ডিসেম্বর ২৬, ২০১৮
চাষের খরচ কমাতে উদ্যোগ সরকারের

কৃষকের চাষের খরচের বোঝা লাঘব করতে প্রাথমিক কৃষি সমবায় সমিতিতে (প্যাক) যন্ত্রাংশ হাব তৈরীর উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। এ জন্য প্রায় ৩০০ কোটি টাকা খরচ হবে। প্রথম দফাতেই এক হাজার প্যাকে এই হাব গড়ে তোলা হচ্ছে। যেখানে স্বল্প ভাড়ায় মিলবে ধানের বীজ বপন থেকে ধান কাটার মেশিন। পাওয়া যাবে আলুর বীজ বপন বা জমি থেকে আলুও তোলার মেশিনও। ভাড়া অবশ্যই বাজারদরের চেয়ে কম। ফলে কমবে চাষের খরচও। ইতিমধ্যেই বেসরকারি উদ্যোগে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এ ধরনের আধুনিক কৃষি যন্ত্রাংশ চড়া দামে ভাড়ায় দেওয়া হচ্ছে।
প্রান্তিক চাষিদের কথা মাথায় রেখে বাজারে চালু ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সমবায় দপ্তর প্যাকে কৃষি প্রযুক্তি হাব তৈরীর সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথম দফায় এক হাজার প্রাথমিক কৃষি সমবায় সমিতিতে এই হাব গড়ে তোলা হবে। ইতিমধ্যেই ৩০২টি সমিতি বা প্যাককে এই হাব তৈরীর জন্য ৯১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এলাকার ছেলেরাই যাতে এই প্রযুক্তি চালাতে ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারেন, সে জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এলাকার চাহিদার উপরে নির্ভর করে প্রতিটি হাবে যন্ত্রপাতি কিনতে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ হবে। যার ২০ শতাংশ অর্থ ভর্তুকি, ৪০ শতাংশ ঋণ আর বাকি ২০ শতাংশ করে অর্থ রাজ্য সমবায় দপ্তর ও সংশ্লিষ্ট প্যাক বিনিয়োগ করবে।
ইতিমধ্যেই পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি, বীরভূম-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় খরচ কমাতে সম্পন্ন চাষিরা প্রযুক্তি আমদানি করে চাষ করাতে উদ্যোগী হয়েছেন। এই সুযোগে গ্রামে বেসরকারি উদ্যোগে প্রযুক্তি ভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থাও শুরু হয়েছে। দেখা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের গলসি, আউশগ্রাম, মেমারিতে এখন জমি চষতে ট্রাকটার মিলছে ঘণ্টায় ৯০০ টাকা ভাড়ায়। এক ঘণ্টায় তিন থেকে চার বিঘে জমি চষে দেয় এই ট্রাকটার। ধান কাটার মেশিনের ভাড়া পড়েছে ঘণ্টায় ২২০০ টাকা। যা এক ঘণ্টায় চার বিঘে জমির ধান কেটে দেবে। আলু গাছ লাগাতে বা জমি থেকে আলু তুলতে ভাড়া ঘণ্টায় ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা। ভাড়া নির্ভর করে এলাকা ও চাহিদার উপরে।
সরকারি হাবে ভাড়া বাজারদরের চেয়ে অবশ্যই ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কম থাকবে। রাজ্যের কৃষি দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব বলেন, ‘এর ফলে কৃষিতে ক্ষেত মজুরের খামতি যেমন মিটবে, তেমনই প্যাকগুলি ব্যবসা বাড়িয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হবে।’
সৌজন্যেঃ এই সময়