সাম্প্রতিক খবর

মে ১২, ২০১৯

ন্যাশানাল মিডিয়া মোদীর বিরুদ্ধে খবর দেখাতে ভয় পায়: সোনারপুরে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

ন্যাশানাল মিডিয়া মোদীর বিরুদ্ধে খবর দেখাতে ভয় পায়: সোনারপুরে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সোনারপুরে এক নির্বাচনী সভা করেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, কোনও চ্যানেল দেখেছেন মোদীর বিরুদ্ধে কিছু বলছে? যে মিডিয়া ওনার বিরুদ্ধে একটা খবর দেখাচ্ছে সেখানেই সিবিআই, ইডি হানা দিচ্ছে। তিনি এও বলেন, বিজেপি গণতন্ত্রের সমস্ত স্তম্ভকে দখল করে নিয়েছে। বিচারব্যবস্থা, মিডিয়া সমস্ত দখল করে নিয়েছে।

তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশ:

বিজেপি গণতন্ত্রই যদি বিপর্যস্ত হয়ে যায় তাহলে দেশটা কি করে তৈরী হবে? বিজেপি গণতন্ত্রের সমস্ত স্তম্ভকে দখল করে নিয়েছে। বিচারব্যবস্থা, মিডিয়া সমস্তও দখল করে নিয়েছে। এরকম হলে দেশের ভবিষ্যতের কি হবে?

অনেক ন্যাশানাল চ্যানেল আছে। কোনও চ্যানেল দেখেছেন মোদীর বিরুদ্ধে কিছু বলছে? আমি অনেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু, মোদীবাবুর মত প্রধানমন্ত্রী দেখিনি যিনি মিডিয়াকে কন্ট্রোল করে। এই দেশের ইতিহাসে এরকম আর কখনও হয়নি। যে মিডিয়া ওনার বিরুদ্ধে একটা খবর দেখাচ্ছে সেখানেই সিবিআই, ইডি হানা দিচ্ছে।

উনি একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি দেশের সব সাংবিধানিক সংস্থা দখল করে নিয়েছে। একমাত্র আমি ওনার বিরুদ্ধে কথা বলি।

উত্তরপ্রদেশে কত লোক খুন হয়েছে, কাউকে জানতে দেওয়া হয় না। তাদের পরিবারও জানে না। মুর্শিদাবাদের শ্রমিক কাজ করতে গিয়েছিল রাজস্থানে, তাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে, আমি তাদের এখানে এনে সাহায্য করেছি। এত অত্যাচার কেউ দেখেনি, আমাদের দুর্ভাগ্য কোনও মিডিয়া সেই খবর করল না, করতে পারল না।

অনেক ন্যাশানাল মিডিয়া আমার ইন্টারভিউ চাইছে। আমি তাদের বলেছি চারিদিকে যা হচ্ছে সেগুলো আপনারা না দেখালে আমি ইন্টারভিউ দেবনা। আমি সাংবাদিকদের দোষ দিই না, তাদের মালিকদের বলা হচ্ছে বিজেপির বিরুদ্ধে কোনও খবর করলে ইনকাম ট্যাক্স, সিবিআই ইডি পাঠানো হবে।

গণতন্ত্রের চেহারাটাই হারিয়ে যাচ্ছে। নালন্দা থেকে অমর্ত্য সেনকে অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছে। মুঘলসরাই, তাজমহল সব জায়গার নাম বদলে দিচ্ছে। সারা দেশে নরেন্দ্র মোদীর নাম থাকবে শুধু, আর কারোর নাম থাকবে না। মোদী বিদায় নিলে দেশ থাকবে, গণতন্ত্র থাকবে। উনি এলে আর গণতন্ত্র থাকবে না, দেশে আর নির্বাচন করতে দেবে না।

মোদী বাবু ক্ষমতায় এলে দেশে আর গণতন্ত্র থাকবে কিনা, প্রতিষ্ঠানগুলো থাকবে কিনা সেটাই আজ প্রশ্নের মুখে।

হঠাৎ করে নোটবাতিল করে দিল, কৃষি, শিল্প, ব্যবসা সব বন্ধ হয়ে গেছে, ৩ কোটি মানুষ বেকার হয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুপারিশ করেনি তাও ওনার ভাবনার কারণে নোটবাতিল হয়ে গেল।

আজ ৫ বছরেও একটাও প্রেস কনফারেন্স করেনি। আজ পর্যন্ত সর্বদল বৈঠক করেনি, বালাকোটের পর আমরা চেয়েছিলাম, উনি করেনি। এত বর্বরচিত আচরণ আগে কখনো দেখিনি

একটা গো রক্ষক বাহিনী তৈরি করেছে যার এক হাতে ডাণ্ডা, অন্য হাতে ঝান্ডা নিয়ে ওদের পাণ্ডারা ঘুরে বেড়াচ্ছে টাকা নিয়ে

ওরা আমাদের হিন্দু ধর্ম শেখাচ্ছে? বিজেপি না হিন্দু ধর্ম কার জন্ম আগে হয়েছে? হিন্দু ধর্ম অনেক প্রাচীন, অনেক যুগ ধরে আছে

ওদের ধর্ম হল তরোয়াল ধর্ম, মানুষের মধ্যে ভাগাভগি করা, এর নাম ধর্ম নয়। ধর্মের নাম করে বিদ্বেষের প্রাচীর তুলে দিয়েছে। ধর্মের নামে মিথ্যে কথা বলছে, ধর্মকে বিক্রি করে দিচ্ছে

আমরা বাংলায় অনেক উন্নয়ন মূলক কাজ করেছি। কিন্তু ওরা এই ৫ বছরে বাংলায় একবারও আসেনি আর এখন ভোট চাইতে এসে বলছে বাংলায় কোন কাজ হয়নি। এখানে এসে কথা বলার আগে হোমওয়ার্কটুকুও করে আসে না। ওনার লোক যা লিখে দিচ্ছে তাই বলে যাচ্ছে

এসে বলছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় দুর্গা পুজো করতে দেয় না। বলুন এটা কি সত্যি? তাহলে কেন এইসব মিথ্যে কথা বলছে? বাংলায় সব জায়গায় দুর্গা পুজো হয়। শুধু সভায় নয় ফেসবুক, সোশ্যাল মিডিয়াতেও মিথ্যে কথা বলে বেড়াচ্ছে। বিজেপি একটা ফেকু পার্টি

২১ শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে আমি মোদী বিদায়ের ডাক দিয়েছিলাম। তারপর ১৯শে জানুয়ারি ব্রিগেড থেকেও একই আওয়াজ তুলেছি, সেদিন থেকে আমায় ওরা যা ইচ্ছে তাই বলে যাচ্ছে। একজন প্রধানমন্ত্রী কি ভাষা বলছেন

সব সেন্ট্রাল ফর্স পাঠাচ্ছে বাংলায়, বিজেপি শাসিত রাজ্যে কোন কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠায়নি। সব বাংলায় পাঠিয়ে দিয়েছে। আর ওরা এখানে এসে বলছে বিজেপিকে ভোট দিতে। বুথে গুলি চালিয়ে দিচ্ছে। ওরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর অপব্যবহার করছে

সব গাড়ি চেক করা উচিৎ। কিন্তু মোদীবাবুর গাড়ি চেক করা সাহস ওদের আছে? সব কিছু উনি নিজের কন্ট্রোলে করে নিয়েছেন। আমার বিরুদ্ধে যা করার করে নিন, আমি ওনাকে ভয় পাই না

সিপিএম বাংলায় একটাও আসন পাবে না। তাই ওদের ভোট দিয়ে নিজেদের ভোটটা নষ্ট করবেন না। সিপিএম কে ভোট দিলে বিজেপিকে শক্তিশালী করা হবে। সিপিএমকে ভোট দেওয়া মানেই বিজেপি কে ভোট দেওয়া