপর চালু হয় ই-টেন্ডার। এরপর চালু হয় ই-অফিস। অর্থ দপ্তর চায়, পেপারলেস অফিস হোক। সমস্ত কাজ হোক অনলাইনে। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে, স্বচ্ছভাবে সব কাজ করা হোক।
প্রতিটি দপ্তরের ফিন্যান্সিয়াল অ্যাডভাইসার বা আর্থিক উপদেষ্টাদের ওই সফটওয়্যার সম্পর্কে বলা হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকলকে ওয়াকিবহাল করতেও দপ্তরের কর্তাদের বলা হয়েছে। কারণ, আর্থিক উপদেষ্টারা ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরে ২০ কোটি এবং অন্য দপ্তরে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত প্রকল্প অনুমোদন করতে পারেন। তাঁদের সেই সব প্রকল্প এবার অনলাইনেই অর্থ দপ্তরে পাঠাতে হবে। প্রকল্পের অর্থ এর বেশী হলে অনুমোদন করবেন অর্থ দপ্তরের কর্তাব্যক্তিরা। আর ১০০ কোটি টাকার বেশী পরিকাঠামোগত কোনও পরিকল্পনা হলে, সেটা বরাদ্দ করবে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বাধীন কমিটি।
অনুমোদনের এই প্রক্রিয়া কম্পিউটার বন্দি করতে চায় অর্থ দপ্তর। তাহলে পুরো বিষয়টিই অনেক পরিষ্কার থাকবে। প্রকল্পটি দপ্তর থেকে কবে অর্থ দপ্তরে এল, অর্থ দপ্তর কবে অনুমোদন করল বা করল না, সবই জানা যাবে অনলাইনে। এটি ই-গভর্ন্যান্সের একটি ধাপ বলে মনে করছেন অর্থ দপ্তরের কর্তারা। ফলে সমস্ত প্রকল্পের অনুমোদন ও বরাদ্দ অনলাইনেই দপ্তরগুলিকে জানিয়ে দেওয়া যাবে। গোটা প্রক্রিয়াটা এতটাই স্বচ্ছ হবে যে, ফাইল পড়ে থাকার অভিযোগ আর উঠবে না। কেউ আর ফাইল হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগও করতে পারবেন না।