ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮
জনজাতিদের মানোন্নয়নে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ

শবর (লোধা), বীরহোড়, এবং টোটোদের মত জনজাতিদের সার্বিক উন্নয়নে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশে সমাজের এই সমস্তও পিছিয়ে পড়া এবং এই সংখ্যায় কম জনজাতিদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য প্রায় ১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে এই বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে প্রয়োজন অনুযায়ী জনজাতিদের সাহায্য করা হবে।
গৃহহীনদের বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন বাড়ি তৈরী করে দেওয়া হবে৷ যাঁদের ঘরবাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে, তাঁদের সংস্কার করে দেওয়া হবে৷ এই সব জনজাতি যে এলাকায় থাকেন, সেখানেও পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হবে৷ যাঁদের জমি রয়েছে তাঁরা যাতে চাষবাস করে কিংবা শাকসবজি ফলাতে পারেন, তার জন্যও ব্যবস্থা করা হবে৷ এই জনজাতিরা যে-সমস্ত হাতের কাজে পারর্দশী, সেই সব সামগ্রী বাজারে বিক্রী করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন৷ তার জন্যও সবরকম সহায়তা দেবে রাজ্য সরকার৷
শুধু তাই নয়, এই জনজাতিদের জীবনাযাত্রায় স্বাচ্ছন্দ্য আনতে এঁদের নিয়ে ছোট ছোট স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরী করে উপার্জনের সুযোগ করে দেওয়ারও ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার৷ ছোট ছোট সবজি বাগান, ফুলের বাগান, উদ্যানপালন, গবাদি পশু পালন, পোর্ট্রিখামার তৈরীর মাধ্যমে তাঁদের স্বনির্ভর করে তোলা হবে৷ তাদের লোকসংস্কৃতি ও হাতে তৈরী কাজ নিয়ে ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে তোলা যায় কি না, তাও দেখছে রাজ্য সরকার৷ প্রয়োজনে ঋণ ও অনুদানের ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার৷
সম্প্রতি রাজ্য সরকার সমীক্ষা করে দেখেছে, এই সব জনজাতির আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে৷ যেহেতু তাঁরা সহজে মূল স্রোতের সঙ্গে মিশতে পারেন না, সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশতে পারেন না, নিজেদের আড়াল করে রাখেন, তাই তাঁরা সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছেন৷ তাঁদের সামাজিক উন্নয়নের কথাই ভেবেছে রাজ্য সরকার৷ ২০১১-র জনগণনা অনুযায়ী সারা রাজ্যে ৪০ হাজারের মতো শবর জনজাতি আছেন৷
এদের মধ্যে ১৮ হাজারই থাকেন ঝাড়গ্রামে৷ মাত্র ৩৬৫ জন বীরহোড়ে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড় অঞ্চলে থাকেন৷ আলিপুরদুয়ারে মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লক অঞ্চলে মাত্র ১৫০০ জন টোটো জনজাতির মানুষ রয়েছেন৷ অনেক সময় এঁরা নিজেদের জীবিকার তাগিদে এক এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় চলে যান৷ যাতে তাঁরা এভাবে চলতে চলতে হারিয়ে না যান, আধুনিক জীবনযাত্রার সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে শেখেন, তার জন্য নানা পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার।
সৌজন্যেঃ আজকাল