সাম্প্রতিক খবর

জুলাই ৬, ২০১৮

সমবায় দপ্তরের সাফল্য

সমবায় দপ্তরের সাফল্য

গত ছয় বছরে রাজ্য সরকারের সমবায় দপ্তর সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে চলেছে। ফলও মিলেছে আশানুরুপ।

এই মুহূর্তে রাজ্যে ২৮,০০০ এরও বেশী সমবায় সমিতি আছে, যার সদস্য সংখ্যা ৭৮ লক্ষেরও বেশী। এছাড়া লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী আছে যাতে ১৮ লক্ষ মানুষ নিযুক্ত আছে।

দেখে নেওয়া যাক, এই দপ্তরের কিছু উল্লেখযোগ্য সাফল্য

শস্য ঋণ: ২০১৬-১৭ সালে কৃষি ঋণের অর্ধেকটাই দিয়েছে সমবায় ব্যাঙ্ক। সমস্ত বেসরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক যেখানে সব মিলিয়ে ঋণ দিয়েছে ২৯৭০ কোটি টাকা, সেখানে সমবায় ব্যাঙ্ক এককভাবে ঋণ দিয়েছে ৩০১৮ কোটি টাকা। গত সাত বছরে প্রদান করা হয়েছে ১৮১৬২ কোটি টাকা।

কিষাণ ক্রেডিট কার্ড: গত সাত বছরে ৮৯৭৬৬৪ কিষাণ ক্রেডিট কার্ড তৈরী করা হয়েছে। আনুমানিক ১০ লক্ষ এটিএমএর সুবিধাযুক্ত রূপেয় কিষাণ কার্ড বিলি করা হয়েছে কৃষকদের মধ্যে।

সদস্য বাড়ানো: ২০১৭-১৮ সালে, সমবায় সমিতির সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলস্বরূপ, ৩১শে ডিসেম্বর ২০১৭র মধ্যে প্রাথমিক কৃষি ঋণ সমবায় সমিতি ১,৫১,৬০২জন নতুন সদস্যর নাম নথিভুক্ত করেছে।

সমবায় সমিতির নির্বাচন: সমবায় সমিতিগুলির স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য সমবায় নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। ২০১২ সালের ১৬ই এপ্রিল থেকে কাজ করা শুরু করে। এখনও পর্যন্ত তারা ৮২৬২ টি সমিতির নির্বাচন পরিচালনা করেছে।

অর্থায়ন: ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কোঅপারেটিভ এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট নাবার্ডের থেকে সর্বকালীন সর্বোচ্চ পুনঃঅর্থায়ন পায় ২১২ কোটি টাকার।

শস্য ঋণ: ৩১শে ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত কিষাণ ক্রেডিট কার্ড প্রাপকের সংখ্যা ২৩,৭০,২৮১ এবং ৮,৪১,৪২৪ কৃষককে ২০০৫.৩৩ কোটি টাকার শস্য ঋণ প্রদান করা হয়েছে।

স্বনির্ভর গোষ্ঠী: ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত, ১,৭২১টি নতুন স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরী করা হয়েছে এবং ১৮,০২৯ টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে ক্রেডিট লিঙ্ক করা হয়েছে। ৬১২.২৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে সমবায় গোষ্ঠীগুলিকে।

খারিফ বিপণন মরশুম: ২০১৬-১৭ সালের খারিফ মরশুমে ৩৯ লক্ষ ধানের মধ্যে ২৮ লক্ষ মেট্রিক টন সমবায়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে।

বীজ গুণ কেন্দ্র: ৫৭ টি বীজ গুণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে সমবায় দপ্তরের অধীনে। আরও তিনটি কেন্দ্র তৈরী করা হচ্ছে ১.১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে।

গুদামঘর: এই অর্থবর্ষে চারটি ৫,৪৬২ মেট্রিক টন ক্ষমতা সম্পন্ন গুদামঘর তৈরী করা হয়েছে ২.৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে।

হীম ঘর: ৬৭.১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৯,০০০ মেট্রিক টন ক্ষমতা সম্পন্ন ৬টি হিমঘর তৈরী করা হয়েছে।

সমবায় ভবন: এই বছরে বাঁকুড়াতে সমবায় ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এই সমবায় ভবনগুলিতে সমবায় দপ্তরের সমস্ত জেলা অফিস ও প্রতিষ্ঠানগুলি এক ছাতার তলায় আসবে, ফলে, সাধারণ মানুষ সমবায় দপ্তরের সাহায্য পাবেন নির্বিঘ্নে।

সুফলা বাংলা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগ, ‘সুফলা বাংলা’ আগের বছর শুরু হয়েছে। ৬ জেলায় ৩০টি ‘সুফলা’ বিপণন কেন্দ্র, ৭ টি জেলায় ৭০টি ‘মোবাইল সুফলা’ বিপণী খোলা হয়েছে।

পুরস্কার: ২০১৭ সালের ১১-১৩ই এপ্রিল নেতাজী ইনডোর স্টেডিয়ামে সমবায় মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এই মেলায় সমবায় রত্ন, সমবায় ভূষণ, সমবায় শ্রী পুরষ্কার প্রদান করা হয়।

প্রথম সমবায় সম্মেলন: স্বাধীনতার পর প্রথম সমবায় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২৫শে জানুয়ারি ২০১৮তে। নেতাজী ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনের শীর্ষক ছিল ‘আর্থ সামাজিক উন্নয়নে সমবায়’।

ঋণ প্রদান বেড়েছে: সাত আর্থিক বছরে অর্থাৎ ২০১০-১১ থেকে ২০১৭-১৮ শস্য ঋণ প্রদান বেড়েছে ১৪৩.৮৮ শতাংশ (১৩৮৮ কোটি থেকে ৩৩৮৫ কোটি) এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে প্রদান করা ঋণ বেড়েছে ৩৭৪.৪২ শতাংশ (১২৯ কোটি টাকা থেকে ৬১২ কোটি টাকা)।

ব্যাঙ্কিং পয়েন্ট: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশানুসারে গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চলে সমবায় ব্যাঙ্কের ২৫০টি নতুন ব্যাঙ্কিং পয়েন্ট খোলা হয়েছে। সমবায় ক্ষেত্রে জমা রাশি ৩৫০০০ কোটি থেকে বেড়ে ১০০০০০ কোটি হয়েছে।

ধান উৎপাদন বেড়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে: গত সাত আর্থিক বছরে অর্থাৎ ২০১০-১১ থেকে ২০১৭-১৮ সালে বিইএনএফইডি এবং সিওএনএফইডি’র মাধ্যমে ধান উৎপাদন বেড়েছে ১৫৭.৮৭ শতাংশ (১.৯৭ লক্ষ মেট্রিক টন থেকে ৫.০৮ লক্ষ মেট্রিক টন), যার মূল্য বেড়েছে ১২৪.৫ শতাংশ (৩৫১ কোটি টাকা থেকে ৭৮৮ কোটি টাকা)।

সরকারি পরিষেবা: সমবায় দপ্তর একটি উদ্যোগ নিয়েছে যার মাধ্যমে ওয়েস্ট বেঙ্গল কোঅপারেটিভ সোসাইটিস অ্যাক্ট এর পরিষেবা এবং যা নিয়ম আছে, তা ই-ডিস্ট্রিক্ট প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা। এর ফলে পরিষেবা প্রদান হবে স্বচ্ছ। মোট ৮৯টি পরিষেবা চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে ছটি ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। আরও নয়টি পরিষেবা খুব শীঘ্রই চালু হবে।