সাম্প্রতিক খবর

জুন ১৫, ২০১৮

শহরের প্রবীণ–প্রবীণাদের ‘প্রণাম’ কলকাতা পুলিশের

শহরের প্রবীণ–প্রবীণাদের ‘প্রণাম’ কলকাতা পুলিশের

শুধু ‘ক্লিক’করার অপেক্ষা। হাতটুকু বাড়ালেই বন্ধু। বিপদে–আপদে, যে কোনও সমস্যায় আপনার পাশে কলকাতা পুলিশ।

‘প্রণাম’উদ্যোগের মাধ্যমে শহরের প্রবীণ নাগরিকদের দায়িত্ব নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। চিকিৎসার বন্দোবস্ত থেকে আইনগত পরামর্শ, বিনোদন থেকে শুরু করে বাড়িতে বা রাস্তায় কী সতর্কতা নেওয়া উচিত—সব কিছুরই সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির ‘পুলিশবন্ধু’।

প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার অফ পুলিশ (এস্টাব্লিশমেন্ট)বলছেন, ‘এই শহরের প্রবীণ এবং বৃদ্ধবৃদ্ধাদের পাশে থাকার জন্যই এই প্রকল্প। ৬৫ বছরের বেশি যাঁদের বয়স এবং যাঁদের দেখাশোনা করার কেউ নেই, তারাই এই উদ্যোগের আওতাধীন। আবেদনকারীকে কলকাতা পুরসভার বাসিন্দা হতে হবে। প্রকল্প প্রথম চালু হওয়ার সময় সংশ্লিষ্ট প্রবীণ বা প্রবীণাকে স্থানীয় থানায় গিয়ে নাম নথিভুক্ত করাতে হত। এখন চালু হয়েছে অনলাইন ব্যবস্থা। গড়ে প্রতিদিন প্রায় দশ জন করে সদস্য হচ্ছেন। সাফল্যের জন্য চলতি বছরের ১২ মে বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিআই) থেকে আমাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে।’

আপাতত ‘প্রণাম’–এর সদস্যসংখ্যা ১৫ হাজারের ওপর। আবেদন করার পর সংশ্লিষ্ট থানার পুলিসকর্মী আবেদনকারীর বাড়ি গিয়ে দেখে আসবেন, তিনি যথার্থই একা কি না বা স্বামী–স্ত্রী একা থাকেন কি না। প্রতিটি থানার একজন অফিসারকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যাঁর অধীনে রয়েছে তিনজনের একটি দল। তারাই তাঁদের এলাকায় গোটা বিষয়টি দেখাশোনা করেন। স্থানীয় থানা ছাড়াও আছে ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন। যার নম্বর ২৪১৯–০৭৪০/৪১/৪২।

বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নেওয়া। আবার কখনও বিনোদনের প্রয়োজনে সদস্যদের জন্য বাৎসরিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা তো আছেই। সঙ্গে রয়েছে আরও নানা উদ্যোগ। প্রবীণ–প্রবীণাদের জন্য শহরের বিভিন্ন থিয়েটার হলে থিয়েটার দেখার বন্দোবস্তও করা হয়। দুর্গাপুজোয় প্রতিমা দর্শনের জন্য বিশেষ পাস আছে। আছে শহর ঘুরিয়ে প্রতিমা দর্শনের উদ্যোগও।

প্রণামের সদস্যদের স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে তাৎক্ষণিক কোনও টাকা না দিলেও চলে। ভর্তি হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে টাকা দিলেই চলে। আছে নিখরচায় অ্যাম্বুল্যান্সের সুবিধা। স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল এবং রোগনির্ণয় কেন্দ্রে কিছুটা টাকা ছাড়ের সুবিধাও পান তারা।

একাকী প্রবীণ নাগরিক বা বৃদ্ধ–বৃদ্ধারা বহু সময় দুষ্কৃতীদের ‘সফ্ট টার্গেট’ হয়ে ওঠেন। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে বাড়িতে থাকাকালীন বা রাস্তায় বেরোলে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, সে ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকে ‘প্রণাম’। একাকীত্ব থেকে একজনকে বার করে নিয়ে আসা এবং তাকে মানসিক সহায়তা দেওয়াটাই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।