সাম্প্রতিক খবর

জুলাই ৫, ২০১৮

অপচয় রুখতে হবে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

অপচয় রুখতে হবে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ নবান্নে খরচ কমানো সংক্রান্ত বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি মুখ্যমন্ত্রী।

তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশ:

  • অপচয় রুখতে হবে, তবে উন্নয়ন-পরিষেবা বন্ধ করে নয়। ১২ টি দপ্তরকে একত্র করে দেওয়া হয়েছে। যেখানে খরচের দরকার নেই তা বন্ধ করে যেখানে প্রয়োজন সেখানে হিসেবে করে খরচ করতে হবে।
  • বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প – যেমন কন্যাশ্রী, সবুজশ্ৰী, শিক্ষাশ্রী, সবুজ সাথী – এগুলি চালাতে টাকা প্রয়োজন। সাধারণ মানুষের উন্নয়নের টাকার ক্ষেত্রে কোনরকম কম্প্রোমাইজ করা হবে না।
  • ডিএ দিতে বাড়তি ৫ হাজার কোটি টাকা লাগবে। ২ লক্ষ ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ শোধ করেছি। আরো ৪৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ শোধ করতে হবে।
  • পরিকল্পনা খাতে ব্যয় গত সাত বছরে পাঁচ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে, মূলধনে ব্যয় নয় গুন বৃদ্ধি পেয়েছে, পরিকাঠামোর জন্য ব্যয় চার গুন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সামাজিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে চার গুনের বেশী। তার কারণ, আমরা ই-গভর্নেন্স থেকে শুরু করে, গোল্ডেন পিকক থেকে শুরু করে ই-টেন্ডারিং থেকে শুরু করে ই-সার্ভিস থেকে শুরু করে সবটাই করেছি।
  • আমরা ক্রমাগত সংস্কার করে যাচ্ছি। আপনারা জানেন ৬৩টা দপ্তর থেকে আমরা ৫১টা দপ্তর করে দিয়েছি। ১২টা দপ্তরকে আমরা সংযুক্ত করে দিয়েছি। সুতরাং আমরা যতটা পারছি চেষ্টা করছি, কিন্তু, তা সত্ত্বেও মনে রাখবেন, আমাদের সরকার সক্রিয় বলেই ফলগুলি পাওয়া যাচ্ছে। সারা ভারতবর্ষে যখন কিষাণদের এত সমস্যা, বাংলা একমাত্র জায়গা যেখানে আমরা ইতিমধ্যেই চাষিদের যায় তিনগুন বৃদ্ধি করে দিয়েছি। তার জন্য বুদ্ধি খরচ করে কাজ করতে হয়, প্রশাসনিক রিভিউ মিটিংগুলো করতে হয়, এবং খুব জরুরি – ব্লকে গিয়ে কাজ করার ফলে ফিল্ডের কাজটা ভালো হয়।
  • তা সত্ত্বেও আমরা মনে করি এখনও অনেক জায়গা আছে যেগুলো হয়ত আগে ধরা হয়নি, সেই জায়গাগুলোতে খরচা কমাতে হবে। অনেক সময় ভুল টেন্ডার, ফল্টি টেন্ডার টেকনিকাল কারণে অনেক কোটি টাকা সরকারের ক্ষতি হয়, সেই জায়গাগুলো ধরে নিতে হবে। সুতরাং, এগুলো সমস্ত নিয়ে আজকে আলোচনা হয়েছে।
  • এফেক্টিভ ইউটিলাইজেশন অফ রিসোর্সেস, এটাই হচ্ছে আজকের মূল আলোচনার বিষয় ছিল। যা পরিকল্পনা হবে, সেগুলোর রূপরেখা করে দেওয়া, টাইমলাইন করে দেওয়া, সরকারের পয়সা যাতে চুলচেরা হিসেব করে কাজ করা যায়, সেদিকে আরও বেশী করে মনোযোগ দেওয়া, কাউন্সেলিং করা, ট্রেনিং দেওয়া। অর্থদপ্তরকে বলা হয়েছে আবার একটা ট্রেনিং প্রোগ্রাম করবে, এছাড়াও পূর্ত দপ্তর ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে একটা ট্রেনিং প্রোগ্রাম করবে।
  • মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে কোথায় কত লোক দরকার (কোথাও হয়তো পাঁচশো লোক আছে, কোথাও পাঁচ জন আছে) অ্যাডজাস্ট, রি-অ্যাডজাস্ট করার জন্য একটা কমিটি হয়েছে। প্রোজেক্ট ক্লিয়ারেন্স একটা কমিটি হয়েছে, সুতরাং এগুলো আমরা করছি, এটা একটা কন্টিনিউয়াস প্রোসেস।
  • আমরা এই কাজ শুরু করছি একটা বৃহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে, তাতে যতটুকু আমরা বাঁচাতে পারব, ততটুকুই মানুষের কাজে লাগবে। যেটাই বাঁচাব, সেটাই মানুষের উন্নয়নে লাগবে। যেটাই বাঁচবে, সেটাই মানুষের পরিষেবায় খরচ হবে। এটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। মানুষের কাজে, মানুষের প্রকল্পগুলো যাতে ভালো করে চলে। এত বাধ্যবাধকতা, এত দেনা, কেন্দ্রীয় সরকারের বিমাতৃসুলভ মনোভাব, প্রকল্পগুলো কেটে দেওয়া, টাকা ঠিকমতো না দেওয়া, সবকিছু সত্ত্বেও আমরা চেষ্টা করছি আমাদের সাধ্যমত যাতে অন্তত যতটা পাড়ি আমরা বাঁচাব, সেই বাঁচিয়ে আমরা অন্য কাজ করব।
  • সরকারের টাকা তো মানুষের টাকা, এখানে বিলাসিতা করার কোনও জায়গা নেই। এখানে পুরোটাই মানুষ ভিত্তিক, জনগণ ভিত্তিক এবং গণতন্ত্রে এটাই কাম্য। আজ বিশদে আলোচনা হয়েছে, আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে। যে যা বলতে চেয়েছে, তাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, সকলের প্রস্তাবও আমরা শুনেছি, অনেক মত এসছে, খুব ভালো ভালো প্রস্তাব। যেগুলো গ্রহণ করা প্রয়োজন, সেগুলো অর্থদপ্তর গ্রহণ করেছেন, মুখ্যসচিবগ্রহণ করেছেন। আমরা সবাই মিলে আলোচনা করেছি।