সাম্প্রতিক খবর

মে ১৬, ২০১৯

মোদিবাবু ২০০ বছরের ঐতিহ্য ফিরিয়ে দিতে পারবেন: মথুরাপুরে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মোদিবাবু ২০০ বছরের ঐতিহ্য ফিরিয়ে দিতে পারবেন: মথুরাপুরে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মন্দিরবাজারে এক নির্বাচনী সভা করেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বাংলার টাকা আছে বিদ্যাসাগরের মূর্তি বানানোর জন্য। ২০০ বছর আগের ঐতিহ্য ওরা ফেরাতে পারবে? নিজেরা মূর্তি ভেঙে বলছে তৃণমূল কংগ্রেস করেছে। উনি একজন মিথ্যেবাদী প্রধানমন্ত্রী।

ওনার বক্তব্যের কিছু অংশঃ

গতকালই রাতে আমরা জানতে পেরেছি বিজেপি অভিযোগ করেছে যাতে নরেন্দ্র মোদীর প্রচারের পর আমরা কেউ প্রচার করতে না পারি। বিজেপি এখন নির্বাচন কমিশনের ভাই। শুধু আমি নই, ভারতবর্ষের সব মানুষ বলছে যে নির্বাচন কমিশন বিজেপির কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। আর এই কথা বলার জন্য ওরা যদি আমায় জেলে পাঠায় আমি রাজি আছি। সত্যি কথা বলতে আমি কখনো ভয় পাই না এটা আমার চিরকালের শিক্ষা

আমার মিটিং ছিল আগামীকাল, যেহেতু সন্ধ্যেবেলায় জানতে পারি যে আগামীকাল কোন মিটিং করা যাবে না তাই আগামীকালের মিটিং আজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সব কর্মসূচী আমায় আজ করতে হবে, আজ ১৮-২০ কিঃমিঃ মিছিল আছে। এখান থেকে ডায়মন্ড হারবার যাব, জোকা থেকে তারাতলা যাব তারপর সুকান্ত সেতু থেকে গড়িয়াহাট আর তারপর বালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে ভবানিপুর হয়ে গোপালনগর পর্যন্ত মিছিল করব।

কতগুলো শয়তান, দুষ্টু লোক আজ সব সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে, সব দখল করে নিচ্ছে, মানুষের ওপর অত্যাচার করছে, মানুষ খুন করছে। কখনো মিরাঠে বাবা সাহেব আম্বেদকরের মূর্তি ভাঙছে। ত্রিপুরাতে নির্বাচনের পর সব মূর্তি ভেঙে দিয়েছিল। এটা বিজেপির অভ্যাস। গত পরশু বাংলায় যা হয়েছে তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। অমিত শাহর নেতৃত্বে বিদ্যার জনক বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে, বিদ্যাসাগর কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে বিজেপি গুণ্ডামি করেছে।

আমাদের মনিষীদের গায়ে হাত দিলে আমরা কেউ ছেড়ে কথা বলব না এই লোকটার লজ্জা ও করে না, এত মিথ্যে কথা বলছে। আজ উত্তর প্রদেশে মিটিং করে বলেছে মূর্তি বানিয়ে দেবে। বাংলার টাকা আছে বিদ্যাসাগরের মূর্তি বানানোর জন্য। ২০০ বছর আগের ঐতিহ্য ওরা ফেরাতে পারবে? নিজেরা মূর্তি ভেঙে বলছে তৃণমূল কংগ্রেস করেছে। উনি একজন মিথ্যেবাদী প্রধানমন্ত্রী। আগে প্রমান কর নাহলে আপনাকে আমরা জেলে টানব কারণ আমাদের কাছে প্রমাণ আছে।

মনিষীদের মূর্তি ভেঙে দিয়ে তারপর আবার বানিয়ে দিলে হয় না। তোমার কাছে বাংলা ভিক্ষে চায় না। তোমার গুন্ডা নেতা অমিত শাহ বাংলাকে কাঙাল বলে গেছে। বাংলার একটা মানুষও বিজেপি করবে না, বিজেপির সঙ্গে যাবেন না। যারা টাকার জন্য বিজেপিতে গেছে আগামিদিনে সমাজ তাদের গ্রহণ করবে না।

গো-রক্ষক গুলো বাইরে থেকে এসে এখানে বসে জনসংঘ করে। নজরে রাখুন। কারণ এদের মতন বিপজ্জনক, মৌলবাদী, উগ্রবাদী কেউ নেই। এরা সমাজে দাঙ্গা আর বিদ্বেষ ছড়ায়। বিজেপি ফেসবুকে কতগুলো ফেক ছবি আর ভিডিও দিয়েছে, সব ফেক একটাও সত্যি নয়। এগুলো দিয়েছে নির্বাচনের আগে দাঙ্গা লাগানোর জন্য। এটাই ওদের শেষ অস্ত্র। এসব বিশ্বাস করবেন না।

আজ আমরা এখানে মিটিং করছি, যার জায়গা তার অনুমতি নিয়ে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আজ যেখানে মিটিং করছে তার নাম কপিল মণ্ডল, উনি লাইসেন্স ছাড়া কোটি কোটি টাকা তুলছেন, লোকের জমি লুঠ করেছে। আর বুঝি বিজেপিকে ভাগ দিচ্ছে? সব রেকর্ডে আছে। আর প্রধানমন্ত্রী এসে চিট ফান্ডের কথা বলে? এইভাবেই ওনারা নারদা, সারদা তৈরি করেন। কালকেই আমি জানতে পেরেছি, আমার কাছে সব কাগজপত্র এসেছে, স্থানীয় একজন আমায় পাঠিয়েছে। এখন নির্বাচন তাই আমি পুলিশে র সঙ্গে কথা বলি না, আজ আমি সেইসব পাবলিকের সামনে পুলিশকে দিয়ে দিলাম, এবার আপনারা তদন্ত করে কেস করুন। আজ চোর ডাকাতের জমিতে নরেন্দ্র বাবুর শেষ মিটিং আছে।

আজ রাত ১০টা থেকে প্রচার বন্ধ। কাল থেকে আর কেউ মিটিং করতে পারবে না। ওরা জানে না আমাকে এভাবে আটকানো যায় না, আমি বড় কঠিন লোক।

বারানসীতে জেতার জন্য কাকে ম্যানেজ করেছেন মোদী বাবু? আজ পর্যন্ত বারানসী ঘাটটা পরিষ্কার করতে পেরেছেন?

ওনার মত মিথ্যেবাদী ভারতে আর একটাও নেই, উনি বেমালুম এত মিথ্যে বললে ওনার ক্যাডাররা কি শিখবে? মিডিয়া আমাকে পছন্দ করে না, তবু কাল সব মিডিয়া দেখিয়েছে, সব ছবিতে দেখা গেছে কিভাবে বিজেপির লোকেরা বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙছে। আর উনি মিথ্যে কথা বলছেন – ওনাকে এর জবাব দিতে হবে, কৈফিয়ত দিতে হবে। বাংলার মানুষ ভোটের মাধ্যমে এর বদলা নেবে

যারা বিজেপি করেন এই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি ছেড়ে চলে আসুন, যদি বাংলার সংস্কৃতিকে ভালোবাসেন

পাড়ায় গিয়ে বলছে ৩০০০ টাকা দেবে আর এজেন্ট করে দেবে আর ওদের ভোট দিতে বলছে। নোট বাতিল করে সব টাকা লুঠ করেছে, আজও জবাব দিতে পারেনি। সব টাকা তুলে নিয়ে আজ এলাকায় গিয়ে ভোট চাইছে টাকার বিনিময়ে

মানুষের টাকা জোর করে নিয়ে নিয়েছে। ওটা আপনার টাকা, ওরা একাজ করছে সেটাই আপনাদের জানিয়ে গেলাম। আর এইজন্যই নির্বাচনী প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। রাতের বেলায় টাকা নিয়ে গ্রামে ঢুকছে ওই কেন্দ্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে। ওরা ছেলে মেয়েদের পড়ার জন্য টাকা দেয় না, কৃষকদের টাকা দেয় না, বেকারদের চাকরি দেয় না। বাংলায় একটাও ভোট নরেন্দ্র মোদীকে দিলে এর থেকে বড় অবিশ্বাস্য কাজ আর হবে না

কালও বলে গেছে ৩০০ সিট পাবে, উনি ইতিমধ্যেই সারা ভারতে হেরে গেছেন, ওনার ভোট কমতে কমতে তলানিতে এসে ঠেকেছে

কেন্দ্রীয় বাহিনী লাইন গিয়ে বলছে বিজেপিকে ভোট দিতে। কালকেও ওরা গুলি চালিয়েছে। গুলি চালানোর অধিকার ওদের নেই

আজ থেকে তৈরি করছি বঙ্গ মহিলা বাহিনী, তারা আজ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত পাহারা দেবে। পাবলিক এবার হবে পাহারাদার

আর নির্বাচন কমিশন যদি ভাবেন জোর করে, গ্রেপ্তার করে, ধমকে, চমকে, বাক্স বদলে দিয়ে মোদীকে জেতাবেন তা হবে না। প্রচার তো আজ শেষ কিন্তু আমার আন্দোলন চলবে

ওরা বাংলার সংস্কৃতিকে আক্রমণ করছে। বাইরে থেকে গুন্ডা এনে বাংলাকে অপমান অসম্মান করছে। উত্তরপ্রদেশ বিহারের লোকজনকে আমি ভালবাসি, ওরা একাজ করতে পারে না। যারা করছে তারা বিজেপির গুন্ডা, আরএসএস করে। এরা আসল সাধু নয়, এদের সামনে গেরুয়া আর পিছনে ডাকাতিয়া