সাম্প্রতিক খবর

এপ্রিল ৩০, ২০১৯

আমি বাঘের বাচ্চার মত লড়ি, কোনও মোদীকে ভয় পাই না- মমতা বন্দোপাধ্যায়

আমি বাঘের বাচ্চার মত লড়ি, কোনও মোদীকে ভয় পাই না- মমতা বন্দোপাধ্যায়

আজ উত্তর ২৪ পরগনা জেলার আমডাঙায় এক নির্বাচনী সভা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেন, যে আমি বাঘের বাচ্চার মত লড়ি, পারলে আমার সাথে রাজনৈতিক ভাবে লড়ুন।

তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ

আমি মোদীবাবুর হুমকিতে ভয় পাই না। আমি খাকী হাফ-প্যান্ট পড়াদের ভয় পাই না। আমি বাঘের বাচ্চার মত লড়ি। আমায় ধরতে পাড়লে ধরুন আমায় হারাতে পাড়লে হারান।

এখানে তৃণমূল প্রার্থী দিনেশ ত্রিবেদী শান্তি, সম্প্রীতি এবং উন্নয়নের জন্যে অনেক কাজ করেছেন

এখানে বিজেপির হয়ে যে গদ্দারটা দাঁড়িয়েছে, প্রতিটা ভোট দিন তাকে হারিয়ে শিক্ষা দিতে।
মোদীবাবু এখন এই গদ্দারদের খুব আদর করছেন, মনে রাখবেন একদিন এই গদ্দারগুলো আপনাদের জন্যও কালসাপ হয়ে উঠবে। সেদিন বুঝবেন কি ভুল আপনারা করেছেন।

এটা স্থানীয় বা বিধানসভার ভোট নয়। এই নির্বাচন লোকসভার জন্যে। কেন্দ্রে কে সরকার গড়বে এবং দেশ চালাবে তার জন্যে।

আমরা আমাদের জীবনে বহু প্রধানমন্ত্রী এবং রাজনৈতিক দল দেখেছি। আমিও কেন্দ্রে অনেকবার মন্ত্রী সভা সামলেছি। অনেক প্রধানমন্ত্রীর সাথে কাজ করেছি। কিন্তু এখন যিনি প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে আছেন, তিনি এই কাজের জন্য একদমই যোগ্য নন।

এই প্রধানমন্ত্রীর সামান্য রাজনৈতিক শিষ্টাচার জানে না। কি ভাষা ব্যবহার করে শুনেছেন? বাংলার সংস্কৃতি জানে না। সবাইকে নিজের চাকর ভাবে। শুধু নিজে টেলিপ্রম্পটার থেকে পড়ে।

ও মিডিয়া ক্যাপচার করে রেখেছে। সবকটা প্রতিষ্ঠান প্রভাবিত করে রেখেছে। সংবিধান পালটে দিতে চাইছে। এদের আমলে প্রচুর মানুষ গণ-পিটুনিতে মারা গেছেন।

আমরা রামকৃষ্ণদেবের এবং স্বামীজির হিন্দু ধর্ম মানি, বিজেপির হিন্দু ধর্মে আমাদের সমর্থন নেই। হিন্দু ধর্ম নানুষকে সহিষ্ণু হতে শেখাই। একসাথে থাকতে শেখায়।

হিন্দুধর্ম মানুষে মানুষে ভেদাভেদ শেখায় না। বিজেপি আজকে রাজনৈতিক কারণে হিন্দু ধর্ম ব্যবহার করছে।

মোদী বাবু তো বারাণসীর সাংসদ। তিনি কি ওখানকার গঙ্গা সংস্কার করেছেন, বা ঘাটের সংস্কার করেছেন? কোনও উন্নয়ন করেছেন? বাংলায় এসে দেখুন বিভিন্ন পবিত্র স্থানে কিভাবে উন্নয়ন হয়েছে।

বিজেপি জানে ওরা সমস্ত রাজ্যে হারছে। তাই ওরা এই রাজ্যে এসেছে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা বাঁধাতে আর ঝামেলা পাকাতে।

এই রাজ্যে বিজেপি-র দুটো সিট আছে। ওরা দুটোতেই এবার হারবে। বাংলা ওদের এবার একটা বড় রসগোল্লা দেবে।

মোদী বলে যাচ্ছে যে এই রাজ্যে নাকি দুর্গাপুজো, স্বরস্বতী পূজো হয় না। এই বলে উনি আমাদের বাঙ্গালি সংস্কৃতিকে অপমান করেছেন।

আমরা মাটি দিয়ে রসগোল্লা তৈরি করে ওকে দেব। লাড্ডু দেব যার মধ্যে কাজু কিশমিশের বদলে কাঁকড় থাকবে আর খেলে ওর দাঁত ভেঙ্গে যাবে।

সাহস থাকা ভাল কিন্তু অহঙ্কার থাকা ভাল না।

NRC নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করছে বিজেপি। আসামে ওরা ২২ লাখ বাঙালি হিন্দু আর আর ৩০ লাখ বাঙালি মুসলমানের নাম বাদ গেছে।

ওরা পাঁচজন বাঙ্গালিকে খুন করিয়েছে। আমরা ছাড়া আর কোনও রাজনৈতিক দল এর প্রতিবাদ করতে যায় নি।

বাংলার সাধারণ মানুষ দাঙ্গা চায় না। তারা বিজেপির পক্ষে ভোট দেবে না।

এখানে সিপিএম বিজেপির হয়ে কাজ করছে। সিপিএম, কংগ্রেস আর বিজেপি মালদা আর বহরমপুরে একসাথে ভোট করেছিল। এখানেও ওদের একটা যোগাযোগ আছে। ওদের একটাও ভোট দেবেন না। ওদের ভোট দিয়ে আপনার ভোট নষ্ট করবেন না।

একজন নেতা মানুষের ভালোবাসায় বড় নেতা হন, ভয়ে নয়। এখন মানুষ নরেন্দ্র মোদীকে ভয় পায়। ও হিটলারের চেয়েও বড় শাসক।

সারা দেশে ১২,০০০ কৃষক আত্মহত্যা করেছে। এই রাজ্যে আমরা কৃষকদের খাজনা মকুব করে দিয়েছি, মিউটেশন ফী বাতিল করে দিয়েছি। আমরা শস্যবীমার পুরো টাকা দিই। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষকদের পাশে থাকি।

আমরা একটি কৃষকবন্ধু প্রকল্প শুরু করেছি। প্রতি একর জমি পিছু কৃষকরা ৫০০০ টাকা করে পাবেন। ১৮ থেকে ৬০ বছরের কোনও কৃষক যদি মারা যান তবে তার পরিবার ২ লাখ টাকা পাবে।

আমরা ২ কোটি সংখ্যালঘু ছাত্র-ছাত্রীদের স্কলারশিপ দিয়েছি। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপের ব্যবস্থা রয়েছে।

আমরা সংসারের মেয়েদের নামে স্বাস্থ্য সাথি স্মার্ট কার্ড দেব, কারণ তারাই পরিবার চালান। ৭.৫ কোটি মানুষ এর সুবিধা পাবেন।

মোদী আমরা কি করেছি তার হিসাব চেয়েছেন। এটা তো কেন্দ্রীয় নির্বাচন। তিনি নিজে কি করেছেন তার হিসাব দিন।

আচ্ছে দিনের নামে জ্বালানীর দাম বেড়েছে, রান্নার গ্যাসের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। কৃষকরা আত্মহত্যা করেছে। মানুষ খুব হচ্ছেন।

আমাদের দেশকে রক্ষা করতে হবে, শক্তিশালী করতে হবে। বিজেপি যদি ক্ষমতায় ফিরে আসে মানুষের অধিকার কেড়ে নেবে।

আমাকে এজেন্সির ভয় দেখিয়ে ওরা রুখতে পারবে না। যতদিন বাঁচব, আমি মানুষের জন্য কাজ করব, একতার জন্য কাজ করব।

ওদের কাছে আমরা দেশপ্রেম শিখব না। এই মাটি দেশপ্রেমের, সংস্কৃতির জন্মদাতা। আমরা দুর্যোধন বা দুঃশাসনদের মনে রাখি না।

ওই দুট সাইনবোর্ড বাংলায় আসবে আর বলবে যে এখানে ভোটে জিতব। এবার এখান থেকে ওরা পাবে গোল্লা।

দাঙ্গাবাজদের দলকে না বলুন। আপনাদের ধারণা নেই ওরা কত মানুষ মেরেছে। উত্তর প্রদেশে যান, জানতে পারবেন। কেন্দ্র থেকে ওদের বিদায় দিন।