এপ্রিল ২৮, ২০১৯
সিপিএম-এর হার্মাদ আজ হয়েছে বিজেপির ওস্তাদ-----হেড়িয়াতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ পূর্ব মেদিনীপুরের হেড়িয়াতে একটি জনসভা করেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি নন্দীগ্রাম সংগ্রামের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন যে সিপিএম-এর হার্মাদ আজ হয়েছে বিজেপির ওস্তাদ।
তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ
সেদিনের যারা লাল জামা গায়ে দিত, তারা এখন গেরুয়া জামা পড়ছে। হয়েছে বিজেপি-র ওস্তাদ।
আমরা কংগ্রেস ছেড়েছিলাম কারণ দলটা সিপিএম-এর কাছে বিকিয়ে গিয়েছিল।আজ লজ্জার বিষয় সেই বাম বিকিয়ে গেছে বিজেপি-র কাছে।
আমরা ‘সূর্যোদয়’ ভুলিনি। সেদিনকার সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতি আমরাই ভুলতে পারব না।
২০০৭-র ১৪ মার্চ ওরা ১৪জনকে মেরেছিল। আরও অনেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন, তারা এখনও ঘরে ফেরেননি।
একটা সময় মানুষকে খেজুরি, এগরা, পটাশপুরে বা হেড়িয়ায় ঢুকতে দেওয়া হত না। আমার গাড়ি ওরা কোলাঘাটে আটকেছিল।
আমাদের কাছে খবর ছিল যে আমার প্রাণের ওপর হামলা হবে। তখনকার রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধী উদ্বিগ্ন ছিলেন আমাদের ব্যাপারে।
নরেন্দ্র মোদী এখন মিথ্যে কথা ছড়াচ্ছে। আমাদের ধর্ম দেখাচ্ছে, আমরা যেন হিন্দু ধর্ম জানি না। বলুন এখানে দূর্গা পুজো হয় কিনা? কালীপুজো, সরস্বতী পুজো, ইদ, বড়দিন হয় কিনা?
ওরা একটা কুৎসিত মিথ্যে কথা বলা গুন্ডাদের দল। যে কুৎসিত ভাষা ওরা ব্যবহার করে তা বলার যোগ্য নয়।
ওরা ভোট লড়তে কোটি কোটি টাকা খরচ করে। আমি কমিশনকে বলব প্রধানমন্ত্রী-র সভাতে কত খরচ হচ্ছে তা দেখতে। কত টাকা খরচ করেছে, কটা এজেন্সি দিয়ে কাজ করাচ্ছে।
কেন্দ্র বাংলায় ফ্যাসিবাদি কায়দায় একটা সমান্তরাল সরকার চালাতে চাইছে। মানুষ তাদের ব্যালট বক্সে জবাব দেবে।
প্রধানমন্ত্রী যে ভাষায় কথা বলেন তা তাকে শোভা পায় না। সবসময় প্ররোচনা-মূলক ভাষণ দিচ্ছে।
বাংলার সব পুলিশ খারাপ? শুধু কেন্দ্রীয় বাহিনী ভাল? প্রধানমন্ত্রী তো রোজ নির্বাচনী বিধি ভাঙছেন, তার বেলায় তো কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?
প্রধানমন্ত্রীর পদে আর মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ ফারাক নেই। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কেন্দ্র শুধু দেশের প্রতিরক্ষা আর বিদেশমন্ত্রক দেখবে। বাকী সবকিছু রাজ্যের দায়িত্ব।
এবার যদি বিজেপি জেতে, তা হলে দেশে আর নির্বাচন হবে না। আপনাদের টাকা-পয়সাও আর ব্যাঙ্কে সুরক্ষিত থাকবে না।
যে মানুষ নিজের খেয়ালে নোটবন্দী করতে পারে সে গণতন্ত্রকে হত্যা করতে পারে।এরা হিন্দু রাষ্ট্র কী ভাবে বানাবে? অন্যদের মেরে ধরে তাড়িয়ে দিয়ে? দাঙ্গা বাঁধিয়ে? তাহলে সমাজ টিকে থাকবে কি করে?
একটি মানুষের দেহ যেমন সব অঙ্গ ছাড়া হয় না তেমন একটি সমাজ সব রকম মানুষ ছাড়া হয়না।
আমরা একটা ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। আমি আজ একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু আমার আনুগত্য দেশের সংবিধানের প্রতি।
হিন্দু ধর্ম উদার ও সহনশীল। এই ধর্ম মানুষকে এক সাথে শান্তিতে থাকতে শেখায়।