এপ্রিল ১২, ২০১৯
গত ৫ বছরে বিজেপি পাহাড়ের জন্য কি কাজ করেছেঃ কার্শিয়াঙে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ কার্শিয়াঙে একটি জনসভা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি জিজ্ঞেস করেন গত পাঁচ বছরে বিজেপি কি কাজ করেছে
ওনার বক্তব্যের কিছু অংশ:
আমরা চাই পাহাড়ের উন্নতি হোক। আমরা চাই সকল সম্প্রদায়ের মানুষ একসাথে মিলেমিশে পাহাড়ে থাকবে
আমাদের গোর্খা ভাই (অমর সিংহ রাই)পাহাড় আর সমতলের মধ্যে সেতুবন্ধন করবে
কিছু কিছু লোক রাজনৈতিক কারণে এখানে এসে আগুন জ্বালায়, আর এর ফলে পাহাড়ের উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়
যদি আরও মানুষ দার্জিলিঙে আসে তাহলে এখানকার পর্যটন, ও অর্থনীতির আরও অনেক উন্নতি হবে
বিমল গুরুং, রোশন গিরির মত মানুষ নিজেদের জন্য অর্থলাভ করে বাইরে গিয়ে ব্যবসা করে কিন্তু নিজের মাটির কথা ভাবে না, এখানকার মানুষদের কথা ভাবে না
দার্জিলিঙের সাংসদকে গত ৫ বছরে পাহাড়ে দেখা যায়নি, নির্বাচনে জেতার পর উনি পালিয়ে গেছেন, আর দিল্লি থেকে বড় বড় কথা বলেন
যদি দার্জিলিঙে শান্তি বজায় থাকে তাহলে এখানে যুব সম্প্রদায়ের জন্য অনেক সুযোগ রয়েছে
পাহাড়ে বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে রাজ্য সরকার পাহাড়ে একটি হিল বিজনেস সামিটের আয়োজন করা হয়েছিল
আমরা পাহাড়ে আইটি হাব গড়তে চাই
২০১৪ সালে আমরা কেন্দ্রকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেছিলাম ১১টি জনজাতিকে তপশিলি তালিকায় যুক্ত করতে। কিন্তু ওরা গত ৫ বছরে কোন পদক্ষেপ নেয়নি
আমরা কেন্দ্র সরকারের কাছে অনুরোধ করেছিলাম পাহাড়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্য, কিন্তু ওরা দেয়নি তাই রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এখানে হিল ইউনিভার্সিটি তৈরি করার
কার্শিয়াঙে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস তৈরী হচ্ছে। একটি এডুকেশন হাবও তৈরি করা হচ্ছে
দার্জিলিঙে অনেক মানুষ আসেন, আমরা চাই পাহাড়ে আরও মানুষ আসুক, এখানকার পর্যটনের আরও উন্নতি হোক। এখানে ভোরের আলো পর্যটন কেন্দ্র হচ্ছে
কালিম্পংকে আমরা নতুন জেলা ঘোষণা করেছি, এটা এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের ইচ্ছে ছিল
১৬০০ টি প্রকল্পের মধ্যে আমাদের রাজ্য সরকারের দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প ‘উৎকর্ষ বাংলা’ রাষ্ট্রসংঘের পুরস্কার পেয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা ৬ লক্ষ যুবককে প্রশিক্ষণ দিই
পাশাপাশি রাজ্য সরকারের ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পও রাষ্ট্রসংঘের পুরস্কার পেয়েছে
গোর্খা রেজিমেন্টের জন্য আমি গর্বিত। আমাদের সেনা-জওয়ানরা আমাদের গর্ব। মোদী বাবুর মত আমরা সেনার নাম করে ভোট চাই না। তাদের অসম্মান করা উচিত নয়
অমিত শাহ, মোদী এনারা আসবেন–যাবেন। কিন্তু আমাদের সেনারা আমাদের দেশের জন্য নিজেদের প্রাণ দেন
নির্বাচনী আচরণবিধি সরে যাওয়া পর, গোর্খা জনজাতির উন্নয়ন ও তাদের পরিচয়রক্ষার জন্য সমাধান খোঁজার জন্য আলোচনায় বসব
আমরা চা শ্রমিকদের পারিশ্রমিক বাড়িয়েছি। তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি
চা বাগানের শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়ার জন্য আমরা একটি এক্সপার্ট কমিটি গঠন করেছি
আমরা মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিই না। মোদী বাবু ১৫ লক্ষ টাকা সকলের ব্যাঙ্ক একাউন্টে ফিরিয়ে দেবেন বলেছিলেন কিন্তু ওনারা কথা দিয়ে কথা রাখেননি
ওনারা বলেছিলেন ৫ বছরে ১০ কোটি কর্মসংস্থান করবেন কিন্তু বাস্তবে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে মোদী বাবুর আমলে ২ কোটি মানুষ বেকার হয়েছেন
নোটবন্দি আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছ। জিএসটি চালু হওয়ায় সব ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত
১২০০০-এরও বেশি কৃষক আত্মহত্যা করেছে। ওরা বলেছে আগামী ২০২২ সালের মধ্যে ওরা কৃষকদের আয় দ্বিগুন করে দেবে। আর আমরা ইতিমধ্যেই কৃষকদের আয় ৩ গুন বাড়িয়েছি
গতকাল ওরা হেলিকপ্টারে করে কালিম্পঙে এসে বক্তৃতা দিয়ে চলে গেছে। আমি বারবার পাহাড়ে আসি সড়কপথে
আমরা চাই পাহাড়ে গোর্খা রেজিমেন্টকে সন্মান জানিয়ে একটি মেমরিয়াল করা হোক
বিজেপি বাংলায় এনআরসি আনতে চায়। আমরা সেটা হতে দেব না। অসমের নাগরিকপঞ্জী থেকে ওরা ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ দিয়ে দিয়েছে, যার মধ্যে বাঙালি বিহারি নেপালি সহ আরও অনেকে রয়েছে
আমরা নাগরিক বিল আনতে দেব না। এই বিল চালু হলে, আপনি ৬ বছরের জন্য বিদেশী হয়ে যাবেন। আপনার নাগরিক অধিকার হারাবেন
এই নির্বাচন ঠিক করবে কেন্দ্রে কে সরকার গঠন করবে। গত পাঁচ বছরে ওরা কি কাজ করেছে তার খতিয়ান দেওয়া উচিত।
কিছু নেতারা ফেসবুকের মাধ্যমে মানুষকে উস্কাচ্ছে। আমি গুরুংকে জিজ্ঞেস করতে চাই গত পাঁচ বছরে বিজেপি সাংসদ পাহাড়ে কি কাজ করেছে?
এই নির্বাচনে বিজেপি পাহাড়ের জন্য কি আর কোনো প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছিল না? মণিপুর থেকে কেন ওদের প্রার্থী নিয়ে আসতে হল?
আমি এখানে আপনাদের কাছে ভোট চাইতে আসিনি, আমি আপনাদের সকলের ভালোবাসা চাই
আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই আপনাদের উন্নয়নের জন্য সব রকম কাজ করব আমরা