সাম্প্রতিক খবর

এপ্রিল ২১, ২০১৯

আমরা সমস্ত প্রাদেশিক দল মিলে কেন্দ্রে সরকার গড়ব-গয়েশপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আমরা সমস্ত প্রাদেশিক দল মিলে কেন্দ্রে সরকার গড়ব-গয়েশপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ উত্তর ২৪ পরগনার গয়েশপুরে প্রথম নির্বাচনী সভা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ওনার বক্তব্যের কিছু অংশঃ

আজ শ্রীলঙ্কায় অনেক লোক মারা গেছেন, এটা খুব দুঃখজনক

সবাইকে নববর্ষ, শবে বরাত, গুড ফ্রাইডে ও ইস্টারের অভিনন্দন

এই এলাকায় গত সাড়ে ৭ বছরে যা উন্নয়ন হয়েছে তা মিরাকেল বলা যায়

এখানে অল ইন্ডিয়া মেডিকেল ইনস্টিটিউট তৈরি হচ্ছে, এবার আর মানুষকে চিকিৎসার জন্য আর দিল্লী যেতে হবে না, এছাড়াও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ক্লাস্টার, সেতু, ফায়ার স্টেশন, যুব আবাস, জল প্রকল্প, কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়, মসলিন তীর্থ, হাসপাতাল, আই টি আই, কলেজ, পলিটেকনিক কলেজ হয়েছে

এটা দিল্লীর নির্বাচন, বাংলার নয়। গতবার এই নির্বাচনে বিজেপি জিতেছিল, কিন্তু ৫ বছরে বাংলাকে ওরা অনেক লাঞ্ছনা,  বঞ্চনা করেছে আর এখন এসে মিথ্যে কথা বলছে

সারা বছর ওদের দেখা পাওয়া যায় না, আর নির্বাচনের সময় বসন্তের কোকিলের মত ভোট পাখি হয়ে উড়ে আসে, ওদের বাংলার সাথে কোন সম্পর্ক নেই, ওরা বাংলার সভ্যতা সংস্কৃতি জানে না, শুদু দাঙ্গা করে, বাংলাকে ভালোবাসে না

রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এখানে আমি অনেক নতুন রেল লাইন করে দিয়েছিলাম

বাংলার ৮ কোটি মানুষ ২ টাকা কিলো চাল পায়, ৬০ লক্ষ মেয়েকে কন্যাশ্রী স্কলারশিপ, তপশিলিরা শিক্ষাশ্রী স্কলারশিপ পাচ্ছে, স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ দেওয়া হচ্ছে, আদিবাসী, সংখ্যালঘুদের ও স্কলারশিপ দেওয়া হচ্ছে, সবুজ সাথী প্রকল্পে ১ কোটি ছেলেমেয়েকে বিনামূল্যে সাইকেল দেওয়া হয়েছে

মানুষ মারা গেলে তাঁর সৎকারের জন্য আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয় বৈতরিণী প্রকল্পে, শিশুর জন্মের পর সবুজ সাথী প্রকল্পে একটা করে গাছ দেওয়া হয়

স্বাস্থ্য সাথী কার্ড করে দেওয়া হচ্ছে, যার মাধ্যমে ৭ কোটি মানুষ উপকৃত হবেন। বাড়ির মহিলা অভিভাবকের নামে এই কার্ড হবে, এর মাধ্যমে ৫ লক্ষ টাকা প্রাইভেটে চিকিৎসা করাতে পারবেন

তাঁতশিল্পী, লোকশিল্পীদের জন্য অনেক কাজ হয়েছে, সামাজিক সুরক্ষা যোজনা শুরু হয়েছে, রূপশ্রী প্রকল্পে মেয়ের বিয়ের জন্য টাকা দেওয়া হয়

এখানে কল্যাণী ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউন হচ্ছে,বিমানবন্দর, হয়েছে

বাংলায় কৃষকদের জমির খাজনা ও মিউটেশন ফি মুকুব করে দেওয়া হয়েছে

কৃষকদের শস্য বীমার সব টাকা দেয় রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে আমরা ভিক্ষা নিই না

কৃষক বন্ধু প্রকল্পে কৃষকদের বছরে ২ বার ২৫০০ টাকা করে মোট ৫০০০ টাকা দেওয়া হয়

কোন কৃষক মারা গেলে তার পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার

আর নেই দরকার দিল্লির পচা সরকার, ৫ বছর শুধু ভাষণ দিয়েছে, দাঙ্গার ভাষণ আর মিথ্যে কথা, সাড়ে ৪ বছর বিদেশে ঘুরেছেন আর নিজের নামে প্রচার করে বেড়িয়েছেন

নোট বাতিলের কথা মানুষ ভুলে যায়নি, কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী সহ সকলে ক্ষতিগ্রস্ত – আজ তোমার ভোট বাতিল করবে বাংলার লোকেরা

২ কোটি লোক বেকার হয়েছে মোদী বাবুর আমলে . এখানকার লোক গুজরাটে গেছিলো কাজ করতে তাদেরকে খুন করা হয়েছে। নোটবন্দির সময় অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছেন তাদেরকে ওরা তাড়িয়ে দিলো, আমি নতুন প্রকল্প করে তাদের ৫০০০০ টাকা দিয়ে সাহায্য করেছি

বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে, বন্যায় ফসলের ক্ষতি হলে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়, আমরা কৃষকদের ১২০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছি, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘর বাড়ি ভেঙে গেলে তাও তৈরি করে দেওয়া হয়

আমি মানুষের জন্য, আমি নিজে কেউ নই, আমার পরিবার একটাই মা মাটি মানুষের পরিবার, আমার গোত্র মা মাটি মানুষ কারণ আমার পুজো মা মাটি মানুষের জন্য

সাংসদ থাকাকালীন একটা টাকাও আমি নিই নি। পেনশনের টাকাও আমি নিই না, আপনাদের দয়ায় আমি এই চেয়ারে আছি, একটা মাইনের টাকাও আমি নিই না, আমি বই আর গান লিখে যে রয়ালটি পাই তাই দিয়ে আমার চলে

কেউ আমায় চোর বললে আমার কিছু যায় আসে না এসব আমাকে স্পর্শ করে না আমি এসবের উর্দ্ধে

বিজেপি দাঙ্গা করে ক্ষমতায় এসেছে। আমরা এতদিন এখানে আছি, বাংলায় কোন দাঙ্গা হয়েছে? সিপিএমের আমলে ওরা মানুষের হাত পা কেটে দিতো, মানুষ খুন করতো

আর এখন কতগুলো গদ্দার বিজেপির হয়ে বড় বড় কথা বলছে, কোন গদ্দার, বিশ্বাসঘাতকদের তৃণমূলে জায়গা নেই। যা চলে যাওয়ার চলে যাক, আমি নতুনদের গড়ে নেব। তৃণমূলের সবটা লুঠে নিয়ে এখন গদ্দারি করছে

এই গদ্দারগুলো মোদীকে গ্যাস খাওয়াচ্ছে আর উনি গ্যাস বেলুনের মত ফুলে ফেঁপে বলছেন বাংলায় ভোট পাবেন

ওনার চেয়ার টলমল করছে নড়বড় করছে, তাই আগে উনি দিল্লী সাম্লাক তারপর বাংলার কথা ভাববেন  

ইতিহাস বদলে দিচ্ছে, গান্ধীজি,নেতাজি, আম্বেদকরকে ভুলিয়ে দিয়েছে, ইনস্টিটিউশন বদলে দিয়েছে। আর এক নতুন ধর্ম আমদানি করেছে যার সাথে হিন্দু ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই

মোদী এসে বলছে বাংলায় দুর্গা পুজো হয় না, কত বড় মিথ্যে কথা বাংলায় লক্ষ লক্ষ ঘরে দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী পুজো হয়, মিথ্যে কথা বলার একটা লিমিট আছে

একটা দুর্গা পুজোতেও বাংলায় এসেছেন উনি? দুর্গা মা কে চেনেন?দুর্গা মায়ের হাতে অস্ত্র থাকে আপনাদের মত অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করতে

মায়ের হাতে অস্ত্র থাকতে পারে কিন্তু আপনার নেতাদের হাতে অস্ত্র কেন মোদী বাবু? গদা তরোয়াল নিয়ে সব বেরিয়ে পরছে

আমি সব পুজো করি, সব ধর্ম পালন করি। আর উনি আমাকে হিন্দু ধর্মের জ্ঞান দেবে? হিন্দু ধর্ম কয়েকশো বছর ধরে রয়েছে, তখন ওনাদের জন্মও হয়নি। ওনারা এখন ঠিক করে দেবে আমরা কি করব, কি পরব, কি খাবো, প্রত্যেক মানুষের নিজের স্বাধীনতা আছে

বিজেপি হল সর্বনাশের দল, সত্যনাশের দল আর শুধু মিথ্যে কথা বলে। টাকার ভান্ডার নিয়ে নেমেছে, বলছে টাকা নিয়ে ওদের ভোট দিতে। ওদের এখন টাকার অনেক অহংকার, মানুষ যখন খেতে পেত না তখন একটা টাকাও দেয়নি

আমরা গণতান্ত্রিক ভাবে ক্ষমতায় এসেছি, আমাদের নির্বাচিত করেছে মানুষ, আমাদের উপেক্ষা করে দিল্লি থেকে লোক পাঠিয়ে ঠিক করছে কি করে বিজেপিকে সাহায্য করা যায়, রোজ অফিসার বদলাচ্ছে, এটা গণতন্ত্রের অপমান, সাংবিধানিক কাঠামো নষ্ট করে দিচ্ছে।  বাংলাকে গালাগালি দিচ্ছে, বিহারের সাথে তুলনা করছে, যতই যা করুক বাংলায় ওরা শূন্য পাবে

 

ওরা বাংলার পুলিশকে বিশ্বাস করে না, তাই দিল্লীর পুলিশ পাঠাচ্ছে, পুলিশ নয় মানুষ ভোট দেবে, ২০১৬ তেও ওরা সেন্ট্রাল ফোর্স পাঠিয়ে কারফিউ করে ভোট করিয়েছিলো

আমরা ভারতবর্ষ থেকে মোদিকে হটাব, বিজেপিকে হটাব, সব আঞ্চলিক দল মিলে সরকার তৈরী করব যারা মানুষের জন্য কাজ করব, ভারতের গণতন্ত্র রক্ষা করবে

বিজেপি আবার ক্ষমতায় এলে দেশে আর গণতন্ত্র থাকবে না স্বাধীনতা থাকবে না আর নির্বাচন হবে না, ওরা এন আর সি করে সবাইকে তাড়িয়ে দেবে

আসামে এনআরসি করে ৪০ লক্ষ লোকের নাম বাদ দিয়ে দিয়েছে,এর মধ্যে ২২ লক্ষ হিন্দু বাঙালী, বাকি মুসলমান, বিহারী সহ অন্য সম্প্রদায়ের মানুষও আছে। কারো বাবার, কারো মায়ের, কারো স্বামীর নাম বাদ গেছে, অনেক মানুষ আত্মহত্যা করেছে। ওরা ঠিক করবে কার নাম রাখবে আর রাখবে না। কিন্তু আমরা কোনদিন বাংলায় এন আর সি করতে দেব না। সবাই আমরা একসাথে থাকতে চাই

নাগরিক বিল করে আপনাদের সব অধিকার কেড়ে নেবে, আপনাকে ৬ বছরের জন্য বিদেশি বানিয়ে দেবে তারপর নতুন করে নাগরিক অধিকার দেবে, যারা already নাগরিক আছে তাদের আবার নতুন করে নাগরিক বানাবে – নতুন করে নাটক শুরু করেছে, বিজেপিকে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে হবে

উদ্বাস্তুদের নিঃস্বার্থ জমির দলিল আমার করে দেওয়া, আমরা সবার জন্য কাজ করি, সব ধর্ম, সব সম্প্রদায়ের সব ভাষার মানুষের জন্য কাজ করি, আমরা সবাই এক করতে চাই, সবাইকে নিয়ে আমরা কি এটাই আমাদের মানবধর্ম

গদা তরোয়ালের পার্টি নয়, দাঙ্গা লাগানোর পার্টি নয়, আগুন জ্বালানোর পার্টি নয়, ওরা দেশ ভেঙে দিচ্ছে

একজন বুড়ো খোকা যখন দেশ আর মানুষ ভাঙে, তখন তাকে জবাব দিতে হয় গণতন্ত্রের মাধ্যমে – ভোটের থাপ্পরের মাধ্যমে

১৫ লক্ষ টাকা দেবে বলেছিল। দিয়েছে?

আগে ছিল চা ওয়ালা এখন হয়েছে চৌকিদার, আর আসল চৌকিদার মাইনে পাচ্ছে না

একজন প্রধানমন্ত্রীর কথায় সৌজন্য থাকা দরকার, যা ইচ্ছে মিথ্যে কথা বলছে, ওনাকে দেখলে এখন মানুষ ভয় পায়

মোদীকে না তাড়ালে, বিজেপিকে না তাড়ালে দেশ বাঁচানো যাবে না, মানুষ বাঁচতে পারবে না, ওরা ডেঞ্জারাস, এরকম রাজনৈতিক দল আগে কখনো দেখিনি তাই একটা ভোটও ওদের দেবেন না