সাম্প্রতিক খবর

এপ্রিল ৩, ২০১৯

তৃণমূলের আবর্জনারা এখন বিজেপির সম্পদঃ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

তৃণমূলের আবর্জনারা এখন বিজেপির সম্পদঃ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ কোচবিহারে দুটি নির্বাচনী সভা করেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম সভাটি করেন শীতলকুচির গোঁসায়ের হাট হাই স্কুল মাঠে এবং দ্বিতীয় সভাটি করেন তুফাঙ্গঞ্জের তুফাঙ্গঞ্জ স্টেডিয়ামে।

তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ-

বিজেপি দু চারটে বাইক আর সঙ্গে সিআইএসএফ নিয়ে ঘুরে এলাকা উত্তপ্ত করার স্বপ্ন দেখছে।

তৃণমূলের আবর্জনা এখন বিজেপির সম্পদ। সিপিএম কংগ্রেস সম্পর্কে যত কম বলা যায়, তত ভালো।

আগামী ১১তারিখ আমাদের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন।

আগামী পাঁচ বছরে বহুগুণ উন্নয়ন করে আপনাদের ঋণ আমরা শোধ করব। বিজেপি শুধু ভোটের সময় আপনাদের কাছে আসে। ভোট চলে গেলে ওদের আর দেখা যায় না।

আমাদের কর্মীরা সারা বছর মানুষের পাশে থাকে। আপনাদের সকল সমস্যায় তৃণমূল কর্মীরা আপনাদের সাহায্য করে।

জাতি বর্ণ ধর্ম নির্বিশেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সমস্তও প্রকল্প সকলের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।

২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, আচ্ছে দিন আসবে, বছরে ২ কোটি বেকারের চাকরি হবে, প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে ঢুকবে। কেউ কিচ্ছু পায়নি।

আমরা দেখেছি বিজেপি সাধারণ মানুষের টাকা মেরে দিল্লীর বুকে ১২০০ কোটি টাকা খরচ করে তাদের ৭ তারা মানের পার্টি অফিস তৈরী করেছে।

আমাদের মুখ্যমন্ত্রী যা কথা দিয়েছেন, তা রেখেছেন। পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে মেডিক্যাল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ঝকঝকে রাস্তা, নলবাহীত পানীয় জল, আইটিআই, পলিটেকনিক, স্কুল মাদ্রাসা তৈরী করেছেন। জমির পাট্টা পৌঁছে দিয়েছেন।

আমরা প্রধানমন্ত্রীকে কোনওদিন চা বিক্রী করতে দেখি নি। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীকে দেখেছি টালির চালে থেকে সারা বাংলার উন্নয়নের ধারা পরিচালনা করতে।

তৃণমূল কংগ্রেসকে ধমকে চমকে বিজেপি আত্মসমর্পণ করাতে পারেনি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন তোমরা আমাকে ৪২ শে ৪২ দাও আমি তোমাদের ধর্মনিরপেক্ষ ভারতবর্ষ দেব।
বিজেপি কোচবিহার বাসীকে লাঞ্ছিত, শোষিত করে রেখেছে। ছিটমহল বাসীদের প্রতি বিজেপির এই উদাসীন অবস্থান কেন? এখনও কোচবিহার নিয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট নয়। এই জেলার বাসিন্দারা যখন বিপন্ন ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া এখানে কেউ তাদের দেখতে আসেননি।

এর আগের কোনও সরকার প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে দেখিনি।

যেসব দাগী আসামীদের তৃণমূল কংগ্রেস গ্রামসভায় টিকিট দেয়নি, তাদের বিজেপি লোকসভায় টিকিট দিয়েছে। এটাই বিজেপির দৈন্যতা। এটাই চৌকিদারের আসল চেহারা। যাকে বিজেপি এখানে প্রার্থী করেছে, তার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত করছিল। আজ হঠাত করে তদন্ত থেমে গেছে।

ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী আগে বলেছিলেন, তিনি চা বিক্রী করেন, এখন বলছেন তিনি চৌকিদার। ওনার মত চৌকিদার ভারতবর্ষের দরকার নেই। যে চৌকিদার থাকতে নীরব মোদী, ললিত মোদী, বিজয় মালিয়া, মেহুল চোকসি দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে বিদেশে পালিয়ে যায়।

২০১৪ সালে বিজেপি সভা করতে এসে বলেছিল আমরা প্রতারকদের বিরুদ্ধে লড়ব। আজ আমরা দেখছি যে সোনা চুরির দায়ে প্রধান অভিযুক্ত তাকে বিজেপি টিকিট দিয়েছে। আমাদের এই বিজেপিকে ভারত ছাড়া করতে হবে।

মোদী ভারতবর্ষের শনি, অমিত শাহ রাহু আর দিলীপ ঘোষরা কেউ। এরা যতদিন থাকবে, দেশের কখনও উন্নতি হবে না।

রান্নার গ্যাস, কেরোসিন তেল, পেট্রোলের দাম, ডিজেলের দাম এই চার বছরে বহুগুণ বেড়েছে।

বিজেপি যত হারবে দ্রব্যমূল্য তত কমবে।

এখন আর জয় শ্রী রাম বলে ভোট পাওয়া যাবে না, ওনারা বুঝে গেছেন। সকালে রাম, বিকেলে নাথুরাম।

ধর্মের রাজনীতিকে বাংলার মানুষ প্রশ্রয় দেয়না। ঈশ্বর পূজনীয়, রাজনীতিতে ব্যবহারের জন্য নয়।

আগামী ২৩শে মে পদ্ম ফুল শর্ষে ফুলে বদলে যাবে। জোড়াফুলকে মেটানো যাবে না।

এই লড়াই সাম্প্রদায়িক মোদী এবং দিদির লড়াই। ভোটটা দিচ্ছেন বাংলার সম্মান, বাংলার কৃষ্টি, বাংলার মর্যাদা, বাংলার অহঙ্কার, বাংলার ঐতিহ্য রক্ষা করার স্বার্থে। তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করুন।

মোদীর নৌকা ফুটো হয়ে গেছে। আগামী দিন বিজেপি প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত করাতে হবে। ২৩ তারিখের পর ভারতে বিজেপির থাকবে না কোনও নাম।

২০১৩ সালে যখন সারদা সারদা করে বিজেপি এবং সিপিএম যখন গলা ফাটাচ্ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্গিল থেকে সুদীপ্ত সেনকে গ্রেপ্তার করে এনে জেলে পুরেছে।

বিজেপির এখন মূলমন্ত্র দুর্নীতি কে সাথ ক্রিমিনাল কা বিকাশ। ১১ তারিখের পর এদের কোচবিহারের মাটিতে আর খুঁজে পাওয়া যাবেনা।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে লড়তে হলে পরিসংখ্যান দিয়ে লড়।

স্বয়ং শ্রী রাম যে দুর্গা পুজো করতেন, সেই দুর্গা পুজোয় বিজেপি একটা শুভেচ্ছা বার্তাও দেয়নি। উপরন্তু, দুর্গাপুজোর ক্লাবগুলোর বিরুদ্ধে আয়কর দপ্তর লেলিয়ে দিচ্ছে।

বিজেপি অসমে গিয়ে বলছে বাঙালী খেঁদাও, গুজরাটে গিয়ে বলছে বিহারী খেঁদাও। এনআরসির নামে ৪০ লক্ষ মানুষকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। এই বিজেপি আবার ক্ষমতায় এলে আপনাকে আপনার ভিটে মাটি ছাড়া করবে।

আমি বিজেপিকে বলতে চাই, অসমে যদি ৪০ লক্ষ ভোটার অবৈধ হয়, তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিৎ।

ভারতীয় সেনার পরিবারকেও এনারসির নামে বাদ দেওয়া হয়েছে। বিজেপির থেকে দেশপ্রেম শিখতে হবে না।

আমরা সকল ধর্মের মানুষের জন্য কাজ করেছি। আমরা বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই।

মোদী ২০১৬ সালে সভা করে বলেছিলেন, আটটি চা বাগান কেন্দ্রীয় সরকার অধিগ্রহণ করবে, কিন্তু, করেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেষ্টায় সেই বাগানগুলি কাজ শুরু করেছে।

আপনার একটি ভোট দেশের সরকার গড়বে।

অমিত শাহের ছেলের ব্যবসা বেড়েছে ১৬০০০ গুণ, অমিত শাহের স্ত্রীর সম্পত্তি বেড়েছে ১৬ গুণ। অমিত শাহের সম্পত্তি বেড়েছে ৫ গুণ।

আমরা আমাদের আদর্শের সঙ্গে সমঝোতা করিনা।