সাম্প্রতিক খবর

এপ্রিল ৫, ২০১৯

পাঁচ বছর দার্জিলিঙের জন্য কিছুই করেনি বিজেপি, নক্সালবাড়ীতে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

পাঁচ বছর দার্জিলিঙের জন্য কিছুই করেনি বিজেপি, নক্সালবাড়ীতে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত নক্সালবাড়ীতে একটি নির্বাচনী সভা করেন। মঞ্চ থেকে তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, ২০১৪ সালে এই কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও বিজেপি এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য কিছুই করেনি।

তিনি সাধারণ মানুষের কাছে আর্জি জানান, সিপিএম, কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে ভোট নষ্ট না করে, তারা যেন ‘ভূমিপুত্র’ অমর সিং রাইকে ভোট দেন।

তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ

আমরা দার্জিলিংকে খুব ভালোবাসি। দার্জিলিং এর চা বাগান, কমলালেবু খুব বিখ্যাত

এবার দার্জিলিং এর ভুমিপুত্র অমর সিং রাইকে এখান থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী করা হয়েছে।

গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাকে আমি ধন্যবাদ জানাই। এবার তৃণমূল কংগ্রেস আর জনমুক্তি মোর্চা একসাথে লড়াই করবে।

আমরা দাঙ্গা, ঝগড়া, খুন, মারামারি চাই না। আমরা শান্তি চাই।

আমরা চাই দার্জিলিঙে কর্মসংস্থান হোক। দার্জিলিঙের উন্নয়নের স্বার্থে আমরা সকলে একসাথে কাজ করব

আমরা চাই মানুষ একসাথে থাকুক, শান্তিতে থাকুক। আমরা চাই চা বাগানের শ্রমিকদের ভালো হোক।

সমতল ও পাহাড় একসাথে থাকলে তবেই আমাদের ভালো লাগে। বাংলায় পাহাড়ি, আদিবাসী, চা শ্রমিক, সংখ্যালঘু, মহিলা, সবাই একসাথে থাকে।

আমাদের মধ্যে কোন তফাত নেই, এটাই আমাদের বাংলার পরম্পরা।

চা বাগানের শ্রমিকদের আমরা খুব ভালোবাসি, ওরা কষ্টে থাকলে আমার কষ্ট হয়।

আমরা অমর সিং রাইকে মনোনীত করেছি কারণ উনি কাজের মানুষ।

গতবার এখানে আমরা নির্বাচনে জিতিনি তাও আমরা দার্জিলিং-এর উন্নয়নের জন্য অনেক কাজ করেছি কারণ আমার কাছে সাধারণ মানুষ খুব মূল্যবান। তাদের আমি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি।

এবারের নির্বাচন খুব তাৎপর্যপূর্ণ। এক্সপায়ারি প্রধানমন্ত্রী ৫ বছরে চা বাগান থেকে শিল্প – কিভাবে দেশকে লুঠ করেছে মানুষ দেখেছেন।

২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বলেছিল নির্বাচনে জিতে ৭টি চা বাগান খুলে দেবে। মাদারিহাটে বিজেপি জিতেছে, কিন্তু কোন কাজ করেনি।

গতবার লোকসভা নির্বাচনের সময় গোর্খাল্যান্ড করে দেবে বলে ভোট চেয়েছিল, তারপর ওরা দার্জিলিঙের দিকে ফিরেও তাকায়নি।

দার্জিলিঙে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে দেওয়ার জন্য আমরা কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু ওরা কোনরকম সাহায্য করেনি। তাই আমরাই দার্জিলিঙে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে দেব সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

পাহাড়ে বিশ্ববিদ্যালয়, শিলিগুড়িতে সাফারি পার্ক, জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ, গাজোলডোবায় ভোরের আলো, তিস্তা নগরী সহ উত্তরবঙ্গের অনেক উন্নয়ন হয়েছে।

রেলমন্ত্রী থাকাকালিন উত্তরবঙ্গে অনেক ট্রেন চালু করে দিয়েছিলাম।

এখন উত্তরবঙ্গ থেকে সড়কপথে নেপাল, ভুটান, এবং বাংলাদেশকে সংযুক্ত করা হয়েছে হাইওয়ের মাধ্যমে।নতুন রাস্তা, ফ্লাইওভার নির্মাণ হচ্ছে।

নরেন্দ্র মোদী এসে বলে বাংলায় কিছু হয়নি। উনি আগে বলুন পাঁচ বছরে ওনারা নিজেরা কি করেছেন?

মাটিগড়া, শিলিগুড়ি, ফাঁসিদেওয়াকে কিছু দিয়েছে কেন্দ্র? একটাও চা বাগান খুলিয়েছে?

২০১৭-১৮ সালে ২ কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছে। গ্যাসের কি দাম, মানুষ কিনবে কি করে? টাকা কোথা থেকে পাবে?

আমরা চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য অনেক কাজ করেছি।

আমরা আসল চৌকিদারকে সম্মান করি, মিথ্যেবাদী চৌকিদারকে সম্মান করি না।

বর্তমান বেকারত্বের হার ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ। সবথেকে বেশী মানুষ বেকার হয়েছে মোদীর আমলে। একমাত্র বাংলায় ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমেছে।

আমরা আমাদের ইস্তেহারে বলেছি আমরা ১০০ দিনের কাজ বাড়িয়ে ২০০ দিন করব এবং মজুরি দ্বিগুণ করব।

আমরা স্থায়ী সমাধান চাই। পাহাড় এবং সমতলের মধ্যে কোনও বিদ্বেষ আমরা চাই না।

আমরা পাহাড়কে শান্ত করি আর সিপিএম, বিজেপিকে সাহায্য করে ওখানে আগুন লাগাতে, কংগ্রেস ওদের মদৎ দেয়।

সিপিএম, কংগ্রেস আর বিজেপি-র পুরো সমঝোতা আছে। জগাই, মাধাই আর গদাই-র পুরো আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়ে গেছে, যা পঞ্চায়েত নির্বাচনেও আপনারা দেখেছেন।

সিপিএম বা কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে আপনার ভোট নষ্ট করবেন না।

আমরা চাই সবাই শান্তিতে এবং মিলেমিশে থাকুক। সবার মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকুক। আমরা সবার জন্যে কাজ করতে ইচ্ছুক এবং করব।

উত্তরবঙ্গে আমরা হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ বানিয়ে দিয়েছি এবং সচিবালয় বানিয়ে দিয়েছি। নরেন্দ্র মোদী এক পয়সাও দেয় নি, সবটাই তৃণমূল সরকার করেছে যাতে এখানকার মানুষ বিচার পায়।

এরা যদি ক্ষমতায় থাকে আপনার ব্যাঙ্কে যত জমানো পয়সা আছে, তাও চলে যাবে।

যারা পাঁচ বছরে আপনাদের জন্যে কিছুই করেনি, তারা সারাজীবনেও কিছু করবে না। অথচ আমরা করেছি এবং করে দেখিয়েছি এবং আগামীতেও করব।

নির্বাচনের সময় ওরা বসন্তের কোকিলের মত টাকার ভান্ডার নিয়ে এসেছে। ওই টাকাটা কার, নোটবন্দীর সময় যে টাকা লুট হয়েছিল, সেই টাকা।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী তো শুধুই বিদেশে ভ্রমণ,বিভেদমূলক রাজনীতি আর বড় বড় কথা বলেন, কাজ করেন কী?