মে ১১, ২০১৯
মোদী-শাহ হারাতঙ্ক রোগে ভুগছেন: দমদমে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ দমদম লোকসভা কেন্দ্রে একটি নির্বাচনী জনসভা করেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বিজেপির ফ্যাসিবাদী রাজনীতিকে কটাক্ষ করে বলেন, মোদী-শাহ হারাতঙ্ক রোগে ভুগছেন।
তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ
পঞ্চায়েতে যখন সিপিএম অত্যাচার করত, তখন বিজেপি কোথায় ছিল?
ঝাড়খণ্ড, সিকিম, ছত্তিসগড়ে, উত্তরপ্রদেশে, ত্রিপুরায় কেউ বিজেপির বিরুদ্ধে পঞ্চায়েতে লড়াই করতে পারেনা, সেটা নিয়ে কারোর বলার বুকের পাটা নেই।
আমাদের দলের অনেক এজেন্টকে সিপিএম খুন, অত্যাচার করেছে, আজ তারা বড় বড় কথা বলে। আমি অত্যাচারিত হয়েছি কিন্তু, ভেঙে পড়িনি।
আমি তোলাবাজ হলে বিজেপি কি? আমি সাধারন মানুষ, এটাই আমার পরিচয়।
মোদীবাবু আপনি আগে আয়নায় নিজের মুখ দেখুন। এত নিচু মনের প্রধানমন্ত্রী আমি দেখিনি। তিনি আবার মন কি বাত শোনান।
সারা দেশে হার নিশ্চিত জেনে মোদী বাবুর মাথা খারাপ হয়েছে, ভুল বকছে। বিজেপির হারাতঙ্ক হয়েছে।
উনি হোমওয়ার্ক করে আসেন না, টেলিপ্রম্পটার দেখে ভাষণ দেন। মোদী মোদী ধ্বনি রেকর্ড করে এনে বাজায়।
নেতাজীর তৈরী প্ল্যানিং কমিশন তুলে দিয়ে নীতি আয়োগ করল। যাদের না আছে কোনও নীতি, না আয়োগ।
বাংলাকে দেখে বিজেপির হিংসে হয়। এখানে এসে বলছে মমতা কিছু করেনি, আমরা করব। আগে বলুন, নিজের রাজ্যে কি করেছেন? উত্তর প্রদেশে এঙ্কাউন্টারের নাম করে মানুষ হত্যা ছাড়া কি করেছেন?
পাঁচ বছর পর ওদের রামের কথা মনে পড়ে। নির্বাচন এলে শ্রী রাম ওদের দলের এজেন্ট হয়ে যায়। আমরা সব ধর্মস্থানের সংস্কার করেছি। গঙ্গাসাগর দেখে আসুন। একটা রাম মন্দির করতে পারেনা। নির্বাচন এলেই ধর্ম নিয়ে পড়ে।
এখানে এসে বলছে দুর্গা পুজো হয় না। ক্লাবকে টাকা দেব বললাম, আদালতে গেল। ক্লাবগুলোকে নোটিশ পাঠাল। এখন আবার রটাচ্ছে বাংলায় দুর্গা পুজো হয় না।
প্রতিদিন ন্যাশানাল চ্যানেল দিয়ে আমার চরিত্র হনন করছে। সাংবাদিকরা আমার শত্রু নয়, ওদের হুমকি দেওয়া হয় মোদীর বিরুদ্ধে কোনও খবর না দেখাতে।
সমস্ত সাংবিধানিক সংস্থার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছেন উনি। বিজেপি মোর দ্যান ফ্যাসিস্ট।
আমি হিন্দু মুসলমান দেখি না, সবাইকে মানুষ ভাবি। সকলকে একসঙ্গে নিয়ে না চললে সমাজ থাকবে না।
দেশের নেতাকে সবাই ভালোবাসে। কিন্তু, নরেন্দ্র মোদীকে সবাই ভয় পায়।
আমাদের সারাক্ষণ চমকায়। আমরা ভয় পাইনা। দেশের কোনও দল যখন মুখ খোলেনি, আমরাই একমাত্র দল যারা সংসদে লাগাতার প্রতিবাদ করেছি।
সৌগত রায় এক অন্যতম সেরা সাংসদ। সৌগত রায়কে ওরা ভয় পায়। ওনাদের মত মানুষের সংসদে যাওয়া প্রয়োজন।
জেট এয়ারওয়েজ হঠাৎ করে বন্ধ করে দিল। এটা নিয়ে ভেবেছে মোদী? বিএসএনএলের হাজার হাজার কর্মী মাইনে পাচ্ছে না। আমি লড়াই করে ওদের কয়েক মাসের মাইনের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
এখানকার সব প্রকল্প আটকে রেখে দিয়েছে। সামান্য রাজ্যের ‘বাংলা’ নাম আমরা বিধান্সভায় পাস করিয়ে পাঠালাম, সংশোধন করলাম ওদের কথা মত, তাও, তিন বছর ধরে একটা সই করছেনা। উনি বাংলার জন্য কিছু করবেন না আর এখানে শুধু ভোট চাইতে আসবেন।
এখান থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে মাত্র সাত শতাংশ ফেরত দেয়। কেউ প্রতিবাদ করলে এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে।
এরা ফিরে এলে দেশ শেষ হয়ে যাবে। আর নির্বাচন হবে না। স্বাধীনতা, গণতন্ত্র সব চলে যাবে আপনাদের।
এরা যা ইচ্ছে করে যাচ্ছে। এমার্জেন্সির থেকেও ভয়াবহ কাজ করছে। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অমর্ত্য সেন এর মত মানুষকে সরিয়ে দিয়েছে। বেলুড় মঠ, কেউ ভয়ে বলতে পারবে না। আমি জানি। ওখানে স্বামীজী যারা ছিল সব সরিয়ে দিয়েছে। আরএসএস দখল করে নিয়েছে। আমি শিকাগোয় যেতে চেয়েছিলাম। আমার যাওয়ার সব রেডি। রামকৃষ্ণ মিশন কিছুদিন বাদে আমায় চিঠি দিল ‘because of unavoidable situation” আমরা প্রোগ্রাম ক্যানসেল করছি। পরে জেনেছিলাম আরএসএস, ভিএচপির লোকেরা ওদের থ্রেট করেছিল।
অসমে এনআরসির নাম করে ২২ লক্ষ হিন্দু বাঙালি ও ২০ লক্ষ মুসলিম বাঙালির নাম বাদ দিয়েছে। ওই মানুষদের জন্য আমরা অসমে লড়াই করছি।
বাংলাদেশের ঘটনা এখানকার বলে চালাচ্ছে। ওদের গুজব, কুৎসা আর অপপ্রচারে কান দেবেন না। সঠিক সিদ্ধান্ত নিন।