সাম্প্রতিক খবর

এপ্রিল ১১, ২০১৯

বালুরঘাট কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের জয় শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষাঃ কুশমন্ডিতে বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

বালুরঘাট কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের জয় শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষাঃ কুশমন্ডিতে বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কুশমন্ডিতে হারাহার গ্রাউন্ডে এক নির্বাচনী সভা করেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ

এখানে আগত সকল মানুষ ও মিডিয়াকে আমার শ্রদ্ধা।

আমরা তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে কথা বলি, মিথ্যে কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করিনা।

আজ যে কেন্দ্রদুটিতে ভোট হচ্ছে, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী প্রার্থীদের ১০ গোল দেবে। আজ থেকে লড়াই ৪০ শে ৪০।

আমি সর্বক্ষণের রাজনৈতিক কর্মী। আমি মানুষকে যা বুঝেছি, এই কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর জয় শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।

২০১৪ সালে আমাদের লড়াই ছিল সাম্প্রদায়িক বিজেপি, দুর্নীতিগ্রস্ত কংগ্রেস এবং সন্ত্রাসবাদী সিপিএমের বিরুদ্ধে। এবারের লড়াই দুই ব্যাক্তি এবং তাদের আদর্শের মধ্যে। এবারের লড়াই সাম্প্রদায়িক মোদী এবং বাংলার অগ্নিকন্যা দিদির মধ্যে।

বাকি সমস্ত রাজনৈতিক দলকে ধমকে চমকে বিজেপি দমিয়ে দিতে পারলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পারেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মোদী যত সিবিআই, ইডি ব্যবহার করেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের জন্য তত বেশী বলিয়ান হয়ে লড়াই করেছেন।

২০১৪ সালে একটা রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিল আচ্ছে দিন আসবে, সকলের ব্যাঙ্কে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে, বছরে ২ কোটি বেকারের চাকরি হবে। কিছুই হল না।

আচ্ছে দিনের নামে নোটবন্দী করে মানুষকে ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড় করিয়ে ১৫০ জনকে মেরে ফেলল আর নিজে প্লেনে করে বিশ্ব ভ্রমণ করল। নোটবন্দী করে গরীবরা আরও গরীব হয়েছে। কালো টাকার মালিকদের কালো টাকা আরও বেড়েছে। বলেছিল সন্ত্রাসবাদ ধ্বংস হবে, সেখানে পুলওয়ামাতে সন্ত্রাসবাদীদের হামলায় ৪২ জন জওয়ান প্রাণ হারাল।

শুনলাম সবকা সাথ সবকা বিকাশ। দেখলাম মানুষ আজ ১ হাজার টাকা করে গ্যাস কিনছে আর বিজেপি নিজেরা দিল্লীর বুকে ১২০০ কোটি টাকা খরচ করে সাততারা পার্টি অফিস তৈরী করছে।

বিজেপি যত হারছে, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম তত কমছে।

আচ্ছে দিনের নাম করে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ বারে বারে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে ভারতবর্ষের মাটি এবং বাংলার মাটিকে উত্তপ্ত করতে চেষ্টা করেছে।

বাংলা ছাড়া আরও ২৮টি যে রাজ্য দেশে আছে, তারা টাকার বিনিময়ে গেরুয়া হলেও বাংলা কোনোদিন অর্থের কাছে বিকিয়ে যায়নি। তাই, অর্থের বিনিময়ে বিজেপি বাংলাকে গেরুয়া করতে পারেননি।

যারা রাজনৈতিক ভাবে লড়াই করতে পারেনা, তারা ধর্মকে হাতিয়ার করে। আমরা মনে করি আমাদের ঈশ্বর আমাদের কাছে পূজনীয়, নির্বাচনের স্বার্থে ব্যবহারের বস্তু না।

আমি নেতা হলে, আমার ধর্ম হওয়া উচিৎ মানবধর্ম। সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করাই আমার কর্ম। আমরা মনে করি জীব সেবা, শিব সেবা।

যারা ৩৪ বছরে মানুষের জন্য কোনও কাজ করেনি, তাদের কাছে তৃণমূলকে মানবধর্ম আর উন্নয়ন শিখতে হবেনা।

নরেন্দ্র মোদী ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করছে শুধু নিজের প্রচারের জন্য, এদিকে বাংলার বন্যায় দেওয়ার জন্য তার কাছে টাকা নেই। বিজেপি মূর্তি তৈরী করছে ৩ হাজার কোটি টাকা দিয়ে অথচ মেয়েদের সুরক্ষার জন্য খরচ করার টাকা তার নেই।

মুখে বলে মেক ইন ইন্ডিয়া আর নিজে গাড়ি আনাচ্ছে জার্মানি থেকে, রাফায়েল কিনছে ফ্রান্স থেকে, মূর্তি তৈরী করাচ্ছে চীনকে দিয়ে।

৩৪ বছর সিপিএম যে কায়দায় রাজনীতি করত, আজ বিজেপিও সেই একই কায়দায় রাজনীতি করছে।

২০১৪ সালে মোদী বলেছিল আমি চা বিক্রী করি, আমরা কেউ তাকে চা বিক্রী করতে দেখিনি। কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজও টালির চালে থেকে বাংলার ১০ কোটি মানুষের উন্নয়ন করে চলেছেন।

বিজেপির এতই দুর্দশা, যাদের তৃণমূল আস্তাকুড়ে ফেলে দিচ্ছে, বিজেপি তাদের নিয়ে মাথায় বসাচ্ছে।

এর আগের কোনও মুখ্যমন্ত্রী কখনও বন্যায় বালুরঘাটে আসেনি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসেছেন।

আপনি জীবনের প্রথম ভোট দেওয়ার আগে শুধু ভাববেন, আপনি উন্নয়নে না অনাচারে, সাম্প্রদায়িকতায় না ধর্মনিরপেক্ষতায়।

বিধানসভায় রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ পাস করানো হয়েছে দুবছর আগে। কেন্দ্র আজও তা পাস করায়নি। বাংলা শব্দেই তাদের আপত্তি। এরা বাংলা বিরোধী।

পাঁচ বছরে বাংলার জন্য কি করেছে বিজেপি?  

উত্তরপ্রদেশে অক্সিজেনের অভাবে যে ৮০ জন শিশু মারা গেল, সবাই হিন্দু।

কার বাড়িতে কি রান্না হচ্ছে, সে খবর মোদীর কাছে থাকে। কিন্তু, দেশের সীমা পেরিয়ে ৩৫০ কিলো আরডিএক্স ঢুকল, সেই খবর মোদীর কাছে নেই।

এখন সেনার নামে ভোট চাইছে। বছর দুয়েক আগে এক বিএসএফ জওয়ান তাঁদের করুন অবস্থা নিয়ে ফেসবুকে একটি ভিডিও ছাড়ে। তাঁকে সেনা থেকে বহিস্কার করা হয়। সেই জওয়ান তেজ বাহাদুর আজ মোদীর বিরুদ্ধে বারানসীতে লড়াই করছে।

কোনও সমীক্ষা মিলবেনা। আগামীদিন ফুটবে শুধু জোড়াফুল। এখানকার সাংসদ আপনাদের দাবী নিয়ে বারে বারে সোচ্চার হয়েছেন। তিনি সারাক্ষণ তাঁর কেন্দ্রের মানুষের জন্য ভাবেন ও কাজ করেন।

১লা জুন থেকে গ্যাসের দাম ৫০০ টাকা হবে না ২০০০ টাকা হবে, আজ এই সভা থেকে আপনাদের সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

রাজ্যে প্রতারণাকারী সুদীপ্ত সেনকে কাশ্মীরের কার্গিল থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রেপ্তার করিয়ে আনেন ও জেলে ভরেন। অন্যদিকে ভারতবর্ষকে যারা সর্বস্বান্ত করেছে, সেই নীরব মোদী, ললিত মোদী, বিজয় মালিয়াকে দেশ থেকে পালাতে সাহায্য করছে আমাদের চৌকিদার।

আমরা সামনা সামনি তথ্য দিয়ে লড়াই করি, পেছন থেকে ছুরি মেরে পালাই না।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্ম বর্ণ জাতি দলমত নির্বিশেষে মানুষের উন্নয়ন করেছেন।

বিজেপি গঙ্গা পরিষ্কারের নামে ৩ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে।

হিন্দু ধর্মের নামে আপনারা বিচলিত হবেন না।

ভারতের শত্রু দেশ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলছেন, আমরা নরেন্দ্র মোদীকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চাই। মোদীকে পাকিস্তান চাইছে, আইএসআই চাইছে, ললিত মোদী চাইছে, নীরব মোদী চাইছে, বিজয় মালিয়া চাইছে। আর ভারতের খেটে খাওয়া মানুষ চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

বাঙালীর শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজোয় একটা শুভেচ্ছা বার্তা পর্যন্ত বিজেপি দেয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গা পুজো কমিটিগুলোকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা করতে ওরা হাইকোর্টে গেছে বাধা দিতে।

ইমামা ভাতা, মোয়াজ্জেন ভাতা দেওয়া হয় ওয়াকফ বোর্ডের টাকায়।

মাথায় ফেট্টি বেঁধে মিছিল করলেই শ্রী রামের ভক্ত হওয়া যায়না। প্রভু রামের মত ত্যাগ আগে শিখতে হয়। এখন রাম ও বাম এক হয়েছে।