জুলাই ১০, ২০১৮
রাজ্যজুড়ে উন্নয়নের জোয়ারঃ কোচবিহারে বললেন মুখ্যমন্ত্রী

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজকে কোচবিহারের চ্যাংড়াবাঁধায় এক জনসভায় বক্তব্য রাখেন। আজ মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের দ্বিতীয় দিন।
মঞ্চ থেকে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর মধ্যে আছে ৩৩/১১ কিলো ভোল্ট সাব স্টেশন, নতুন পুলিশ স্টেশনের ভবন, দমকল, এমআরআই কেন্দ্র, কর্মতীর্থ, নতুন রাস্তা, আঙ্গনবাড়ি কেন্দ্র, জল সরবরাহ প্রকল্প ইত্যাদি।
এছাড়াও তিনি কন্যাশ্রী, রুপশ্রী, সবুজ সাথী, সামাজিক মুক্তি কার্ড, মেয়াদী ঋণ, কৃষি পাট্টা, সয়েল হেলথ কার্ড পরিষেবা প্রদান করেন।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশঃ
- ১৯৯৯ সালে আমি যখন রেল মন্ত্রী ছিলাম, চ্যাংড়াবাঁধায় রেল প্রকল্প শুরু করেছিলাম। পড়ে তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৯ সালে রেল মন্ত্রী হয়ে আমি আবার সেই প্রকল্প চালু করি।
- আমরা একটা সংহতি সেতু বন্ধন তৈরী করে দিয়েছিলাম ছিটমহলের মানুষের জন্য, যার সুফল এখানকার ও বাংলাদেশের অনেক মানুষ পাচ্ছেন। ৬০ বছরেও যাঁদের টনক নড়েনি, এই মানুষগুলো কি অবস্থায় পড়ে ছিলেন, আজ তারা নতুন আশার আলোর সন্ধান পেয়েছেন। এবং এই সন্ধান আমাদের মা মাটি মানুষের সরকারই দিয়েছে।
- চ্যাংড়াবাঁধা ডেভেলপমেন্ট বোর্ড তৈরী করে দেওয়া হয়েছে। অলরেডি চ্যাংড়াবাঁধা ডেভেলপমেন্ট অথরিটিও অনেকগুলি প্রোগ্রাম নিয়েছে, অনেকগুলি বিল্ডিং তৈরী হচ্ছে বা হবে। উন্নয়ন নিয়ে কোনও রাজনীতি নয়।
- এখানে কেউ এসে যাতে থাকতে পারে, থাকার জায়গা তৈরী করতে হবে।
হলদিবাড়ি ও মেখলিগঞ্জের মধ্যে জয়ী সেতু তৈরী করে দিচ্ছি। এই জেলায় পঞ্চানন বর্মা ইউনিভার্সিটি তৈরী হয়েছে। কোচবিহার জেলায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ, কোচবিহার টাউনকে হেরিটেজ ঘোষণা করা, সব কাজ চলছে। কোচবিহারের রাজবাড়ির বিউটিফিকেশনের কাজ চলছে। - শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ির মধ্যে জাতীয় সড়কের রাস্তা খারাপ হয়ে গেছে, তাই এনএইচএআই কে রিকুয়েস্ট করেছি ইমিডিয়েট কাজতা করে দেওয়ার জন্য।
- জলপাইগুড়িতে সম্ভবত আগামী ১৭ই আগস্ট হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ হচ্ছে।
- হাজার হাজার কোটি টাকার দেনা আমাদের শোধ করতে হয়। সিপিএমের আমলের যে দেনা, সেই দেনা শোধ করতে আমরা এই সাত বছরে ২৫ লক্ষ ২৪ হাজার কোটি টাকা শোধ করেছি এই সাত বছরে। এ বছরেও ৪৬ হাজার কোটি টাকা শোধ করতে হবে। টাকা পয়সা নেই তাও এই কাজগুলো করা হচ্ছে।
- কন্যাশ্রীর টাকা ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। কন্যাশ্রীর মেয়েরা ইউনিভার্সিটি গেলেও স্কলারশিপ পাচ্ছে।
- মেয়েরা আমাদের সম্পদ। তাই আমরা কিছুটা সাহায্য করতে পারি, গরীব মেয়েরা বিয়ে করবে যখন, রুপশ্রীতে আবেদন করলেই ২৫০০০ টাকা করে পাবে।
- ৭০ লক্ষ সবুজ সাথীর সাইকেল আমরা বিলি করে দিয়েছি।
- মিড ডে মিল দিয়ি, গরীব ছেলেমেয়েদের প্রাইমারি স্কুলে ড্রেস দিয়ি, বই দিয়ি।
- মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষায় টেস্ট পেপার দিই।
- আমরা কৃষকদের জন্য কৃষি জমিতে খাজনা মুকুব করে দিয়েছি।
- বন্যায় আক্রান্ত প্রায় ৩০ লক্ষ কৃষক পরিবারকে আমরা সাহায্য করেছি।
- মা বোনেদের ৭৩১ দিন ছুটি দেওয়া হয়েছে বাচ্ছা মানুষ করার জন্য। কোনও
- কোনও সরকার ৩৩১ দিন ছুটি দিলে, সেটা হেডলাইন। আমরা ৭৩১ দিন দিয়ি, সেটা কেউ কখনও লেখে না। গেও যোগী ভিখ পায় না।
- জন্মালেই একটা গাছ দিচ্ছি, ঐ গাছটা বাচ্চাটা যখন বড় হবে, দুই আড়াই লাখ টাকা তার দাম হবে।
- জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি সব স্কীম তৈরী আছে। বাংলা পথ দেখায়। অটো ড্রাইভার, ক্ষেত মজুর, গাড়ির চালক, রিক্সাওয়ালা, বিড়ি শ্রমিক, নির্মাণ কর্মী সকলের জন্য স্কীম আছে, তারা অর্ধেক দেবে, গভর্নেমেন্ট তার থেকে বেশী দেবে, তারা ৬০ বছর হলে ২ লক্ষ টাকা পাবে, তারা পেনশন পাবে, নানারকম স্কীম তৈরী করে দেওয়া হয়েছে, তার নাম সামাজিক সুরক্ষা স্কীম। মাইনোরিটিসদের জন্য তপশিলিদের জন্য আদিবাসীদের জন্য ওবিসিদের জন্য মা বোনেদের জন্য জেনারেল কাস্টের জন্য আছে, সব কাস্টের লোকরাই পায়।
- বাংলা জুড়ে উন্নয়নের কাজ চলছে। এবং এই কাজ চলবে।
- জুট ইন্ডাস্ট্রিতে ২ লক্ষ ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠী, আশা, আইসিডিএস এর মেয়েরা সরকারের বিভিন্ন স্কীমে আছে।
- বিনা পয়সায় চিকিৎসা, ২ টাকা কিলো চাল এগুলো আমরা করি। ২৫ লক্ষেরও বেশী লোককে বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
- আমরা কামতাপুরি, কুরুক ও রাজবংশি ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছি।
- নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ নয়, আমাদের শরীরে সবকিছু অঙ্গ লাগে। সেইরকম একটা সমাজে হিন্দু থাকবে মুসলমান থাকবে শিখ থাকবে খৃষ্টান থাকবে গুজারাটি থাকবে মারাঠি থাকবে মারোয়ারি থাকবে তপশিলি থাকবে আদিবাসী থাকবে সংখ্যালঘুরা থাকবে সাধারণরা থাকবে রাজবংশিরা থাকবে কামতাপুরিরা থাকবে কুরুক থাকবে কুর্মালি থাকবে, সবাইকে একসাথে নিয়ে কাজ করতে হবে। সবাইকে নিয়ে তবেই একটা পরিবার, একটা সমাজ।
- বাংলায় গরীব মানুষের জন্য, সাধারণ মানুষের জন্য যত সামাজিক স্কীম আমরা তৈরী করেছি, কোনও রাজ্য পারবে না। সাড়া পৃথিবীতে কোথাও এই স্কীম নেই।