মে ১২, ২০১৯
সিপিএমকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপির হাত শক্ত করা: বারুইপুরে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের বারুইপুরের রাসমাঠে এক নির্বাচনী সভা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, সিপিএমকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপির হাত শক্ত করা। তিনি বলেন যে বহরমপুর, জঙ্গিপুরে বিজেপি কংগ্রেসকে সুবিধা করে দিয়েছে এবং যাদবপুরে সিপিএমের সাথে বিজেপির সমঝোতা আছে।
তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশ:
সিপিএমকে ভোট দিয়ে লাভ নেই, ওরা বাংলায় একটা আসনও পাবে না। সিপিএমকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া। বিজেপিকে গণতন্ত্রের কবর দিন আর তৃণমূলকে দেশ গড়তে দিন।
৩৪ বছরের সিপিএমের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমাদের পাশে কেউ এসে দাঁড়ায়নি। তৃণমূল কংগ্রেসের শুরু যাদবপুর কেন্দ্র থেকে।
নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে বলাচ্ছে বিজেপিকে ভোট দিতে, ঘরে ঢুকে লোককে মারছে। আমরা এর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছি।
হাওড়ায় বুথে গুলি চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী, আজও চালিয়েছে। কষ্ট করে নির্বাচন করতে হয়, আমাদের বিজেপির মত টাকা নেই। সংস্কারের জন্য লড়াই করছি ১৯৯৫ থেকে।
নোটবাতিলের হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে বিজেপি নির্বাচন করছে। এরা ইতিহাস বদলাচ্ছে, গান্ধীজির জায়গায় নাথুরাম গডসে এসেছে। এবার ক্ষমতায় এলে ব্যাঙ্ক তুলে দেবে।
এটা বাংলার নির্বাচন নয়। আমার থেকে কৈফয়েত চাইছে আমি কি করেছি। প্রয়োজনে আমি জনগণকে সবসময় জবাব দিতে রাজী আছি। আগে বিজেপি নিজে বলুক ওদের ইস্তেহারের কি কাজ ওরা করেছে?
বিজেপি বলুক তারা কি কাজ করেছে? মোদী বাবুকে চ্যালেঞ্জ করলাম, আমার সঙ্গে টেলিপ্রম্পটার ও কাগজ ছাড়া বিতর্ক করতে। চ্যানেল আপনি ঠিক করুন।
মোদী বাংলায় এসে বলেন বাংলায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। কি ছিল বাংলায়? কলকাতায় যখন বর্ষাকালে কোমর পর্যন্ত জল থাকত, সিপিএমের মেয়রকে খুঁজে পাওয়া যেতনা। এখন দাঁড়িয়েছেন সাংসদ হবে বলে। আগে চেয়েছিল রাজ্যসভায় সাংসদ হতে।
বাংলার বদনাম হয়েছে সিপিএমের জন্য। এখানে আমাদের বন্দুক দিয়ে ঘিরে ধরেছিল সিপিএম। সিপিএম আমার এজেন্টদের ওপর অসহ্য অত্যাচার করেছে, নৃশংস ভাবে কত হত্যা করেছে। শিশুদের পর্যন্ত নির্মম ভাবে খুন করেছে।
টিভি খুললে সব কিছুতে মোদী। শুধু জুতোর দোকান খোলা বাকি। নির্বাচনের পর সেই দোকানও খুলবে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নোটবাতিল করার অনুমোদন দেয়নি, অসাংবিধানিক পদক্ষেপ বলে।
দেশে বিভাজন তৈরী করল, গৌরী লঙ্কেশদের মত সাংবাদিকদের খুন করেছে। ন্যাশানাল চ্যানেল মোদীর বিরুদ্ধে একটা কথা বললেই সেই চ্যানেল বন্ধ। যে সাংবাদিক মোদীর বিরুদ্ধে কিছু লিখবে, তাঁর চাকরি শেষ। ওদের মন্ত্রী আমায় ফোন করে বলছে আমি যেন মোদীর বিরুদ্ধে কিছু না বলি। সবাইকে ভয় দেখায়।
কাউকে দেখেছেন সভা করতে এসে বলছে ৪০ জন তৃণমূল বিধায়ক বিজেপিতে যাবে বলেছে। লজ্জা হয় না ঘোড়া কেনাবেচা?
মোদী বলেছে আমি দুর্গা পুজো করতে দিই না। এত বড় মিথ্যে কথা একজন প্রধানমন্ত্রী বলছে। দুর্গা পুজো এখন একটা বিশাল কার্নিভাল। বলেছে আমি সরস্বতী পুজো করতে দিই না। মোদী কেন মিথ্যে বলবে?
আমাদের সংস্কৃতিকে কেন অপমান করবে? ওদের থেকে হিন্দুত্ব শিখতে হবে? যারা স্বাধীনতায় ব্রিটিশদের সঙ্গ দিয়েছিল, তারা হিন্দুত্ব শেখাচ্ছে।
আমাদের দুটোই স্লোগান, জয় হিন্দ ও বন্দে মাতরম। তোমাদের ধার করা স্লোগান মারা নেব না।
মোদী হোমওয়ার্ক করে না। আমায় বলছে তোলাবাজ। এটা প্রধানমন্ত্রীর মুখের ভাষা? কি ঔধত্য, সাহস মোদীর।
ওনার এক নেতা বলছে আমাদের মোদীজির ৫৬ ইঞ্চি ছাতি, আমি বললাম, রাবণের আরও শক্তি ছিল, তাও সে বধ হয়েছিল।
মোদীর আমলে ৪৫% বেকার বেড়েছে। ৩ কোটি মানুষ বেকার হয়েছে।
অসমে ২২ লক্ষ হিন্দুর নাম বাদ দিল আর তারা হিন্দুত্ব শেখাচ্ছে? আসল উদ্দেশ্য বাঙালী খেঁদাও।
এখানে কংগ্রেস প্রার্থী দেয়নি। এই জন্য আমি বলি জগাই মাধাই গদাই। ওদের সব আন্ডারস্ট্যান্ডিং আছে। আমাকে একা লড়াই করতে হচ্ছে। আমি সব অত্যাচার সহ্য করব কিন্তু, ঘরে বসে থাকব না।
ভারতের সবাই কে সিবিআই, ইডি দিয়ে ভয় দেখিয়েছে। আমাকে ভয় দেখাতে পারেনি। ভারতে দাঙ্গাবাজের সরকার চলছে। এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে ভাঙুক।