সাম্প্রতিক খবর

মে ৩০, ২০১৯

ছাত্র-যুব'র ‘‌জয়হিন্দ বাহিনী’‌, মেয়েদের ‘‌বঙ্গ জননী বাহিনী’, নৈহাটিতে রুদ্রমূর্তি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

ছাত্র-যুব'র ‘‌জয়হিন্দ বাহিনী’‌, মেয়েদের ‘‌বঙ্গ জননী বাহিনী’, নৈহাটিতে রুদ্রমূর্তি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

নৈহাটিতে রুদ্রমূর্তিতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কয়েকদিন ধরে এই অঞ্চলগুলিতে নানারকম অশান্তির খবর পাওয়া যাচ্ছিল। তার পাল্টা জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে। এদিন নৈহাটিতে ধর্নায় বসেছিলেন ঘর ছাড়া পরিবারগুলি। সেখানেই যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই বিজেপিকে তুলোধনা করলেন তিনি।

এদিন তিনি বলেন, রাজ্যে কাউকে গোলমাল করতে দেবো না। বরং রাজ্যের মানুষকে একসঙ্গে নিয়ে লড়াই করব, কিন্তু সাধারণ মানুষের উপর এই অত্যাচার সহ্য করব না।

দলের কর্মীদের ব্লক স্তরে জয়হিন্দ বাহিনী তৈরি করার পরামর্শ দেন তিনি। বলেন ছাত্র্রযুবদের নিয়ে ব্লক স্তরে এক একটি দল তৈরি করতে। জয় হিন্দ বাহিনী নামে সেই বাহিনী তৈরি করবেন ছাত্র যুবরা। আর মেয়েদেরও লড়াই করার কথা বলেছেন তিনি। নির্দেশ দিয়েছে বঙ্গ জননী বাহিনী তৈরি করার। সেখানে মেয়েদের সংগঠিত করে বিজেপিকে প্রতিরোধ করার কথা বলেছেন তিনি। একেবারে ব্লক স্তর থেকে এই লড়াইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

নৈহাটির সভায় মমতা এও বলেছেন, দ্রুত ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওনার বক্তব্যের কিছু অংশ:

আমি সকল মহিলাদের আহ্বান জানাই ব্লকে ব্লকে বঙ্গ জননী বাহিনী গঠন করতে। যুবরা সারা রাজ্যে আরও জয় হিন্দ বাহিনী গঠন করুন।

এই বাহিনীর সদস্যদের ইউনিফর্ম ও আইডেন্টিটি কার্ড দেওয়া হবে। তারা বাংলার সংস্কৃতির বিষয় সকলকে উদ্বুদ্ধ করবে। নেতাজীর আদর্শ অনুসরণ করে চলবে এই বাহিনী।

এই কমিটিগুলি একে ওপরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করবে। তারা আরএসএস কর্মীদের যথাযথ উত্তর দেবে।

আমি কখনও বাঙালী অবাঙালী করি না। আমি হিন্দু মুসলমান করি না। আমি সকলের জন্য কাজ করি।

সব হিন্দিভাষী খারাপ আমি মনে করি না। বিজেপির কাছে টাকা নিয়ে, ফেট্টি বেঁধে কয়েকটা দাগী অপরাধী যারা বাংলার বাসিন্দাই নয়, তারা নির্বাচনের সুযোগ নিয়ে, যখন আইন শৃঙ্খলা আমাদের হাতেই ছিল না, নির্বাচন কমিশনের হাতে ছিল, সেই সুযোগ নিয়ে দুটো গদ্দারের নেতৃত্বে অনেকে এখানে অত্যাচার করেছে।

আমি বিজেপির মত দলকে ঘৃণা করি। আমি “সারা জাহান সে আচ্ছা” তে বিশ্বাস করি।

যেসকল বাড়ি, গাড়ি জালানো হয়েছে তার রিপোর্ট চাই। আমাদের সরকার ব্যবস্থা নেবে।

এখনও শপথ নেননি, তাঁর আগেই জনগণের ওপর অত্যাচার করছে সারা ভারতবর্ষ জুড়ে।

বাংলা গুজরাট হবেনা। বাংলা বাংলাই থাকবে।

আমি আপনাদের সহায়তা করতে এখানে এসেছি। বাঙালীরা এত ভীতু হলেন কেন? কাকে ভয় পাচ্ছেন? দেশে আইন কানুন আছে।

ওরা হিন্দু মুসলমান করে মানুষে ভেদাভেদ করছে। আমি হিন্দু মুসলমান সকলকে বলব নিজের বাড়ি ফেরত যেতে।

আমি বাঙালী অবাঙালী করতে দেব না। এই গুন্ডামির শেষ আমি দেখতে চাই।

কাল আমার কাছে অনেক পরিবার গিয়েছিল। আমি দাঙ্গাবাজদের এখানে দাঙ্গা করতে দেব না।

মোদীবাবু, আপনি ভালো করে দেশ চালান। এখানে রাষ্ট্রপতি শাসন করার জন্য মোদী যদি ভেবে থাকেন এখানে সন্ত্রাসের কয়েকটা ক্যাডার এনে বসাবেন, তাহলে জানবেন আমার থেকে বড় শত্রু কেউ হবে না। আমি মানুষের পক্ষে, সন্ত্রাসের বিপক্ষে।

আমি বার বার ‘জয় বাংলা’, ‘জয় হিন্দ’ বলব।

আপনাদের বলছি, জয় হিন্দ বলুন। মানুষকে তাঁর সংস্কৃতি নিয়ে বাঁচতে দিন। অন্য সংস্কৃতি এনে চাপানো চলবে না।

২০১১ সালে যখন আমি ক্ষমতায় এসেছিলাম, বলেছিলাম “বদলা নয় বদল চাই”, আমি সকলকে বলেছিলাম রবীন্দ্র সঙ্গীত ও নজরুল গীতি বাজাতে।

অপরাধীরা শুধু অপরাধী। অপরাধীদের দল হয় না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

আমরা দাঙ্গা সমর্থন করি না। বিজেপি আমাদের ৩০জন কর্মী খুন করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৪০ কেন, আমার ১০০ জন বিধায়ককে কিনলেও আমায় দমাতে পারবেন না।

১৪ই জুন আমি কাঁচড়াপাড়ার কাঁচড়া সাফ করব। আমি সকল জেলার প্রধানকে বলব তাদের জেলার অশান্তি বিশদে জানান।

আমি বারাকপুর, কাঁচরাপাড়া, জগদ্দল ও নৈহাটিতে এখন মাঝে মাঝে আসব।

আমি সেই সকল অবাঙালীকে ভালোবাসি যারা বাংলাকে নিজের বাড়ি ভাবেন। আপনারা নিজেদের বিজেপির কাছে বিক্রী করবেন না।

আমাদের লড়াই চলবে। আমি এখানে ১৪ই জুন আবার আসব মিটিং করতে।

শান্ত থাকুন। এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। জয় হিন্দ।