এপ্রিল ৮, ২০১৯
কেন্দ্রে পরিবর্তন আসন্নঃ নাগরাকাটায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ জলপাইগুড়ি জেলার নাগরাকাটাতে একটি জনসভা করেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত পাঁচ বছরে বিজেপি তার প্রতিশ্রুতিগুলো পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে তাই কেন্দ্রে এবার পরিবর্তন আসন্ন।
তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ
- আগের রাজ্য সরকার কেউ কোনদিন জলপাইগুড়ির দিকে তাকিয়ে দেখেনি, কোন কাজ করেনি, অনেক অবহেলা করেছে
- আমি বারবার উত্তরবঙ্গে আসি, কারণ এই চা বাগানের শ্রমিকরা দেশের সম্মান
- স্থানীয় বাসিন্দাদের আমরা অরণ্যের পাট্টা দিয়েছি
- আমরা চাই চা বাগানের শ্রমিকরা যাতে তাদের সঠিক অধিকার পায়, তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি
- অনেক চা বাগান আছে যারা শ্রমিকদের ঠিকমত মজুরি দেয় না, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
- আমরা চা বাগানের শ্রমিকদের ৩৫ কেজি চাল ও আটা দিই ৪৭ পয়সা কেজি দরে, তাদের বিনামূল্যে বিদ্যুৎ ও জল, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাচ্চাদের মিড ডে মিল সব দেওয়া হয়
- কারো কথা শুনে ভুল রাস্তায় যাবেন না, তৃণমূল কংগ্রেসই সঠিক রাস্তা। তৃণমূল কংগ্রেসই আপনাকে দেখবে, জন্ম থেকে মৃত্যু সব রকম পরিস্থিতিতে আপনার সঙ্গে থাকবে
- জলপাইগুড়ি, মালবাজার, আলিপুরদুয়ারে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হয়েছে, আদিবাসী সহ সকল মানুষকে ২ টাকা কেজি দরে চাল, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ দেওয়া হয়
- আমরা স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প চালু করেছি, একটা স্মার্ট কার্ড দেওয়া হচ্ছে এর মাধ্যমে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বীমা পাবেন, এই কার্ডটি হবে পরিবারের মায়েদের নামে
- আমরা আমাদের ইস্তাহারে ১০০ দিনের কাজ বাড়িয়ে ২০০ দিন করার কথা বলেছি, আর নির্বাচনের পর, মোদী বাবু চলে যাওয়ার পর যে নতুন সরকার আসবে তার মাধ্যমে আমরা ১০০ দিনের কর্মীরা যাতে সময়মত পারিশ্রমিক পায় তা সুনিশ্চিত করব
- এই নির্বাচন খুব তাৎপর্যপূর্ণ, এই নির্বাচন দিল্লির সরকারের বাংলার নয়। গত ৫ বছরে কি কাজ করেছে বিজেপি সরকার? আগের বার নির্বাচনের আগে এসে বলেছিল উনি চা-ওয়ালা, তাই ওনাকে সব ভোট দিন তাহলে সব বন্ধ চা বাগান খুলে দেব। মাদারিহাটে জেতার পর ৫ বছর কেটে গেছে একটাও চা বাগান খোলেনি। আর এখন চা ভুলে চৌকিদার হয়েছে
- উনি ৫ বছরের মধ্যে সাড়ে ৪ বছর বিদেশে ঘুরে বেরিয়েছে। ১২০০০ কৃষক আত্মহত্যা করেছে – উনি বা বিজেপি কেউ সেসব দেখছে না
- নোটবন্দিতে ২ কোটি লোক বেকার হয়ে গেছে, চা বাগান বন্ধ হয়ে গেছে – উনি সেসব দেখছেন না
- নির্বাচনের সময় আসে আর টাকা দেয় সভায় যাওয়ার জন্য, ভোট দেওয়ার জন্য। এইসব টাকা ওদের নয়, সাধারণ মানুষের। নোটবন্দির নামে এইসব টাকা ওরা ব্যাঙ্ক থেকে লুঠ করেছে।আর ওই টাকা দিয়ে নির্বাচন করছে।
- চৌকিদার শুধু মিথ্যে কথা বলে, চৌকিদার লুঠেরা, চৌকিদার শুধু বড় বড় কথা বলে। কত বড় নেতা, নিজের নামে সিনেমা বানিয়েছে! গান্ধীজির চেয়েও বড় নেতা?
- এই ৫ বছরে যখন ২৬০% সন্ত্রাসবাদ বেড়েছে তখন কি মোদীবাবু ঘুমোচ্ছিলেন? উনি শুনতে পাননি মানুষের কান্নার আওয়াজ?
- প্রধানমন্ত্রী NRC করে সবাইকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবেন। অসমের নাগরিকপঞ্জী থেকে ২৩ লক্ষ বাঙালীর নাম বাদ দিয়েছে। পাশাপাশি মুসলিম, নেপালি এমনকি বিহারীদের নামও বাদ দিয়ে দিয়েছে
- যদি আপনাদের কাছ থেকে আপনার বাবা-মার জন্মের প্রমাণপত্র চাওয়া হয় – দিতে পারবেন ৭৫ বছর আগের সার্টিফিকেট?
- সবাইকে দেশ থেকে বের করে দিয়ে মোদীবাবু একলা থাকবেন। ওনাকে দেশ থেকে, রাজনীতি থেকে, চেয়ার থেকে বের করে দেওয়া উচিত। মানুষকে বের করে দেওয়ার কথা বলার আগে ওনার ভাবা উচিত ছিল কি বলা উচিত আর কি বলা উচিত নয়
আজও ইস্তাহারে বলেছে ওরা নাগরিক বিল আনবে। এই বিল এনে ৬ বছরের জন্য ওরা আপনাদের বিদেশি করে দেবে, আপনার ভোট দেওয়ার অধিকার থাকবে না, চাকরি থাকবে না, এই বিল এলে কারো নাগরিক অধিকার অধিকার থাকবে না
- বাংলায় নাকি NRC করবে! বাংলায় ওদের ঢুকতেই দেব না
- ৫ বছর পর কে সরকারে থাকবে কেউ জানে না। আর এবার ওরা দিল্লির লাড্ডুও পাবে না
- উনি এখন এক্স-প্রধানমন্ত্রী। এখন সারা দেশের এখন একটাই লক্ষ্য ‘মোদী হাটাও দেশ বাঁচাও’, কিছু আর এস এসের লোককে বসিয়ে রেখেছে যারা দেশের পরম্পরা জানে না, মানুষকে খেতে দেয় না, আর নির্বাচনের সময় টাকা দিয়ে ভোট চায়
- গো-রক্ষার নাম করে ওরা এখন মানুষ মারছে
- আজ যখন ভারতের ২ কোটি মানুষ বেকার, সারা ভারতবর্ষের মানুষ কাঁদছে তখন একমাত্র বাংলায় বেকারত্ব কমেছে ৪০%
- আলিপুরদুয়ারের বিজেপি প্রার্থী জল বার্লা পাহাড়ের দাঙ্গা লাগিয়েছিল, আর কোচবিহারে জাকে প্রার্থী করেছে উনি বেআইনি অস্ত্র ব্যবসায়ী, এটা আমরা নয়, সিবিআইএর চিঠি বলছে।
- ২০১৪ সালে নির্বাচনের আগে এসে গোর্খাল্যান্ড করে দেবে বলে ভোট চেয়েছিল আর নির্বাচনের পর পালিয়ে গেল
- খালি বড় বড় কথা, ওদের মুখে জনতা লিউকোপ্লাস্ট লাগিয়ে দেবে। বলছে বাংলায় কোন উন্নয়ন হয়নি, ওনার চোখ নেই।
- আমরা পাহাড় সমতলে সকলে একসাথে কাজ করি আগামীদিনেও করব
- মিথ্যে কথা বলার জন্য যদি পুরস্কার থাকতো তাহলে সেটা প্রধানমন্ত্রীকেই দেওয়া হত কারণ ওনার মত মিথ্যে কথা কোনও প্রধানমন্ত্রী বলেননি, শুধু প্রধানমন্ত্রী নয় সাংবিধানিক পদে থাকা কেউ করেননি
- আমরা জওয়ানদের শ্রদ্ধা করি আর ওরা সেই জওয়ানদের নিয়ে রাজনীতি করছে
- আমরা চৌকিদার চাই না, দেশের নেতা চাই, যে সবাইকে নিয়ে একসাথে কাজ করে
- মোদী জি, জওয়ানদের মেরে ফেলার পর তাদের নিয়ে রাজনীতি করবেন না। সব রিপোর্ট থাকা সত্ত্বেও কেন এতোগুলো জওয়ান মারা গেল?
- এই ৫ বছরে কাশ্মীরের অবস্থার অবনতি কেন হয়েছে?
- আপনি দার্জিলিং ও জঙ্গলমহলেও আগুন জ্বালিয়েছিলেন, আমরা সেখানে শান্তি ফিরিয়ে এনেছি
- আমার সাথে টক্কর নিতে আসবেন না, আমার সাথে পাঙ্গা নিলে আমি আরও চাঙ্গা হয়ে যাই, আমি লড়াই করতে ভয় পাই না।
- লড়তে পারলে লড়ো, গড়তে পারলে গড়ো নাহলে দিল্লির চেয়ার থেকে সরে পরো