Latest News

December 29, 2018

অনেক হয়েছে মোদী, ছাড়ো এবার গদি : অভিষেক

অনেক হয়েছে মোদী, ছাড়ো এবার গদি : অভিষেক

আজ নদীয়া জেলায় তেহট্টের বেতাই ময়দানে এক জনসভায় বক্তব্য রাখেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ

  • যারা নিরলস পরিশ্রম, জনসংযোগ ও প্রচার করে আজকের এই জনসভাকে সফল করেছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ, শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও প্রণাম জানাই।
  • এখানে উপস্থিত সকলে যারা এই জেলা ও জেলার পার্শ্ববর্তী ব্লক অঞ্চলের প্রত্যন্ত প্রান্ত থেকে এসে আমাদের সভায় অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের সকলকে আমি নতমস্তকে ধন্যবাদ ও প্রণাম জানাই।
  • আমাদের দলের প্রকৃত সম্পদ আমাদের দলের কর্মীরা। আপনাদের নিরলস পরিশ্রম, দৃঢ়তা, অবিচল লক্ষ্যের কারণে, সংগ্রাম, ত্যাগ ও তিতিক্ষার কারণে আমরা কেউ সাংসদ হয়েছি, কেউ বিধায়ক হয়েছি, কেউ মন্ত্রী হয়েছি, কেউ জেলা পরিষদে, কেউ পঞ্চায়েত সমিতিতে দাঁড়িয়ে সদস্য হয়েছি, কেউ সভাপতি হয়েছি, কেউ গ্রাম পঞ্চায়েতে জিতেছি। আপনারা না থাকলে, আমরা যারা মঞ্চে বসে আছি, তাদের কোনও অস্তিত্ব থাকে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মা মাটি মানুষের সরকারও তৈরী হয় না। আপনাদের সকলকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
  • আজকে মূলত আমরা সমবেত হয়েছি ২০১৯ সালের ১৯শে জানুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড সমাবেশকে সামনে রেখে। ২১শে জুলাই ২০১৮ সালে ধর্মতলার বুকে আমাদের সর্বজন শ্রদ্ধ্যেয়া নেত্রী, জন-গণ-মন-অধিনায়িকা নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৪২ এ ৪২ এর ডাক দিয়ে আগামী ১৯শে জানুয়ারি ২০১৯ ব্রিগেড চলোর ডাক দিয়েছিলেন লক্ষ লক্ষ মানুষকে সাক্ষী রেখে।
    আমরা ব্রিগেড চলো সমাবেশের প্রস্তুতি শুরু করেছি। বিভিন্ন জেলায় আমরা জনসভা করছি, কর্মীসভা করছি, পথসভা করছি। একাধিক সভা করেছি ও কর্মসুচী নিয়েছি।
  • যে স্বতঃস্ফূর্ত মানুষের ঢল, যে উৎসাহ, যে উদ্দীপনা, ভালোবাসার সাক্ষী এবং কৃতজ্ঞতার ঋণে আজ আপনারা আমাদের আবদ্ধ করেছেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, অন্য জেলার দরকার হবে না। ২১শে জুলাই যেমন কলকাতার রাস্তা একা নদীয়া জেলাই ভরিয়ে দেয়, আগামী দিন ব্রিগেড চলোর সমাবেশ এই নদীয়া জেলা একাই ভরিয়ে দেবে।
  • এই ব্রিগেড সমাবেশের সঙ্গে অন্যান্য ব্রিগেড সমাবেশের আকাশ পাতাল তফাৎ আছে। আমরা শেষ ব্রিগেড চলোর ডাক দিয়েছিলাম ২০১৪ সালের ৩০শে জানুয়ারি সাম্প্রদায়িক বিজেপিকে উৎখাত করব এবং দুর্নীতিগ্রস্ত কংগ্রেসকে ভারতবর্ষ থেকে সরানোর ডাক দিয়ে। ফলস্বরূপ আমরা দেখেছিলাম, ৪২টি আসনের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদধন্য তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিক প্রার্থীকে বাংলার মানুষ দুহাত তুলে সমর্থন করে ৩৪টি আসনে বিপুল ভোটে জিতিয়েছিল।

    আমরা আজ এমন একটা সময়ে, এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে বিজেপির চূড়ান্ত একনায়কতন্ত্র চলছে। কে কোথায় খাবে? কে কোথায় হাঁটবে? কে কি পরবে? কে কোথায় যাবে? তার নিদান দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। সিপিএম দলটা প্রায় উঠে গেছে। ত্রিপুরায় আপনারা দেখেছেন ভারতের কম্যুনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) নিজেদের বিজেপির কাছে বিক্রী করে দিয়েছে। বাংলায় কংগ্রেস কার্যত অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। কংগ্রেসের একাধিক সৈনিকরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তৃণমূল দলে এসে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে শামিল হয়েছেন।

  • এই ব্রিগেড সমাবেশে শুধু তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতা নন, ভারতবর্ষের অন্যান্য অনেক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অনেক রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে আগামী ১৯শে জানুয়ারি ব্রিগেডে সশরীরে উপস্থিত হবেন।
  • সেই সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন দিল্লীর আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, বিহারের আরজেডি দলের তেজস্বী যাদব, ডিএমকের এম কে স্ট্যালিন, টিডিপির চন্দ্রবাবু নাইডু, লোকতান্ত্রিক জনতা দলের শরদ যাদব, ন্যাশানালিস্ট কংগ্রেস পার্টির শরদ পাওয়ার, শত্রুঘ্ন সিনহা, যশোবন্ত সিনহা সহ অনেকেই আসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করতে।
  • এই সমাবেশ আমাদের কাছে গর্বের। কারণ, আমাদের নেত্রী এমন একজন নেত্রী যিনি বিজেপির কাছে বশ্যতা স্বীকার করেননি। তাঁকে বিজেপি ধমকে, চমকে, চোখ রাঙিয়ে, গলা উঁচিয়ে ভয় দেখাতে পারেনি।
  • তৃণমূল কংগ্রেস দলটা বিশুদ্ধ লোহার মত, তাকে যত পোড়াবে, যত মারবে, যত তাতাবে, যত আঘাত করবে, যত প্রহার করবে, যত পেটাবে, তৃণমূল দল তত শক্তিশালী হয়ে উঠবে। তৃণমূল কংগ্রেসকে আঘাত করলে সে প্রত্যাঘাত করে না। কিন্তু, আমাদের যত কষ্ট দেবে, মনে রাখবে, আগুনে তাতিয়ে পুড়িয়ে লোহা যত শক্তিশালী হয়, তৃণমূল কংগ্রেসও সেই একই ভাবে বলিষ্ঠ, বলবান ও শক্তিশালী হবে।
  • আমরা উন্নয়নের নিরিখে কথা বলি। আমাদের বিরুদ্ধে যারা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে পারেনা, তারা আজকে হিন্দু মুসলমানের বিভাজন করে, বাংলাকে অশান্ত করতে চেয়েছে। কিন্তু, ফলস্বরূপ আমরা দেখেছি, বিগত যেকটা নির্বাচন হয়েছে, একাধিক উপনির্বাচন হয়েছে, পুরসভার নির্বাচন হয়েছে, বিধানসভার উপনির্বাচন হয়েছে, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদের নির্বাচনে এদের কি করুণ পরিণতি হয়েছে। আমরা উপলব্ধি করেছি।
  • যারা তথাকথিত হিন্দু ধর্মের ধারক আর বাহক বলে নিজেদেরকে দাবি করছে, সদ্য সমাপ্ত তিনটি বিধানসভা নির্বাচন – ছত্তিশগড়ের বিধানসভা নির্বাচন, রাজস্থানের বিধানসভার নির্বাচন আর মধ্যপ্রদেশের বিধানসভার নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির কি করুণ পরিস্থিতি হয়েছে ভারতবর্ষের মানুষ তা উপলব্ধি করেছে।
  • রাজস্থানে ৯২ শতাংশ ভোটার হিন্দু, ছত্তিশগড়ে ৯০ শতাংশ ভোটার হিন্দু, মধ্যপ্রদেশে ৯১ শতাংশ ভোটার হিন্দু। সেইখানে আজকে ভারতীয় জনতা পার্টি মুখ থুবড়ে পড়েছে। এর আগে গোরক্ষপুরে, যোগী আদিত্যনাথ হিন্দু ধর্মের ধারক ও বাহক, উপনির্বাচনে গোহারা হেরেছে।
  • আমাদের নেত্রী যা বলে তা আমরা অক্ষরে অক্ষরে রাখি। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে বাংলার মানুষকে আমরা কথা দিয়েছিলাম গ্রামে গ্রামে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা আমাদের সরকার দেবে, আমরা করেছি। আমরা কথা দিয়েছিলাম প্রতিটা ব্লকে ব্লকে, অঞ্চলে অঞ্চলে, গ্রামে গ্রামে, পাড়ায় পাড়ায় পানীয় জলের সুব্যবস্থা আমরা করে দেব, আমাদের সরকার তা করেছে। আমরা কথা দিয়েছিলাম ক্ষমতায় আসার পরে সিঙ্গুরের জমি ফিরিয়ে দেব, আমরা কথা রেখেছি।
  • আমরা কথা দিয়েছিলাম ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গলমহলে শান্তি প্রতিষ্ঠাতা করব, আমরা করেছি। আমরা কথা দিয়েছিলাম ক্ষমতায় আসার পর দূর্নীতির সঙ্গে আপোষ করব না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেননি। কাশ্মীরের কার্গিল প্রান্ত থেকে সুদীপ্ত সেনের গলা ধরে আজকে জেলে ঢুকিয়েছে। ছয় বছর পার হতে চলল, এখনও সেই প্রতারক জেলে রয়েছে।
  • আর নরেন্দ্র মোদীর সরকারে ১০ হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়ে গেছে বিজয় মালিয়া, ১২ হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়ে গেছে ললিত মোদী, ১৫ হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়ে গিয়েছে নীরব মোদী। এই তিনজনকে মোদী পালিয়ে যেতে সাহায্য করে, ভারতবর্ষকে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে ফেলে এবং সর্বশান্ত করে। এটাই হচ্ছে তার আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মধ্যে পার্থক্য।
  • চা বিক্রী করার নাম করে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। চা যারা বিক্রী করে আমরা তাদেরকে সম্মান জানাই। যারা কষ্ট করে নিজেদের জীবিকা অর্জন করে তাদেরকেও আমি মনে করি ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী অসম্মান করেছেন।
  • আমরা নরেন্দ্র মোদীকে কোনও দিন কেটলি হাতে চা বিক্রী করতে দেখিনি, আর বাংলার সর্বজন শ্রদ্ধেয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আজও টালির ঘরের ছাদে থেকে পরনে সস্তার চপ্পল আর সস্তার শাড়ি পরে ১০ কোটি মানুষের উন্নয়নের জয় যাত্রা পরিচালনা করতে দেখছি। এটাই হচ্ছে তাদের সরকার আর আমাদের সরকারের মধ্যে পার্থক্য।
  • মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদেরকে বারবার শিখিয়েছেন, আমরা জনপ্রতিনিধিরা যারা এখানে রয়েছি আমরা বিশ্বাস করি আমাদের ধর্ম কোনওদিন ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও, ফাটিয়ে দাও, মিটিয়ে দাও এর কথা শেখায়নি। আমাদের ধর্ম বৈচিত্রের মধ্যে একতার কথা শিখিয়েছে।
  • আমাদের ধর্ম শিখিয়েছে নিজের ধর্মের প্রতি আস্থাশীল, অপরের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি একজন হিন্দু, আমি গেরুয়াধারী হিন্দুত্বে বিশ্বাস করি, আমি স্বামী বিবেকানন্দের হিন্দুত্বে বিশ্বাস করি। কিন্তু আমি অমিত শাহ আর যোগী আদিত্যনাথের হিন্দুত্বে বিশ্বাস করি না।
  • আমি বিশ্বাস করি আমার ধর্ম আমাকে যেমন গায়েত্রী মন্ত্র জপ করা শেখায়, সূর্য নমস্কার করা শেখায়, মা দুর্গাকে পুজো করা শেখায়, মা কালীকে পুজো করা শেখায়, আমার ধর্ম আমি বাড়িতে পালন করব। হিন্দু হলে আমার ধর্ম আমি বাড়িতে পুজো করে পালন করব। আমি যদি মুসলমান হই আমার ধর্ম আমি বাড়িতে পালন করব। আমি যদি খ্রীষ্টান হই আমার ধর্ম আমি বাড়িতে পালন করব। আমি যদি বৌদ্ধ হই আমার ধর্ম আমি বাড়িতে পালন করব। আমি যদি শিখ হই আমার ধর্ম আমি বাড়িতে পালন করব। আমি যদি জৈন হই আমার ধর্ম আমি বাড়িতে পালন করব। কিন্তু আমি যখন মানুষের ভোটের দ্বারা নির্বাচিত, যখন মানুষ আমাকে ভোটের দ্বারা নির্বাচিত করেছেন তখন উন্নয়ন করার জন্য আমার একটাই ধর্ম, সেটি হল, মানব ধর্ম। আমি সেই ধর্মকেই সাক্ষী রেখে জাতি-ধর্ম-দল-মত নির্বিশেষে উন্নয়ন করে নিয়ে যাব।
  • দিলীপ বাবুরা আজকে হুঙ্কার দিচ্ছে মেরে এখানে পাঠিয়ে দেব সেখানে পাঠিয়ে দেব। অসমীচীন, অশ্লীল, অর্বাচীন ভাষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করছে। আপনাদের বলি আমাদের সৌভাগ্য আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে দল করি। তাঁর জায়গায় অন্য কোনও রাজনৈতিক নেতা নেত্রী থাকলে তাহলে মাঠেই তৃণমূল কংগ্রেস কড়ায় গন্ডায় জবাব দিয়ে দিত।
  • আমরা বদলা নয়, বদল চাই স্লোগান দিয়ে বাংলায় পরিবর্তনের চাকাটা ঘুরিয়েছিলাম। আমরা সেই শান্তির রাজনীতিতেই বিশ্বাস করি।
  • হঠাৎ করে দিল্লী থেকে একটা বিলাসবহুল বাস নিয়ে এসেছে। বাস নিয়ে এসে বলছে রথ। গাধাকে দেখিয়ে বলছে ঘোড়া, আর বাসকে দেখিয়ে বলছে রথ। আমিও একজন হিন্দু, আমি শ্রাবণ মাস, আষাঢ় মাসের রথ জানি। আমি জানি জগন্নাথ দেবের রথ, আমি জানি সুভদ্রার রথ, আমি জানি প্রভু বলরামের রথ। আমি জানি মদন মোহন ঠাকুরের রথ, আমি জানি প্রভু চৈত্যনের রথ, শ্রী কৃষ্ণের রথ, গোপালের রথ, আমি জানি বিবেকানন্দের রথ, আমি জানি রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের রথ, আমি জানি দেবীর রথ, দেবতাদের রথ।
  • আমাদের সেই লক্ষ্যে অবিচল থেকে আগামী দিন নেত্রীর হাতকে আরও শক্ত করতে হবে। আমাদের নেত্রী ৪২ শে ৪২ ডাক দিয়েছেন। নদীয়া জেলায় দুটো লোকসভা আসনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ব্যাপক ব্যবধানে আগামী লোকসভা ভোটে জিতবে। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু যেমন ৮০ বছর আগে বলেছিলেন দিল্লি চলো, তেমনই নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর আদর্শকে সামনে রেখে, আমাদের নেত্রী ৮০ বছর পর আবার ডাক দিয়েছেন দিল্লি চলোর ১৯ শে জানুয়ারি ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে।
  • নেতাজী যেমন বলেছিলেন ‘তুমি আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’, দিলীপ বাবুরা বলছেন তুমি আমাকে গদি দাও, আমি তোমাকে রক্তস্নাত বাংলা দেব। আর আমাদের নেত্রী বলেন, হে বাংলার বীর যোদ্ধা, মা-মাটি-মানুষ তুমি আমাদের ৪২ এ ৪২ দাও , আমি তোমাদের আগামীদিন শান্তিপূর্ন, ধর্মনিরপেক্ষ, ঐক্যবদ্ধ, প্রগতিশীল ভারতবর্ষ দেব। এই হল আমাদের নেত্রী। আমাদের নেত্রী যা বলেছেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন।
  • আমাদের সরকার একমাত্র সরকার, মনে রাখবেন একটা বাচ্চা যখন জন্মাচ্ছে সবুজশ্রী চারাগাছ দিয়ে শুরু হচ্ছে, আবার কেউ যদি ইহলোক ত্যাগ করে, শ্মশানে পরলোক ক্রীয়াকর্ম সম্পন্ন হচ্ছে সমব্যথীর মাধ্যমে। পরবর্তীকালে জন্মের সময় কখনও কন্যাশ্রী, কখনও যুবশ্রী, গতিধারা, গীতাঞ্জলী, সংখ্যালঘু স্কলারশিপ, কখনও স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট লিস্ট স্কলারশিপপের মাধ্যমে নিজেদের জীবন আলোকিত এবং সমৃদ্ধ করছে, এটাই হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
  • মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটের জন্য রাজনীতি করেন না। উন্নয়নের পরিষেবা জাতি-দল-মত নির্বিশেষে সকলের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। সিপিএম যখন ৩৪ বছর ছিল, আমরা কি শুনতাম? ইনক্লাব জিন্দাবাদ, আমরা খাবো, তোমরা বাদ। ইনক্লাব জিন্দাবাদ, লাল খাবে, সবুজ বাদ। ইনক্লাব জিন্দাবাদ, হার্মাদ খাবে, মানুষ বাদ। যারা লাল জামা পরে সন্ত্রাস চালিয়েছে, তারা এখন গেরুয়া জামা পরে হাতে পদ্ম নিয়ে ঘুরছে।
  • আপনারা লক্ষ্য রাখবেন বিজেপি যত হারছে জিএসটি বিজেপি যত হারছে জিএসটির হার তত কমছে। বিজেপি যত হারছে পেট্রোলের দাম তত কমছে। বিজেপি যত হারছে ডিজেলের দাম তত কমছে। বিজেপি যত হারছে রান্নার গ্যাসের দাম তত কমছে। বিজেপিকে আগামীদিন শূন্য’য় পৌঁছবে এবং জি এস টি ও শূন্য হবে, পেট্রোল শূন্য হবে, ডিজেল শূন্য হবে, মূল্যবৃদ্ধি শূন্য হবে। এদেরকে ঝেটিয়ে বিদায় দিতে হবে।
  • আজকে যারা নিজেদেরকে দেশপ্রেমিক ভাবছে, সেই নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, আমি প্রশ্ন করতে চাই আমাদের নেত্রী শুরু করেছে কন্যাশ্রী দিয়ে, ছয় বছরে বাজেটের পরিমাণ কত? ১০০ কোটি, ২০০ কোটি, ৫০০ কোটি নয়, ছয় বছরে ৬০০০ কোটি টাকা।
  • ৬ বছরে ৬হাজার কোটি টাকা, আর নরেন্দ্র মোদীর বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও বাংলা ছাড়া আরও ২৮টা রাজ্য সব মিলিয়ে ২৯টা রাজ্যে বাজেট কতো? ১০০ কোটি টাকা। নরেন্দ্র মোদীর সরকার মূর্তি বানাচ্ছে ৩হাজার কোটি টাকা দিয়ে, নরেন্দ্র মোদীর সরকার প্রধানমন্ত্রী নিজে প্রচার করছে, অ্যাডভারটাইজমেন্ট করছে, পেপারে অ্যাড দিচ্ছে, ৫ হাজার ২৭০ কোটি টাকা খরচা করে, নরেন্দ্র মোদীর সরকার প্রধানমন্ত্রী যখন বিদেশ ভ্রমণ যাচ্ছে, খরচা করছে ২হাজার কোটি টাকা, মানে ৩ হাজার কোটি টাকার মূর্তি, ৫ হাজার কোটি টাকার প্রচার, আর ২ হাজার কোটি টাকার ভ্রমণ।
  • কিন্তু বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও-এর যখন কথা আসছে, তখন এদের কাছে টাকা নেই। স্মার্ট সিটির যখন টাকা দেওয়ার প্রশ্ন আসছে , তখন এদের কাছে টাকা নেই। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় যখন টাকা দেওয়ার প্রশ্ন আসছে তখন এদের কাছে টাকা নেই, আড়াই পি এফ এর রাস্তা , এদের কাছে টাকা নেই। দু টাকা কিলো চাল, এদের কাছে টাকা নেই। ৩ টাকা কিলো গম, এদের কাছে টাকা নেই। জলের ক্ষেত্রে , এদের কাছে টাকা নেই। রাস্তা ঘাট এদের কাছে টাকা নেই। সবুজ সাথীর সাইকেল, এদের কাছে টাকা নেই।
  • আমাদের নেত্রী কি বলেছে?আমাদের নেত্রী বলেছে, তোমাদের টাকাও লাগবে না, তোমাদের নামও লাগবে না, বাংলা কারোর কাছে মাথা নতো করবে না, তোমাদের টাকা তোমরা নিয়ে চলে যাও, বাংলা সসম্মানে আগামীদিন মানুষের সাথে থেকে বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, বাংলার সম্মানকে অক্ষুন্ন রেখে, এবং অব্যাহত রেখে।

    এমন এক প্রধানমন্ত্রী নিজেকে এক বড় দেশপ্রেমিক বলে দাবি করছে, আর ৩ হাজার কোটি টাকার মূর্তি বানিয়েছে চিন থেকে ব্রোঞ্জ নিয়ে এসে, গরিব মানুষ যদি দীপাবলির সময় ২৫ টাকার টুনি লাইট রাস্তায় বসে বিক্রি করে তখন ওরা কি বলছে? চায়নার দ্রব্য বর্জন করুন। আর নিজে ৩ হাজার কোটি টাকার মূর্তি বানাচ্ছে চায়না থেকে ব্রোঞ্জ আমদানী করে। এই হচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর আসল রুপ।

  • চায়নাকে টাকা দিচ্ছে, সেই চায়না টাকা দিচ্ছে পাকিস্থানকে, সেই পাকিস্থান আমার আপনার সুরক্ষার নিয়োজিত জওয়ান, যারা সীমান্ত রক্ষা করছে তাদের বুকে একে ৪৭ এর গুলি মেরে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে। তাহলে নরেন্দ্র মোদী কি দেশপ্রেমিক? এ প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মনে ওঠেনা?
  • যে ৫ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা খরচা করে নিজের প্রচার করে তাও আমাদের সামরিক বাহিনী, আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ান, ভারতীয় সেনাকে একটা বুলেট প্রুভ জ্যাকেট পর্যন্ত কিনে দিতে পারেনি! এই প্রধানমন্ত্রী কিসের দেশপ্রেমিক? এ প্রশ্ন তো সাধারণ মানুষের মনে জাগছে।
  • আজকের মানুষের কোটি কোটি টাকা আত্বসাৎ করার একটা পরিকল্পনা এদের ছিল, কি? না, এফ আর ডি আই বিল আনবে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়রা রয়েছে, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা কলকাতা থেকে শুরু করে বাংলার প্রত্যেক জেলায় এফ-আর-ডি-আই এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমরা সংসদের ভিতরে অবস্থান করেছি, বাইরে আমাদের প্রতিবাদ জানিয়েছি। তাপস মন্ডল, আবির বিশ্বাসরা আছে, তারাও এই প্রতিবাদে অংশ গ্রহন করেছিল, কিন্তু আমরা প্রথম দল যারা এই নীতিবিরুদ্ধ নীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে ধারাবাহিকভাবে গর্জে উঠেছি। এফ আর ডি আই বিল এনে কি হতো?
  • পেট্রোল ডিজেলের দাম, যখন ৮৮ টকা/ ৮৬ টাকা হয়েছিল পেট্রোল ডিজেলের দাম, তখন কারা রাস্তায় নেমেছিল? সিপি এমের একটাও মিছিল দেখেছিলেন? কংগ্রেসের একটা মিছিল দেখেছিলেন? কেনো? বিজেপির বি-টিম হচ্ছে কংগ্রেস,আর বিজেপির সি-টিম হচ্ছে সিপিএম। এরা যারাই ক্ষমতায় আসুক এরা একসাথে কিন্তু মেরে ভাগ করে খাবে। আর মমতা বন্দোপাধ্যায় থাকলে মাথায় রাখবেন, এদের মাথায় কিছু জুটবেনা, এদের পাতে কিচ্ছু জুটবে না, মমতা বন্দোপাধ্যায় যতদিন থাকবে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাবে।
  • তাই আসুন আমরা আরেকার আমাদের নেত্রীর হাত শক্ত করার লক্ষ্যে আমরা ঐক্যবদ্ধ, অঙ্গীকারবদ্ধ এবং আজকে এই সভা থেকে শপথ নিয়ে আমরা সকলে বাড়ি ফিরি এবং ৪২ এ ৪২ এর লক্ষ্যে অবিচল থেকে আগামী চারটে পাঁচটা মাস নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়া না পর্যন্ত আমরা নিজেদের প্রাণ দিয়ে জীবন দিয়ে বুক আঁকড়ে পরে থাকবো। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের হাত শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আমরা অবিচল থাকবো।
  • আমাদের নেত্রী ডাক দিয়েছে ব্রিগেড চলো,গ্রামে গ্রামে আওয়াজ তোলো, ১৯ শে জানুয়ারী ব্রিগেড চলো।
    ছাত্র-যুব আওয়াজ তোলো, ১৯শে জানুয়ারি ব্রিগেড চলো।শ্রমিক-কৃষক আওয়াজ তোলো, ১৯শে জানুয়ারি ব্রিগেড চলো।
    ডাক দিয়েছেন নেত্রী মমতা, ব্রিগেড চলো জনতা। আর তাইতো বলি ২০১৯, বিজেপি ফিনিস ।
    বিজেপি হঠাও, দেশ বাঁচাও। অনেক হয়েছে মোদী, ছাড়ো এবার গদি।
  • আপনারা সকলে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। এবং আপনাদের সকলকে আমার ধন্যবাদ, আমার অগ্রজ যারা রয়েছে, বয়ঃজ্যেষ্ঠ, বর্ষিয়ান যারা রয়েছে তাদের সকলে প্রণাম, সমবয়সী,শিশু যারা রয়েছে তাদের সকলে ধন্যবাদ জানিয়ে, কৃতজ্ঞতা জানিয়ে, ভালোবাসা জানিয়ে, মা-বোনেদের ধন্যবাদ জানিয়ে আমি আপনাদের কাছ থেকে আজ বিদায় নেবো। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। জয় হিন্দ, বন্দে মাতরম, তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ, তৃণমূল যুব কংগ্রেস জিন্দাবাদ।