জুলাই ২১, ২০১৮
একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা

এত বৃষ্টিতেও সকলে এখানে এসেছেন, সকলকে আমার ধন্যবাদ। রাস্তা দিয়ে আসার সময় দেখলাম প্রচুর মানুষ এই পর্যন্ত আসতে পারেনি, তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে জায়ান্ট স্ক্রিনে অনুষ্ঠান দেখছেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের যে ডেডিকেশন আর ডিটারমিনেশন আছে আর কোন রাজনৈতিক দলের তা নেই. আমরা প্রলয়কে জয় করি।আমরা বাঁধ ভেঙে আবার তা তৈরী করি।আমরা অত্যাচারের বাঁধ ভেঙে দেওয়ার কথা বলি. তৃণমূল কংগ্রেস মা-মাটি-মানুষের দল, জনগণের দল।
আমরা বিজেপি নই, যারা কোটি কোটি টাকা দিয়ে একটা অনুষ্ঠান করে আর টাকা দিয়ে মানুষ নিয়ে আসে। টাকা দিয়ে এতো লোক নিয়ে আসা যায় না, এটা অন্তরের উপলব্ধি, হৃদয়ের ভালোবাসা, মনের স্বপ্ন।
আজ ২১শের ২৫ বছর পূর্ণ হল। আজ ২১শে জুলাইয়ের অঙ্গীকার – বাংলার ৪২টি লোকসভা আসনই আমরা মানুষের ভোট নেবো।আগামীদিনে বাংলায় ভারতকে পথ দেখাবে। এটাই তৃণমূল কংগ্রেসের অঙ্গীকার।
আগামী ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেড থেকে ২০১৯ ভারত সরকার দখলের ডাক দেওয়া হবে. ব্রিগেড থেকে ১৯শে পা। সব রাজনৈতিক দল, ফেডারেল ফ্রন্টকে সংগঠিত করে এই সভা হবে।
আমরা চেয়ারকে নয়, আমরা দেশ-মানুষ-মাটিকে কেয়ার করি।
প্রশাসন সবসময় আপনাদের পাশে আছে, ইতিমধ্যেই সরকার ৩০ লক্ষ কৃষক পরিবারকে সাহায্য করেছে, সরকার আপনাদের পাহারাদার, তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের পাহারাদার।
আগামী ২৭ জুলাই বীরভূম জেলায় নানুর দিবস পালন করা হবে, ফিরহাদ হাকিম, অনুব্রত মন্ডলরা করবে।
আগামী ২৮ জুলাই মেদিনীপুরে যেখানে বিজেপি মিটিং করেছিল সেই মাঠে মিটিং করবে তৃণমূল
আগামী ১ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট ‘সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপি হঠাও দেশ বাঁচাও’ – এই কর্মসূচি চলবে
৯ আগস্ট ভারত ছাড়ো আন্দোলন, ওইদিন আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস, আমি ঝাড়গ্রামে যাব। আগামী ১০ আগস্ট দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় পালন হবে আদিবাসী দিবস।
আগামী ১৪ আগস্ট মধ্যরাতে স্বাধীনতা দিবসের পতাকা উত্তোলন করবেন
আগামী ২৮ আগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশ হবে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে
আগামী ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস পালন করবে তৃণমূল
আগামী ১৭ই সেপ্টেম্বর রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কনভেনশন করবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
পুজো চলে গেলেই নভেম্বর থেকে ব্রিগেডের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হবে। ২১ জুলাইয়ের চেয়ে অনেক বেশি মানুষ আসবে বিগ্রেডের মাঠে। ব্রিগেড ২০১৯ বিজেপির গায়ে সবচেয়ে বড় ধাক্কা দেবে। সেদিন দেশের সব বড় নেতাদের আমন্ত্রণ জানাব।
বাংলার বুকে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে অনেক সমালোচনা হল। ভোটের পর দেখা গেলো ৯৮% জেলাপরিষদ, ৯০% পঞ্চায়েত সমিতি ৭৪% গ্রাম পঞ্চায়েত জিতেছে তৃণমূল। উত্তরাখণ্ডে যখন ৭০% ভোট হয় না তখন কেউ বলে ওটা? বিহার, উত্তরপ্রদেশ, উড়িষ্যা, সিকিমে হলে কেউ কি প্রশ্ন করে? সব রিপোর্ট দিলে বুঝবেন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অপপ্রচার করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচন কারো হাতে থাকে না, এটা লোকাল নির্বাচন। ঝাড়গ্রামের অনেক জায়গায় তৃণমূলের কর্মীরাও ভোট দাঁড়াতে পারেনি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর মহেশতলায় ভোট হল, পুলিশ দিয়ে ব্যারিকেড-বাঙ্কার তৈরী করেছিল, ১০ গুন বেশি ভোট আমরা জিতলাম। তবু ওদের লজ্জা নেই। তৃণমূলের কর্মীরাই তৃণমূলের সম্পদ।
বিজেপি সব এলাকায় টাকা, বাইক, ফোন দিচ্ছে। মিথ্যে কথা বলছে। মুর্শিদাবাদ, নদিয়ার মানুষকে গ্যাসের লাইন দেবে বলে অনেক টাকা নিয়েছে, কিন্তু তারা কিছু পায়নি। আলিপুরদুয়ারে একটা সমীক্ষায় দেখা গেছে এক একটা পরিবারকে ১০০০ টাকা ও কিছু জিনিস দিয়ে ওরা ১০০ ভোট কিনেছে। ১০০ ভোট ১০০০ টাকা দিয়ে কেনা যায় কিন্তু ১০ কোটি ভোট কেনা যায় না।
ত্রিপুরার ফর্মুলা দেখাচ্ছে। ওখানে তো সিপিএম পচে গেছিলো। ত্রিপুরা আমরা তৈরী করলাম আর তারপর কংগ্রেসের লোক বিজেপিতে চলে গেলো, কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিজেপি দখল করে নিল, সিপিএম কিছু করতে পারলো না।
দিল্লিতে যারা বলে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবে তারাই বাংলায় বিজেপির সাথে এক হয়েছে।জগাই-মাধাই-বিদাই সব এক হয়ে গেছে। সিপিএমএর হার্মাদ আর বিজেপির ওস্তাদ এক হয়েছে। আর কয়েকটা ভাবছে গদ্দারি করেই চলবে।
যারা লিনচিং করছে, তালিবানী শব্দ ব্যবহার করছে তাদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আগে আপনি আপনার সভাপতি ও দলের নেতাদের গলা কন্ট্রোল করুন যারা তালিবানী, উগ্রপন্থার কথা বলে, কেন আপনি নিজের দলের নেতাদের সামলাতে পারেন না? কখনও বলছে পুলিশ পেটাও। কখনও বলছে তৃণমূলকে পেটাও, কখনও বলছে আগুন লাগিয়ে দাও. ওরা অপদার্থ, ওদের মুখের কোন লাগাম নেই.
বাংলা সবচেয়ে ভালো কাজ করছে। কন্যাশ্রী আমাদের গর্ব। কোন রাজ্যের রূপশ্রী প্রকল্প আছে? মেয়েদের বিয়ে-পড়াশোনায় সাহায্য করা হচ্ছে।প্রায় ২ কোটি সংখ্যালঘুদের স্কলারশিপ দেয় রাজ্য। চাষিদের খাজনা মুকুব করে দিয়েছে আমাদের সরকার। জমির মিউটেশন ফি ফ্রি করে দিয়েছি। বেকারত্ব ৪০% কমে গেছে। বেকারত্বের সমাধান করাও আমাদের কাজ। আমরাই করব- আমরাই লড়বো – আমরাই গড়বো।
ওরা কিছু করতে পারে না। এখন বলছে ২০১৯ নয়, ২০২৪-এ করে দেখাবে। আগে তো ২০১৯ পার হও তারপর ২০২৪ এ আসবে বন্ধু। কাল ওই কটা ভোট পেয়ে জিতেছে। সংখ্যাটা কি? ৩২৫ আর ১২৬ – তাতে কি? ভোট পেয়েছে এ আই ডি এম কে-র থেকে। জয়ললিতা থাকলে এই ভোট টাও ওরা পেতো না।আগামীদিন এ আই ডি এম কে তামিলনাড়ুতে একটাও আসন পাবেন, আসন পাবে স্ট্যালিন। সুতরাং, পুরোটাই মাইনাস বিজেপি।উত্তরপ্রদেশে ৮০টি আসন পেয়েছিলো, সেই ৮০টির জায়গায় মায়াবতী-মুলায়ম যদি জোট হয়, ওরা পাবে ৩৯, মধ্যপ্রদেশে ২৮টির ৮ ও পাবে না, রাজস্থানে ২৫টির মধ্যে ৫টি আসন পাবে কিনা সন্দেহ। গুজরাটে শূন্য, বিহারে লালু জি ভোট নিয়ে নেবেন, আর বাংলায় মানুষ। পাঞ্জাবেও পাবে না। ওই ৩২৫ হয়তো খুব বেশি করে হবে ১৫০, মেজরিটি পাবে না। সংসদের ভেতরে গতকাল ওরা ২০১৪-র অঙ্কে ভোট পেয়েছে, কিন্তু বাইরে মানুষের ভোট পাবে না।
কতজন কৃষক আত্মহত্যা করেছে? ২০২২ সালে নাকি ওরা কৃষকদের আয় দ্বিগুন করবে। বাংলা ৩ গুন্ বাড়িয়ে দিয়েছে। বাংলা থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত ওদের।
১০০ দিনের কাজ, চিকিৎসায় বাংলা এক নম্বরে। বাংলার ছাত্রযৌবন বাংলার গর্ব। প্রতিদিন লিনচিং করে মানুষ মারা যাচ্ছে। জোর করে মানুষকে খুন করছে, মানুষকে ঘৃণা করতে শেখাচ্ছে, মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে। ওরা দেশকে ভেঙে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
ব্যাঙ্কের টাকা লুঠ করেছে, স্মল সেভিংস এর টাকা, শিল্পপতি ও অভিনেতা অভিনেত্রীরা ভয় পায় কখন তাদের বাড়িতে ইনকাম ট্যাক্স এর লোক রেড করতে আসবে। ওরা এজেন্সি দিয়ে তালিবানী সাম্প্রদায়িকতা, উগ্রপন্থা চালাচ্ছে। আজও উত্তরপ্রদেশে একজন মারা গেছে। প্রায় ১৩ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে -এই অবস্থা।নোট কেলেঙ্কারি সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি। রিজার্ভ ব্যাংক আজও এর তথ্য দিতে পারেনি। এসবের সাথে মিথ্যে ভাষণ চলছে।
কংগ্রেস – সিপিএম এখানে বিজেপিকে মদত দিচ্ছে আর দিল্লিতে আমাদের থেকে সাহায্য চাইছে। বাংলায় আপনাদের সাহায্য আমরা চাই না। আমরা একই লড়াই করব। আদর্শের কখনো মৃত্যু হয় না। বাংলায় একরকম আদর্শ আর দিল্লিতে আর একরকম। পঞ্চায়েতে সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি বাংলায় একসাথে লড়াই করেছে। বাংলায় সিপিএমের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে। আমরা সিঙ্গুর, নেতাই, নন্দীগ্রাম,মরিচঝাপি, ২১ জুলাই কিছু ভুলিনি।
আমি তৃণমূল কর্মীদের বলব, আগামী দিনে বিজেপি টাকা বিলিয়ে দিতে না পারে সেদিকে নজর রাখুন, দরকার হলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করুন। কোন উগ্রপন্থী এলে তাকে চিহ্নিত করতে হবে, বাইরে থেকে লোক আসছে, আর এস এসের নেতা হিসেবে ব্লকে ব্লকে বসে দাঙ্গা ছড়াচ্ছে, মিথ্যে বলছে – সেদিকে নজর রাখবেন। বাংলায় দাঙ্গা, খুন, চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র করা যাবে না।
আমরা একথা বলবার পর আবার ওরা সিবিআই, ইডি পাঠাতে পারে, আমাদের কিছু যায় আসে না। আমাদের সংসদীয় দলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ওরা জেলে পাথিয়েছে, আমরা ওদের ছেড়ে কথা বলব না। হাতে এজেন্সি আছে বলে ওরা যা ইচ্ছে করছে।
জলভরা মেঘ এসছিল, কিন্তু, আজকে দেখতে পাচ্ছেন আকাশ কিন্তু আবার হাসছে। অর্থাৎ, বিজেপি যাবে, এটা ইন্ডিকেশন মনে রাখবেন। মা কাঁদছিল, আম্মা কাঁদছিল। যখন বলেছি বিজেপি হাটাও, দেশ বাঁচাও, দেখুন আকাশও হাসছে।
ভাঙতে তো শুরু হয়েছে বিজেপি, ভাঙতে শুরু হয়নি? শিবসেনা দল তোমাদের অ্যালাই ছিল, কালকে তারা তোমাদের ভোট দেয়নি। অর্থাৎ তুমি পিছিয়ে গেছ। তেলেগু দেশম দল তোমার অ্যালাই ছিল, তোমার বিরুদ্ধে নো কনফিডেন্স মোশান নিয়ে এসেছে, তুমি পিছিয়ে গেছ। এমনকি বিজেডিও তোমাদের ভোট দেয়নি।
আগামী দিন আমাদের আরও কাজ করতে হবে। কৃষক বন্ধু হয়ে, কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে হবে। মহিলা বন্ধু হয়ে, মহিলাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। মা বোনেদের সম্মান দিয়ে আরও এগিয়ে নিয়ে আসবেন। আমি বিশ্বাস করি, স্বামী বিবেকানন্দের কথায়, না জাগলে ভারত ললনা, এ ভারত জাগেনা জাগেনা। আগামী দিন মনে রাখবেন, তপশিলিদের এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে, আদিবাসীদের এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে, সংখ্যালঘুদের এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে। আমার একটা হাতজোড় করে আবেদন থাকবে, কখনও গরীব মানুষকে বঞ্চিত করবেন না। মনে রাখবেন, গরীব মানুষকে সেবা করা আমাদের কাজ। গরীব মানুষকে বঞ্চিত করা আমাদের কাজ নয়। গরিবের কোনও পরিষেবা পেতে যাতে অসুবিধে না হয়, আপনারা সবাই দায়িত্ব নিয়ে দেখবেন। গরীব মানুষ যদি কোনও বিপদে পড়ে, তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়াবেন।
দু’টাকা কিলো চাল কিন্তু আমরা মানুষের মুখে তুলে দিয়েছি। প্রায় সাড়ে আট কোটি মানুষের মুখে। মনে রাখবেন এতে মানুষের খাদ্য সুরক্ষা করে দিয়েছি। বিনা পয়সায় চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে, আঠাশ হাজার বেড বেড়েছে। এক পয়সা বেড ভাড়া দিতে হয়না। এক পয়সা ওষুধের দাম দিতে হয় না। কত কষ্ট করে আমরা এই টাকাটা জোগাড় করি বলুন। আমায় ২ লক্ষ ৪0 হাজার কোটি টাকার দেনা শোধ করতে হয়েছে সিপিএমের দেনা। এবছরেও ৪৬ হাজার কোটি টাকা দেনা শোধ করতে হবে, তা সত্ত্বেও করছি।
মনে রাখবেন বিনা পয়সায় ৩০ লক্ষ বাড়ি করে দিয়েছি ৫ লক্ষ পাট্টা দিয়েছি, আমাদের ১ লক্ষ ২০ হাজার সিভিক পুলিশ নেওয়া হয়েছে এবং তাঁদের মাইনেও পয়লা অক্টোবর থেকে জুনিয়র হোমগার্ড হিসেবে একটা ট্রেনিং নিয়ে তাঁদের মাইনেও ৮ হাজার টাকা করে হয়ে যাবে। প্যারা টিচারদের মাইনেও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আইসিডিএসএরও মাইনে ১ হাজার বাড়ানো হয়েছে। আশারও মাইনে ১ হাজার বাড়ানো হয়েছে।
আসামে বাঙালি খেদাও হচ্ছে, আমরা আসামীদের ভালোবাসি, আমরা বোরোদের ভালোবাসি, আমরা রাজবংশী, কামতাপুরিদের ভালোবাসি। কিন্তু, মানুষের মানবিক অধিকার কেড়ে নিলে আমরা তখন রুখে দাঁড়াই। আমরা আসামবাসীদের পাশে আছি, এটা আমি বলব। মনিপুরেও এই সমস্যা চলছে, আমি জানি। আমরা একসাথে কাজ করে এই সমস্যার সমাধান করব। বিজেপি দেশকে লুঠ করছে। আমরা চাই দেশ আরও এগিয়ে যাক। বেকারত্ব বাড়ছে, কৃষকরা সমস্যায় জর্জরিত। দলিতরা অত্যাচারিত। এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
ধর্মীয় গোঁড়ামিকে ভাঙো, তালিবানি সাম্প্রদায়িকতাকে ভাঙো, বিজেপির অত্যাচারকে ভাঙো, লুঠেরারাজকে ভাঙো।
বিজেপি নিজেদের হিন্দু বলে, কোন হিন্দু? ঘৃণা করা হিন্দু? তালিবানি হিন্দু? কোন হিন্দু? আমরা হিন্দু নই? স্বামী বিবেকানন্দ হিন্দু নয়? রামকৃষ্ণ হিন্দু নয়? ওদের কাছে সার্টিফিকেট নিতে হবে? এতো মহা মুশকিল। তোমাদের হিন্দুত্বকে আমরা মানি না, আমরা আমাদের হিন্দুত্বকে মানি। মা কালী, মা দুর্গা, শিব,গণপতি, বিশালাক্ষী, বিষ্ণুমাতা, রক্ষাকালী, সন্তোষী মাতাকে আমরা মানি, সারা ভারতবর্ষকে আমরা মানি। ওরা তরোয়াল হিন্দু, বন্দুক হিন্দু, পেটাও হিন্দু, জ্বালিয়ে দাও হিন্দু। এটা হিন্দুদের অসম্মান করা। হিন্দু ধর্মকে অসম্মান করছে বিজেপি। হিন্দু ধর্মকে অসম্মান করার কোনও অধিকার বেদ ওদের দেয়নি, উপনিষদ ওদের দেয়নি, রামায়ন ওদের দেয়নি, মহাভারত ওদের দেয়নি। স্বামী বিবেকানন্দ কি বলেছিলেন, ইউনিটি ইজ স্ট্রেন্থ অ্যান্ড ডিভাইডেড উই ফল, তোমরা তো ভাগাভাগি করতে যাচ্ছ, কেন ভাগাভাগি করছ?
আমার স্টুডেন্ট, ইয়াং জেনারেশন যারা আছেন, এগুলো আপনারা সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ভালো করে করবেন।
মাকে কেউ মা বলে, কেউ আম্মা বলে, কেউ মাদার বলে। জল তো জলই, জলকে কেউ জল বলে, কেউ পানি বলে, কেউ ওয়াটার বলে – তফাৎ তো এইটুকুই। কিন্তু, এরা ভেবেছে ভারতবর্ষে ক্ষমতায় এসে একেবারে হিটলার, মুসোলিনির থেকেও বড় সম্রাট। ভাষণ দিয়ে বলছে এই করতে হবে, ওই করতে হবে, এবং শুধু ঘৃণা শেখাচ্ছে। দাঙ্গা করে যাদের হাতে রক্ত লেগে আছে, তারা আজকে দেশ চালাচ্ছে। তারাই জ্ঞান দিচ্ছে। তাদের কথা আমাদের শুনতে হবে?
এদের ঔদ্ধত্য, এদের অহঙ্কার, এদের অত্যাচার, এদের শোষণ, এদের নিষ্পেষণ, এদের অপপ্রচার এদের কুৎসা মাত্রাছাড়া। সব টিভি চ্যানেলগুলোকে কিনে নিয়েছে, প্রেস মিডিয়াকে ভয় দেখিয়ে কিনে নিয়েছে, এমনকি বিচারব্যবস্থাতেও হস্তক্ষেপ করে। কে কি করবে না করবে বলে দিচ্ছে। এরকম গণতন্ত্র ভারতবর্ষে কোনোদিন ছিলনা। এটা ভারতবর্ষের সাংবিধানিক সঙ্কট। গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্কট। তাই মনে রাখবেন, এই সঙ্কটের বিরুদ্ধে আমরা বলি, ত্যাগ কা নাম হ্যায় হিন্দু, ইমান কা নাম হ্যায় মুসলমান, পেয়ার কা নাম হ্যায় ইসাই, আর শিখো কা নাম হ্যায় বলিদান। ইয়ে হামারা পেয়ারা হিন্দুস্তান। এটা মাথায় রাখবেন।
বাংলার কালচার মনে রাখতে হবে, বাংলা সবাইকে পথ দেখায়। আমি আমার যত ভাই বোনেরা বিদেশে আছে তাঁদের কাছে অনুরোধ করব, বাংলায় ফিরে আসুন, বাংলায় নতুন করে খুঁজে নিন নিজের দিশা, বাংলা এখন অনেক এগিয়ে চলেছে। শুধু আমরা বলছি না, সবাই বলছে।
পলিটিকাল লড়াই আমাদের চলবে, সিপিএম কংগ্রেস বিজেপির অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে। দেশব্যাপী বিজেপির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে, কিন্তু, উন্নয়নও আমাদের করতে হবে, এগিয়ে যেতে হবে। মা মাটি মানুষের সাথে কাজ করতে হবে।
কয়েকটা নেতা বিভিন্ন জায়গায় নানারকম খেলা খেলছে, টাকা দিয়ে কাউকে কাউকে কিনছে। কখনও আদিবাসীদের কাছে মিথ্যে প্রচার করছে, কখনও সংখ্যালঘুদের কাউকে কিনে নিয়ে অপপ্রচার করছে। কিন্তু, আমি এখনও বলি, একজন দুজনকে কিনে নেওয়া যায়, কিন্তু, সবাইকে কিনে নেওয়া যায় না, যাবেও না।
আগামী দিন আকাশে সূর্য উঠবেই, আর সে সূর্যটা মানুষের সূর্য। আগামী দিন আকাশে চাঁদ উঠবেই, সেই চাঁদটা জনগণের চাঁদ, আগামী দিন আকাশে তারা উঠবেই, সে তাঁরা সব ধর্ম সব বর্ণ সব সম্প্রদায়কে নিয়ে।
আজকের অঙ্গীকার কি হল, ১৯শে জানুয়ারি ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড। কেন ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড? ১৯শে ভারতবর্ষকে জয় করব বলে বিজেপিকে তাড়াব বলে। ১৯শে ১৯ দখল। ভারতবর্ষের মা কে সম্মানের সঙ্গে ফিরিয়ে আনা। ৪২ শে ৪২। ২১শে দিচ্ছি ডাক ৪২ শে ৪২ থাক, বিজেপি গোল্লায় যাক, সিপিএম ধাক্কা খাক। ৩৪ বছর অনেক অত্যাচার করেছে, দেনায় বিকিয়ে দিয়ে চলে গেছে।
আর কংগ্রেসের এখনও যারা আছেন, দিল্লীতে তৃণমূল আপনাদের সমর্থন করবে, আর এখানে বিজেপির হাত ধরবেন, কোনটা করবেন? সেটা নিজেরা ঠিক করুন। আমরাও একসময় কংগ্রেস করতাম, কিন্তু, মনে রাখবেন, আমরা আদর্শের মৃত্যু ঘটাই না। তৃণমূল কংগ্রেসের অনেকে জিজ্ঞেস করে তোমার আদর্শ কি? আদর্শ একটাই আমরা জনগণের পক্ষে। আমরা প্রো পিপল পার্টি। ডেমোক্রেসির আসল সংজ্ঞা, অফ দা পিপল, ফর দা পিপল, বাই দা পিপল। যতদিন বাঁচব, এই লড়াইটাই করব।