Sister Nivedita’s 150th birth anniversary celebrations begin

The 150th birth anniversary of Sister Nivedita will be celebrated by the state government in a grand manner. The inaugural function was held at Sisir Mancha on Friday, where state Education minister Partha Chatterjee and president of Bagbazar Math Swami Nityamuktananda were present.

The state government has set up a committee, comprising dignitaries of Ramakrishna Math and Mission including general secretary Swami Suhitananda, assistant secretary Swami Suvirananda and Swami Suvakarananda for the celebrations.

It was Chief Minister Mamata Banerjee who took special interest in acquiring and renovating the house of Sister Nivedita at 16 Bosepara Lane and hand it to Ramakrishna Sarada Math. The Chief Minister also acquired Roy Villa in Darjeeling, where Sister Nivedita died on October 13, 1911, and handed it over to Ramakrishna Mission.

A programme will be held at Bosepara Lane, where renovation of the building is being carried out in full swing. Noted personalities of the 19th century – from Tagore to Jagadish Chandra Bose, Aurobindo Ghosh to Gopal Krishna Gokhale – used to visit the house.

 

ভগিনী নিবেদিতার জন্ম সার্ধশতবর্ষ উদযাপনের সূচনা করল রাজ্য সরকার

আজ ভগিনী নিবেদিতার ১৫০ তম জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে শিশির মঞ্চে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল রাজ্য সরকার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং বাগবাজার মঠের সভাপতি স্বামী নিত্যামুক্তানন্দ।

ভগিনী নিবেদিতার জন্ম সার্ধশতবর্ষ উদযাপনের জন্য রাজ্য সরকার একটি কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটিতে আছেন রামকৃষ্ণ মঠ এবং মিশনের জেনারেল সেক্রেটারি স্বামী সুহিতানন্দ, সহ সম্পাদক স্বামী শুভিরানন্দ এবং স্বামী শুভাকরনন্দ মহাশয় সহ অন্যান্য প্রতিনিধিরা।

মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার ভগিনী নিবেদিতার বোসপাড়া লেনের বাসস্থান সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। সেই বাড়িটি তুলে দেওয়া হয়েছে  রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠকে। দার্জিলিঙের রায় ভিলা, যেখানে ভগিনী নিবেদিতা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন, সেই বাড়িটিও তুলে দেওয়া হয় রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠকে।

বোসপাড়া লেনে যেখানে ভবনের সংস্কারকাজ পুরোদমে চলছে সেখানেও একটি অনুষ্ঠান হবে।  উল্লেখ্য, ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে জগদীশ চন্দ্র বসু, অরবিন্দ ঘোষ গোপালকৃষ্ণ গোখলে – সকলেরই এখানে যাতায়াত ছিল।

Investment Bengal

Eye on US biz ties, Dr Amit Mitra attends midnight meet

In order to strengthen business ties with US, Bengal Finance, Commerce and Industries minister Dr Amit Mitra spent one-and-a-half hours with the US India Business Council (USIBC), a little after Monday midnight, on video conference.

The meeting, attended by USIBC president Mukesh Aghi, global CEO of MasterCard Ajay Banga, Ambassador Frank Wisner, consul general of India in New York Riva Ganguly Das and 35 others, was held in New York. Along with Dr Mitra, Trinamool MP and spokesperson Derek O’Brien pitched Bengal as the next global destination.

Pointing out that at the macro-economic level, the growth of Bengal stood far above that of the rest of the country, the state finance minister cited four examples based on 2015-16 figures that showed that the state outpaced GVA growth nationally by 4.72%, industrial sector growth by 3.29%, agricultural sector growth by 4.45% and services sector growth by 4.79%.

Dr Mitra further said that the state economy was at a more solid footing compared to that during the Left rule in 2010-11. The GSDP (at current prices) has doubled, fiscal deficit and revenue deficit has been brought down, and state’s own taxes have doubled in four years. Plan expenditure has grown thrice and capital expenditure has grown by seven times. Physical infrastructure in the state had grown fourfold, he added.

“Changes in Bengal in the past five years have been palpable and terrific,” said Ajay Banga, chairman emeritus of USIBC & global CEO of MasterCard.

“The 90-minute meeting was purposive. The Q&A session was also invigorating. We are glad that delegates in NYC were receptive to hard numbers about Bengal growth story of 5 years under the leadership of Mamata Banerjee,” O’Brien said.

 

মার্কিন শিল্পপতিদের রাজ্যে বিনিয়োগের আহ্বান শিল্পমন্ত্রীর

রীতিমতো নজিরবিহীনভাবে মধ্যরাতে নবান্ন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মার্কিন শিল্পপতিদের এ রাজ্যে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানানো হল। সোমবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে সওয়া ১টা পযর্ন্ত নবান্নের ১৩ তলার কনফারেন্স রুম থেকে ওই ভিডিও কনফারেন্স করেন অর্থ ও শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র। অপরদিকে নিউইয়র্কের মিডটাউনের মার্কিন ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিলের বোর্ড রুমে ছিলেন প্রায় ৫০ জন শিল্পপতি ও শিল্পসংস্থার কর্ণধার। সেই তালিকায় গ্লোবাল মাস্টার কার্ডের চেয়ারম্যান অজয় বাঙ্গা, ফ্র্যাঙ্ক উইজনারসহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিতি ছিলেন।

রাজ্য সরকার তথা এদেশের প্রতিনিধি হিসাবে নিউইয়র্কে ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য ডেরেক ও ব্রায়েন এবং নিউইয়র্কে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত। রাজ্য সরকারের তরফে অমিত মিত্র ছাড়াও শিল্পদপ্তরের প্রধান সচিব এসএম কৃষ্ণা এবং ডব্লুবিআইডিসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুরেন্দ্র গুপ্তা উপস্থিত ছিলেন।

নিউইয়র্কে সময় তখন বেলা ২টো। ভিডিও কনফারেন্সের শুরুতেই মার্কিন ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিলের তরফে দ্বিতীয় বার জয়ের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা জানানো হয়। সেই সঙ্গে তারা জানিয়ে দেয়, পেপসি, কোকাকোলা, কগনিজ্যান্ট-র মতো মার্কিন সংস্থা রা঩জ্যে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ শুধু উত্তর পূর্বাঞ্চল নয়, এশিয়ান দেশগুলির গেটওয়ে। অমিত মিত্র রাজ্যের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ব্যাখ্যা করে বলেন, রাজ্যে শিল্প বিনিয়োগের পরিবেশ রয়েছে। এ রাজ্য থেকে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানেও ব্যাবসার সুযোগ রয়েছে। কগনিজ্যান্ট নতুন করে ১৫ একর জমি নিয়েছে। সেখানে পুনরায় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা চালু করবে। নতুন করে ১৫ হাজার কর্মসংস্থান হতে চলেছে। কোকাকোলা ১২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। তাদের প্রতিষ্ঠানে ‘মাজা’ তৈরি হচ্ছে। রাজ্যে বিনিয়োগের সব সম্ভাবনা রয়েছে।

সেই সব দিক ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কত রাস্তা হয়েছে, কত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে তার উল্লেখ করেন অমিতবাবু। মার্কিন শিল্পপতিরা অমিতবাবুর কাছে জিএসটি নিয়ে রাজ্যের স্ট্যান্ড জানতে চান। তিনি বলেন, আর কোনও সংস্থাকে একাধিক ট্যাক্স দিতে হবে না। একটি ট্যাক্সের মাধ্যমে সব ট্যাক্স দেওয়া যাবে। তিনি যে জিএসটি’র এমপাওয়ার্ড কমিটির চেয়ারম্যান, তাও জানিয়ে দেন। সেই ভিডিও কনফারেন্সে নিউইয়র্কে উপস্থিত রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েনও কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকারও ব্যাখ্যা করেন। ভারত ও পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে অভিজ্ঞ ফ্র্যাঙ্ক উইজনারও পৌনে দু’ঘণ্টার ভিডিও কনফারেন্স নানা বিষয় তুলে ধরেন। জানতে চান, দেশ ও রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি।

পশ্চিমবঙ্গের শুধু রাজনৈতিক পরিবর্তন নয়, অর্থনৈতিক পরিবর্তনও জানতে চান অমিত মিত্রের কাছে। অমিতবাবু তাঁদের কাছে আগেই পাঁচ পাতার নোট পাঠিয়েছিলেন। সোমবার গভীর রাতে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পুরো ব্যাখ্যা করেন। জানিয়ে দেন, রাজ্য স্থায়ী সরকার চলছে। সেই সঙ্গে পরিকাঠামো, ভারী শিল্প, শিক্ষা, পর্যটন, তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে বিনিয়োগ করার জন্য আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে আগামী ২০-২১ জানুয়ারি বিশ্ববঙ্গ সম্মেলনে হাজির হওয়ার জন্য মার্কিন শিল্পপতিদের কাছে আবেদন করেন শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র। মার্কিন ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিলের এক প্রতিনিধিদল এ রাজ্যে আসতে পারে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।

State Govt to bring self-help groups under insurance coverage

The State Co-operation Department is all set to bring self-help groups under insurance coverage to ensure their financial security in case there is any untoward incident. Different steps were taken on the inspiration of Chief Minister Mamata Banerjee to promote the work of the Self Help Groups in Bengal.

Interestingly, 95 per cent of the loan which was given to the Self Help Groups has been recovered in the last financial year. There are around 1.95 lakh Self Help Groups registered with the state co-operation department. If everything goes as planned, the task of the bringing them under the security coverage will be done in the current fiscal.

With the Chief Minister’s initiative to introduce Biswa Bangla brand to promote the goods manufactured by the small scale enterprises and Self Help Groups in the state, the business of the groups have sustained growth in the past five years.

Unlike the erstwhile Left Front government that had just set up some stalls in government offices and complexes to promote the produce of the Self Help Groups, Mamata Banerjee government had taken major steps for promotion of the same not only in the local market but in other states and abroad.

 

স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে বীমার আওতায় আনছে রাজ্য সরকার

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় রাজ্য কোঅপারেটিভ দফতর এবার যেকোনো প্রতিকূল অবস্থার মোকাবিলা করার জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে বীমার আওতায় আনতে চলেছে। এজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে যে ঋণ দেওয়া হয়েছিল বিগত আর্থিক বছরে তার ৯৫ শতাংশই ফেরত পাওয়া গেছে। আনুমানিক ১ লক্ষ ৯৫ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী এই মুহূর্তে রাজ্য কোঅপারেটিভ দফতরে নথিভুক্ত। সব কিছু ঠিকঠাক চললে এই বীমার অন্তর্ভুক্ত করার কাজটি চলতি আর্থিক বছরের মধ্যেই সম্পন্ন হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর ঐকান্তিক চেষ্টায় ক্ষুদ্র শিল্প ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির তৈরী হস্তশিল্প বিশ্ব বাংলার মাধ্যমে বিগত ৫ বছরে সারা বিশ্বে ব্যাবসায় সাফল্যের মুখ দেখেছে।

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে, অন্যান্য রাজ্য এবং বিদেশেও ক্ষুদ্র শিল্প ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির ব্যবসার জন্য বিপণন কেন্দ্র খুলে দিয়েছে মমতা বন্দোপাধ্যায় পরিচালিত সরকার।

 

Bengal Govt to conserve Durga Puja artwork

HIDCO, the State Government agency which has already undertaken the mammoth task of beautifying New Town, will begin conservation of handicrafts and artworks that were created by various Durga Puja organisers.

It will also display the beautiful handicrafts and artworks across Eco Park in New Town.

While artworks made out of fibreglass, stone, steel and similar materials will be kept outdoors at Eco Park, those made out of wood, cotton and earth will be kept indoors.

For outdoor installations, a brick and cement foundation with spotlights and fencing would be built by HIDCO. For indoor objects, an air-conditioned facility would be set up at Mother’s Wax Museum-II, which is to be commissioned shortly: till then, these are to be kept in storage rooms within Eco Park.

 

দুর্গাপুজো মণ্ডপগুলির শিল্প সংরক্ষণে উদ্যোগী রাজ্য

রাজ্য সরকারী সংস্থা হিডকো নিউ টাউনে নানা দুর্গাপুজো মণ্ডপগুলির শিল্প–নিদর্শন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবে। নিউ টাউনের ইকো পার্কে দুর্গাপুজো মণ্ডপগুলির বিভিন্ন হস্তশিল্প এবং কারুকার্য প্রদর্শন করা হবে।

ফাইবার গ্লাস, পাথর, ইস্পাত এবং অনুরূপ উপকরণ দিয়ে তৈরি হস্তশিল্পগুলি রাখা হবে ইকো পার্কের বাইরের অংশে। আর কাঠ, কাপড় এই জাতীয় হস্তশিল্পগুলি স্থান পাবে প্রদর্শনশালার ভিতরের অংশে।

বাইরে  ইনস্টলেশনের জন্য, স্পটলাইট এবং বেড়া দিয়ে একটি ইট ও সিমেন্ট ভিত্তিপ্রস্তর নির্মাণ করবে হিডকো। ভেতরের শিল্প–নিদর্শন মাদার অয়াক্স মিউজিয়াম -II তে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে রাখা হবে। যতদিন না এগুলো ইকো পার্কের অন্য কোন স্থানে পাঠানো হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত এগুলো ওখানেই রাখা থাকবে।

‘Ahare Bangla’ food festival begins at Milan Mela grounds

The second edition of Ahare Bangla, conceptualised by Mamata Banerjee to render a platform to the agricultural products of the state’s farmers, was inaugurated today at the Milan Mela grounds.

From this year, foreign participation will also start at the food fest, with Bangladesh, China and Russia to be represented by their consulates.

Another innovative idea being launched this year is awards for the best innovative recipe and the most popular recipe, to be decided by a panel of judges.

Thirty renowned restaurateurs, four State Government organisations and 23 sweet shops are scheduled to participate and serve food at the five-day-long culinary extravaganza.

A special zone with seven stalls will be installed to showcase ‘theme food’ during the festival. Traditional Bengali vegetarian recipes (on October 22), colonial effect on Bengali cuisine (October 23), eggs (October 24) and fish (October 25) will be featured as theme foods.

All the four permanent hangars at Milan Mela will be utilised as food courts. One of them will showcase international food while another, named Ahare Biki Kini, will have 28 stalls selling raw food, food ingredients and ready-to-eat food, set up by government or government-promoted organisations.

 

 

শুরু হল ‘আহারে বাংলা’ খাদ্য উৎসব

দুর্গা পুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই বাঙালি ফের মেতে উঠবে রসনা তৃপ্তির নতুন উদযাপনে৷ আজ থেকেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে কলকাতা মিলন মেলায় শুরু হল ‘আহারে বাংলা’ উৎসব৷ এবার রাশিয়া, চিন ও বাংলাদেশও এই উৎসবে অংশগ্রহণ করছে।

২১ থেকে ২৫ অক্টোবর পাঁচ দিন ব্যাপী চলবে এই উৎসব। শহরের ৩০ টি নামী রেস্তরাঁ, ৪টি সরকারী সন্সথা এবং ২৩ টি মিষ্টির দোকান অংশ নেবে এই উৎসবে।

যেখানে বাঙালির বাঙালির ইলিশ, পোস্তো, চিংড়ির পাশেই ঠাঁই পাবে রোস্টেড ডাক, সেজোয়ান চিকেন, তন্দুরি কোয়েলের পসরা৷

একটি বিশেষ জোন তৈরি করা হয়েছে  যেখানে উৎসবের পাশাপাশি তাদের থিম ফুড প্রদর্শন করবে ৭ টি স্টল। ২৮ টি স্টল বসানো হচ্ছে যেখানে কাঁচা জিনিস, খাদ্য উপাদান ইত্যাদি পাওয়া যাবে। সবচেয়ে জনপ্রিয় রেসিপি গুলিকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হবে।

রাজ্যের বাজার থেকেই সবজি কিনে বিদেশি মুখরোচক খাবার তৈরি করে বিক্রি করবে বিদেশি স্টলগুলি৷ আজ এই  উৎসবের উদ্বোধন করবেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ উপস্থিত থাকবেন পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, দমকল মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়৷

 

Trinamool announces the names of candidates for bypolls

Secretary General of Trinamool Congress Partha Chatterjee today announced the names of candidates for the by-elections to be held on 19 November.

Dibyendu Adhikary will be the candidate from Tamluk Lok Sabha constituency while Saikat Panja will be fighting from Monteswar Vidhan Sabha constituency. The name of the candidate for Coochbehar Lok Sabha seat will be announced soon, Partha Chatterjee said adding that Mamata Banerjee had given her approval to the names of the candidates.

Tamluk Lok Sabha seat fell vacant after sitting MP Suvendu Adhikari contested and won the Vidhan Sabha polls from Nandigram. Cooch Behar Lok Sabha seat fell vacant due to the passing of MP Renuka Sinha. The death of Sajal Panja, MLA of Monteswar, necessitated bypoll to the Assembly constituency.

 

১৯ নভেম্বরের উপনির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা তৃণমূলের

আজ ১৯ নভেম্বরের উপনির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।  সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, আসন্ন উপনির্বাচনের প্রার্থীদের নামে অনুমোদন  দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

২টি লোকসভা কেন্দ্রে এবং ১টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে আগামী ১৯ নভেম্বর। ভোট গণনা হবে ২২ নভেম্বর।

তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হবেন দিব্যেন্দু অধিকারী। মন্তেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হবেন সৈকত পাঁজা। কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম কয়েক দিনের মধ্যে ঘোষণা করা হবে।

তমলুক লোকসভা আসনের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং  জয়ী হওয়ার পর ওই আসনটি খালি হয়ে যায়। কোচবিহারের সাংসদ রেণুকা চৌধুরী এবং মন্তেশ্বরের বিধায়ক সজল পাঁজার মৃত্যুর কারণে এই লোকসভা ও বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে।

 

Bengal to devise export strategy to promote its artisans

In order to promote various products, including engineering and textile products in the international market, the Bengal government is drafting a comprehensive export strategy for the micro and small scale enterprises in the textile sector.

The main purpose of the move is to create a demand for Bengal’s myriad products in markets abroad. This will not only restore the past glory of Bengal’s textile and other industries, but also help in reviving the economy of medium and small sectors in the state.

A memorandum of understanding has already been signed between the state government and the Export Import Bank of India (Exim Bank).

The Micro, Small and Medium Enterprises (MSME) department has been working towards building infrastructure so that the products could be exported to various countries, boosting sustainable growth in various sectors.

The Bengal MSME department had taken up a series of new projects to contribute to the development of the socio-economic condition of artisans across the state by giving them a platform to showcase their handicrafts. The state government had set up ‘Rural Craft hub Project’ at 11 different locations for this purpose.

The hubs, which are also recognised by UNESCO, have turned into tourist hotspots.

 

আন্তর্জাতিক বাজারে রাজ্যের হস্তশিল্পের প্রসারের উদ্যোগ রাজ্যের

আন্তর্জাতিক বাজারে রাজ্যের হস্তশিল্প সামগ্রীর আরও প্রসার ঘটাতে রাজ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিষয়ক দপ্তর একটি রপ্তানি নীতি বা এক্সপোর্ট পলিসি আনার কথা ভাবছে।

এর ফলে বাংলার হৃৎ গৌরব তো ফিরবেই, সাথে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পর বিরাট লাভ হবে। ইতিমধ্যেই Export Import Bank of India (Exim Bank) এর সাথে রাজ্য সরকারের একটি মৌ স্বাক্ষরিত হয়েছে।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিষয়ক দপ্তর এখন রাজ্যে রপ্তানি করার মতো পরিকাঠামো তৈরী করবে যাতে বিদেশে রাজ্যের হস্তশিল্প সামগ্রী পাঠানো যায়।

ইতিমধ্যেই রাজ্যের হস্তশিল্পীদের সামাজিক কল্যাণের জন্য রাজ্য সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। তৈরী হয়েছে ১১টি রুরাল ক্র্যাফট হাব। এই হাবগুলি ইউনেস্কোর প্রশংসাও কুড়িয়েছে।

 

মানুষের দাবিতেই সিলেবাসে সিঙ্গুর – পার্থ চট্টোপাধ্যায়

একজন মানুষ স্বপ্ন দেখেন বাংলার প্রতিটি মায়ের আঁচল শিউলি ফুলের সুগন্ধে ভরিয়ে দিতে। একজন মানুষ প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখেন মাটির সঙ্গে নিবিড় সাহচর্যে যাঁদের জীবন, তাঁদের প্রতি হওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে লড়াইয়ের মাঠে দাঁড়িয়ে মাটির অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার।

তিনি এমন একজন হৃদয়বান মানুষ যিনি বাংলার সর্বস্তরের নাগরিকের জীবনে-সংসারে সুস্থিতি চান, সমৃধ্ধি চান, চান রাজ্যবাসী গোটা বিশ্বের কাছে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে বলুক, ‘জগ९সভায় বাংলা শ্রেষ্ঠ আসন পাবে’।

বাংলার ন’কোটি মানুষের সমস্ত স্বপ্ন পূরণের সেই কারিগর এবং বিশ্ববাংলা গড়ার একমবাদিত্যম মানুষ, আমাদের প্রিয় জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সিঙ্গুর বিজয় দিবসে মঞ্চ থেকে সেদিন নেত্রী ঘোষণা করলেন, চাষি ও কৃষকদের অধিকার নিয়ে তিনি বই লিখতে শুরু করছেন। সেই বই আগামীদিনে দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে এক ঐতিহাসিক দলিল হয়ে থাকবে ঠিকই। বাংলা তথা গোটা দেশে ভূমির অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে নেত্রীর সিঙ্গুর আন্দোলনই যে একমাত্র জনগণতান্ত্রিক স্বীকৃতি পেয়েছে তাও ইতিহাস। সুপ্রিম কোর্ট জমি ফেরত দেওয়ার দাবিতে সিলমোহর দেওয়ার পর দেশের অন্যান্য রাজ্য এবং প্রদেশেও ‘মমতা-মডেল’ অনুসরণ করা হচ্ছে। যে প্রদীপ জ্বালিয়েছিলেন সিঙ্গুরের ধূসর প্রান্তরে, সেখানে আজ কৃষকদের প্রাণের সমারোহ। সেই উ९সবে শামিল হয়েছে ভারতবাসীও। তিনি হয়ে উঠেছেন সারা বিশ্বের ভূমি অধিকার আন্দোলনের মূল পথপ্রদর্শক। বস্তুত, শীর্ষ আদালত সিঙ্গুরের আন্দোলনের দাবি মেনে নেওয়ায় গোটা দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আমজনতার সর্বজনগ্রাহ্য জাতীয় নেত্রী হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন ও পাচ্ছেন।

আগামীদিনে সিঙ্গুর আন্দোলন নিয়ে দেশ-বিদেশে অনেকে গবেষণা করবেন, পিএইচডিও করবেন। যাঁরা গবেষণা করবেন তাঁদের জন্য নেত্রীর বইটি অবশ্যই প্রয়োজনীয় হয়ে উঠবে। কিন্তু নবপ্রজন্মের কাছে সহজে সিঙ্গুর আন্দোলনের ইতিহাস জানাতে বাংলার আমজনতা চাইছে বিষয়টিকে সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করা হোক। বিদ্বজ্জনেরা চাইছেন ভূমির অধিকার নিয়ে গোটা দেশের কাছে যে নয়া দিশা দেখিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা অবশ্যই পাঠ্যবইয়ে রাখা হোক। কারণ, সেদিন বহু বামপন্থী বিদ্বজ্জনও নেত্রীর সঙ্গে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের আন্দোলনে পা মিলিয়েছিলেন। রাজ্যের সিলেবাস কমিটিও সেই সুপারিশই করেছে।তাই আমরা রাজ্য সরকারের তরফে শিক্ষা দফতরের তরফে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।গরিব মানুষের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর অন্য অনেক প্রকল্প ঘোষণাকে সমর্থনের মতোই সিলেবাসে সিঙ্গুর রাখার সিদ্ধান্তকে পাহাড় থেকে সাগর, সবাই স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন করেছেন। আর এটাই আমাদের মা-মাটি-মানুষ সরকারের অন্যতম সাফল্য।

বিজয় দিবসের মঞ্চে সেদিন যখন সিঙ্গুরের ‘মাতঙ্গিনী’ সরস্বতী দাসকে জড়িয়ে ধরে আবেগরুদ্ধ হয়ে পড়লেন নেত্রী তখন মনে পড়ছিল দশ বছর আগের টুকরো টুকরো স্মৃতি। দশটা বছর কেটে গেলেও একটুও বিবর্ণ হয়নি সেই জমি নিয়ে উদয়াস্ত লড়াইয়ের নানা ঘটনা। শানাপাড়া, বেড়াবাড়ি, জয়মোল্লায় দিনের পর দিন আন্দোলনকারী চাষীদের সঙ্গে ঘুরেছি। প্রতিটি ঘটনাই আজও টাটকা, তাপসীর মৃত্যুর মতো বেশ কিছু ঘটনা তো যন্ত্রণাক্লিষ্ট। সেদিনও মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য মরণপণ ঐকান্তিক লড়াই করেছিলেন জননেত্রী। তিনি ছিলেন ভূমি নিয়ে মানুষের স্বপ্নপূরণের লড়াইয়ের সাধিকা। একইভাবে তিনিই নন্দীগ্রামের মানুষদের ভূমি হারানোর যন্ত্রণার প্রতিবাদ করেছিলেন। রাস্তার পাশে মঞ্চ বেঁধে সিঙ্গুরে টানা ১৪ দিন ধর্না দিয়েছেন নেত্রী। আমরা সবাই সঙ্গী। রাতের অন্ধকারে চেষ্টা হয়েছিল, লরি চাপা দিয়ে ধর্নায় অংশ নেওয়া রাস্তায় শুয়ে থাকা ঘুমন্ত কর্মীদের পিষে দেওয়ার। কিন্তু নেত্রীর সজাগদৃষ্টিতে রাতপাহারা থাকায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল সবাই। তবে সিপিএমের ভয়াবহ চক্রান্ত এবং হিংস্রতার হাত থেকে শত চেষ্টা করেও তাপসী মালিক বা রাজকুমার বহুলদের আমরা বাঁচাতে পারিনি। বাঁচাতে পারিনি আরও ১২জন কৃষককে।

সিলেবাসে আমরা রাখতে চাই, জীবন বিপন্ন করে মা-মাটি-মানুষের নেত্রীর টানা ২৬ দিনের অনশন-লড়াইয়ের কথা। ধর্মতলার সেই অনশনে নেত্রীর পাশে ছুটে এসেছিলেন দেশের তাবড় নেতৃত্ব। ছিলেন হাজার চুরাশির মা প্রয়াত মহাশ্বেতাদেবী। এখনো ভাবলে শিউরে উঠি। কারণ, একদিকে সিপিএম ও পুলিশ প্রশাসনের অত্যাচার অন্যদিকে টানা অনশনের ধাক্কায় নেত্রীর প্রাণ সংশয় হওয়ার উপক্রম। দু’য়ে মিলে তখন আমরা সবাই তটস্থ, শঙ্কিত। দলে দলে সবাই এসে তখন ধর্মতলায় নেত্রীর মঞ্চের পাশে উদগ্রীব হয়ে থাকতাম। সঙ্গে হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু রাজ্যপালের উপস্থিতিতে হওয়া চুক্তিও মানেননি সেদিনের সিপিএমের দাম্ভিক মুখ্যমন্ত্রী। দম্ভ, অহংকার শেষ কথা বলে না, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় জনগণ। তাই শুধু সিঙ্গুর নয়, এবারেও বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধী ভোট এক করার মরিয়া ব্যর্থ চেষ্টা করেও জনগণের ফু९কারে উড়ে গিয়েছে কু९সাকারী-অপপ্রচারকারীরা।

১০বছর আগের আন্দোলনের সেই ইতিহাস। সিঙ্গুরের ঐতিহাসিক মঞ্চ থেকে যখন এই ঘোষণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছিলেন, তখন কোথায় যেন তাঁর গলাটা ধরে আসছে। মনে পড়ছিলো একটার পর একটা দিনের কথা। সুপ্রিম কোর্টের রায় শুনে বলেছিলেন, এবার আমি শান্তিতে মরতেও পারি। আসলে এই আন্দোলন করতে গিয়ে তাঁর যে মৃত্যুও হতে পারত, সেকথা সেদিন আবার বলে দিয়েছিলেন। ইতিহাসকে স্মরণ রাখতে এখন থেকে প্রতি ১৪ সেপ্টেম্বর সিঙ্গুর দিবস পালন হবে। নন্দীগ্রামের মতো সিঙ্গুরেও তৈরী হবে স্মারক। এটাই হবে কৃষিজমি আন্দোলনের প্রতীক।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামীণ উন্নয়ন ও নগরোন্নয়ন-সহ বাংলার সমস্ত ক্ষেত্রের প্রগতির সফল কারিগর। বিশেষ করে শিক্ষাক্ষেত্রে তিনি নিয়ে এসেছেন আমূল বিপ্লব। জগতের আনন্দ থেকে সাধারণ মানুষের খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান ও পড়ুয়াদের শিক্ষার অধিকার দিয়েছেন তিনি। লক্ষ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীকে সবুজ সাথী প্রকল্পে সাইকেল বিলি যে তাঁর গভীর ভাবনা চিন্তার ফসল তা এখন স্বীকার করছেন সবাই। একটি সাইকেল শুধুমাত্র একটি ছাত্রীর পড়াশোনাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে না, সামগ্রিকভাবে পারিবারিক সমন্বয়ে সাহায্য করছে মুখ্যমন্ত্রীর এই উপহার।

সরকারি স্কুলে ১০০ শতাংশ মিড্ ডে মিল চালু থেকে শুরু করে প্রাথমিকের সমস্ত ছাত্রদের জুতো বিতরণ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শীতকালে সোয়েটার ও স্কুল ব্যাগ দেওয়ার বিবেচনা করা হচ্ছে। পরিবর্তনের পর থেকে প্রাথমিকে পোশাক দেওয়া শুরু হয়েছে। দুঃস্থ ও পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে দেওয়া হয় যাবতীয় বইপত্র, খাতা। মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকে পোশাক পরিচ্ছদ ও সাইকেল তুলে দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের হাতে। বিশেষ করে সমস্ত প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সমস্ত স্কুলে ‘Ramp’ চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগে প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করতে হত। কিন্তু মা-মাটি-মানুষ সরকার আসার পর সমস্ত প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্যই সরকারই অতিরিক্ত ৪৫ মিনিট সময় বরাদ্দ করে দিয়েছে। অর্থা९ আর আগের মতো আবেদন করার কোনো দরকার নেই।

শিক্ষাক্ষেত্রে ‘কন্যাশ্রী’-নারীশিক্ষায় ও সামাজিক প্রগতিতে বৈপ্লবিক পদক্ষেপ নিয়েছেন মা-মাটি-মানুষের নেত্রী আমাদের প্রিয় মুখ্যমন্ত্রী। কন্যাশ্রী আমাদের রাজ্যের নারী শিক্ষার দিকবদল, শিক্ষায় যুগান্তরের সংকেত। রাজ্য ও দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বে আমাদের নেত্রীর এই প্রকল্প শুধু প্রশংসিত হয়নি, বহু রাজ্য তথা দেশে মডেল হয়েছে। বাম শাসনে বহু বছর ধরে পিছিয়ে থাকা এই রাজ্যের নারী শিক্ষা দ্রুত ছুঁয়েছে শীর্ষস্থান। এটাও মা-মাটি-মানুষের শিক্ষায় সাফল্য।

বাম আমলে বাংলায় সংখ্যালঘু সমাজ চরম অবহেলিত হয়েছিল। আমাদের সরকার আসতেই মুসলিম সমাজের অগ্রগতির দ্বার খুলে দিয়েছে। মুসলিম ছাত্রীছাত্রীদের শিক্ষাপ্রসারে বিপুল স্কলারশিপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চাকরি প্রার্থীদের জন্য ‘বিশেষ সুযোগ’ দেওয়া হয়েছে আমাদের সময়েই। বস্তুত এই কারণেই আজ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহের ছায়ায় আশ্রয় নিয়েছে সংখ্যালঘু ছাত্র-ছাত্রীরা। শিক্ষাক্ষেত্রে তফসিলি জাতি-উপজাতির ছাত্রছাত্রীদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এবার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুল মিলিয়ে প্রতিবছর অত্যাধুনিক পরিকাঠামোযুক্ত এক হাজার Virtual Classroom তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমাদের সরকার। গ্রামীণ স্কুলগুলির পরিকাঠামো বৃদ্ধিতে বরাদ্দ একলাফে প্রায় আটগুণ বৃদ্ধি হয়েছে এবারের বাজেটে। রাজ্যে মা-মাটি-মানুষ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দু’-দুবার বহু সংখ্যক কলেজে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। বহু কলেজে স্থায়ী অধ্যক্ষ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় অধ্যক্ষ নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। উচ্চশিক্ষার জন্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় এই রাজ্য দেশের মধ্যে আনুপাতিক হারে শীর্ষস্থানে পৌঁছেছে। উত্তরবঙ্গের প্রকৃতির স্নিগ্ধ ছায়ায় কিংবা পুরুলিয়ার রুক্ষ প্রান্তরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। আবার সুদূর দক্ষিনে ডায়মন্ডহারবারে সাত একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রথম মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়। মানুষ কল্পনাও করতে পারেন না শিক্ষায় এই সমৃধ্ধি।

স্কুল শিক্ষক নিয়োগে বহুদিন বঞ্চিত হয়েছেন চাকরি প্রার্থী শিক্ষার্থীরা। তার অন্যতম কারণ সুগভীর চক্রান্ত। ষড়যন্ত্র করে মামলার মাধ্যমে টেট-এর নিয়োগ প্রক্রিয়াকে শ্লথ করে দেওয়া হয়েছিল। এইজন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। মুখ্যমন্ত্রী আগেই ঘোষণা করেছিলেন, আদালতের নির্দেশ পেলে সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষক নিয়োগের কাজ শুরু হবে। নেত্রীর সেই ঘোষণা আমাদের শিক্ষা দফতর অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে। আদালত রায় দেওয়ার এক ঘন্টার মধ্যেই টেট পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে দেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিক ও উচ্চপ্রাথমিকে যত দ্রুত সম্ভব ৬০,০০০ শিক্ষক নিয়োগ করা যায় তার ব্যবস্থা করছে আমাদের দফতর। প্রতিটি বিষয় ও প্রক্রিয়া যে স্বচ্ছতার মাধ্যমে করা হচ্ছে তা আমরা কাজের মাধ্যমে প্রমান করে দিয়েছি। সর্বোপরি যে সমস্ত শিক্ষিকা বাড়ি থেকে দূরে চাকরি করেন তাঁদের কাছাকাছি নিয়ে আসতে ইতিমধ্যে বদলি প্রক্রিয়া চালু করেছে আমাদের সরকার। বহু শিক্ষিকা ইতিমধ্যে বাড়ির কাছের স্কুলে বদলি হয়ে এসে পঠন-পাঠন কোর্সে অংশ নিতে শুরু করে দিয়েছেন। শিক্ষাসংক্রান্ত সমস্ত কর্মসূচিতে আমাদের

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষকরা সমাজের গর্ব, তাঁদের সম্মান দিলে তবেই সমাজ-সভ্যতা তথা বাংলা এগিয়ে যাবে। তাই তো রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পর শিক্ষকদের সম্মান দিয়ে প্রতিবছর ‘শিক্ষারত্ন’ সম্মাননা চালু করে শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের স্বীকৃতি দেওয়া শুরু হয়েছে।

আমাদের সরকার শহরের সঙ্গে গ্রাম এক লহমায় জুড়ে দিয়েছে রাস্তাঘাটের সুপরিমিত সংস্কার ও অজস্র নতুন রাস্তা তৈরী করে। শুধু কলকাতা নয়, গোটা রাজ্যই মা-মাটি-মানুষ সরকারের নানা প্রকল্প ও পরিকাঠামো চালু হওয়ায় আজ কল্লোলিনী, তিলোত্তমা। গঙ্গার দুই তীরও সৌন্দর্যের সৌরভে সুরভিত। কথা দিচ্ছি, শিক্ষাঙ্গনের সর্বোস্তরকে পরিপূর্ণভাবে মেধার সম্মান ও সীকৃতি দিয়ে আরো উজ্জ্বল এবং আলোকময় করা হবে। আলোয় ভোরে উঠবে জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের রাজ্য-বাংলা। সত্যি সত্যি মেধা ও শিক্ষা সংস্কৃতিতে আরো এগিয়ে শীঘ্রই হয়ে উঠবে পরিপূর্ণ বিশ্ববাংলা।

 

রোম -জার্মানির রেডারে বাংলা – মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

২ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ সেপ্টেম্বর সকাল। আটটি দিন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সর্বক্ষণের সফরসঙ্গী হিসেবে আমার থাকার সুযোগ ঘটেছিল। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে এমিরেটসের বিমানে কলকাতা-দুবাই প্রথমে পৌঁছনো হয়। সেখানে আমরা একত্রে ছিলাম। মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, সস্ত্রীক মুখ্যমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি গৌতম সান্যাল, রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন। সঙ্গে ছিল একদল সাংবাদিক বারো সংখ্যায়।

আমরা দুবাই বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর হাই কমিশনের পক্ষ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাগত জানানো হয়। তাঁকে আলাদা করে সেরিমনিয়াল লাউঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। রাষ্ট্রদূত স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত প্রতিনিধিকে একত্রিত করে একটি বাসে করে আমরা উপস্থিত হই। কিছুক্ষনের মধ্যেই খবর আসে ভারতবর্ষের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ খুব নিকটে সেরিমোনিয়াল লাউঞ্জে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষা९ করতে চান। তারপর সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংলগ্ন একটি বিরাট কক্ষে যেখানে সুষমা স্বরাজ নয় সদস্যের এক প্রতিনিধি দলকে নিয়ে রোমের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছিলেন। দিল্লি থেকে এসে তাঁরাও একই সঙ্গে অপেক্ষা করছিলেন। আমাদের যাত্রা ছিল ৪ সেপ্টেম্বর রোমের ভ্যাটিকান শহরে মাদার টেরিজার সন্তায়ন আখ্যায় আখ্যায়িত করার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া। সুষমা স্বরাজ এবং তাঁর সঙ্গে আরও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের যে সাংসদরা প্রতিনিধি হিসাবে ছিলেন তাঁরা সকলে মুখ্যমন্ত্রীকে পেয়ে উচ্ছসিত হন। দীর্ঘ ৪৫ মিনিট কথোপকথন। আলাপ-চারিতা হয়। প্রতিনিধি দলে জনৈক সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিও ছিলেন। সেখান থেকে একই বিমানে আমরা সকলে মিলে রোমের উদ্দেশ্যে রওনা হই।

ইউরোপের বুকে ভারতের এক বড় প্রতিনিধি দল পৌঁছেছে। আরও ভেবে আশ্চর্য হচ্ছি কলকাতা শহর রোমে উঠে আসছে। ২ তারিখে সময়সূচিতে রাত্রি হয়ে যাওয়ায় সকলে যে যাঁর মতো নৈশভোজ সেরে ঘরে চলে যায়। ৩ তারিখ সকালে যখন আমরা সকলে প্রাতরাশের ঘরে আলোচনা করছি, নিজেরা একবার ভ্যাটিকান সিটিতে গিয়ে পরিবেশটা একবার দেখে আসা যায় কখন। তখন দেখি হোটেল থেকে দু’কিলোমিটার দূরে ভ্যাটিকান সিটি চার্চ পরিভ্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরে আসছেন। তাঁর এই ততপরতায় আমরা যুগপ९ বিস্মিত হয়ে পড়েছি। এর আগেইতালিও দূতাবাসের ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের দফতর থেকে পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী-সহ অন্যান্য প্রতিনিধিদের ঘর বরাদ্দ নিয়ে এক অন্যায় এবং অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু বিদেশের মাটিতে দেশের রাষ্ট্রদূতভবনের এই অন্যায় কার্যকলাপ মেনে নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী প্রচুর ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়ে বরাদ্দকৃত ঘরেই অবস্থান করেন। যে ঘরে তাঁকে স্থান দেওয়া হয়েছিল তা দেখে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল যিনি ওই হোটেলে ছিলেন, তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, আমার ঘরের থেকে এই ঘর ছোট শুধু তাই নয়, একই ঘরের সঙ্গে যেখানে শোয়া এবং বাথরুম যেভাবে মুখোমুখি সংলগ্ন।

এমনকী , যেভাবে ঘরে বসার অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেই তা দেখে আমি বিস্মিত।কিন্তু যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী এসব বিষয়ে খুব একটা মাথা ঘামান না তাঁর নিজের জীবন নির্বাহের মধ্যে দিয়ে বারবার প্রমান করেছেন। তাই তিনি ঝাঁপিয়ে পড়লেন চার তারিখের কর্মসূচীতে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থানকে সারা বিশ্বব্যাপী মানুষের সামনে কীভাবে তুলে ধরবেন।

ওই দিনই বিকেলে হোটেলের লনে আমরা গোল হয়ে বসলাম। মুখ্যমন্ত্রী প্রস্তাব দিলেন হোটেল থেকে ভ্যাটিকান সিটি উ९সবস্থল পর্যন্ত আমরা একত্রে গান গাইতে গাইতে যাব। প্রথমে বিষয়টি শুনে অনেকে ভ্রুকুঞ্চন করেছিল। ইটা কি আদৌ বাস্তবে সম্ভব। শুরু হলো গান বাছাইয়ের পর্ব। একটি, দুটি করে চারটি গান বাছা হল। শুরু হল রিহার্সাল। নেতৃত্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁরা কখনো গান গাননি তাঁদেরও দেখা গেল ঠোঁট নাড়তে। গানের নির্বাচন প্রক্রিয়ার পরেই রিহার্সাল শুরু হয়। ততক্ষনে হোটেলে আসা অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিরা অধীর আগ্রহে আমাদের দেখতে জমা হতে শুরু করেছিলেন। প্রায় ৯০ মিনিট চলে গানের রিহার্সাল। গাঙ্গুলিকে লিখে প্রত্যেকের হাতে একটি করে অনুলিপি তুলে দেওয়া হল। যাঁরা গাইতে না পারবেন, তাঁরা যেন অন্তত সুর মেলাতে পারেন। গলায় একটা স্বেচ্ছাসেবকের মতো একটা করে বিশেষ ব্যাজ ঝুলিয়ে নেওয়া হল। যাতে লেখা হল ‘We are from the city of mother, Kolkata’। তার উপরে লেখা ছিল ’BENGAL’ । খুব সুসজ্জিত ছিল ব্যাজগুলি। প্রস্তুতি সম্পন্ন। চূড়ান্তভাবে যখন রিহার্সাল পর্ব সম্পন্ন হচ্ছে তখন মুখ্যমন্ত্রী সন্তুষ্ট হলেন। নির্দেশ দিলেন, পরের দিন চার তারিখ সকাল সাড়ে আটটার মধ্যে যেন প্রস্তুত হয়ে তাঁর নেতৃত্বে রওনা হই।

৪ তারিখ সকাল। সাড়ে আটটাতেই যাত্রা শুরু হলো মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে। গান করে রোমের শহর ভ্যাটিকানের দিকে আমাদের যাওয়া। ততক্ষনে ভ্যাটিকানে চার্চের সামনে লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশ ঘটে গিয়েছে। ততক্ষনে সারা বিশ্ব থেকে ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের মানুষে এসে উপস্থিত হয়েছেন। সারা পৃথিবী থেকে ১৮৫ জন বিশপ উপস্থিত। সারা শহরে একটা আলাদা মাধুর্য। আর তার মধ্যে দিয়ে রোমের রাস্তায় নেমেছে এসেছে কলকাতা, নেমেছে এসেছে বাংলা। নেমে এসেছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি অত্যন্ত রুচিবান, সংস্কৃতিবোধসম্পন্ন প্রতিনিধি দল। যাঁরা গান করতে করতে যত এগিয়েছে, রাস্তার দু’পাশের মানুষ অপার বিস্ময়ে লক্ষ করেছে। ‘মঙ্গলদ্বীপ জ্বেলে।..’ গানটি যখন গাওয়া চলছে তখন আমরা ভ্যাটিকান সিটির মুখে পৌঁছে গিয়েছি। কানায় কানায় পরিপূর্ণ পরিবেশ। দূর থেকে দেখা যাচ্ছে চার্চের মাথার উপর ঝুলছে মাদার টেরিজার হাতজোড় করা মিষ্টি হাসির নিদারুন সুন্দর প্রতিকৃতি।সুসজ্জিত মঞ্চ।

অতর্কিতে আমরা দেখলাম মিশনারিজ অফ চ্যারিটির প্রধান, যাঁদের আমন্ত্রণে মুখ্যমন্ত্রীর ভ্যাটিকান সিটিতে যাওয়া। তাঁদের প্রধান সিস্টার প্রেমা অন্তত একশো মিটার মঞ্চ থেকে নিচে নেমে এসে সমস্ত পুলিশ বেষ্টনীকে সরিয়ে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাত ধরে টেনে নিয়ে চলে গেলেন মূল মঞ্চের দিকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখনই সিস্টার প্রেমাকে বললেন, পুলিশদের বলে দিন আমার সঙ্গে আসা প্রতিনিধি দলের সকলেই যেন মূল মঞ্চে বসার স্থান পান। আমাদেরও সসম্মানে নিয়ে গিয়ে মূল মঞ্চের পিছনের সারিতে যা খুব বেশি হলে পঞ্চাশ মিটারের মধ্যে। আমরা সকলে প্রত্যেকে প্রত্যেকের আসন নিয়ে বসলাম। সকাল সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে বারোটা। দু’ঘন্টার কর্মসূচি ছিল। মাঝখানে একটি অংশে বাংলাতেও প্রার্থনা করা হল। তখন মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে ভারতবর্ষের আর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ যার এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলেন তাঁদের উচ্ছাস চোখে পড়ার মতো ছিল। সমস্ত কর্মসূচি সম্পন্ন হওয়ার পর মহামান্য পপ-সহ অন্যান্যদের নমস্কার বিনিময় করে মমতা বান্দ্যোপাধ্যায় ফিরে আসেন আমাদের কাছে। প্রখর রৌদ্রতাপ। অভাবনীয় উষ্ণতা। এর মাঝে কিছু বিদেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। জনৈক প্রৌঢ়া, তার নাম ছিল ন্যান্সি, একটি হুইল চেয়ার বসিয়ে তাঁর স্বামী তাঁকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। মূল প্রবেশদ্বারের বাইরে তাঁর নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। গলায় কাশি আটকে গিয়ে প্রায় দমবন্ধ হওয়ার উপক্রম। অসহায় অবস্থায় বৃদ্ধ ভদ্রলোক স্ত্রীর গলায় হাত দিয়ে তাঁকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী ত९ক্ষণা९ ঝাঁপিয়ে পড়লেন। সহযোগিতা করলেন। জলের ছিটে দিলেন মুখে। সেই ভদ্রলোকের সঙ্গে থাকা ওষুধ বের করে তাঁকে খাওয়াতে বললেন এবং তাঁকে অবিলম্বে অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে হাসপাতালের পাঠানোর ব্যবস্থা নিজে দাঁড়িয়ে করলেন। এর মধ্যে মনে হচ্ছিল যে রোম যেন কলকাতা হয়ে গিয়েছে।

সেখান থেকে আমরা ফিরে এলাম। সকলে নিদারুন খুশি। মুখ্যমন্ত্রী এর মধ্যেই কলকাতায় খোঁজ নিলেন মাদার হাউসে। অত্যন্ত সুন্দরভাবে কর্মসূচি পালিত হয়েছে এবং সমাধিক্ষেত্রে ১০৪টি গোলাপ ফুলের পুস্পস্তবক তাঁর তরফ থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রোমে বসে থাকলেও বাংলার দিকে তাঁর মন সবসময় পড়ে ছিল। ইতিমধ্যে তিনি একটি ভালো সংবাদ পেয়েছেন। তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস, সর্বভারতীয় ভিত্তিতে সর্বভারতীয় সীকৃতি পেয়েছে। নির্বাচন কমিশনের তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই কথা বলা হয়েছে। কথা প্রসঙ্গে বললেন, ১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারি এই নির্বাচন কমিশনের কাছে কাগজ জমা দিতে গিয়েছিলাম। কতকিছু পদক্ষেপ অতিক্রম করে আজ দল সর্বভারতীয় দলে উন্নীত হয়েছে। টুইট করলেন, উচ্ছাস প্রকাশ করলেন। চোখের মধ্যে এক নিদারুন তৃপ্তি লক্ষ করলাম। মনে হল এমনভাবে অসম্ভবকে একক শক্তিতে কেউ সম্ভব করতে পারে যা বোধহয় কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পক্ষে স্বপ্নেও ভেবে ওঠা মুশকিল।

পরের দিক সকলেই বায়না ধরলেন, দিদি রোমে শহরটা একবার দেখতে যেতে হবে। দু’ঘন্টার ছোট পরিক্রমা। ইতিহাস বিজড়িত রোমে শহর। নেপোলিয়ান বোনাপার্ট থেকে শুরু করে যে বাড়ি থেকে মুসোলিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা ঘোষণা করেছিলেন। বিভিন্ন যুদ্ধে শহিদদের যে স্থান তাঁরা রক্ষা করছেন ‘ওয়াটারহাউস’ নাম দিয়ে। সে সব পরিভ্রমণ করলেন, ঘুরলেন, দেখলেন। খুব পছন্দ হল শহরে কোনও ‘হাইরাইজ’ বিল্ডিং দেখলেন না। তা নির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে, উচ্চতার মধ্যে। খুব শৃঙ্খলাপরায়ণভাবে শহরের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ। সব দেখে মন্তব্য করলেন, আমাদের দেশেও এমনটা হতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশের জনসংখ্যা এই পরিবেশ কখনও গড়ে উঠতে দেবে না। একটা পুরো দেশ ইতালিতে যে পরিমান জনসংখ্যা, একটা রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা তার থেকে বেশি। ভারতবর্ষের কথা তো বাদই দিলাম। রোমে সফর চার্চের অসাধারণ শিল্পের প্রতিফলন। লিওনার্দো দা ভিঞ্চির অতীতের উপস্থিতি এই রোম শহরের সঙ্গে কিভাবে জড়িয়ে রয়েছে তা প্রতি পদে পদে পরখ করে দেখা যায়।

পরের দিন, আমাদের পৌঁছতে হবে জার্মানি। মিউনিখ শহরে। আমাদের রোম থেকে চলে যাওয়া কথা ছিল অন্যত্র। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কথায় সেই কর্মসূচি বাতিল করতে হল। সেই সফরসূচিতে জার্মান এয়ারলাইন্সের বিমান লুফতহানসায় করে এসে পৌঁছলাম মিউনিখ। সন্ধ্যাবেলা। সেখানে দেখলাম বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত আছেন অর্থমন্ত্রী ডঃ অমিত মিত্র এবং মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেখান থেকে প্রায় একশো কিলোমিটার দূরে আমাদের জন্য নির্ধারিত স্থানে আমরা যখন পৌঁছলাম তখন রাত দশটা।

পরের দিন সকাল আটটাতেই অর্থা९ ছ’তারিখ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ডঃ অমিত মিত্রর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল জার্মানির বিশ্ববিখ্যাত গাড়ির প্রধান কার্যালয় বিএমডব্লিউ-তে। ন’টায় নির্ধারিত একটি বৈঠকের কর্মসূচির খবর পান। সেখানে ডঃ মিত্রের সঙ্গে মুখ্যসচিব, অর্থসচিব, বন্ধন ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান এবং আমি। আমরা উপস্থিত হলাম। বিএমডব্লিউর সিইও-সহ ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দু’ঘন্টা ব্যাপী বৈঠক। আমি নিজে যেটুকু বুঝলাম যে, বিএমডব্লিউ কর্তৃপক্ষের কাছে এখনও যে ভারতবর্ষের কতগুলি স্থান সম্পর্কে সম্যক ধারণা আছে সেগুলি হচ্ছে তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, গুরগাওঁ। কথা প্রসঙ্গে ওঁরা এটা জানালেন যে কলকাতাকে আমরা আমাদের মানচিত্রের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে চাই। মানচিত্রের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে যে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে সেটা চলতে থাকবে। ইতিমধ্যে সর্বাধিক আলোড়ন সৃষ্টিকারী আদালতের যে রায় আমাদের টাটার ন্যানোকে নিয়ে ঘোষিত হয়েছিল সেকথাটিও বিএমডব্লিউ কর্তৃপক্ষকে আমাদের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল। এই ভেবেই জানিয়ে দেওয়া হল, যে তাঁদের মনের মধ্যে যাতে এই ধারণা কখন না হয় সেখানে শিল্পের পরিবেশ আঘাত খেয়েছে অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রি করার জন্য। দেশের সর্বোচ্চ আদালত যেভাবে শিল্পোদ্যোগীদের নির্দেশ দিয়েছে সেই কোথায় এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শুরু থেকে বলে এসেছিলেন। কথা প্রসঙ্গে এটা উদ্ধার হল যখন আমরা তাদের বিশাল অট্টালিকার উপর থেকে বিএমডব্লিউর ফ্যাক্টরি দেখছি শুনলে আশ্চর্য হতে হয় তাঁদের ফাক্টরিটি তৈরি ১৫০ একরে। কিন্তু টাটা মোটরস এখানে এক হাজার একর জমি নিয়েছিল। বিরোধী দলে থাকাকালীন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ছ’শো একর পর্যন্ত করুন। সেই বিষয়টি তাঁরা অধীর মনোযোগ দিয়ে শুনলেন। কলকাতা শহরের পার্শবর্তী এলাকার যে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিমান থেকে কলকাতা শহর আসা-যাওয়ার যে ব্যবস্থা, কলকাতা সংলগ্ন বিভিন্ন প্রান্তে রাজ্য সরকারের হাতে যে এক লক্ষ দশ হাজার একরেরও বেশি জমির যে ল্যান্ড ব্যাঙ্ক আছে। যেখান থেকে ইচ্ছা করলেই জমি নিয়ে কাজ করা যায়। সব তাঁরা অধীর আগ্রহে মনোযোগ দিয়ে শুনলেন এবং অদ্ভুতভাবে আগামী পাঁচ বছর পর দেশের পরিবহন ব্যবস্থা কোন দিকে মোড় নিতে পারে সে সম্পর্কেও তাঁরা তাদের একটি উদাহরণ দিচ্ছিলেন। আমরা দেখলাম প্রায় ন্যানোর থেকে একটু ছোট গাড়ি বিএমডব্লিউ বের করেছে। জার্মানির রাস্তায় চলছে। পিছনে দুই, সামনে এক ছোট্ট একটা গাড়ির পিছনের ছাপটা বিএমডব্লিউর। দামটা সতেরো লক্ষ টাকা। কিন্তু মানুষ গাড়িটাকে গ্রহণ করেছে। মোটরবাইক তৈরী করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রোম থেকে জার্মানির উদ্দেশ্যে বিমানবন্দরে আসছিলেন তখন তাঁর সামনে যে ‘পেট্ৰোল’ গাড়ি দেয়া হয়েছিল, তা ছিল দুটি মোটরবাইক। তা ছিল বিএমডব্লিউর। মুগ্ধ বিস্ময়ে মুখ্যমন্ত্রী তখনই বলছিলেন, কলকাতা শহরে ট্রাফিক পেট্রোলে মানে ভিআইপি পেট্রোলের জন্য যে গাড়িগুলি চলাচল করে সেগুলিকে বদলে দেওয়া হবে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে এবং সেই গাড়ি চালকদের প্রতি অন্যান্য গাড়ি চালকদের যে সম্মান প্রদর্শন, যেভাবে তারা গাড়ি রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, না দেখলে ভাবা যায় না। অন্য গাড়িতে তো চারজন করে বসতে হয়। এতে একজন করে লোক দু’টো করে গাড়ি নিয়ে চলে যাচ্ছে। সেই গাড়ি দেখলাম। অমিত মিত্রর সঙ্গে যখন আমরা তাঁদের শোরুম ভিজিট করতে গেলাম অফিসের নিচেই সেই বাইকের উপর তাকে চড়িয়ে বসালাম। একেবারে নতুনভাবে বেরিয়ে এসেছে যে বিএমডব্লিউতে অমিত মিত্র, আমি দুজনে বসলাম। ফটোগ্রাফার ও আমাদের সাংবাদিক বন্ধুদের ছবি তোলার সুযোগ দিতে। সাংবাদিক বন্ধুরা চতুর্দিকে ঘুরেফিরে পুঙ্খানুপুঙ্খ দেখলেন। ফিরে আসলাম এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা নিয়ে। জানতে পারলাম বিএমডব্লিউ ও মার্সিডিজ বেঞ্জের মধ্যে সারা বিশ্বজুড়ে এখন প্রচুর প্রতিযোগিতা। কিন্তু অটোমোবাইল শিল্পে জার্মানির অগ্রগতির কথা সারা পৃথিবীর মানুষ জানে। মুখ্যমন্ত্রীকে এসে জানালাম। হঠা९ করে অধিক উচ্ছাস প্রকাশ করা, কোনও কিছু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ার আগেই প্রতিক্রিয়া বা মন্তব্য দেওয়া এসব থেকে তিনি এখন অনেক দূরে আছেন। আমি এখনও মনে করি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই বিশ্বাসই করছেন যে তিনি চেষ্টা করে যাবেন। তাঁর চেষ্টার কোনও ত্রুটি থাকবে না। শিল্পায়নের ক্ষেত্রে আরও সদর্থক উদ্যোগ, আরও সুচিন্তিত ভাবনার প্রতিফলন এবং বাস্তবের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য সম্ভব এমন পরিকল্পনা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত মেপে পা ফেলবেন।

ওই দিনে বিকেলে তিনি ভারতবর্ষ থেকে যাওয়া বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠক করলেন। সেখানে মুকেশ আম্বানির প্রতিনিধিও ছিলেন, রতন টাটার প্রতিনিধিও ছিলেন। দেশের আরও বড় বড় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ছিলেন। পরের দিন যে চূড়ান্ত বৈঠক মিউনিখ শহরে হবে সেখানকার বিস্তৃত কর্মসূচি নিয়ে সেখানে আলাপ আলোচনা হল। পরের দিন সেখানে পৌঁছে যাওয়া হল।

সাত তারিখ সকাল। আমাদের সেখানে পৌঁছে জার্মানির ক্যাবিনেট মন্ত্রী বৈঠকে যোগ দিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করলেন। পরবর্তীকালে বৈঠক চলার সময় পাঁচজন জার্মানির কনসার্নের প্রতিনিধি, পাঁচজন বিভিন্ন শিল্পোদ্যোগী ও আমাদের ভারতীয়দের পক্ষে পাঁচজন। মোট দশজন সেখানে বক্তব্য রাখলেন। মুখ্যমন্ত্রী পরবর্তীকালে তাঁর সাবলীল ভঙ্গিতে যে বক্তব্য রাখলেন তা এক কথায় অত্যন্ত প্রাণস্পর্শী। টাটার প্রতিনিধি যখন এসে বললেন সরকারের কাছ থেকে টাটা স্টিল প্রচুররকম সহযোগিতা পেয়ে থাকে। মুকেশ আম্বানির প্রতিনিধি যখন বললেন আগামী দিন পশ্চিবমবাংলাই হচ্ছে মূল লক্ষ পথ। এটাই আমাদের চেয়ারম্যান বিশ্বাস করেন। তখন আমরা গর্ব অনুভব করছি।এবং জার্মানিতেও বহু সংখ্যায় ভারতীয় কীভাবে শিল্পের সঙ্গে, কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছেন তা সেখানে গিয়ে একবার নজর কাড়ল। আমার মনে হয় বাংলা থেকে যে বক্তারা সেখানে বক্তব্য রাখলেন যে উত্সাহ, যে উদ্যোগ নিয়ে তাঁরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিলেন তাতে দেশ স্বাধীনতার পর নিজের রাজ্যের শিল্পায়নের ক্ষেত্রে এমনভাবে বাংলাকে তুলে ধরতে কখনও দেখা যায়নি। একসুরে, একটাই কথা, ‘বাংলায় বিনিয়োগ করুন, বাংলায় আসুন’। সকলের একটি নিদারুণ সহযোগিতায় একটি সফল সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, যে বাংলা আগামী দিনের সদর্থক পদক্ষেপে শিল্পায়নের দিকে এগোবে এবং ছোট মাঝারি শিল্পের সঙ্গে বড় শিল্পের স্থাপনের দিকেও তাদের নজর থাকবে। চেষ্টার কোনো ত্রুটি থাকবে না এবং জার্মানিকে তাদের মন্ত্রীর মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানালেন যে জানুয়ারি মাসে যে বিশ্ববঙ্গ সম্মেলন আবার কলকাতায় অনুষ্ঠিত হবে তাতে যেন জার্মানির ভালো সংখ্যায় প্রতিনিধিরা যেন উপস্থিত থাকেন। বিএমডাব্লিউয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওই সম্মেলন সম্পন্ন হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করলেন। আমার যা মনে হয়েছে যতটুকু ঘটছে তাতে আপাতত সেটুকুর মধ্যে গোটা বিষয়টি সীমাবদ্ধ থাকা বাঞ্চনীয়। অতিরিক্ত আশার ফুলঝুরি দেখিয়ে পরবর্তীকালে কোনও পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হল না সেই পদ্ধতিতে যাওয়া কখনওই ঠিক নয়। অতিরিক্ত উচ্ছাস প্রদর্শন করে বাস্তবের সঙ্গে তার সাযুজ্য বা মিল রইল না এমন রাস্তাতেও হাঁটা ঠিক নয়। আর সে কারণেই মুখ্যমন্ত্রী কোন ঘটনাকে একটা অতিরিক্ত উচ্চতায় তুলতে চাইলেন না বলে তিনি একটা অসাধারণ মনোভাব নিলেন। যাতে প্রমাণিত হল তিনি তাঁর সমস্ত ইচ্ছাশক্তি দিয়ে বাংলার শিল্পায়ন চান। কিন্তু তার জন্য কোনও এমন উচ্চতায় বিনা কারণে তুলতে চান না যা পরবর্তী কালে সমালোচকদের মুখ খুলতে সহায়তা করে।

ফিরে আসার পালা। এর মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী সর্বোচ্চ পদযাত্রা একদিকে ১৬ কিলোমিটার। আসার আগের দিন আট তারিখ। এই একটি বিষয়ে তাঁর এক সহযোগীকে রোজ দেখতে পাওয়া যেত না। পালা পরিবর্তন করে হাঁটতে হত। কিন্তু তিনি থাকেন প্রতিদিনই একই রকম। তিনি চলেন, বিভিন্নভাবে মানুষ তাঁর পাশে আসেন। হাঁটতেই থাকেন। তিনি চলতেই থাকেন। জীবনের আরও একটি নাম তো চলা। আর সেই সেই চলার পথে তিনি কখনও খামতি দিতে চান না। এই কয়েকদিনের সফরে থেকে দেখলাম তাঁর মানবিকতার দিক। সকলকে নিয়ে একটি পরিবারের মতো থাকার দিক। বিশ্ব বাংলা যে একটা শুধু স্লোগান নয়, বিশ্ব বাংলা যে একটা উপলব্ধি, বোধ। বিশ্ব বাংলা রোম এবং জার্মানির মতো দু’টি স্থানে তার উপস্থিতি প্রমাণ করে সার্থকভাবে ফিরে এল এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে আরও ব্যাপকভাবে চালু থাকবে। আর সে কারণেই আগামী নভেম্বরে আবার ভারত-মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুর সকলে মিলে আরও বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনে বাংলার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্ব দেবেন। যা সম্পন্ন হতে চলেছে নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে। বিমানে ফেরা। মিউনিখ-দুবাই-কলকাতা। সেখানেও পায়ে হাঁটা। সকলকে তাঁদের দায়িত্ব সম্বন্ধে সচেতন করে দেওয়া। ফেরার সময় এমিরেটস বিমান কর্তৃপক্ষের অন্যতম কর্ণধার স্বয়ং এসে মুখ্যমন্ত্রীকে এবং সদলবলে তাঁর সমস্ত টিমের সহযাত্রীদের একসঙ্গে করে নিয়ে গেলেন। বিমানবন্দরে দুবাইয়ের মতো অনেক কড়াকড়ির ব্যবস্থা। যেখানে এই সম্মান তাঁরা সুষমা স্বরাজকেও দেননি বলে আমরা জানলাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তা দিলেন। বিমানের মধ্যে বিমান সেবিকাদের ছবি তোলার নিদারুণ আগ্রহ। মিউনিখ বিমানবন্দরেও ভারতীয়দের মধ্যে এমন এক প্রচলিত মুখ যা সত্যিই আমাদের গর্বের এবং অহংকারের।

 

Like Mahatma Gandhi, Mother Teresa – now Saint Teresa – was deeply religious and yet beyond religion: Derek O’Brien

Of the hundreds of Catholic orders across the world, only one has an office in the Vatican itself: the Missionaries of Charity, founded by Mother Teresa in Kolkata. Of the thousands of saints recognised by the Catholic church, a formal induction ceremony, as part of the canonisation process, has been reserved for only about 800. On September 4 Mother Teresa joined them. She will became the 10th St Teresa, St Teresa of Calcutta/Kolkata, and like the others distinguished by the city she is most identified with.

This background is important to understand why the canonisation of Mother Teresa is a special event even within the narrow space of the Catholic church’s conferring of sainthood on its most revered. Some have been so honoured centuries after death. Joan of Arc was murdered in the early 15th century and canonised in the early 20th century.
Mother Teresa is being canonised merely 20 years after her passing. She is recognised as special, both within the Catholic church and outside. She is recognised as somebody who always introduced herself as an Indian, and yet rose above national boundaries to become a global icon.

This is reflected in how her canonization became a truly a truly event. From Bengal we were lead by our Didi. There were other delegations too from across the world (including one lead by the External Affairs Minister and another by the Chief Minister of Delhi ) but it must be said the warmth and love showered on Mamata Di by the Missionaries of Charity was very, very special. In an unprecedented gesture, Sr Prema walked down 150 meters from the main altar, took Didi gently by the hand and walked up the aisle as pilgrims applauded spontaneously. What a moment! Throughout the two and a half hour service, the Chief Minister of Bengal was seated between Sr Prema, the successor to Mother Teresa and another senior sister from the Missionaries of Charity.

Mamata Banerjee first met Mother Teresa in the early 1990s in the context of disquieting religious violence in Kolkata. A few months ago – shortly after the assembly election results in Bengal – Sister Prema, worldwide head of the Missionaries of Charity, visited the chief minister and invited her to the ceremony. The offer was gratefully accepted. I was fortunate enough to be asked to accompany Mamata Banerjee. In my 13 years with Trinamool, it was one of the most emotional journeys I have made with Didi.

Others made the journey to the Vatican as well. Some 150 pilgrims from Kolkata, and 15 inmates (i prefer the word “residents”) of the homes for the poor that the Missionaries of Charity run in the city, and several others touched by Mother’s life and by the 5,000 nuns and brothers of her order, across 130 countries, either came to Rome or watched on television.

Not all of them are Catholic or even Christian. Like Gandhi, Mother Teresa was deeply religious – and yet beyond religion. When she picked up the sick and the indigent, literally off the street, cleaned and tended to them with her own hands and took them “home”, she didn’t stop to first ask for the religious identity of the person. “Yes, I convert,” Mother once said, “I convert Hindus to become good Hindus, I convert Muslims to become good Muslims, I convert Christians to become good Christians.” While remaining true to the tenets of her faith, she was enlightened enough to appreciate the pluralism of our society.

My association with Mother Teresa began in the early 1970s, in class VIII. Father Bouche, a Belgian priest who taught us in school, encouraged us boys to make paper packets (thongas, as we call them in Kolkata) for use at Shishu Bhawan, the children’s home the Missionaries of Charity ran.

Those of us not adept at making packets (like me) were asked to collect newspapers at home and from neighbours. The experience left an impression on us; we felt we were being useful. In college and as a working person, i volunteered at Shishu Bhawan and was lucky to meet Mother often. Those are fulfilling memories i still cherish.
We can all disagree with some aspect or the other of Mother’s life. She would not be happy with my views on abortion or divorce. The criticism that the Missionaries of Charity did not consider psychological issues of the sick and the infirm or provide for palliative care – a specialised area now – for the terminally ill has been addressed only in recent years.

Nevertheless, when we assess her life, the good she did far, far outweighs the minor quibbles. Let’s not get engrossed in those quibbles. Let’s celebrate our Mother and her moment.