এপ্রিল ২৪, ২০১৯
বাংলায় দাঙ্গা বরদাস্ত করা হবে নাঃ শ্রীরামপুরে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ শ্রীরামপুরে একটি নির্বাচনী সভা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, তৃণমূল থাকলে মানুষ নিরাপদে থাকবে, সব ধর্মের মানুষ শান্তিতে মিলেমিশে থাকবে। তিনি আরও বলেন, বাংলায় দাঙ্গা বরদাস্ত করা হবে না।
ওনার বক্তব্যের কিছু অংশঃ
- হুগলী জেলায় অনেক কাজ হয়েছে। চন্দননগরে নতুন পুলিশ কমিশনারেট, মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, স্টেডিয়াম, রানি রাসমনি গ্রিন ইউনিভার্সিটি, ফুরফুরা শরিফের উন্নয়ন, তারকেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদ, কর্মতীর্থ, মসলিন তীর্থ করা হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচের কাজের জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এছাড়াও চন্দননগর আলো হাব, বলাগড়ে ইকো ট্যুরিজম প্রজেক্ট, মাল্টি জিম, নতুন রাস্তা সহ অনেক কাজ হয়েছে
- এছাড়াও প্রত্যেক মানুষের জন্য বিভিন্ন পরিষেবামূলক প্রকল্প যেমন খাদ্য সাথী, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, সবুজ সাথী, কৃষক বন্ধু, সবুজ শ্রী, বিনামূল্যে চিকিৎসা, বিধবা ভাতা, বৈতরিণী চালু করেছি
- সকলের জন্য স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প চালু হয়েছে, আর এই স্মার্ট কার্ডটি হবে বাড়ির মহিলা অভিভাবকদের নামে
- কৃষকদের জমির খাজনা ও মিউটেশন ফি মুকুব করা হয়েছে, আইসিডিএস ও আশা ও ১০০ দিনের কর্মীদের জন্য ও অনেক কাজ করা হয়েছে।
- বাংলায় কোন ভাগাভাগি নেই, সব সম্প্রদায়ের মানুষ এই সব প্রকল্পের সুবিধা পায়
- বাংলার কৃষকরা আমাদের গর্ব, সারা দেশে যখন ১২০০০ কৃষক আত্মহত্যা করেছে তখন বাংলায় কৃষকদের বার্ষিক আয় ৩ গুণ করা হয়েছে আর মোদী বাবু এখন বলছে ২০২২ সালে দ্বিগুন করবে
- সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রেও মিউটেশন ফি মুকুব করা হয়েছে
- কৃষক বন্ধু প্রকল্পে প্রকল্পে কৃষকদের বছরে ২ বার ২৫০০ টাকা করে মোট ৫০০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি যাদের এক একরের কম জমি আছে তাদের ১০০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। কৃষকরা পেনশন পায়
- ১৮-৬০ বছর বয়সের মধ্যে কোন কৃষক মারা গেলে তার পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার
- কৃষকদের শস্য বীমার সব টাকা দেয় রাজ্য সরকার। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতি হলে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়
- মহিলাদের ৭৩১ দিন মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া হয়, মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব, এসএন এস ইউ, সিসিইউ থেকে শুরু করে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান, ট্রমা সেন্টার সহ অনেক কাজ হয়েছে
- অন্য রাজ্য থেকে মানুষ বাংলায় আসে চিকিৎসা করাতে, ২৮০০০ বেড বাড়ানো হয়েছে, হাসপাতালগুলির সংস্কার করা হয়েছে
- এটা বাংলার নির্বাচন নয়, তাও আমাদের রাজ্য কি কি কাজ করেছে আমি সবসময় বলি। এটা দিল্লীর নির্বাচন। ৫ বছরে বিজেপি কি কাজ করেছে?
- একটা সরকার নিয়মিত গ্যাস, পেট্রোল, ডিজেলের দাম বাড়িয়েছে। সংসদে তৃণমূলের সাংসদরা অনবরত লড়াই করে গেছে ওদের এইসব পদক্ষেপের বিরুদ্ধে
- বলছিলেন কালো টাকা ফিরিয়ে আনবেন। সবাইকে ১৫ লক্ষ টাকা দেবে বলেছিল। মোদী বাবু টাকা দেওয়ার বদলে পকেট থেকে নিয়ে নিয়েছেন নোটবাতিল করে
- যা নোট বাতিল হয়েছিল তা সব ফেরত এসে গেছে, আসল কালো টাকা বিদেশে পাথিয়ে দিয়েছে। আর বাকিটা নির্বাচনে খরচ করছে। শুধু বড় বড় কথা
- আগে আরএসএস-র প্রচারকরা হাফ প্যান্ট পরে প্যারেড করত আর এখন টাকার প্যারেড করছে। শপিং মল পার্টি অফিস আর সম্পত্তি তৈরি করেছে
- জনধন এর নামে বড় কেলেঙ্কারি করেছে তা আগামীদিনে মানুষ বুঝতে পারবে। রাফাল স্ক্যাম, এটিএম কেলেঙ্কারি সব ধরা পরবে
- এই সাড়ে ৪ বছর ধরে শুধু বিদেশে ঘুরে বেড়িয়েছে, ১২ কোটি নতুন বেকার তৈরি করেছে
- সব মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে, মানুষ, সাংবাদিক, পুলিশ অফিসারদের খুন করেছে, দাঙ্গা করে, আর নির্বাচন এলে গদা, তরোয়াল নিয়ে বেরিয়ে পরে, রথ নিয়ে বেরিয়ে পরে
- ওরা নতুন ধর্মের আমদানি করছে। হিন্দুদের মধ্যে মারামারি লাগিয়ে দিচ্ছে, সব ধর্মের মানুষের মধ্যে ভাগাভগি করছে
- এত যখন ওরা হিন্দুদের ভালোবাসে তাহলে আসামে ২২ লক্ষ হিন্দু বাঙালির নাম বাদ দিয়েছে কেন?
- এখানে কংগ্রেস, সিপিএম বিজেপি সব একসাথে কাজ করে। বাইরে থেকে অনেক লোক আসছে, টাকার বাণ্ডিল আসছে
- লক্ষ্য রাখবেন টাকা দিয়ে যদি কেউ ভোট কিনতে চায় রিপোর্ট করবেন, ওই টাকা ওদের নয় জনগণের টাকা, ওরা লুঠ করেছে
- ওরা ব্যবসা, চাকরি সব কেড়ে নিয়েছে, তাই এবার মানুষ মোদী বাবুকে বাতিল করবে
- ওই দুই সাইনবোর্ড বাবুর একজন গতকাল এসে বলেছেন বীরভূমে রবীন্দ্রনাথের জন্ম হয়ছে, জানেই না কিছু।
- ওরা এসে মিথ্যে কথা বলছে যে বাংলায় দুর্গা পুজো হয় না। বাংলায় সব ধর্মের উৎসব পালন করা হয়। বাংলায় ছট পুজো, দল, ঈদে ছুটি দেওয়া হয়। বাংলায় লক্ষ লক্ষ দুর্গা পুজো হয়।
- মা দুর্গার হাতে অস্ত্র থাকে অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করা জন্য। ওনাদের মতন অশুভ শক্তিকে বিনাশ করার জন্যই মা দুর্গার আবির্ভাব, গদা তরোয়াল নিয়ে বাংলার সংস্কৃতি চলে না, রক্তচক্ষু দেখিয়ে বাংলাকে ভয় দেখানো যাবে না
- ৫ বছর আগে উনি চাওয়ালা সেজেছিলেন আর এখন চৌকিদার সেজেছেন। আমরা এরকম নেতা চাই না, আমরা গান্ধীজি, নেতাজি, আম্বেদকর, ভগৎ সিং এর মতন নেতা চাই
- বি এস এন এল এর কর্মীরা মাইনে পায় না, আসল চৌকিদারেরা মাইনে পায় না, জেট এয়ারওয়েস বন্ধ করে দিল
- আজ পর্যন্ত আমরা একটা মানুষের চাকরিও কেড়ে নিই নি। এখানকার শিল্প, জুট মিল, স্পিনিং মিল এর সংস্কার করেছি
- তৃণমূল কংগ্রেস থাকা মানে মানুষ নিরাপদ – সব সম্প্রদায়ের মানুষ নিরাপদ
- ওরা বাংলায় এনআরসি করবে বলেছে। নতুন ফাঁদ পেতেছে – এন আর সি করে দেশ থেকে মানুষ তাড়িয়ে দেবে, নাগরিকপঞ্জীতে অধিকাংশ মানুষের নাম নেই। বাংলায় এনআরসি করতে দেব না
- আর নাগরিক বিল হল আর একটি ধোঁকাবাজি। যারা নাগরিক আছে মানুষকে ৬ বছরের জন্য বিদেশি করে দেবে, তারপর তাদের নাগরিক্ত্ব দেবে। আমরা তো অলরেডি নাগরিক ওরা আবার কিসের নাগরিকত্ব দেবে
- বাংলায় কোন কাজ করে না, কোন সাহায্য করে না, টাকা দেয় না, বন্যার সময় আসে না, আমাদের টাকার ৭% টাকা আমাদের দিয়ে বলে টাকা দিয়েছে। তার বদলে আমাদের কাছ থেকে ৫০০০০ হাজার কোটি টাকা কেটে নিয়ে যায়
- কোথাও ভোট পাবে না, সব জায়গায় হারবে। বাংলায় এলে আমরা মানুষকে রসগোল্লা খয়াই, ওনাদেরও দেব
- আমি হিন্দু ধর্মের মেয়ে, আমি সব ধর্মের পুজো করি। তাই বলে আমরা অন্য ধর্মকে অশ্রদ্ধা করি না। আমি সর্ব ধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাস করি
- ওরা নিজেরা করে বলে মুসলমানরা করেছে, এভাবে দাঙ্গা বাঁধায়। আমি কোন দাঙ্গা সমর্থন করি না, হিন্দু – মুসলমান কেউ দাঙ্গা করবে না
- আর প্রধানমন্ত্রীর পদে থেকে নরেন্দ্র মোদীর মত এত মিথ্যে কথা বলতে এর আগে কাউকে দেখিনি। ওনার যত রাগ বাংলার ওপর কারণ আমি প্রতিবাদ করেছি, কারণ ওরা আমার মুখ বন্ধ করতে পারেনি তাই এখন নির্বাচনের সময় বারবার বাংলায় আসছে, ওরা যত আসবে আমরা তত জিতবো
- ভোট মানুষ দেয়, পুলিশ বা এজেন্সি নয়। আমার বিশ্বাস মানুষ আর ওনার বিশ্বাস এজেন্সি
- এমনকি মানুষের ব্যাঙ্কের টাকাও সুরক্ষিত নয়। জোর করে ব্যাঙ্কে আধার কার্ড, ফোনে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করতে চেয়েছিল, আমাদের ফোন ট্যাপ করবে বলে। আমার ফোনও ওরা ট্যাপ করে
- যারা মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়, যারা মানুষের ওপর অত্যাচার করে সেইসব দানবিকদের রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই
- তৃণমূলই দিল্লি গড়বে, বাংলাই দিল্লি গড়বে