এপ্রিল ২৩, ২০১৯
যদি মিথ্যে বলার জন্যে কোনও পুরস্কার থাকত তাহলে মোদীই পেতেন: বড়গাছিয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজকের তৃতীয় নির্বাচনী জনসভায় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষকে বিশেষ করে যুব সম্প্রদায়কে সাবধান করে দেন যেন তারা বিজেপি নেতাদের এবং মোদীবাবুর বড় বড় কথায় প্রভাবিত না হন। তিনি বলেন, ওরা যা বলছে তা মিথ্যে এবং জনগণকে ওনারা ভুয়ো স্বপ্ন দেখাচ্ছেন।
ওনার বক্তব্যের কিছু অংশঃ
- আমার আজ এটা দেখতে ভালো লাগছে যে এত গরম সত্ত্বেও এখানে বিশাল জনসমাগম হয়েছে। আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
- এখানে আমাদের প্রার্থী কল্যাণ ব্যানার্জি একজন লড়াকু সাংসদ। হাওড়ার জগতবল্লভপুরের এই এলাকাটা ওর কেন্দ্রের অন্তর্গত।
- কিছুদিন আগে কাছেই উলুবেড়িয়াতে একটি নতুন মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়েছে। একটি মাল্টি-স্পেশালিটি হাসপাতাল, একটি নার্সিং কলেজ এবং আরও নানান কেন্দ্র এখানে তৈরি হচ্ছে।
- এই এলাকার পানীয় জলের জন্যে ১৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এখানে রাস্তা, ব্রিজ এবং বাস টার্মিনাস তৈরি করা হয়েছে।
- এরকম আরও অনেক প্রকল্প চালু করা হয়েছে হাওড়া আর এই এলাকার জন্যে।
- আগের বাম সরকারের তুলনায় এখানে অনেক বেশি কাজ করা হয়েছে এই এলাকার উন্নয়নের জন্যে।
- এখন প্রত্যেকটি ব্লকে আইটিআই স্থাপিত হচ্ছে। আমাদের সময় এত সুযোগ ছিল না। কিন্তু এখন সময় পালটে গিয়েছে।
- এখন ছাত্র-যুব ও তপশীলি জাতি-উপজাতিদের জন্যে অনেক নতুন সুযোগ গত সাত বছরে করে দেওয়া হয়েছে।
- গ্রামের আর শহরের মানুষদের জন্যে মার্কেট হাব, কোল্ড স্টোরেজ, যাতায়েতের সুবিধা এরকম আরও নতুন ব্যবস্থা গত সাত বছরে করা হয়েছে।
- এখন সরকারী হাসপাতালের সম্পূর্ণ বিনাপয়সায় চিকিৎসা করা হয়। ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান এবং ডায়াগনিস্টিক সেন্টার করা হয়েছে।
- এই কাজগুলো আমরা করেছি যদিও বিগত সরকার ৫০,০০০ কোটি টাকার ঋণের বোঝা আমাদের মাথায় চাপিয়ে দিয়ে গেছিল।
- আপনাদের বুঝতে হবে আমরা আমদের ক্ষমতা অনুযায়ী যথেষ্ট কাজ করেছি। আমরা সেইসব প্রকল্প হাতে নিই যাতে সমাজের বৃহত্তর অংশের মানুষের উপকার হয়। কণ্যাশ্রী তেমনি একটা প্রকল্প।
- কৃষকদের পেনশন, তাদের বীমা প্রকল্প, বিধবাভাতা, অবিবাহিতা মেয়েদের জন্য সাহায্য, এক কোটি সাইকেল, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য স্কুলের জামা এবং জুতো—এগুল সব আমরা দিই। এর টাকা কোথার থেকে আসে?আসলে আমাদের স্বল্প পুঁজি খুব বুঝে-শুনে খরচ করতে হয়।
- বাংলায় কৃষকদের জমির খাজনা ও মিউটেশন ফি মুকুব করে দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের শস্য বীমার সব টাকা দেয় রাজ্য সরকার। এছাড়াও আমরা তাদের কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগে পরলে সাহায্য করি।
- আমি রাজনীতি করি মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে। আমি যা করি সবটাই মানুষের জন্যে করি।
- এই যা যা বললাম সবটাই কিন্তু আমরা আমাদের নিজেদের টাকাই করি, কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য ছাড়া। আগে আমরা ওদের থেকে সাহায্য পেতাম কিন্তু এখন মোদী আসার পরে সব সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে। আর এখন এই লোকগুলোই রাজ্যে আসছে ভোট চাইতে।
- চাওয়ালা থেকে মোদীবাবু এখন চৌকিদার সেজেছেন। কিন্তু করবেটা কী? মানুষের সাহায্য কোনও কাজ তো করেইনি বরঞ্চ প্রচুর ক্ষতি করেছেন।
- মোদীবাবু মিথ্যে কথা বলার জাহাজ, যদি মিথ্যে বলার জন্যে কোনও পুরস্কার থাকত তাহলে ও জিতে যেত।বলেছিল জিতলে সবার ব্যাঙ্ক আকাউন্টে ১৫ লাখ টাকা করে দেবে। বলেছিল পাঁচ বছরে ১০ কোটি চাকরী দেবে। সব মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
- এখন বলছে বাংলায় নাকি দুর্গাপুজো হয় না। আপনারা বলুন হয় কি হয় না? আপনারা সব ধরনের উৎসব করেন কি করেন না? এসব লোকদের কী করা উচিৎ বলুন তো? মুখে লিউকোপ্লাস্ট সেঁটে দেওয়া উচিৎ।
- ওরা দাঙ্গাবাজ আর হামলা করে এক সম্প্রদায়কে অন্যের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়। আমরা ওই বিভেদের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা সবাইকে এক চোখে দেখি।
- ওরা সমাজে বিভেধ সৃষ্টি করা ছাড়া আর কিছুই করে নি। একটা মন্দিরও বানাতে পারেনি।
- আমি শুধু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থণা করতে পারি যে ওদের ক্ষমা করে দাও। ভগবান যেন ওদের একটু সুমতি দেয় যাতে আর তলোয়ার উচিয়ে ঝামেলা না করে। আমরা শান্তিপুর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী।
- আমি সবাইকে, বিশেষ করে নতুন ভোটারদের আবেদন করব যে ওদের মিথ্যা প্ররোচনায় পা দেবেন না। ওরা অনেক কথা বলবে, টাকা দিতে চাইবে কিন্তু সেগুলোতে প্রভাবিত হবেন না। যখন সময় আসবে ঠিক ব্যক্তিকে ভোট দেবেন। কল্যাণ আপনাদের জন্যে অনেক করেছে, আর করবেও।
- মনে রাখবেন আমরা বিনা যুদ্ধে বিজেপি-কে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দেব না। আমরা ৪২-এ ৪২টা জিতে মোদী সরকারের পতন ঘটাবো।