মে ৬, ২০১৯
দাঙ্গা করিয়ে করিয়ে মোদীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত মানুষ খুনের রক্তঃ বিষ্ণুপুরে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের রাধানগরে একটি নির্বাচনী সভা করেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, দাঙ্গা করিয়ে করিয়ে মোদীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত মানুষ খুনের রক্ত।
তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ
আমাকে বলছ তোলাবাজ। আমি তোলাবাজ হলে, মোদী তুমি কি? দাঙ্গা করিয়ে করিয়ে তোমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত মানুষ খুনের রক্ত।
আমরা এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্যও অনেক কাজ করেছি। আমাদের পানীয় জলের প্রকল্পে ২৩ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। এখানে সাঁওতাল আকাদেমি, স্কুল, রাস্তা, সেতু, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, সেচ প্রকল্প তৈরী করা হয়েছে।
এখানকার ৯৯ শতাংশ মানুষ রাজ্য সরকারের কিছু না কিছু প্রকল্প পেয়েছে। জেনারেল ক্যাটাগরির মানুষরাও সুবিধা পেয়েছে।
বিজেপি ঠিক করে দেবে আমি কি স্লোগান দেব? বাংলার মানুষ স্বাধীনতা আন্দোলনে দেখেছি, নেতাজী বলেছিলেন জয় হিন্দ, ঋষি বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন লিখেছিলেন বন্দেমাতরম, আমরা জাতীয় সঙ্গীত গাই। দুর্গা পুজোর বিসর্জনের সময় আমরা জয় মা দুর্গা কি জয় বলি, কালী পুজোর বিসর্জনের সময় আমরা জয় মা কালী কি জয় বলি। আমরা কোনও একটা ধ্বনি দিই না কোনও এক দেবতার নামে।
বিজেপিকে বলুন, তুমি যে এতো রাম রাম করো, পাঁচ বছর তো ক্ষমতায় ছিলে, আমরা যদি দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াক করতে পারি, ভগিনী নিবেদিতার বাড়ি অধিগ্রহণ করতে পারি, তারাপীঠের মন্দির সংস্কার করতে পারি, আমরা যদি বক্রেশ্বরের মন্দির সংস্কার করতে পারি, পাঁচ বছরে একটা রাম মন্দির করতে পারলে না? জয় শ্রী রাম স্লোগান দাও, একটাও রাম মন্দির বানাতে পেরেছ?
নির্বাচন এলে শ্রী রামচন্দ্র তোমার দলের নির্বাচনী এজেন্ট হয়ে যায়? আমরা শ্রী রামচন্দ্রকে শ্রদ্ধা করি, কিন্তু, জয় শ্রী রাম স্লোগান কেন দেব? আমি জয় হিন্দ বলব, আমি বন্দে মাতরম বলব, মা মাটি মানুষের জয়, জয় বাংলা, তৃণমূল কংগ্রেসের জয় বলব, আমি পচা বিজেপির নাম বলব না।
আগে আরএসএসের লোকরা হাফ প্যান্ট পরে ঘুরে বেড়াত, এখন কোটি কোটি টাকা হয়েছে, টাকার ত্রাঙ্ক নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মোদী বাবু পাঁচ বছরের মধ্যে সাড়ে চার বছর বিদেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন।
মোদী বাংলার দিকে তাকিয়ে দেখেননি পাঁচ বছর। এখানে বন্যা, খরা কিছুই দেখতে আসেননি। এখন ভোটের সময় ভোট চাইতে এসেছেন।
আমি এখানে প্রায় আসি। আমাদের এখানে এত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, কেন্দ্র আগে আমাদের ক্ষতিপূরণ দিক। এক টাকা দেয়নি। তিনবার গেছি। যেদিন খড়গপুরে দুর্যোগ হওয়ার কথা ছিল, সেদিন উনি কোথায় ছিলেন? অন্য রাজ্যে প্রচার করছিলেন। আমি খড়গপুরে বসে ছিলাম। আজ তুমি ঝাড়গ্রামে ভোট চাইতে আসছ? তোমার এখানে খোঁজ নেওয়ার দরকার নেই। এক পয়সা সাহায্য করনা।
তুমি মুখ্যমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে মুখ্যসচিবকে বলছ বৈঠকে আসতে। মুখ্যসচিব মুখ্যমন্ত্রীর অধীন।
রাজীব গান্ধী ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, মারা গেছেন। তোমার তাঁকে পরছন্দ নাও হতে পারে, তুমি তাঁকে বলেছ দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধানমন্ত্রী।
উত্তর প্রদেশের বিজেপির সরকার, যাকে তাঁকে যখন তখন, গুলি করে মেরে ফেলে। কেউ এফআইআর করতে পারেনা।
রাজস্থান, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিসগড়ে, বিহারে আদিবাসীদের জমি কেড়ে নিয়েছে আর প্রতিদিন অত্যাচার করছে। ওদের চিকিৎসা করাতে আমাদের রাজ্যে আসতে হয়।
বলেছিল আচ্ছে দিন আনব। সব কিছু জিনিসের দাম বাড়িয়েছে। গ্যাসের দাম থেকে কেবিল টিভির দাম বাড়িয়েছে। কৃষকরা আত্মহত্যা করেছে। ৩ কোটি ছেলেমেয়ে চাকরি হারিয়েছে।
মোদীর স্ত্রী আছে। মোদী বাবু হলফনামা জমা দিয়েছেন, সেখানে লিখেছেন, স্ত্রী কি করেন, পরিবারের আয়, পরিবারের সম্পত্তি, স্ত্রী থাকেন কোথায়- সব কিছুই তিনি জানেন না বলেছেন? যিনি নিজের স্ত্রীকে দেখেন না, সে দেশকে দেখবে?