সাম্প্রতিক খবর

অক্টোবর ২৩, ২০১৮

রেড রোডে আজ অনুষ্ঠিত হল দুর্গাপুজো বিসর্জনের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

রেড রোডে আজ অনুষ্ঠিত হল দুর্গাপুজো বিসর্জনের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় কলকাতার রাজপথে শহরের সেরা পূজামণ্ডপগুলির বিসর্জন শোভাযাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৬ সাল থেকে। একই জায়গায় মানুষ যাতে সেরা প্রতিমা দেখার সুযোগ পান সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী এই উদ্যোগ নেন। আজ এই কার্নিভালের তৃতীয় বর্ষ।আলোর সাজে তুলে ধরা হল রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, শিশু সাথী, সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ, খাদ্যশ্রীর মতো জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিকে। এছাড়াও বিদেশি পর্যটকদের সামনে তুলে ধরা হল বাংলার সংস্কৃতি ও শিল্প ভাবনাকে।

এবছর এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছে ৭৫টি পুজো কমিটি। উপস্থিত ছিলেন বিদেশী অতিথিরাও। বিভিন্ন দূতাবাস থেকেও কার্নিভাল দেখতে চেয়ে অনুরোধ এসেছিলো ‘পাস’ও চেয়েছিলেন তাঁরা। সব মিলিয়ে এই শোভাযাত্রাটি প্রাণোচ্ছল হয়ে উঠেছিল বিসর্জনের বাদ্যির সুরে। আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে দর্শকদের জন্য রেড রোডের দুধারে তৈরী হয়েছিল শেড দিয়ে বসার জায়গা। রাস্তার দুধারে বসেই পর্যটকরা দেখতে পেলেন কলকাতার সেরা পুজোগুলি। রেড রোডের দু’পাশে এবার ২০ হাজার দর্শক দেখেছেন এই কার্নিভাল। এছাড়াও বিদেশী পর্যটকদের জন্য ১৫০০ আসনের সংরক্ষণ রাখা হয়েছিল শব্দ দূষণের কথা ভেবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ডিজে। ছিল গ্রীন টয়লেট ও পানীয় জলের সুবন্দোবস্ত।

কার্নিভালের তৃতীয় বছরের অনুষ্ঠান উদযাপন ঘিরে তুঙ্গে ছিল নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বসানো হয়েছিল ক্লোজড সার্কিট টিভি। কলকাতা পুলিসের ডগ স্কোয়াড এবং অ্যান্টি সাবোতাজ বাহিনীর কর্মীরা কার্নিভাল রাস্তার যে অংশে হবে, সেখানে ঘনঘন নিরাপত্তা খতিয়ে দেখেছেন। ছিল ড্রোনের নজরদারিও। বস্তুত, গোটা রেড রোডই চলে এসেছিলো সুরক্ষাবলয়ে। ছিল ৬টি ওয়াচ টাওয়ার। প্রায় ৩০০০ পুলিসকর্মী কার্নিভালের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। পর্যটন দপ্তর থেকে এ বছরই প্রথম ‘এগজিকিউটিভ ক্লাস’–এর জন্য ঠাকুর দেখা, অভিজাত রেস্তোরাঁয় খাওয়া, বনেদি বাড়ির পুজো উপভোগ করার ব্যবস্থা হয়েছিল। এই প্যাকেজের সঙ্গেই ছিল কার্নিভাল দেখার বিশেষ ছাড়পত্র।

শুধু মূল মঞ্চ রাজবাড়ীর আদলে নয়, মূল মঞ্চের উল্টোদিকে আরো একটি দালান তৈরী হয়েছিল, সেটিও পুরনো বাড়ির দালানের আদলেই। সেখানে বসেছিলেন কার্নিভালে আসা বিশিষ্ট অতিথিরা। মূল মঞ্চতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়–সহ মন্ত্রীসভার সদস্যরা বসেছিলেন। মঞ্চে প্রায় ৯০ জনের বসার ব্যবস্থা ছিল। গত পরশু থেকেই কার্নিভাল উপলক্ষে রেড রোডে যান নিয়ন্ত্রণ শুরু হয়েছিল। কার্নিভাল শেষ হয়ে গেলে আজ রাত থেকেই রেড রোড খুলে দেওয়া হয়।

কার্নিভাল ঘিরে যাতে কোনও অবাঞ্ছিত ঘটনা না ঘটে, সে জন্য স্পেশাল টাস্ক ফোর্স এবং গোয়েন্দা পুলিসের একটি বিশেষ দল রেড রোডের দু’পাশে নজরদারি চালিয়েছেন। প্রতিটি পুজো কমিটি দেড় মিনিট করে সময় পান। আগে থেকেই প্রতিটি পুজো কমিটিকে বলা হয়েছিল, তারা নির্দিষ্ট সময়ের আগে প্রতিমা এবং যাঁরা যাঁরা অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন, তাঁদের তৈরী থাকতে। শোভাযাত্রা শুরু হলেই প্রতিটি প্রতিমা নিয়ে সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটির সদস্যরা গঙ্গার দিকে চলে যান, যাতে কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা না হয়।

বিসর্জনের এই শোভাযাত্রা লাইভ দেখানো হয় মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ফেসবুক পেজে। ফেসবুক লাইভটি দেখুন এখানে।