জুন ১৪, ২০১৯
স্বাস্থ্য পরিষেবা সবসময় রোগীদের জন্য নিবেদিতঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

গত কয়েকদিন ধরে সরকারি হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতি শুরু করেছেন। এর ফলে সমস্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা বন্ধ। এর ফলে দুরদুরান্ত থেকে আসা রোগীরাও যেমন চিকিৎসা পাচ্ছেন না, তেমনই চিকিৎসা পাচ্ছেন না হাসপাতালগুলিতে ভর্তি রোগীরাও। এর ফলে কয়েকজন রোগী প্রাণও হারিয়েছেন। অনেকে আপৎকালীন পরিষেবা না পেয়েও প্রাণ হারিয়েছেন। এই অচলাবস্থা ঠিক করতে মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী ও কলকাতার পুলিশ কমিশনার ও স্বাস্থ্য দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিবকে এর আগেই পাঠিয়েছিলেন আহত চিকিৎসকের চিকিৎসার জন্য সমস্ত তদারক করতে ও জুনিয়র ডাক্তারদের অনুরোধ করে পরিষেবা শুরু করতে। আজ তিনি নিজে যান এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে তিনি সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এবং সেখানে দুরদুরান্ত থেকে এসে স্বাস্থ্য পরিষেবা না পাওয়া রোগী ও তাদের পরিবারের হাহাকার দেখে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান তুলে নেওয়ার অনুরোধের পাশাপাশি একটি ফেসবুক পোস্ট করেন।
ওনার ফেসবুক পোস্ট:
তিনদিন আগে নীল রতন সরকার হাসপাতালে একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে। আমি আমার সহকর্মী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে পাঠিয়েছিলাম আহত ডাক্তারকে দেখতে এবং কর্মবিরতিরত কিছু জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলতে এবং তাদের অনুরোধ করতে এই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে রোগীদের পুনরায় চিকিৎসা দিতে। ভিন জেলা থেকে, প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা রোগীরাও এই কর্মবিরতির ফলে কোনও পরিষেবা পাচ্ছেন না।
কলকাতার পুলিশ কমিশনারকেও জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করতে। তিনদিন আগের সেই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের জামিনের আবেদনও আদালত খারিজ করেছে।
আমাদের সরকার ঐ আহত চিকিৎসকের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছে। আমরা প্রার্থনা করব উনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী উনি এখন ভালো আছেন ও তাড়াতাড়ি ওনার স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে।
সেদিন একজন মারা গেছিলেন এবং চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। এই বিষয়টি সবদিক দিয়ে খতিয়ে দেখার জন্য তদন্তও শুরু করা হয়েছে।
প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করেছি – স্বাস্থ্য দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব ঐ আহত ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করেন এবং অবস্থানরত ডাক্তারদের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাদের আবেদন করেন স্বাস্থ্য পরিষেবা পুনরায় চালু করার।
আমাদের সরকার সমস্ত রকম সহযোগিতা করছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিন্তু, সব কিছুর পরেও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি থেকে এদের উস্কানি দেওয়া হচ্ছে যেই প্ররোচনায় পা দেওয়া উচিৎ নয়।
আজ আমি এসএসকেএম হাসপাতালে যাই, সেখানে দেখি হাসপাতালের সাইলেন্স জোনে বিভিন্ন বহিরাগত রাজনৈতিক দল স্লোগান দিচ্ছে এবং আপৎকালীন পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। রোগীর আত্মীয়রা বাইরে হাহাকার করছে, আউটডোর বিভাগও বন্ধ রাখা হয়েছে।
আমি কয়েকজন রোগীকে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।
আমি সিনিয়র ডাক্তার ও প্রোফেসরদের কাছে কৃতজ্ঞ যারা এখনও মানুষের সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই সহযোগিতার জন্য আমি তাঁদের আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই।
সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু রাজনৈতিক দল এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু বিভ্রান্তিমূলক ও বিকৃত তথ্য ছড়াচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
আমি আজ এসএসকেএমে রোগীদের যে দুর্দশা দেখেছি, তার কিছু চিত্র তুলে ধরছি।
স্বাস্থ্য পরিষেবা সবসময় রোগীদের জন্য নিবেদিত।
তাই আমি সকলকে আবেদন করব আর দেরী না করে রোগীদের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবা স্বাভাবিক করতে।
জয় হিন্দ জয় বাংলা।