সাম্প্রতিক খবর

অক্টোবর ২৪, ২০১৯

পাহাড়ের উন্নয়নে অটল মুখ্যমন্ত্রী

পাহাড়ের উন্নয়নে অটল মুখ্যমন্ত্রী

উত্তরবঙ্গ সফরের তৃতীয় দিনে প্রশাসনিক কাজের পর্যালোচনার মাধ্যমে উন্নয়নমুখী কর্মসূচীকে ত্বরান্বিত করতে কার্শিয়াঙে আয়োজিত দার্জিলিং এবং কালিম্পঙের প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কুইন অফ দ্য হিলস দার্জিলিংয়ের জন্য পাহাড়প্রমাণ উন্নয়নের সংকল্পে এতটুকু চিড় ধরেনি মুখ্যমন্ত্রীর। লোকসভা ভোটের পর প্রথম বার পাহাড় সফরে এসেই পর্যটন, সৌন্দর্যায়ন, বাণিজ্য, জন-পরিষেবা এবং পরিকাঠামোর হালহকিকত নিয়ে চুলচেরা পর্যালোচনা করলেন তিনি।

কোথাও উন্নয়ন বা পরিষেবার কাজে ‘ঢিলেমি’ দেখলেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের জুটল ভর্ৎসনা। জনপ্রতিনিধি, আমলা, বোর্ড-প্রধান, সকলকে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তিন মাস পর তিনি ফের দার্জিলিং পাহাড়ে এসে বকেয়া কাজের হিসেব নেবেন। জানুয়ারি মাসের সেই ডেডলাইনের কথা মাথায় রেখে এখন থেকেই ঝাঁপাচ্ছেন আমলা-আধিকারিকরা। টয় ট্রেনের শহরকে সুন্দর এবং সমৃদ্ধ দেখতে মুখিয়ে আছেন মুখ্যমন্ত্রীও।

বুধবারের মেঘলা সকালে কার্শিয়াং সার্কিট হাউস থেকে হাঁটতে বেরিয়ে বারো কিলোমিটার যাতায়াতের পথে স্থানীয়দের খোঁজখবর নিয়েছেন। মহানদী রেলস্টেশনের কাছে রেলের এক আধিকারিকের সঙ্গে দেখা হয়ে যেতেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে পরামর্শ দিয়েছেন কী করে ওই এলাকাটা আরও ভালো করে সাজানো যায়। তার পর দুপুরে কমিউনিটি হলের প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে আমলাদের দিকে ছুড়ে দিয়েছেন একের পর এক প্রশ্ন। এটা হয়নি কেন, ওটা হয়নি কেন? বহু দিনের পড়ে থাকা কাজে কেউ ছ’মাস সময় চেয়ে নিলে তাঁকে বলেছেন, ‘আমার তিন মাসে চাই।’

মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিরতা চাই।

আক্রোশের আগুনে উন্নয়নকে পু়ড়িয়ে দিলে ক্ষতিটা দার্জিলিংয়েরই। কার্শিয়াংয়ের প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘সব কুছ হোগা দার্জিলিং মে, লেকিন বার বার আগ জ্বালানে সে কুছ নহি হোগা।’ মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, ‘আপনারা আমাকে পছন্দ করেন না বলে না-হয় অন্য দলকে ভোট দিলেন, কিন্তু দয়া করে পাহাড়ে উন্নয়নের কাজটা হতে দিন। আপনাদের বার বার বুঝিয়েছিলাম। কিন্তু আমার কথা শুনলেন না। ভোট এলেই সেই একই স্লোগানে ফিরে যান।’

মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ, ভূমিপুত্র অমর সিং রাইয়ের মতো ‘সুযোগ্য’ প্রার্থী সত্ত্বেও বহিরাগত প্রার্থী লোকসভায় জিতেছেন। তবে প্রশাসনিক বৈঠকে সরাসরি সাংসদ রাজু বিস্তের নাম করেননি। মমতা বলেছেন, ‘ওরা বাইরে থেকে এসে টাকা ছড়ায়, আমি টাকা ছড়াতে পারব না।’

পাহাড়বাসীকে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘আপনারা ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকি। আমি এখানে জমি জায়গা নিতে আসব না। এনআরসির নামে আগুন জ্বালাতেও আসব না। গোর্খা-বাঙালি-হিন্দিভাষী সবাই নাগরিক।’ মুখ্যমন্ত্রীর এখন একটাই আবেদন, পাহাড়ের মানুষ শান্তিতে থাক–এটাই অগ্রাধিকার। এ দিন বৈঠক শেষ করার আগে তিনি বলেছেন, ‘দার্জিলিং আগে থিতু হোক। শান্তি বজায় থাক। শান্তি থাকলেই উন্নয়ন হবে।’