মে ২৫, ২০১৯
এই নির্বাচনের ম্যান অফ দি ম্যাচ নির্বাচন কমিশন। তারা খোলাখুলি বিজেপিকে সমর্থন করেছেঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

২০১৯ সালের লোকসভার নির্বাচনের পর আজ বর্ষীয়ান নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলন করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরের বৈঠক হবে ৩১শে মে।
নির্বাচন কমিশন যেরকম খোলাখুলিভাবে বিজেপিকে সমর্থন করেছে, তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেত্রী। অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি তিনি বলেন, তাঁর আগামী দলীয় বৈঠক হবে ৩১শে মে ২০১৯-এ।
তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ–
আমার মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার চাইনা। আমি ইস্তফা দিয়ে দল চালাতে চেয়েছিলাম।
আমরা আসন হারালেও আমাদের পাওয়া ভোটের শতাংশ বেড়েছে।
বিজেপি সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে ভোটে জিতেছে। হিন্দু মুসলিম ভাগাভাগি করে ভোটে জিতেছে।
নির্বাচন কমিশন আমাদের অভিযোগ শোনেনি। পাঁচ মাস ধরে রাজ্যের প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীনে ছিল।
আমি ধর্মের ভিত্তিতে মানুষে মানুষে ভাগাভাগিতে বিশ্বাসী নই। আমি একা হয়ে গেলেও আমি বদলাবো না।
এই নির্বাচনে বিজেপি যে টাকা খরচ করেছে, তা যে কোনও দুর্নীতিকে ছাড়িয়ে যাবে।
আমরা লড়াই করব। আমাদের লড়াই হবে গঠনমূলক, ধংসাত্বক নয়।
আমরা কংগ্রেস দল নই। আমরা তাদের মত আত্মসমর্পণ করব না।
বিজেপি সরকারি কর্মচারী, কেন্দ্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে টাকা বিলিয়েছে।
কলকাতা বিমানবন্দর যে কমিশনারেটের আওতায় পড়ে, সেখানকার কমিশনারকে বদলানো হয়েছে।
এই দেশ সকলের। আমি ধর্মীয় মৌলবাদে বিস্বাসী না।
আমরা বারংবার বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েও বিচার পাইনি।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানকে আহ্বান করা হয়েছে। তাহলে কেন নির্বাচনের সময়ে সবাইকে পাকিস্তানী আর পাকিস্তানী চোর বলা হচ্ছিল?
ওরা যা করে সব ঠিক, আমরা যা করি সব ভুল?
আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে যা যা বক্তব্য, আমরা তা সময়ে সময়ে জানাব।
আমাদের কোনও কাজ করতে দেওয়া হয়নি। পুরো জরুরী অবস্থার মত ছিল।
বিজেপি নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করেছে, নির্বাচন কমিশন বিজেপির অংশ হয়ে গেছে।
সিপিএমকে অনেক টাকা দেওয়া হয়েছে, অনেক সংবাদ মাধ্যমকেও প্রচুর টাকা দেওয়া হয়েছে।
টাকা দিয়ে যে সরকার গঠন হয়, সেখানে গণতন্ত্র থাকে না।
টাকা দিয়ে মানুষের ভোট কেনা হয়েছে। এই করে বিজেপি ভোটে জিতেছে।
আমরা সুপ্রীম কোর্টেও আমাদের অভিযোগ জানাতে চেষ্টা করেছি, কিন্তু, সেখানেও আমাদের কথা শোনা হয়নি।
টাকা দিয়ে ভোট কেনা না হলে বিভিন্ন রাজ্যে বিরোধীরা এত কম আসন পেতে পারেনা।
আমি নিশ্চিত, কিছু সেটিং ছিল।
এখানে অন্যান্য দেশের ভূমিকাও কাজ করেছে, আসতে আসতে সব বেরোবে।
আমি একা হয়ে গেলেও অপ্রিয় সত্যি কথা বলে যাব যতদিন আমি বেঁচে থাকব।
সমস্ত সিপিএম ভোট বিজেপিতে চলে গেছে।
আমি আগেও বলেছিলাম জগাই, মাধাই, বিদাই একজোট। সেটা এবার প্রমাণ হয়ে গেল।
নির্বাচন শেষ হয়ে গেছে কিন্তু নির্বাচনী বিধি চলছে কেন? এই নির্বাচনী বিধিকে হাতিয়ার করে ভাটপাড়ায় দাঙ্গা চালানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে এখানে রেখে দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের খরচে।
এখন যে অবস্থা, সেটা সাময়িক। আগামী নির্বাচনেও মানুষ আমাদের সমর্থন করবেন।
একজন মানুষ কিছু মানুষকে কিছু সময় বোকা বানাতে পারে, একজন মানুষ সমস্ত মানুষকে কিছু সময় বোকা বানাতে পারে, কিন্তু একজন মানুষ সমস্ত মানুষকে সব সময় বোকা বানাতে পারেনা।
বিজেপির এত ক্ষমতার লোভ কেন? গণতন্ত্রে বাকিদের জন্যও কিছু ছাড়তে হয়।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের সঙ্গে এই নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই। উত্তর প্রদেশ এবং ত্রিপুরায় এর থেকে অনেক বেশী সংঘর্ষ হয়েছে।