সাম্প্রতিক খবর

জুন ১৮, ২০১৯

সমালোচনা শুনুন এবং কাজে মন দিন- পুর প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

সমালোচনা শুনুন এবং কাজে মন দিন- পুর প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ নজরুল মঞ্চে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বিভিন্ন পুর প্রতিনিধি এবং তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পুরসভার চেয়ারপার্সনদের সামনে বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন যে সবাইকে আরও ভালোভাবে নিজেদের কাজটা করতে হবে এবং জনগণের সেবা ঠিক ভাবে করতে হবে। তিনি বলেন যে এটা করলেই তারা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।

যে সব পৌরসভা কাজের নিরিখে পিছিয়ে আছে, তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন যে আরও ভালোভাবে কাজ করতে হবে।

তাঁর বক্তব্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার মনে করিয়ে দেন যে এবারের ভোটে অনেক প্রতারণা হয়েছে এবং পরবর্তীকালে দলে স্লোগান হবে ‘মেশিন নয়, ব্যালট চাই’।

তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশ

মানুষ যদি আপনাদের সমালোচনা করে-করুক। তাদের কথা শুনে নিজের কাজ ঠিক করে করবেন, ভালো কাজ করলে ওই মানুষটিই আপনার গুণ গাইবে।

রাজ্যে অনেক পৌরসভা ভালো কাজ করছে, পরিবেশ পরিষ্কার রাখছে, কিন্তু সব পৌরসভা তা করছে না।
এবারের ভোটে প্রায় ৩০% ইভিএম মেশিন খারাপ হয়ে গেছিল, আর ওই মেশিন যে আগে থেকে প্রোগ্রাম করা ছিল না তার গ্যারান্টি কে দেবে?

তাই আমাদের নতুন স্লোগান হবে- ‘মেশিন নয়, ব্যালট চাই’।

এখন একটা দেখা যাচ্ছে যে কেউ কখনও কোন বেআইনি কাজ করলেই দল বদল করছে, কিন্তু আমি সবাইকে সাবধান করে দিচ্ছি যে কোনও বেআইনি কাজ করলে শাস্তি হবেই।

আমার কাছে খবর আছে যে অনেকে সরকারী জমি নিজের নামে বা আত্মীয়দের নামে লিখে নিয়েছে। এরকম যারা করেছে তাদের ধরা হবে এবং সমস্ত কেসের তদন্ত করা হবে।

আজ পলক ফেলতে না ফেলতেই লোকে দল বদল করছে, কিন্তু মনে রাখবেন রাজনীতি করা মানে মানুষের সেবা করা, যেটা আমি সবসময় করে এসেছি।

কেউ ভালো কাজ করলে ভোটে হারে না। তাই নিশ্চিত করুন যে প্রত্যেকটা পৌরসভায় ঠিক কাজ হচ্ছে।
সমস্ত পৌরসভার ভোট একসঙ্গে হবে।

ডেঙ্গু-প্রবণ এলাকা যেমন উত্তর চব্বিশ পরগণার নানা পৌরসভা-র প্রতিনিধিরা এখন থেকেই যেন ব্যবস্থা নেয়।

আপনারা যদি তৃণমূল কংগ্রেসে থাকতে চান তাহলে মনে রাখবেন যে দু-চারটে প্রতিনিধি দল বদলালে কোনও প্রভাব পড়ে না।

কিন্তু একবার যারা দল ছেড়ে চলে গেছে তাদের আর ফেরৎ নেওয়া হবে না। কিছু ক্ষেত্রে হয়ত ভুল বোঝাবুঝির জন্য গিয়ে থাকলে পুনর্বিবেচনা করে দেখা হতে পারে।

আজ যদি ১০০ জন দল ছেড়ে চলেযায়, আমি আগামী দিনে ৫০০ জন-কে দলের জন্যে তৈরি করব।

কিছু ক্ষেত্রে দলের নেতাদের কিছু দোষ আছে যা আমি মেনে নিচ্ছি।

সরকারী সাহায্য দেবার পরিবর্তে টাকা নিলে দল তা সহ্য করবে না। যে যতই গরীব হোক সরকারী সাহায্যে নিজের বাড়ি সে করতেই পারে।

পৌরসভা এবং পঞ্চায়েত রাজ্য সরকারে অঙ্গ, তারা সরাসরি কেন্দ্রের থেকে অর্থসাহায্য চাইতে পারে না।

আপনারা কেন নিজেদের এলাকায় বিজেপি, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো এবং ধর্মীয় সংগঠনগুলো কত টাকা ছড়াচ্ছে তার খোজ রাখেননি?

এত কিছু সত্ত্বেও আমাদের ৪% ভোট বেড়েছে।

এখন থেকে ভোটের টিকিট অনেক ভেবে দেব; শুধু যারা কাজ করবে তারা টিকিট পাবে।

এবার ভোটের আগে লিস্ট থেকে অনেকের নাম বাদ পড়েছে, আমার অনেক চেনা-জানারাও সেকথা বলেছেন।

আমাদের দেখতে হবে যে বৈধ ভোটারদের নাম যাতে বাদ না পড়ে।

যারা সরকারি সাহায্য পাচ্ছে না, তারা যেন পায় সেটা দেখতে হবে।

যারা সরকারী সাহায্য পাইয়ে দেওয়ার জন্যে টাকা নিচ্ছেন, তারা নিজেদের শুধরে নিন।

যে সব পৌরসভা ভালো কাজ করবে আমি তাদের বেশি করে টাকা দেব।

এই বছর ‘বাংলার বাড়ী’ প্রকল্পে ৮ লাখ নতুন বাড়ী তৈরি করা হবে।

আমি সবাইকে বলব যে নিজেদের এলাকা সাজিয়ে গুছিয়ে রাখুন, গাছ লাগান, বাগান তৈরি করুন।

পুরুলিয়ার চেয়ারমানকে বলব যে একটা হকার্স মার্কেট তৈরি করে দিতে।

সমস্ত পুর প্রতিনিধিরা যেন জনসংযোগ বাড়ায়- ওটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

মনে রাখবেন আমরা বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বিকৃত হতে দেব না।

আমাই আবার বলছি যে এবারের নির্বাচনে প্রতারণা হয়েছে।

আমি সকলকে বলব এবার থেকে ‘জয় হিন্দ’, ‘জয় বাংলা’ ‘জয়ো হে’ –এই স্লোগানগুলো ব্যবহার করতে।

ভয় পাবেন না- আগামিদিনে আবার আপনারা জিতবেন- আমরা আমাদের দলকে বিকিয়ে যেতে দেব না।