সাম্প্রতিক খবর

এপ্রিল ৪, ২০১৯

টাকা দিয়ে ভোট কিনবে?: মাথাভাঙায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

টাকা দিয়ে ভোট কিনবে?: মাথাভাঙায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারের মাথাভাঙায় এক নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, বিজেপি আবার ক্ষমতায় এলে দেশে আর কোনও নির্বাচন হবে না, আম্বেদকরের সংবিধান ধ্বংস করে দেবে।

তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ-

কোচবিহারের দিনহাটায় একটি সেতু তৈরি হচ্ছে, সেতুটির নাম দিয়েছি – ‘জয়ী’। আরও একটি সেতু তৈরি হচ্ছে তার নাম দেওয়া হয়েছে ভাওয়াইয়া। প্রায় ১৯-২০টি সেতু তৈরি হয়েছে এই জেলায়, কোচবিহার জেলায় অনেক উন্নয়ন হয়েছে।

শুধু নির্বাচনের সময় নয়, আমি সারা বছর বারবার এখানে আসি। আগে তো কেউ এখানে আসতই না।

আমাদের সরকার ছিটমহল সমস্যার সমাধান করেছে এবং ছিটমহলবাসীদের জমি ফিরিয়ে দিয়েছে। অন্য কোনও সরকার করেনি, না করেছে সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি।

এক্সপায়ারি প্রধানমন্ত্রী মোদীবাবুকে জিজ্ঞেস করুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে ছিটমহল সমস্যার সমাধান হত কিনা। বাংলার সরকার বাংলাদেশের সরকারের সাথে মিলে করেছে, আর ভারত সরকারকে সঙ্গে রেখেছে কারণ বাংলা ভারতবর্ষের অংশ।

ছিটমহলবাসীদের উন্নয়নের জন্য ১১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। ওদের জমির অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার।

রাজ্য সরকার কোচবিহারে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় সহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মেডিকেল কলেজ, আইটিআই, পলিটেকনিক কলেজ, কর্মতীর্থ, কিষান মাণ্ডি, ব্লাড ব্যাঙ্ক, মাদার ও চাইল্ড হাব, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের ক্লাস্টার সহ তৈরি করেছে। এছাড়াও, আরও অনেক উন্নয়ন হয়েছে।

নোটবন্দির পর যেসব মানুষ বেকার হয়েছেন তৃণমূল সরকার তাদের ৫০০০০ টাকা আর্থিক সাহায্য করেছে যাতে তারা স্বনির্ভর হতে পারে।

৫ বছর আগে, এক্সপায়ারি প্রধানমন্ত্রী নিজেকে চা-ওয়ালা বলতেন, এখন নিজেকে চৌকিদার বলছেন। কিন্তু মানুষ বলছে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ কিন্তু আমি বলছি ‘চৌকিদার ঝুটা হ্যায়’, উনি মিথ্যে কথা ছাড়া সত্য কথা বলেন না

নির্বাচন আসলে অনেক টাকা! আমি এই প্রথম দেখছি – নির্বাচনের নামে এক একজনের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা পাওয়া যাচ্ছে, এটা দেশের জন্য কুৎসা। আমরা কুৎসাজনক নির্বাচন চাই না। আমরা গণতন্ত্রের সঠিক নির্বাচন চাই।

টাকা দিয়ে ভোট কিনবে? কোনও কাজ করেনি আর নির্বাচনের সময় জনগণের টাকা জনগণকে বোকা বানিয়ে ধোকা দিয়ে তুলে নিয়েছে। এরা যদি আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে আপনি আর আপনার ব্যাঙ্কের টাকাও তুলতে পারবে না, মানুষ নিজের পরিশ্রমের টাকা তুলতে পারবে কিনা সেটাও এখন ওরা ঠিক করে দেবে

ছাত্র যৌবন, নতুন ভোটার যাদের বয়স ১৮ তারা কোন কিছুতে ভয় পায় না, তারাই, দেশ গড়ে, বিশ্ব গড়ে, সমাজ গড়ে, তারাই বাংলা গড়ে

এক বছরে ২ কোটি মানুষ বেকার হয়েছেন। গত ৫ বছরে বেকারত্ব সবচেয়ে বেশি – ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ। ওরা এখন বড় বড় কথা বলছে। কথায় চিড়ে ভেজে না।

গতবার নির্বাচনের আগে এক্সপায়ারি প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে আনবেন, সকলের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে দেবেন, দিয়েছেন? কত বড় ধুরন্ধর! চা ওয়ালা সেজে ধাপ্পা দিয়ে ভোট নিয়েছেন।

এবার উনি চৌকিদার সেজেছেন। আসল চৌকিদাররা অনেক জায়গায় মাইনে পাচ্ছে না, অনেকে বেকার হয়ে যাচ্ছেন। যারা আসল চৌকিদার তাদের আমরা স্যালুট জানাই, যারা সাজানো যারা নির্বাচনের সময় নাটক করে তাদের নয়।

শুধু নির্বাচনের সময় নয়, আমরা সারাবছর মানুষের জন্য কাজ করি।

বেকারদের চাকরি হয়নি, সারা দেশে (বিজেপি শাসিত রাজ্যে) ১২০০০ কৃষক আত্মহত্যা করেছে এর জবাব মোদী বাবুকে দিতে হবে

গো-রক্ষার নামে মানুষগুলোকে কেন খুন করা হয়েছে এর জবাব মোদী বাবুকে দিতে হবে

অসমে এনআরসির নাম করে ২২ লক্ষ হিন্দু বাঙালীর ২৩ লক্ষ মুসলমান বাঙালীর নাম বাদ দিয়েছে। বাংলায় আমরা কোনওদিন করতে দেব না।

দাঙ্গা করে করে এদের সারা শরীরে রক্ত লেগে হয়েছে। মোদীর কথা বার্তারও সৌজন্যতা নেই।

কিছু মিডিয়াকে ভয় দেখিয়ে যা ইচ্ছে বলে যাচ্ছে। এই মিডিয়াদের বলি, ভয় পাবেন না।

পাঁচ বছর পর বলছেন রাজবংশীদেরটা আমায় ভাবতে হবে। পাঁচ বছর মনে ছিল না?

বিজেপির নেতারা এখানে এসে বলছে মমতা ব্যানার্জি এখানে দুর্গা পুজো করতে দেয়না। বাংলায় লক্ষী পুজো, সরস্বতী পুজো হয় না?

আগামীদিন মা দুর্গার মত ঘরের মেয়েরা মোদীর অশুভ শক্তিকে বধ করবে রাজনীতির মধ্যে দিয়ে।

এরকম ইনকাম ট্যাক্স রেড, সিবিআই রেড, ইডি রেড আমি কোনওদিন দেখিনি।

যে সেনা বাহিনী আমাদের গর্ব, তারা কোনও রাজনীতি করে না, দেশ সেবা করে, আজ তাদের বলা হচ্ছে মোদীর সেনা। সেনাবাহিনীকে অসম্মান করার জন্য নতুন করে নাটক তৈরী হয়েছে।

সেনা, আধাসেনা সকলই নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। মোদী, বিজেপি তাদের অপব্যবহার করতে পারেনা।

মোদী যদি আবার আসে, আম্বেদকরের তৈরী সংবিধান বদলে দেবে। মানুষের কোনও অধিকার থাকবে না, গণতন্ত্র থাকবে না, নির্বাচনই হবে না।

এনআরসি, নাগরিকত্ব সংশোধন বিল মানে জানেন? আজ আপনারা যা অধিকার পেয়েছেন, সেই নাগরিকত্ব প্রথমে কেড়ে নেওয়া হবে। ছয় বছরের জন্য আপনাকে বিদেশী করে দেওয়া হবে। তাঁর পড়ে যদি মনে করে, তবে আপনি নাগরিক হবেন। চাষের জমি, বাড়ি, পাসপোর্ট, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সব চলে যাবে। এই জঘন্য ষড়যন্ত্র ওদের করতে দেবেন না।

আমি আমার দল পাঠিয়েছিলাম অসমে। মতুয়া সঙ্ঘের সভাপতিকে মারে ওরা। এয়ারপোর্ট থেকে বেরোতে দেয়নি।

আমরা অসমবাসীদের বলেছিলাম, তোমাদের যদি ওখান থেকে তাড়িয়ে দেয়, বাংলা তোমাদের আশ্রয় দেবে।

মোদীবাবুরা এসে বলছে বাংলায় কি হয়েছে? বাংলায় কি হয়েছে, বাংলার মানুষ জানে।

তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। ৪২ শে ৪২টা আসন জিতে বাংলাই সরকার গড়বে, বাংলা পথ দেখাবে।

দিল্লীর সরকার বদলে দিন, দেশের সকল মানুষকে বাঁচতে দিন।