সাম্প্রতিক খবর

অক্টোবর ২৭, ২০১৮

মাও আতঙ্ক অতীত, বছরভর পর্যটকে ঠাসা অযোধ্যা পাহাড়

মাও আতঙ্ক অতীত, বছরভর পর্যটকে ঠাসা অযোধ্যা পাহাড়

আতঙ্কের আঁতুড়ঘর থেকে আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে ওঠা। এও এক পরিবর্তন। অযোধ্যা পাহাড়ের এমন উত্তরনের অনন্য নজির চোখে না দেখলে বিশ্বাসই করা যায়না। মাওবাদীদের পদচারনায় যে অযোধ্যা পাহাড় নামেই বুকে কাঁপুনি ধরাত সে আজ পর্যটকদের দুহাতে হাতছানি দিচ্ছে।

সবুজ ঘেরা অযোধ্যা পাহাড় দূর থেকে যেন এক বিশাল বটবৃক্ষ। আর তার ছায়ায় কটাদিন কাটিয়ে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের আকুতি এতটাই বেশী যে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করতে পুজোর মুখে হোটেল ও লজের সামনে একের পর এক তাঁবু খাটাতে হচ্ছে।

এক সময় শীতকাল এলেই গ্রামের দোকানের সামনে বাসে করে মুকুটমণিপুর, শুশুনিয়া পাহাড়, অযোধ্যা পাহাড়, দীঘা যাওয়ার জন্য পোস্টার পড়ত। থাকত খাওয়া দাওয়া সহ নানারকম প্যাকেজ। বাম জমানার শেষ কয়েক বছরে হারিয়ে গেছিল সেই পোস্টার। এখন আবার স্বমহিমায় ফিরছে পাহাড়। এখন আর শুধু শীতকাল নয়, সারা বছর অযোধ্যা পাহাড়ে পর্যটকদের যাওয়া-আসা। পুজোর পর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ব্যাপক ভিড়। সরকারি, বেসরকারি লজে, হোটেল ঘর ‘সব বুকড’। তাঁবু খাটিয়েও সকলকে জায়গা দেওয়া যায়না।

প্রশাসনিক দৃঢ়তাই শান্তি সুপ্রতিষ্ঠিত করে। আর শান্তির হাত ধরেই আসে উন্নয়ন। প্রমাণ করে দিল অযোধ্যা। পাহাড়ের বুকে একের পর এক গড়ে উঠছে লজ, সারানো হচ্ছে সরকারি বাংলো। এক সময় পাহাড় বাসীর জীবিকা ছিল জঙ্গলের শুকনো কাঠ বিক্রী, হাঁস-মুর্গী-ছাগল পালন। এখন এই অযোধ্যা পাহাড়ে প্রাধান্য পাচ্ছে ব্যবসা। হোটেল, লজের পাশাপাশি অনেক দোকান হচ্ছে। কারণ, সারা বছর থাকে পর্যটকদের আনাগোনা।

অযোধ্যা ফরেস্ট অফিসের সামনে মাঝিড়িতে দোতলা লজ তিনতলা হচ্ছে। মাওবাদীদের অত্যাচারে সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন লজ নিহারীকা এক সময়ে যা কার্যত ভুতুড়ে বাংলোয় পরিনত হয়েছিল, আজ তা পর্যটকে থিক থিক করছে। সেখানে প্রায় দেড়শ মানুষ থাকতে পারেন।

গাছ আর জঙ্গলে ঘেরা এই পাহাড়ি গ্রামগুলোই এক্সময়ে মাওবাদীদের নিশ্চিত আশ্রয় হয়ে উঠেছিল। তখন অযোধ্যা পাহাড়ের প্রায় ৭৬টি গ্রাম ছিল দুর্গম। এখন প্রতি গ্রামেই তৈরী হয়েছে যাতায়াতের রাস্তা। সাধারণ মানুষ ও পর্যটক সেখানে অবাধে যাতায়াত করতে পারে।

সৌজন্যেঃ বর্তমান