Latest News

December 28, 2018

বেটি আমরা বাঁচিয়ে নেব, বিজেপি পারলে গদি বাঁচাক: অভিষেক

বেটি আমরা বাঁচিয়ে নেব, বিজেপি পারলে গদি বাঁচাক: অভিষেক

আজ পূর্ব বর্ধমান জেলায় গলসী হাইস্কুল মাঠে এক জনসভায় বক্তব্য রাখেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ

  • যারা নিরলস পরিশ্রম, জনসংযোগ ও প্রচার করে আজকের এই জনসভাকে সফল করেছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ। এখানে উপস্থিত সকলকে অভিনন্দন ও প্রণাম জানাই।
  • যে সংখ্যক মা বোনেরা আজ এই সভায় উপস্থিত হয়েছেন আমাদের আশীর্বাদ, দোয়া দিতে, এর থেকেই প্রমাণ হয়, নারী শক্তি যাদের সঙ্গে থাকে, তাদের গণতান্ত্রিক ভাবে কেউ কোনও দিন পরাজিত করতে পারে না।
    .
    আজকের এই সভা আমাদের মূলত ব্রিগেড চলো সমাবেশকে কেন্দ্র করে। আজ আমরা সমবেত, ঐক্যবদ্ধ, সংগঠিত হয়েছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে আগামী ২০১৯ সালের ১৯শে জানুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড সমাবেশে যাব এবং নেত্রীর থেকে দিকনির্দেশিকা নেব।
  • এই ব্রিগেড সমাবেশের সঙ্গে অন্যান্য ব্রিগেড সমাবেশের আকাশ পাতাল তফাৎ আছে। আমরা এমন সময় এই সমাবেশের ডাক দিয়েছি যে সময় একনায়কতান্ত্রিক বিজেপি আজকে ভারতবর্ষের মাটি হারাতে চলেছে। আমরা এমন সময় এই সমাবেশের ডাক দিয়েছি যেখানে শুধু তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতা নন, ভারতবর্ষের অন্যান্য অনেক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অনেক রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে আগামী ১৯শে জানুয়ারি ব্রিগেডে সশরীরে উপস্থিত হবেন।
  • সেই সমাবেশে আমাদের সর্বজন শ্রদ্ধেয়া নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন থাকবেন, তেমনই থাকবেন দিল্লীর আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, বিহারের আরজেডি দলের তেজস্বী যাদব, ডিএমকের এম কে স্ট্যালিন, টিডিপির চন্দ্রবাবু নাইডু, শত্রুঘ্ন সিনহা, যশোবন্ত সিনহা অনেকেই আসবেন। তাঁরা ওই দিন ওই সমাবেশে উপস্থিত হয়ে বলবেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুম আগে বাড়ো, হাম তুমহারে সাথ হ্যায়।’
  • যারা হিন্দু মুসলমানের বিভাজন করে বাংলায় রাজনৈতিক ভাবে লড়াই না করতে পেরে ধর্মীয় মেরুকরণ করে বাংলাকে অশান্ত করতে চেয়েছিল, আমরা সেই গদ্দার, সেই অসুর গুলোকে বাংলা ছাড়ার ডাক দিয়ে, ভারত ছাড়ার ডাক দিয়ে ব্রিগেড চলো সমাবেশের ডাক দিয়েছি।
  • সিপিএমএর মৃত্যুঘণ্টা যেমন তৃণমূল কংগ্রেস তৈরী করেছিল, আগামীদিন আমরা এই সাম্প্রদায়িক অসুর বিজেপিকে ভারত ছাড়া করার জন্য ব্রিগেড সমাবেশের ডাক দিয়েছি। ৩৪ বছরের জগদ্দল পাথর সিপিএমকে যদি আমরা বাংলা ছাড়া করতে পারি, ৪ বছরের শিশু বিজেপিকে আগামীদিন ভারত ছাড়া করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যাইয়ের নেতৃত্বে আগামী দিন দিল্লীর বুকে ধর্মনিরপেক্ষ এক সরকার আমরা তৈরী করব। এটাই আমাদের লক্ষ্য, এই লক্ষ্যে আমাদের অবিচল থাকতে হবে।
  • ভারতবর্ষে হাজার হাজার রাজনৈতিক দল তৈরী হয়েছে, কেউ বশ্যতা স্বীকার না করলে, তাদের পেছনে সিবিআই, ইডি, আয়কর লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি এমন একটা রাজনৈতিক দল আজকে হিন্দু মুসলমানের মধ্যে বিভাজন করে তারা উন্নয়নকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছে। যে বলছে, আমি তোমাদের কথা শুনব না, তার পেছনে সিবিআই, ইডি, আয়কর লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা তৃণমূল কংগ্রেস দলকে হাজার চেষ্টা করেও ধমকে, চমকে, চোখ রাঙিয়ে, গলা উঁচিয়ে বাড়িতে ধুকিয়া রাখতে পারেনি। আমরা বশ্যতা স্বীকার করতে রাজি নই।
  • মানুষের পেটে যদি আঘাত করে, আমাদের জীবন গেলে যাবে, প্রাণ গেলে যাবে, আমরা তার আঘাতকে গণতান্ত্রিক ভাবে প্রতিঘাতের মাধ্যমে জবাব দিতে প্রস্তুত। তৃণমূল কংগ্রেস দলটা বিশুদ্ধ লোহার মত, তাকে যত পোড়াবে, যত তাতাবে, যত আঘাত করবে, যত প্রহার করবে, যত জ্বালাবে, যত মারবে, তৃণমূল তত শক্তিশালী হয়ে উঠবে। তৃণমূল কংগ্রেস আজকে কুৎসার বিরুদ্ধে জবাব দিয়ে বটবৃক্ষ হিমালয় পর্বতের উচ্চতায় মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে পৌঁছে গেছে। আগামীদিনও এর ব্যাতিক্রম হবে না।
  • যারা উন্নয়ন নিয়ে কথা বলতে পারে না, আমি এই সভা থেকে সব ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে তাদের চ্যালেঞ্জ করে বলছি, যদি বাপের বেটা হও, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করবে, আমাকে জেলে ঢুকিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে প্রমাণ করবে কে সত্যি কথা বলছে, আর কে মিথ্যা কথা বলছে।
  • মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালের আগে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আমাদের সর্বজন শ্রদ্ধেয়া মুখ্যমন্ত্রী অক্ষরে অক্ষরে তা পালন করেছেন। আমরা বলেছিলাম, আমরা ক্ষমতায় আসার পর সিঙ্গুরের জমি ফিরিয়ে দেব, আমরা দিয়েছি। আমরা বলেছিলাম, ক্ষমতায় আসার পর গ্রামে গ্রামে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা আমাদের সরকার পৌঁছে দেবে, আমরা দিয়েছি। আমরা বলেছিলাম, ক্ষমতায় আসার পর বাড়িতে বাড়িতে পানীয় জলের সুব্যবস্থা আমাদের সরকার করবে, আমরা করেছি। আমরা বলেছিলাম, ক্ষমতায় আসার পর ঝকঝকে তকতকে রাস্তাঘাট, একাধিক মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল আমাদের সরকার করবে, আমরা করেছি।
  • বিজেপি বলেছিল তারা ক্ষমতায় এলে বছরে ২কোটি বেকারের চাকরি হবে, আচ্ছে দিন আসবে, সকলে ১৫লক্ষ টাকা করে পাবে, সকলে কাঁচকলা পেয়েছে। ভারতবর্ষে নরেন্দ্র মোদীর সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর বাংলাকে ইচ্ছাকৃতভাবে ধারাবাহিকভাবে লাঞ্ছিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত, অত্যাচারিত, শোষিত করে রেখেছে। কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ফলে বাংলা কোনওদিন অসম্মানিত হয়নি।
  • কৃষক ফসল বীমা যোজনায় কেন্দ্র দেয় ২০টাকা, রাজ্য সরকার দেবে ৮০টাকা আর নাম লিখতে হবে প্রধানমন্ত্রীর। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাজ্য সরকার দেবে অর্ধেক টাকা, তাদের সরকার দেবে অর্ধেক টাকা আর নাম লিখতে হবে প্রধানমন্ত্রীর। তাই মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন যে তোমাদের টাকাও দিতে হবে না, তোমাদের নামও থাকবে না। বাংলা সসম্মানে আগামী দিনে বাংলার মানুষের আশির্বাদ নিয়ে এগিয়ে যাবে।
  • যারা ভাবে হিন্দু ধর্মের জন্যে মমতা ব্যানার্জি কাজ করে না আমি আজকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, যে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী হিন্দু ধর্মের জন্য যা কাজ করেছে অন্য ২৮টি রাজ্যের কোনও মুখ্যমন্ত্রী তার ৫% কাজের হিসাব দিতে পারবেন না। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী হিন্দু ধর্মের বাৎসরিক মিলন কেন্দ্র গঙ্গাসাগরের এমন পরিবর্তন করেছেন যা আগে হয়নি। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী আসার পর দক্ষিণেশ্বরে আন্তর্জাতিক মানের স্কাইওয়াক তৈরি হয়েছে। এই সরকার ভগিনী নিবেদিতার বাড়ি সংস্কার করে, সংরক্ষণ করে হেরিটেজ বাড়ি ঘোষণা করেছেন। কালীঘাটে আগামীদিনে ১২৫ কোটি টাকা খরচ করে গর্ভগৃহ পর্যন্ত স্কাইওয়াক নির্মাণ হতে চলেছে। এছাড়া বেলুড় মঠের, তারাপিঠের, বক্রেশ্বরের উন্নয়ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছেন।
  • এছাড়াও, আমরা ফুরফুরা শরীফের উন্নয়ন করেছি, সঙ্খ্যালঘুদের উন্নয়ন করেছি, আমরা শিখেদের জন্য, জৈনদের জন্য কাজ করেছি, আমরা বড়দিনে ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যাল শুরু করেছি। আমি মনে করি আমার ধর্ম কোনদিন আমাকে বিভাজনের কথা শেখায় নি। আমার ধর্ম হিন্দু ধর্ম, আর আমার ধর্মের সবচেয়ে বড় প্রচারক স্বামী বিবেকানন্দ আমাদের ভেঙ্গে দাও, গুড়িয়ে দাও, মিটিয়ে দাও-এর শিক্ষা দেন নি।
  • আমাদের ধর্ম শিখিয়েছে নিজের ধর্মের প্রতি আস্থাশীল এবং অন্যের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে, আমাদের ধর্ম বৈচিত্রের মধ্যে একতার কথা শিখিয়েছে। আমাদের ধর্ম শিখিয়েছে সব ধর্মকে এক সাথে নিয়ে চলার কথা। আমি যখন জন-প্রতিনিধি হয়েছি, আমাদের নেত্রী আমাদের শিখিয়েছেন যে আমি হিন্দু হতে পারি, আমার ধর্ম আমি বাড়িতে পালন করব, কিন্তু আমি যখন মানুষের ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছি, আমার তখন একটাই ধর্ম- মানব ধর্ম, আমি মানুষের জন্যেই কাজ করব। আমি জাতি ধর্ম নির্বিশেষে কাজ করব, মানুষের উন্নয়ন করে যাব।
  • আর যারা ধর্মের ভিত্তিতে ‘জয় শ্রী রাম’ বলে বাংলাকে দ্বিখন্ডিত করতে চেয়েছিল, তাদের কি করুণ পরিনিতি হয়েছে আমরা তা দেখেছি। বাংলার রসগোল্লা খেতে গিয়ে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিসগড় তাদের হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। ওখানে কি করুণ পরিণতি ভারতীয় জনতা পার্টির, আপনারা তা দেখেছেন। আর আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে যে হিন্দু ধর্মের ধারক বা বাহকবা রক্ষাকর্তা হিসাবে যারা নিজেকে দাবী করে তারা তিন রাজ্যে যেখানে গড়ে ৯০% ভোটার হিন্দু, সেখানে তারা গোহারা হেরে গিয়েছে। এদের ওই সব রাজ্যের মানুষ বিদায় দিয়েছে।
  • আমাদের মুখ্যমন্ত্রী কি বলেছেন- আমরা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করি না। আমরা সিপিএম-এর মতো নাস্তিক নই যে ইশ্বরে বিশ্বাস করি না আর বিজেপি-র মতো ধর্ম বিক্রি করে রাজনীতি করি না। আমরা অন্য নিরিখে রাজনীতি করি। গত সাত বছরে অভুতপর্ব উন্নয়নের কাজ করেছে তৃণমূল।
  • মনে রাখবেন বাংলার ১০ কোটি মানুষের মধ্যে ৯ কোটি মানুষ কোনও না কোনও ভাবে রাজ্য সরকারের পরিষেবা পেয়ে থাকে এবং তাদের পরিবারের লোকেরা এই পরিষেবা পেয়ে আগামীদিনে উন্নত জীবন নিয়ে বাঁচতে পারবে। এটা আমাদের কাছে সত্যি গর্বের বিষয়। একটা বাচ্চা জন্মানোর পর থেকে বিভিন্ন উন্নয়নের প্রকল্পের মাধ্যমে আগামীদিনে তার জীবন সমৃদ্ধ হচ্ছে। এমনকি পরলোক গমন করলেও সরকার সমব্যাথী ও বৈতরিণী প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে তার পরিবারকে সাহায্য করছে। এই হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আমরা যা কথা দিই, আমরা সেই কথা রাখি।
  • মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটের জন্য রাজনীতি করেন না। যদি করত তা হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কন্যাশ্রী দিতেন না, সবুজ সাথী দিতেন না। কারণ, এগুলি যারা পাচ্ছে তাদের ভোটাধিকার নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাও তাদের একাধিক প্রকল্পের মাধ্যমে সাহায্য করছেন। উন্নয়নমূলক পরিষেবা দিয়ে তাদের জীবন সমৃদ্ধ করছেন। আগামীদিনে তারা যেন বড় হয়ে পরিবার পরিজন, বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফুটিয়ে সমাজের একটা স্তম্ভ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
  • গলায় গামছা, মুখে রাম, দাঙ্গা লাগানো তাদের কাম- এই হচ্ছে বিজেপি-র আসল রূপ। আমি মনে করি যারা ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করে আমাদের কাছে পূজনীয় সেই রাম-কে বিক্রী করে আর গরুর নামে রাজনীতি করে গত চার বছরে ভারতের উন্নয়ন করতে পারুক আর না পারুক, দিল্লীর বুকে ১২০০ কোটি টাকা খরচ করা একটা সেভেন স্টার পার্টি অফিস তৈরি করেছে। আর যারা প্রথম দিন থেকে তৃণমূল করে তারা দেখেছে যে ২০১১ সালে তোপসিয়ায় আমাদের যা পার্টি অফিস ছিল আজও তা একই আছে। আমরা মানুষের জন্য কাজ করি, ধর্মের নামে রাজনীতি করে, গরুর নামে রাজনীতি করে, মন্দিরের নামে রাজনীতি করে কোনদিন মানুষকে আমরা বিভ্রান্ত করি নি।
  • গরুই এদের উঠিয়েছিল, গরুই এদের ডোবাবে। রাজনৈতিক ভাবে লড়াই করার ক্ষমতা নেই। শুধু বড় বড় কথা, আর এমন তাদের অবস্থা যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-কে আক্রমণ করবে। দিল্লী থেকে একটা বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে এসেছে, সেটা দেখিয়ে বলছে- রথ। আমরা তো এই রথ আগে দেখিনি। আমি তো হিন্দু হয়ে আষাড় মাসের রথে বিশ্বাস করি। জগন্নাথ দেবের রথ জানি। আর ওরা গাড়িকে দেখিয়ে বলছে-রথ। এই হচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি।
  • আমরা রথ মানে রামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দের রথ জানি, আমরা রথ মানে প্রভু চৈতন্যের রথ জানি, আমরা রথ মানে গোপালের রথ জানি, এ কোন রথ? কাঠ দিয়ে রথ তৈরি হয়। ভারতবর্ষে আমাদের যা সংস্কৃতি, মানুষের শরীরে ২০৬ টা হাড় থাকে, রথ তৈরি করতে ২০৬ টা কাঠ লাগে, সেই রথে কাঠ থাকে, দড়ি থাকে, দেবতা থাকেন, ঈশ্বর থাকেন। এ কোন রথ? কাঠ নেই, দড়ি নেই, দেবতা নেই, ঈশ্বর নেই, পৃথিবীর প্রথম রথ, যেখানে ফূর্তি করা যায়, স্নান করা যায়, আড্ডা মারা যায়, ছাইপাস খাওয়া যায়, মল ত্যাগ করা যায়, মূত্র ত্যাগ করা যায়, আড্ডা মারা যায়। এ রথ কোন রথ সেই প্রশ্নটা মানুষের মনে জাগছে। এর জবাব তো দিতে হবে।
  • বিলাশ বহুল একটা গাড়ি নিয়ে এসেছে। যেখানে নেতারা ফূর্তি করবে, আর চারটে, পাঁচটা কর্মিকে বলবে তোমরা সামনে হাঁটো। এই হয়ে গেছে তাদের অবস্থা। এখন সেই কর্মীরাও এদের সাথে নেই। মাথায় রাখবেন যাদের ভুল বুঝিয়ে নিয়ে গিয়েছিল, তারাও আজকে উপলব্ধি করেছে এই দলটা কতটা খতরনাক।
  • যারা নিজেদেরকে দেশপ্রেমিক বলে দাবি করে, আমি প্রশ্ন করতে চাই, দেশের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী কি করেছে? দেশের জন্য অমিত শাহ কি করেছে? দেশের জন্য দিলীপ ঘোষ কি করেছে? গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা? যখন গনতন্ত্র বিপন্ন ছিল, যখন বাংলায় সিঙ্গুর হয়েছিল, নন্দীগ্রাম হয়েছিল, আমলাশোলে লোকে পিঁপড়ের ডিম খেয়ে দিন কাটাতো, দিপালি বসাক লাঞ্ছিত হয়েছিল, তাপসী মালিক ধর্ষিতা হয়েছিল, নন্দীগ্রাম হয়েছিল, নেতাই হয়েছিল, ২১শে জুলাই, ১৯৯৩ সালে ১৩ জন তরতাজা যুবক গণতন্ত্র রক্ষা করতে প্রাণ দিয়েছিল তখন নরেন্দ্র মোদি, দিলীপ ঘোষের টিকিও খুঁজে পাওয়া যায় নি, এখন গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা?
  • বিজেপির গণতন্ত্র? বিজেপির গণতন্ত্র, মানুষ মারার ষড়যন্ত্র, দেখতে যদি চাও, তবে উত্তরপ্রদেশ যাও, রাজস্থান যাও, বিহার যাও, মানুষের জীবনের কোনও দাম নেই, একটা গরুকে বাঁচাতে গিয়ে পুলিশ অফিসার প্রাণ দিচ্ছে, বুলন্দ শহরে সেকি হিন্দু নয়?
  • নোটবন্দির নাম করে ১৩০ কোটি মানুষকে লাইনে দাঁড় করিয়েছে। তাদের মধ্যে ১৫০ জন রৌদ্রের তাপ সহ্য করতে না পেরে প্রাণ দিয়েছে, তাদের মধ্যে কজন হিন্দু, কজন মুসলমান? গোরক্ষপুরে ৮০ জন শিশু অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছে, তাদের মধ্যে প্রত্যেকে হিন্দু, মধ্যপ্রদেশে ৮ জন কৃষককে শিবরাজ সিং সরকার নৃসংশভাবে গুলি করে হত্যা করেছে, কারন তারা নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিল। যে হত্যা কান্ড নেতাই নন্দীগ্রামের হত্যাকান্ডকে লজ্জা দেবে। তাদের মধ্য প্রত্যেকে হিন্দু। তারা আবার হিন্দু ধর্মের ধারক আর বাহক? কি করেছে হিন্দু ধর্মের জন্য? আমি জিজ্ঞেস করতে চাই! তার কোন কাজটা হিন্দু ধর্মের জন্য করেছে?
  • আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজেকে দেশপ্রেমিক বলে দাবি করে। তিনি মূর্তি বানাচ্ছেন ৩০০০ কোটি টাকা দিয়ে। ১০০ কোটি, ২০০ কোটি নয়। স্মার্ট সিটির জন্য ১০০ কোটি দেওয়ার বেলায় টাকা নেই, বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও দেওয়ার বেলায় টাকা নেই, আর আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজের প্রচারে খরচা করছেন কত? ৫২৭০ কোটি টাকা। ৩০০০ কোটি টাকা দিয়ে মূর্তি, ৫০০০ কোটি টাকা দিয়ে অ্যাড, আর ২০০০ কোটি টাকা দিয়ে গত ৪ বছরে বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। ১০,০০০ কোটি টাকা সর্বসাকুল্যে। বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও প্রকল্পে ২৯টা রাজ্যের জন্য কত বাজেট? ১০০ কোটি। আর আমাদের দিদি মমতা বন্দোপাধ্যায় কন্যাশ্রী প্রকল্প করেছেন। বাজেট কত? একটা রাজ্যের জন্য ৬০০০ কোটি। এই হচ্ছে মমতা বন্দোপাধ্যায় আর নরেন্দ্র মোদির মধ্যে পার্থক্য।
  • আমাদের বেটি আমরা বাঁচিয়ে নেব, তুমি পারলে এবার তোমার গদি বাঁচাও। কত ধানে কত চাল প্রমাণ হোক। মমতা বন্দোপাধ্যায়কে বাংলা ছাড়া করবে? মমতা বন্দোপাধ্যায়কে বাংলা ছাড়া করতে গিয়ে আগামীদিন তোমাদের দল দিল্লী ছাড়া হবে, এটা তোমাদের মাথায় রাখতে হবে। মমতা বন্দোপাধ্যায়কে রাতারাতি সরানো অত সোজা নয়। ৪টে মিটিং করে আর ২টো ভাষণ দিয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায় তৈরী হয় নি। মানুষের সুখ-দুঃখে, বিপদে-আপদে নিজের জীবন বিপন্ন করে, সমর্পন করে আজকে নেত্রী ধারাবাহিকভাবে গন আন্দোলনের লড়াই বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে, মানুষকে সাথে নিয়ে সংগঠিত করেছেন।
  • মমতা বন্দোপাধ্যায় যে উন্নয়ন করেছেন, সেই উন্নয়নের নিরিখে যদি লড়তে পারো লড়ো, করতে পারলে করো, আর ধরতে পারলে ধরো, নইলে বাড়িতে গিয়ে বসে পড়ো, বাংলায় রাজনৈতিকভাবে অস্তিত্ব তোমাদের আগামীদিন থাকবে না, এর জবাব কড়ায় গন্ডায় বাংলার মানুষ আগামীদিন দেবে।
  • ৪২ এ ৪২ – আমাদের নেত্রী ডাক দিয়েছেন। ২১শে জুলাই ২০১৮ সালে আমাদের নেত্রী বলেছিল, আমরা ব্রিগেড সমাবেশ করবো, এবং ৪২ এ ৪২ আমাদের চাই। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু বলেছিলেন, তুমি আমাদের রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব। দিলীপ বাবুরা কি বলছে? তুমি আমাদের গদি দাও, আমি তোমাদের রক্তস্নাত বাংলা দেব। আর মমতা বন্দোপাধ্যায় কি বলছেন? হে বাংলার বীর যোদ্ধা, মা-মাটি-মানুষ তুমি আমাদের ৪২ এ ৪২ দাও , আমি তোমাদের আগামীদিন শান্তিপূর্ন, ধর্মনিরপেক্ষ, ঐক্যবদ্ধ ভারতবর্ষ দেবো। আমাদের এই লক্ষ্যেই অবিচল থেকে আগামীদিন মমতা বন্দোপাধ্যায়ের হাত আরও শক্তিশালী করার জন্য আজকে এই সভা থেকে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে।
  • এবং যে সংখ্যায় মানুষ আজকে আমাদের সভায় উপস্থিত হয়েছেন, আমি দায়িত্বের সাথে বলতে পারি, যে সতঃস্ফুর্ততা, যে ভালোভাসা, যে উৎসাহ এবং যে উদ্দীপনা নিয়ে আজকে আপনারা এই সভায় এসেছেন আমি সুনিশ্চিত হয়ে আমার নেত্রীকে বলতে পারবো, আগামীদিন অন্য কোনও জেলা লাগবে না, পূর্ব বর্ধমান আর পশ্চিম বর্ধমান একাই নিজেদের সমর্থনে কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড ভরিয়ে দেবে। ইতিহাস আমরা আগামীদিন ভারতবর্ষের বুকে ইতিহাস তৈরি করবো।
  • ডাক দিয়েছে মমতা, ব্রিগেড চলো জনতা।
  • বাড়িতে বাড়িতে আওয়াজ তোলো, ১৯শে জানুয়ারি ব্রিগেড চলো।
  • ছাত্র-যুব আওয়াজ তোলো, ১৯শে জানুয়ারি ব্রিগেড চলো।
  • শ্রমিক-কৃষক আওয়াজ তোলো, ১৯শে জানুয়ারি ব্রিগেড চলো।
  • মা-মাটি-মানুষ আওয়াজ তোলো, ১৯শে জানুয়ারি ব্রিগেড চলো।
  • ২০১৯ বিজেপি ফিনিস। এই মূল মন্ত্র নিয়ে আমাদের লক্ষ্যে অবিচল থেকে আগামীদিন এগিয়ে যেতে হবে। ২০১৮ সালে বিজেপির এমনিতেই করুণ পরিণতি হয়েছে। আমি ডুমুরজলায় ২০১৮ সালের ২রা ফেব্রুয়ারী বলেছিলাম, ২০১৯ বিজেপি ফিনিস। কিন্তু এই দল তো ২০১৮ সালেই ভোকাট্টা হয়ে গেছে।
  • আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে যদি লড়তে পারি, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, জাতি ধর্ম-বর্ন নির্বিশেষে যদি আমরা লড়াই করতে পারি, তো আমরা বিজেপিকে ধুয়ে মুছে ছাইপাসের মতো সাফ করে আগামীদিন বাংলা থেকে বিদায় দেব, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে।
  • আপনারা সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। জয় হিন্দ, বন্দেমাতরম।