সাম্প্রতিক খবর

মে ১৪, ২০১৯

বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার বদলা নিন ওদের একটাও ভোট না দিয়ে: বেহালা চৌরাস্তায় বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার বদলা নিন ওদের একটাও ভোট না দিয়ে: বেহালা চৌরাস্তায় বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বেহালা চৌরাস্তায় এক নির্বাচনী সভা করেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অমিত শাহের রোড শো থেকে কলেজ স্ট্রিট ও বিদ্যাসাগর কলেজে হামলা করা ও মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদ করেন। এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে তিনি সকলকে আহ্বান করেন বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিতে।

তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ

আমি খবর পেলাম, খবর শুনে আমি দুঃখিত। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এর জবাব দিতে হবে। আজ অমিত শাহ একটি মিছিল করতে এসেছিলেন উত্তর কলকাতায়। তিনি উত্তর প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান থেকে লোক এনেছিলেন। বাংলার চ্যানেলগুলো দেখিয়েছে। মিছিল শেষ হতেই ফেট্টি পরা বিজেপির গুন্ডারা হাতে ডান্ডা ও আগুন নিয়ে বিদ্যাসাগর কলেজে আগুন লাগিয়েছে, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে। এত বড় ঘটনা নক্সাল সময়েও ঘটেনি। এর ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বদলে নেব আমরা।

বিদ্যাসাগরকে চেনে বিজেপির নেতারা? বিজেপির এই কাজে আমরা লজ্জিত। কেন পুলিশ ওদের মিছিল করতে অনুমতি দিল? যারা আগুন লাগায়, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙে, তাদের ক্ষমা নেই।

অপদার্থ দিল্লীর ফ্যাসিস্ট নেতারা বাংলার সংস্কৃতির গায়ে হাত দিয়েছে। আজ যা করেছ, তুমি বুঝবে তুমি কি করেছ?

কোটি কোটি টাকা খরচ করে মিছিল করছে। আমরা জানতে চাই কত টাকা খরচ করছে?

আমি যেখানে মীটিং করতে যাই, তার আগে ওরা সেখানে মীটিং করছে। নির্বাচনের নামে অশান্তি করতে আসছে। বাংলা শান্তিতে আছে বলে ওদের হিংসে হচ্ছে। বাংলায় খরা হলে, বন্যা হলে আসেনা।

দার্জিলিঙে আগুন লাগিয়েছিল, আমাকে নেভাতে হয়েছিল। জঙ্গলমহলে ঝাড়খন্ডের গুন্ডা পাঠিয়ে অশান্ত করছে।

পাড়ার গেস্ট হাউস, হোটেলে বাইরে থেকে গুন্ডা এসে ঢুকছে। এদের একটাই পরিচয় গুন্ডা। আপনারা নজর রাখুন।

পুরুলিয়ার নির্বাচনের সময় ঝাড়খণ্ড বর্ডার থেকে অপারেট করছিল।

আজ বাংলাকে আমরা এক নম্বর করেছি। দুই গুন্ডা মোদী ও শাহ বাংলাকে শেষ করছে।

সিপিএম, কংগ্রেসের থেকে লোক ধার নিয়ে মিছিল করে বিজেপি।

বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙলে আমি গুন্ডাই বলব। এই অপমান আমরা সহ্য করব না।

বিজেপির লোকরা নির্বাচন কমিশনকে বলছে পাড়ায় পাড়ায় যারা তৃণমূল করে তাদের কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে আটক করে দাও। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে বুথে গুলি চালাচ্ছে। এটা কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাজ নয়।

আমরা যেখানে যাচ্ছি নির্বাচন কমিশন সেখানকার ছবি তুলছে। মোদী যেখানে নামছে, সেখানে মিডিয়া, নির্বাচন কমিশনকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। দমদম বিমানবন্দরে প্লেনে করে কোটি কোটি টাকা আসছে।

বলেছিলাম বদলা নয়, বদল চাই। এবার বলছি বদলা চাই। গণতান্ত্রিক ভাবে বদলা চাই।

কেন আমরা মাথানত করব? দুটো দেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা বাংলায় থাকতেন। জাতীয় গানের রচয়িতাও বাংলার। জয় হিন্দ স্লোগান যার, তিনিও বাংলার। সতীদাহ প্রথা লোপ, নারী শিক্ষার প্রচারকও বাংলার। সারা পৃথিবী খুঁজেও এই মেধা পাবেন না। আমরা গুন্ডামি করি না, কলম ধরি, সভ্যতায় চলি। তোমাদের ঔদ্ধত্ব আমরা তিল তিল করে শেষ করে দেব।

সব জায়গায় হারবে তাই বাংলায় ঘুরছে দাঙ্গা লাগিয়ে, ঝামেলা লাগিয়ে এনআরসি, সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট করে যদি সিট পায়।

অনেক জায়গায় সিপিএম টাকা নিয়ে বিজেপিকে ভোট ট্রান্সফার করেছে। নির্বাচন কমিশন বিজেপি যা বলছে, তাই করছে। আমাকে সকলের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। সিপিএমের বিরুদ্ধে, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে, ইডি, সিবিআই, বিজেপি, নির্বাচন কমিশন, আয়কর, কাস্টমস, সংবিধান ভাঙার বিরুদ্ধে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে।

মোদী এক্সপায়ারি প্রধানমন্ত্রী। ভারতে কেউ ভয় পেয়ে ওদের বিরুদ্ধে কথা বলে না, আমি বলি, তাই আমার ওপর ওদের এত রাগ।

অসমে ২২ লক্ষ হিন্দু বাঙালীর নাম বাদ দিয়েছে, পাঁচ জন বাঙালীকে গুলি করে হত্যা করেছে। এনআরসি হলে প্রথমে মোদী আর অমিত শাহকে বাদ দেওয়া উচিৎ।

আমাকে বিজেপি মেরে ফেললেও আমার দল থেমে যাবে না। আপনারা ভালো থাকলে আমি ভালো থাকব।